হঠাৎ মেয়ের অসুস্থতার কিছু মুহূর্ত, অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস। shy-fox 10% | abb-school 5%
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসী সবাইকে আমার নমস্কার আদাব। আশা করি আপনারা সকলেই ভাল আছেন সুস্থ আছেন? আমি আজ খুব একটা বেশি ভালো নেই তার কারণ আমার বড় মেয়ে অসুস্থ।
আজকের দিনটি ভীষণ খারাপ কেটেছে, গত তিন দিন ধরে বড় মেয়ে অসুস্থ, গত ২১ তারিখে সন্ধ্যায় হঠাৎ করে মেয়ে পেটের ব্যথায় খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাথে সাথে আমাদের পাশের বাসার শুভ ভাই এর কাছে গেলাম ওনার কাছে কিছু পরামর্শ নেয়ার জন্য, শুভ ভাই সব সময় ভালো পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিছু ঔষধের নাম বলল সেগুলো এনে খাওয়ানোর পরামর্শ দিল। আমি ভাবলাম ঔষধ যখন আনতেই যেতে হবে তাহলে মেয়েকে একবারে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই, ওর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল দেখে আমার খুব ভয় করছিল তাই দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। তখন রাত ৮ টা বাজে নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছিল এটা ভেবে যে কখনো একা একা রাতে বাসার বাইরে যাওয়া হয়নি কিন্তু কি আর করা আমাকে তো
যেতেই হবে তার কারন আমি দুই মেয়েকে নিয়ে একা বসবাস করি চাকরির সুবাদে ওর বাবা ঢাকায় থাকে
সেজন্য সবকিছু আমাকেই করতে হয়, আমি সবসময় এটা মনে করি যতকিছুই হোক সবকিছু আমাকেই সামলাতে হবে আর সেজন্য নিজেকে সেভাবেই তৈরি করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারপরও মনের ভিতরে কেমন যেনো একটা ভায় কাজ করে। যাইহোক ভয় দ্বিধা দ্বন্দ্ব বাদ দিয়ে মেয়েকে নিয়ে ছুটলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে, ইমারজেন্সি ভিভাগে কয়েকজন বসে আছে সবাই গল্প গুজব করছে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না কে ডাক্তার, পরে আমি একজন কে জিজ্ঞেস করলাম ভাইয়া এখানে কি ডাক্তার সাহেব আছেন? উনি একজন কে দেখিয়ে দিয়ে বললো যে উনি ডাক্তার সাহেব,আমি একটু অবাক হলাম এটা ভেবে যে ওনাকে কোন দিক থেকেই আমার ডাক্তার মনে হচ্ছিলোনা তার কারন যখন আমি রুমের ভিতরে প্রবেশ করি তখন উনি স্টাফদের সাথে যে ভাষায় কথা
বার্তা হাসি ঠাট্টা করছিল তাতে করে মনে হয় না যে এটা কোন ডাক্তারের আচরণ হতে পারে। যাইহোক আমার ভাবাতে কি বা আসে যায়, ডাক্তার সাহবকে আমার মেয়ের সমস্যার কথা বললাম, তখন উনি বললো যে হাসাপাতালে ভর্তি করায় দেই আমি বললাম না স্যার আমার পক্ষে হাসপাতালে থাকা সম্ভব না আপনি প্রাথমিক চিকিৎসা দিন যাতে আমি বাসায় চলে যেতে পারি কারন আমার ছোট একটি মেয়ে আছে তার কথাও তো আমাকে ভাবতে হবে। তারপর ডাক্তার সাহেব একটা কাগজ আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন আর বললেন এগুলো নিয়ে আসেন। আমি সাথে সাথে বাইরের ডিসপেনসারিতে গেলাম এবং যা যা লেখা ছিল সেগুলো কিনে নিয়ে আসলাম তারপর মেয়েকে দু'টো ইনজেকশন দেওয়া হলো এবং কিছু ঔষধ লিখে দিলো সেগুলো নিয়ে বাসায় ফিরে আসলাম। রাতের খাবার খাইয়ে যা যা ঔষধ ছিল মেয়েকে খাইয়ে দিলাম। মোটামুটি ভালোই ছিল দুদিন।
মনে মনে ভাবলাম মেয়ে মনে হয় সুস্থ হয়ে উঠছে। কিন্তু তা আর কই হলো গতরাতে আবার হঠাৎ মেয়ের পেটে ব্যথা শুরু হলো ও ব্যথায় ছটফট করছে আমি কি করবো বুঝতে পারছি না তখন বাজে রাত তিনটা, ব্যথার ঔষধ খাইয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম অনেক সময় পর ও ঘুমিয়ে গেলো, কিন্তু আমার চোখে আর ঘুম আসছে না মেয়ের চিন্তায় যেনো আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো, শুধু ঈশ্বর কে ডাকছিলাম যাতে ও সুস্থ হয়ে যায়। সকাল হলো ওকে সকালের নাশতা খেতে দিলাম একদম খেতে চাইছিল না জোর করে খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দিলাম। তারপর চেনা একটি ক্লিনিকে ফোন করলাম ডাক্তার দেখানোর বিষয়ে তখন ওরা বললো সাড়ে বারোটার দিকে আসলে ডাক্তার দেখাতে পারবো, তাড়াতাড়ি করে অল্প সল্প রান্না করে মেয়েকে নিয়ে ছুটলাম ডাক্তারের কাছে। গিয়ে দেখি ডাক্তার ম্যাডাম তখনও আসেনি, কি আর করা আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম কখন ম্যাডাম আসবেন।
অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটলো ম্যাডাম এসে উপস্থিত হলেন আমাদের সিরিয়াল প্রথমে ছিল তাই সাথে ভিতরে প্রবেশ করলাম ম্যাডাম সবকিছু শুনলেন তারপর কিছু টেস্ট করতে বললেন, আর বললো সন্ধ্যায় রিপোর্ট গুলো দেখে তারপর ঔষধ যা যা লাগে দেবেন। টেস্ট গুলো করতে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। স্নান খাওয়া শেষ করে একটু বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যায় আবার ক্লিনিকে চলে গেলাম গিয়ে দেখি সব রিপোর্ট রেডি তাই দেরি না করে ম্যাডামের রুমে রিপোর্ট দেখাতে প্রবেশ করলাম। মনে মনে ভীষণ ভয় হচ্ছে না জানি রিপোর্ট কি হয় শুধু মনে মনে ঈশ্বরের নাম স্মরণ করছিলাম।সব রিপোর্ট দেখে বললো যে সব নরমাল আছে তেমন কোন বড় ধরনের সমস্যা নেই, একটাতে সামান্য একটু সমস্যা দেখা যাচ্ছে ওটো মেজর কোন সমস্যা না। রিপোর্ট দেখারপর ঔষধ লিখে দিলেন।
ক্লিনিক থেকে বের হয়ে সোজা ঔষধের দোকানে চলে গেলাম, গিয়ে সব ঔষধপত্র কিনে বাসায় ভালোভাবে চলে আসলাম।
রাতের খাবার খাওয়ার পরে যে ঔষধ গুলো খতে দিয়েছে সেগুলো সব মেয়েকে খাইয়ে দিলাম ও ডাক্তার দেখানো পরীক্ষা নিরিক্ষার পর থেকে একটু মানসিক ভাবে সুস্থ বোধ করছে কারন তিন চার দিন হলো মা মেয়ে দুজনেই খুব ভয় পাচ্ছিলাম যে অ্যাপেন্ডিক্স এর ব্যথা কি না ভগবান ভরসা সেরকম কিছু না,যতটুকু সমস্যার কথা ডাক্তার বলেছেন সেটা কিছু দিন ঔষধ খেলেই সেড়ে যাবে এই কথা শোনার পর একটা
স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারলাম। ভয় কেটে গিয়ে
আমিও অনেকটা নিশ্চিন্ত বোধ করছি। সন্তানের কষ্ট একদম সহ্য করার মতো না, ঈশ্বর যেনো আমার সন্তানদের সবসময় মঙ্গল মতো রাখেন এই প্রার্থনা করি সবসময়।
আজ এখানেই শেষ করছি সবাই আমার মেয়ের জন্য আশীর্বাদ, দোয়া করবেন ও তাড়াতাড়ি যেনো সুস্থ হয়ে উঠে।সবাই ভালো থাকবেন।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
খুব খারাপ লাগলো আপু আপনার বড় মেয়েটা অসু্স্থ হয়ে পড়লো হঠাৎ। আপনার বড় মেয়ে আমাদের মাঝে সুন্দর সুন্দর গান উপহার দিয়ে থাকে। আশা করি এখন ভালো আছে। আপনার মেয়ের জন্য দোয়া রইল আপু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসে।
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। দোয়া করবেন আসছে হ্যাংআউট এর আগেই যেনো মেয়ে সুস্থ হয়ে আপনাদেরকে গান শোনাতে পারে।
এটা শোনার পর খুবই খারাপ লাগলো। বলেছিলাম না মেয়েদের প্রতি খুশি যত্ন থাকতে হবে। নিশ্চয়ই আপনি মেয়েদের প্রতি যত্ন তেমন একটা রাখার নাই। যাইহোক বাবুদের প্রতি খুব খেয়াল রাখতে হবে। বাবুদের জন্য দোয়া করি যেন সুস্থ হয় এবং সর্বদা সুস্থ থাকে।
ভাইয়া আসলে অসুখ বিসুখ বলে কয়ে আসেনা, আর আমার মেয়ের সমস্যা হলো ও একদম খেতে চায় না প্রতিদিন সাকালে না খেয়ে থাকে, আপনি ডিসকোর্ডে সেদিন সুন্দর পরামর্শ দিয়েছিলেন, আশাকরি আপনার পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করে মেয়ের প্রতি যত্নশীল হবো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ডিসকার্ড এ কথা বলার সময় আপনার মুখ থেকে যখন শুনতে পেলাম আপনার মেয়ে অসুস্থ হয়ে গিয়েছে এটা শুনে সত্যিই অনেক খারাপ লেগেছিল আপু। ডাক্তার যে পরামর্শ দিয়েছে সেই অনুযায়ী মেয়েকে ঔষধ খাওয়াতে থাকেন আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তা আপনার মেয়েকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেবে।
জ্বি ভাইয়া, ডাক্তার যেভাবে বলছে সেভাবেই সব নিয়ম মেনেই ঔষধ খাওয়াচ্ছি, দোয়া করবেন, আশাকরি আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমার মেয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক খারাপ লেগেছিল শুনে। আশাকরি ভাল হয়ে যাবে। অনেক দোয়া রইল। মেয়ের যত্ন নিন আপু। অনেক শুভকামনা রইল আপনার মেয়ের জন্য।
আপু আপনি আপনারা সবাই আমার মেয়েকে অনেক ভালোবাসেন আর আপনাদের দোয়াই অবশ্যই মেয়ে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে আশাকরি। ধন্যবাদ আপু।
শুনে তো আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল আপু মেয়েকে খেয়াল রাখবেন এবং যত্ন সহকারে ওষুধ খাওয়াবেন আপনার মেয়ের জন্য অনেক অনেক দোয়া কামনা রইল আপু ইনশাল্লাহ সুস্থ হয়ে উঠবেন।
হ্যাঁ ভাইয়া ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিকমতো ঔষধ খাওয়াচ্ছি, আপনাদের দোয়া আছে আশাকরি দুই এক দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি দিদি বাচ্চার অসুস্থ একজন মায়ের জন্য যে কত কষ্টের তা একজন মা জানে।আশাকরি আপনার মেয়ে তারাতারি সুস্থ হয়ে উঠবে।আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
সন্তানের শরীর খারাপ থাকলে মা কখনোই স্থির থাকতে পারে না😩। যাইহোক সিরিয়াস কোনো সমস্যা না এটা জেনে ভালো লাগল আপনার মেয়ে খুব দ্রুতই সুস্থ্য হয়ে যাবে সেই প্রার্থনা করি।।
যাইহোক আপু এখন আপনার মেয়েকে ওষুধগুলো নিয়মিত খাওয়াবেন। তাহলে হয়তো সৃষ্টিকর্তা তাকে পুরোপুরি সুস্থ করবেন। শুভকামনা রইল আপনার ও আপনার পরিবারের জন্য।
জ্বি আপু, ডাক্তার বলেছে ঔষধ খেলে কিছুদিনের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে। আপনাদের দোয়ায় আজ অনেকটাই ভালো মনে হচ্ছে।, আশাকরি খুব শীঘ্রই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে। ধন্যবাদ আপু।
খুব খারাপ লাগলো দিদি আমি প্রথমে দেখলাম এতো ওষুধ কেনো ৷পরে ভালো করে পরলাম যাই হোক এখন সুস্থ আছে তো দিদি ৷ আর আপনার মেয়েটার যে গানের গলা খুব মিষ্টি ৷ভালোভাবে চিকিৎসা নিন দিদি ৷
দাদা এখন আগের তুলনায় অনেকটাই ভালো মনে হচ্ছে। আশীর্বাদ করবেন যেনো তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আবার আপনাদের কে গান শোনাতে পারে। ধন্যবাদ দাদা।