আমাদের বিয়ে এবং ১৮'তম বিবাহবার্ষিকী। পর্ব-১| shy-fox 10% |abb-charity 5%
হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
ইতিমধ্যেই আপনারা হয়তো-বা আমাদের বিবাহবার্ষিকী নিয়ে অনেক কিছুই জেনে গেছেন আমাদের এডমিন শুভ ভাইয়া ও হিরা ভাবির পোস্টের মাধ্যমে তাই কি কি করা হয়েছিলো নতুন করে বলার মতো আমার আর কিছু নেই তারপরও ভাবলাম কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
বিয়ে হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দু'জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়।বিয়ে মানেই এক জন অপর জনকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং সেই প্রতিশ্রুতিগুলিকে সারা জীবন প্রেম, নিষ্ঠা ও যত্ন সহকারে পালন করা। বিয়ে মানেই যে কেবল মাত্র দু’টি মনের মিলন তা নয়, একটি পরিবারের সঙ্গে অন্য একটি পরিবারের মিলন।
পৃথিবীতে সবচেয়ে আশ্চর্যময় সম্পর্ক হলো স্বামী স্ত্রীর
সম্পর্ক।সৃষ্টিকর্তা কত সুন্দর করে তৈরী করেছেন এই সম্পর্ক তাই এই সম্পর্ক ছিন্ন করা খুবই কঠিন।
হিন্দু শাস্ত্রে অগ্নি দেবতাকে সাক্ষী রেখে সারা জীবনের জন্য কিছু অঙ্গিকার করা হয়। এই অঙ্গিকার স্বামী স্ত্রীর প্রতি ও স্ত্রী স্বামীর প্রতি খুব নিষ্ঠা সহকারে পালনের জন্য। অগ্নি দেবতাকে সাক্ষী রাখা হয়, কারণ সাত পাক ঘুরে যে অঙ্গিকারগুলি নেওয়া হয়, তার যেনো কোনও অমর্যাদা না হয়। সারা জীবন যেনো একে অপরের প্রতি দায়িত্ব, কর্তব্য, সত্য, সমর্থন, দুঃখ কষ্ট সব জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেনো পালন করে যেতে পারে।
আজ থেকে আঠারো বছর আগে আমাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।আমি আগে থেকেই আমার স্বামীকে চিনতাম।আমার বড়মা আছে তার বোনের ছেলে হলো আমার হাসবেন্ড সেই সুত্রে তাকে খুব ভালো করে না হলেও আত্মীয়তার সুত্রে চেনা জানা ছিলো, কিন্তু কখনো ভাবিনি তার সাথে আমার বিয়ে হবে তার কারন হলো আমি তাকে দাদা বলে ডাকতাম,আর বয়সের পার্থক্যটাও বেশ ভালোই ছিলো তাই তার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা কখনো মনে আসারও কথা নয়।আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন আমার হাসবেন্ড তার মাসির বাড়ি থেকে পড়াশোনা করতো কিন্তু আমার তখনকার কথা কিছু মনে নেই আমি তখন খুবই ছোট ছিলাম।কয়েকবছর পড়াশোনা করে আবার নিজের বাড়িতে গিয়ে বাকি পড়াশোনা করেন, তারপর সরকারি চাকরি হয়।
তার প্রথম পোস্টিং রাজশাহীতে হয়, আর আমার বড় কাকাও তখন আগে থেকেই রাজশাহীতে চাকরি করেন আত্মীয়তার সুবাদে কাকার বাসায় যাতায়াত ছিলো তার।প্রতি সপ্তাহে একবার হলেও কাকার বাসায় ঘুরতে যেতো আর কাকিমা তাকে ভালো ভালো খাবার রান্না করে খাওয়াতো এবং যেকোনো প্রয়োজনে তাকে ডাকলেই তার সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যেতো আর এভাবেই সম্পর্ক আরও অনেক বেশি ভালো হয় কাকিমার সাথে।তার আচার-আচরণ এবং ভালো ব্যবহার দেখে কাকিমার খুবই ভালো লাগে আর একদিন নাকি হাসতে হাসতে বলেই ফেলে যে তোমাকে আমার জামাই বানাবো তখন আমার হাসবেন্ড অবাক হয়ে বলে আপনার মেয়ের বয়স তো মাত্র ৫-৬ বছর তাহলে কিভাবে জামাই বানাবেন? তখন কাকিমা বলে মেয়ে ছোট তাতে কি হয়েছে ভাতিজী তো আছে তার সাথে বিয়ে দিবো মানে আমার কথা বলে।তখন সে আমার কথা মনেই করতে পারছিলো না তার কারন অনেক ছোটবেলায় আমাকে দেখেছে তাই ভুলেই গেছে।
এভাবেই বেশকিছুদিন পার হয়ে যায়। তারপর আমি ক্লাস নাইনে ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে কাকার বাসায় ঘুরতে গেছিলাম।এক শুক্রবারে সে আসে কাকিমা তাকে দাওয়াত করেছিলো দুপুর বেলা তার এক বন্ধুকে সাথে করে নিয়ে খেতে আসে আমি প্রথমে তাকে চিনতে পারিনি পরে কাকিমার কাছে শুনলাম উনি বড়মার বোনের ছেলে বিপ্লবদা তারপর স্বাভাবিক ভাবে কথাবার্তা বললাম কারন তাকে তো আগে থেকেই চিনি কিন্তু অনেক বছর দেখিনি জন্য ভুলে গেছিলাম।ওনারা দুজন খাওয়া দাওয়া শেষ করে রেস্ট নিয়ে সন্ধ্যায় চা খেয়ে তারপর বাসা থেকে চলে যায়। এই সময়ের মধ্যে কোনোকিছু দেওয়ার প্রয়োজন হলে কাকিমা শুধু আমাকেই দিয়ে আসতে বলে আমি তো পড়ে গেলাম মহা বিপদে কাকিমার মনে কি চলছিলো সেগুলো তো আর আমি জানতাম না।তাদের সামনে যেতে কেমন জানি লজ্জা লাগছিলো অনেক অনেক বছর পর দেখেছি কেমন জানি অচেনা অচেনা লাগছিলো,সন্ধ্যায় চলে যাওয়ার পর অনেক শান্তি পেলাম।কয়েকদিন রাজশাহীতে ঘোরাঘুরি করে আবার বাড়িতে ফিরে এসে পড়াশোনা শুরু করে দিলাম আর এভাবেই আমার দিন কাটছিলো.........।
আজ এখানেই শেষ করছি আবার পরবর্তী পর্বে আমার বিয়ের গল্প গুলো শেয়ার করবো সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
OR
দিদি বিয়ে মানে অনেক কিছু সেগুলো নাই বা বললাম ৷ তবে দিদি জাইমুর হওয়ার আগে এতো কিছু পড়তে বেশ ভালোই লাগছিল ৷ যা জীবন কারের জীবনের সঙ্গে বন্ধন হয় বলা মুশকিল ৷ কারন বিবাহ হলো ঈশ্বরের নিকট ৷ যা হোক বাকিটা জীবন জাইমুর সাথে আনন্দে সুখে কাটুক এমনটাই প্রতার্শা ৷
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ৷
বিয়ে মানে জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় এই সময় যদি সুখে শান্তিতে জীবনযাপন করা যায় তাহলে খুবই ভালো আর যদি অশান্তি হয় তাহলে জীবন শেষ। হ্যাঁ ভাই এই আশীর্বাদ করবেন যাতে বাকি জীবন টা সুখে শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারি।ধন্যবাদ ভাই।
ঠিক বলেছেন আপনি বিয়ে মানেই কঠিন একটি সম্পর্ক। যে সম্পর্ক মহান আল্লাহ তা'আলা উপর থেকে সৃষ্টি করে নিয়ে আসে। কারণ আমরা চাইলেও কখনো দুটি মানুষকে একসাথে মিলাতে পারবো না। আপনি আর আপনার স্বামীর কঠোর বন্ধন দেখে খুবই ভালো লাগলো। আসলেই প্রত্যেকটি হাজবেন্ড ওয়াইফের এরকম একটি সুন্দর সম্পর্ক হওয়া উচিত। যাতে একজন আরেকজনের পাশে সুখে-দুখে থাকতে পারে। আপনাদের ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী দেখতে দেখতে কেটে গেল। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
জ্বি আপু বিবাহবন্ধন এমন একটি বন্ধন যা সহজেই ছিন্ন করা যায় না,এটা নির্ভর করে ঈশ্বরের হাতে।বিবাহিত জীবনের অনেক গুলো সময় আমরা একসাথে পার করেছি দোয়া রাখবেন যাতে আগামী দিনগুলোও একসাথে পার করতে পারি।অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনাদের বিবাহবার্ষিকী ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে এইটা জেনে সত্যি খুব ভালো লাগলো। আশা করি আপনাদের এই পবিত্র বন্ধন মত্যু পর্যন্ত অটুট থাকবে। বিয়ে মানে পবিত্র বন্ধন যা একে অন্যের উপর অনেকগুলো বিষয় এবং দায়িত্ব অর্পিত হয়। আপনাদের আগামী দিনগুলো খুব সুন্দর কাটুক এই আশাবাদ ব্যক্ত করি। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ধন্যবাদ এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা রইলাম।
তাই যেনো হয় ভাইয়া,মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেনো একে অপরের পাশে থাকতে পারি।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলেই আপনাদের বিবাহ বার্ষিকীর পোস্ট আগেই দেখে ফেলেছি। তবে আপনার কথাগুলো ছিল একদমই ভিন্ন। আপনাদের দুজনকে দেখে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। বিশেষ করে সম্পর্কের বিয়ে না হলেও কিন্তু আগে থেকে যেহেতু চিনতেন এটা ভালো হলো। 18 বছর পর্যন্ত বেশ ভালই সংসার করছেন। আসলে এটাই হচ্ছে একটা বিয়ের বন্ধন। আপনাদের বিয়ের কাঠিনি গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।
জ্বি আপু আগে থেকেই চিনতাম কিন্তু কখনো ভাবিনি তার সাথে আমার বিয়ে হবে।দেখতে দেখতে কিভাবে ১৮ বছর পার হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না। আপু অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আজ হয়তো আঠারো বছর শুনে তেমন কিছু মনে হচ্ছে না।কিন্তু আাঠরো বছর চিন্তা করলে অনেক কিছু মনে হয়।এতো গুলো বছরে সুখ দুঃখে পাশাপাশি থেকে ভালো মন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া এতোটা সহজ ছিল না বলে আমি মনে করি।আপনাদের সম্পর্ক টা অনেক কাছ থেকে দেখেছি। খুব ভালো লাগে আপনাদের দুজনকে।আজ হয়তো আঠারো বছর কিন্তু আমি চাই এভাবে শত বছর আপনারা হাতে হাত ধরে থাকবেন।আপনাদের জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
হ্যাঁ সংখ্যায় গুনতে গেলে তেমন কিছুই না ১৮ কিন্তু দিনক্ষণ হিসেব করলে নিজেই অবাক হয়ে যাই এতগুলো সময় একটা মানুষের সাথে সুখেদুঃখে দিন কাটিয়েছি সত্যি অনেক অবাক লাগে।মন থেকে দোয়া করবেন ভাবি আজীবন যেনো এভাবেই একে-অপরের পরিপূরক হয়ে থাকতে পারি।অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাবি।
আজকের এই পোস্ট এর মধ্য দিয়ে আমি আপনার জীবনের অনেক ইতিহাস জানতে পারলাম। বিয়ে হওয়া ১৮ বছর পার হয়েছে। উনি রাজশাহীতে পোস্টিং ছিলেন। বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাজানো আজকের এই পোস্ট। বিবাহ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় যেটা আপনার পোষ্টের মধ্যে দিয়ে বুঝতে পারলাম। সবাইরে বলবো খুবই ভালো লাগলো এত সুন্দর একটা পোস্ট পড়ে।
জ্বি ভাইয়া, আগামী পর্বে আরও বিস্তারিত ভাবে জানাবো।মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।