নিষ্ঠুর নিয়তি (দ্বিতীয় পর্ব)
এখন আর যাই হোক তাদেরকে তিন বেলা খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। অটোরিক্সা চালকদের ইনকাম বেশ ভালো। প্রতিদিন গ্যারেজে ৪০০ টাকা জমা দেয়ার পরও তার ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় হয়। এই আয়ের থেকে সবুজ কিছু কিছু করে টাকা জমাচ্ছিলো নিজের একটা অটোরিকশা কেনার জন্য। সে চিন্তা করে দেখেছে যদি তার নিজের একটা অটো রিক্সা থাকতো। তাহলে প্রতিদিন তার ৪০০ টাকা করে বেঁচে যেতো। যেটা মাসে দাঁড়ায় ১২ হাজার টাকা। যে টাকা সে মাসে গ্যারেজ মালিক কে দেয় তার এক বছরের টাকা দিয়ে একটা অটো রিক্সা কেনা যায়।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
প্রথমে সবুজের মাথায় এই বুদ্ধিটা ছিলো না। তার পাশের প্রতিবেশী তাকে একদিন নিজের অটো কেনার বুদ্ধি দেয়। তখন থেকেই সবুজ টাকা জমাতে শুরু করে। যদিও তাদের পাঁচজনের সংসার চালিয়ে খুব বেশি টাকা সে বাঁচাতে পারে না। তার পরেও সবুজ যতোটা সম্ভব টাকা জমাতে থাকে। তার বয়সী অন্য ছেলেরা যেখানে টাকা পয়সা নষ্ট করে সেখানে সে খুবই মিতব্যয়ী। এভাবে ধীরে ধীরে টাকা জমাতে জমাতে দুই বছরের মাথায় সবুজের নিজের অটো রিক্সা কেনার টাকা হয়ে যায়।
যখন তার অটোরিকশা কেনার টাকা হয়ে যায় তখনই সে একদিন হঠাৎ করে এক দুর্ঘটনায় পড়ে। দুর্ঘটনায় তার পা ভেঙে যায়। সেই পা ভাঙ্গার চিকিৎসা করতে গিয়ে জমানো টাকার প্রায় অর্ধেকটা শেষ হয়ে যায়। চিকিৎসা খরচ সেই সাথে কয়েক মাস ঘরে বসে থেকে সেই জমানো টাকায় খরচ করতে থাকে। নিজের স্বপ্ন পূরণের এত কাছাকাছি এসেও স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় সবুজ হতাশ হয়ে পরে। সে চিন্তা করতে থাকে এতো কষ্ট করে টাকাগুলো জমানোর পরেও কেনো সে অটো রিক্সাটা কিনতে পারলো না? কেন তার সেদিনই অ্যাক্সিডেন্ট হোলো? (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।