দেশীয় ফল কেনার অনুভূতি।শেষ পর্ব।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

"হ্যালো বন্ধুরা"

সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি,সুস্থ আছি।

আমাদের দেশে বিভিন্ন মৌসুমে বাহারি ফল জন্মে। এসব দেশি ফল বিদেশি ফলের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। শুধু স্বাদে, গন্ধেই নয় পুষ্টি মানের বিচারেও উৎকৃষ্ট।ফল ঈশ্বরের এক অপূর্ব সৃষ্টি।আদিকালে মানুষ বন-বাদাড়ে ঘুরে বেড়াত এবং ফল খেয়েই জীবনধারণ করতো।দেশী ফল পুষ্টিতে ভরপুর। বর্তমানে ফল অর্থকরী ফসল। ফল গাছ কাঠ দেয়, ছায়া দেয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
নিয়মিত ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সুস্থ সবল জীবন লাভ করা যায়।

গত পর্বে আমি দেশীয় ফল কেনার প্রথম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।আজ আরও কিছু ফল কেনার অনুভূতি গুলো এখন শেয়ার করবো।

কাঁঠাল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। কাঁঠালে অনেক পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কাঁঠাল খেলে হজমশক্তি ভালো হয়, সেই সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়। হৃদরোগ, কোলন ক্যান্সার এবং পাইলসের সমস্যায় কাঁঠাল অত্যন্ত উপকারী বলা হয়।দুদিন আগেই আমার শাশুড়ি মা গ্রামের একজন লোক মঈনুল ভাই তাকে দিয়ে দুটো কাঁঠাল পাঠিয়েছেন।এই কাঁঠাল গুলো আমার গাছের কাঁঠাল।নিজস্ব কেনা জায়গায় অনেক গুলো গাছ লাগানো আছে সেখানে কাঁঠাল গাছও আছে।আমার গাছের কাঁঠাল একটাই সুস্বাদু তা বলার মতো না।যে একবা খাবে সে বার বার খেতে চাইবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।কাঁঠাল পেকে গেছে তাই ভেঙ্গে প্রতিবেশী ভাবিকে কিছু দিলাম।আমার হেল্পিং হ্যান্ড সোহাগী কে কিছু দিলাম।আমি দুই তিনটা কোষ খেয়েছি।আর বাকিগুলো চালনি তে নিয়ে রস করে ডিপ ফ্রিজ এ হাসবেন্ড এর জন্য রেখে দিলাম যাতে ছুটিতে এসে খেতে পারে।

বাঙ্গি বা ফ্রুটি আমাদের দেশীয় একটি ফল।বাঙ্গিতে প্রচুর পরিমানে আঁশ এবং ফলিক এসিড রয়েছে। তাই এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
বাঙ্গি খেতে অনেকেই পছন্দ করেন না কিন্তু আমি বাঙ্গি খেতে খুবই পছন্দ করি সেই ছোটবেলা থেকেই।বাঙ্গি ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে উপর দিয়ে চিনি ছড়িয়ে দিয়ে খেতে খুবই মজা লাগে।আমার মায়েরাও বেশ পছন্দ করে বাঙ্গি খেতে।বাজার থেকে ছোট্ট একটা বাঙ্গি ৩০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম।বেশ পাকা বালি বালি ধরনের ছিলো তাই খেতে অনেক বেশি মজা লেগেছে।

বাজারে এখনো জাম পাওয়া যাচ্ছে। খুবই পুষ্টিকর এই ফল। এর বিচি ডায়বেটিসের জন্যে ভালো।জাম খেতে খুব একটা পছন্দ করি না কিন্তু বছরের নতুন ফল দেখে অল্প পরিমাণে কিনেছি।বাসায় এনে ঝাল লবণ দিয়ে মেখে খেয়েছি।খেতে বেশ ভালোই লেগেছে।

খেজুর আমাদের খুবই পরিচিত একটি ফল।গ্রামাঞ্চলে সচারাচর খেজুর গাছ দেখতে পাওয়া যায়। শীতকালে খেজুরের রস খেতে খুবই মজা লাগে।সে তুলনায় খেজুর খেতে খুব একটা ভালো লাগে না।আমাদের বাড়িতে খেজুর গাছ আছে আমরা ছোটবেলায় খেজুর পেরে খেতাম আর এখন বাজার থেকে বেশ দাম দিয়ে কিনে খেতে হচ্ছে।ছোট মেয়ের আবদারে কিনতে হয়েছে। কিন্তু বাসায় আসার পর দুই একটা খেয়ে আর খেতে চাইছে না বলে খেতে একদম মজা না।

লটকন ফল বিভিন্ন নামে পরিচিত। এই ফলের রং অনেকটাই হলুদ এবং দেখতে গোলাকার ও ছোট আকারের। এটি ফলটি রসালো, এটির স্বাদ একটু টক হয় ও সাথে মিষ্টি।লটকন দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও অনেক সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ তো রয়েছেই। লটকন বিভিন্ন ঔষধি হিসেবেও কাজ করে। এর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার জন্য অনেক কার্যকারিতা রয়েছে।লটকন খেতে আমার ছোট মেয়ে খুবই পছন্দ করে তাই ৮০ টাকা দিয়ে হাফ কেজি লটকন কিনেছিলাম।বাসায় আসার পর একবেলায় সব শেষ করে ফেলেছে ওর এতটাই পছন্দ।

কলা দামেও সস্তা। সঙ্গে পুষ্টিগুণে ভরপুর। কলায় থাকা মিনারেল, ভিটামিন আর ফাইবার শরীরের জন্য খুব উপকারী। এছাড়া এই ফলটিতে রয়েছে প্রটুর পরিমাণে পটাশিয়াম।কলা খেতে পছন্দ না করলেও প্রতিদিন একটা করে কলা খাওয়ার চেষ্টা করি।তাই কারণে অকারণে কলা কিনতে হয় যা নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি জিনিসে পরিণত হয়েছে এখন।

বাজারে তরমুজ দেখলাম।কিন্তু তরমুজ গুলো দেখে খুব একটা পছন্দ হলো না তাই আর কেনা হয়নি।

সবশেষে ফলের দোকানদার সজীব এর একটা ছবি তুলছিলাম,তখন সজীব আমাকে জিজ্ঞেস করলো আপা আপনি আমার ছবি তুলছেন কেন!তখন আমি মজা করে বললাম তোমাকে ভাইরাল করে দিবো তাই তোমার ছবি তুলছি।এই কথা শোনার পর সজীব সেইরকমের একটা হাসি দিলো আর আমি সাথে সাথে ওর একটা ছবি তুলে নিলাম।😁

এই ছিলো আমার দেশীয় ফল কেনার অনুভূতি।আশাকরি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।

Break3.jpg
Banner User.png
Break3.jpg

আমি অতসী চাকী (বৃষ্টি) । নতুন নতুন রেসিপি বানিয়ে সবাইকে খাওয়াতে আমার ভাল লাগে। আর ভাল লাগে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে। আমি "ভাল কাজের, ভাল ফল কথাটাতে" মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং মেনে চলার চেষ্টা করি।

Break3.jpg

Sort:  
 last year 

বাহ ফল গুলো দেখে খেতে খুব ইচ্ছে করছে। চমৎকার ফলের ফটোগ্রাফি করেছেন আপনি। ‌ ফল কেনার অনুভূতি সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বিশেষ করে খেজুর এবং তরমুজ ফল দেখে খুব ভালো লাগলো। সজিবের হাসি কিন্তু অসাধারণ আপু। এত সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

হ্যাঁ সত্যিই সজীবের হাসি অনেক সুন্দর ছিলো।সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

দেশীয় ফল কেনার অনুভূতি গুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো আপু।আপনি ফলের উপকারী দিকগুলোও তুলে ধরেছেন। আসলে দেশীয় ফলগুলো আমাদের সকলের খাওয়া উচিত।এরমধ্যে রয়েছে অনেক ভিটামিন যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।আপু আপনার মেয়ের মতো আমারও লটকন খুব পছন্দ। কাল আমিও নিয়ে এসে খেয়েছি, খুব মিষ্টি ছিল।আপনি নিজের গাছের কাঁঠাল সবাইকে দিয়ে খেয়েছেন। এতে আনন্দ আরো দিগুণ হয়ে গেলো।খুব ভালো লাগলো অনুভূতি গুলো পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হ্যাঁ আপু লটকন আমার ছোট মেয়ে খুবই পছন্দ করে।আপনারও লটকন খেতে অনেক ভালো লাগে জেনে ভালো লাগলো।নিজের বাড়ির যেকোনো জিনিস সবাইকে দিয়ে খেতে অনেক ভালো লাগে।অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

 last year 

আজকের কেনা প্রতিটি ফল দেখে তো আমার আজকেই আপনার বাড়িতে চলে আসতে মন চাইছে। প্রতিটি ফলই কিন্তু আমার বেশ প্রিয়। তাই আসলে মন্দ হয় না। বিশেষ করে কালো জাম দেখলেই তো মুখটা কেমন কেমন করে। এত এত স্বাস্থ্য সম্মত ফল খেয়ে তো দেহের স্বাস্থ্য একেবারে ঠিক হয়ে যাবে।

 last year 

চলে আসুন আমি আপনাকে আপনার পছন্দমতো সব ফল খাওয়াবো।কালোজাম আমার খুব একটা পছন্দ না কিন্তু রক্তস্বল্পতার জন্য অল্প সল্প খাই।সুন্দর মন্তব্য করেছেন তার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু।

 last year 

আহা এত সুন্দর টাটকা দেশীয় ফল দেখে লোভ সামলানো যাচ্ছে না।এই খেজুর ছোটবেলায় আমার গাছ থেকে পেড়ে আনত আমরা লবন দিয়ে মাখিয়ে রাখতাম রাতের মধ্যে সবগুলো পেকে যেতো।কতদিন খাইনা।তবে আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে দেখে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ বৌদি দেশীয় ফল নিয়ে দ্বিতীয় পর্ব লেখার জন্য।

 last year 

আমরাও তাই করতাম যাতে তাড়াতাড়ি খেজুর পাকে।ছোটবেলার দিনগুলো অনেক মিস করি।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাবি।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56542.34
ETH 2391.51
USDT 1.00
SBD 2.30