অসমাপ্ত প্রেম পর্ব -১💔
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমি একটি অসমাপ্ত প্রেমের কাহিনি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
ভালোবাসা একটি মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ কোনো মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ভালোবাসা।মানুষের জীবনে কখন কার সাথে ভালোবাসা হয়ে যাবে তা কেউ বলতে পারে না।ঠিক তেমনি আশিক প্রিয়ার জীবনে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই ভালোবাসা এসেছিলো।
অসমাপ্ত প্রেম
মূল চরিত্রের নাম |
---|
আশিক(ছদ্মনাম) |
বয়স-৩৫-৩৬ |
বৈবাহিক অবস্থা বিবাহিত |
দুই সন্তানের পিতা |
প্রিয়া(ছদ্মনাম) |
বয়স-২৫-২৬ |
বৈবাহিক অবস্থা সদ্য বিবাহিতা |
আশিক খুবই ভালো একটি চাকরি করে তার বদলির চাকরি। তাই তাকে বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে হবে এটাই স্বাভাবিক।হঠাৎ একদিন আশিকের বদলির খবর আসে আর এতে করে সে খুবই খুশি হয়।তার কারণ হলো যেখানে বদলি হয়েছে সেখান থেকে তার গ্রামের বাড়ির দূরত্ব খুবই কম।তার স্ত্রী একজন শিক্ষিকা হওয়ায় তাকে নিজস্ব এলাকায় থাকতে হয়।আশিক যেকোনো সময় তার পরিবারের সাথে দেখা বা তারাদেরকে সাহায্য করতে পারবে এই ভেবেই সে অনেক খুশি।আনন্দ এবং অনেক স্বপ্ন নিয়ে সে তার কর্মস্থলে যোগদান করেন।তার অফিসের পাশেই মোটামুটি একটি ছোট্ট বাসা ভাড়া করেন,সেখানে সে থাকবে বলে।মাঝে মাঝে তার পরিবার আসবে এভাবেই বেশ ভালোই দিন কেটে যাবে তার।
আশিক তার নতুন বাসায় ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছে,নির্ধারিত সময়ে নিজস্ব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে তার বাসায় উঠে পড়লো।সাধারণত বাসায় কোনো নতুন ভাড়াটিয়া আসলে বাড়িওয়ালা এবং তার পরিবারের লোকজন অবশ্যই সেখানে দেখা সাক্ষাৎ করতে আসেন,কেমন ভাড়াটিয়া আসলো দেখার জন্য।সেদিন বাড়িওয়ালা আঙ্কেল আন্টি এবং তার একমাত্র কন্যা প্রিয়া আশিকের রুমে আসেন তার সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য।সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরে তারা তাদের বাসায় চলে যান।আশিক দেখতে বেশ সুদর্শন এবং সেই সাথে ভালো একটা চাকরি করেন তাই তাকে প্রথম দেখাতেই যে কোনো মেয়ের ভালো লেগে যাবে এটাই স্বাভাবিক।ঠিক সেরকমই হয়তো প্রিয়ার প্রথম দেখাতেই আশিকের প্রতি একটা ভালো লাগা তৈরি হয়েছিলো!
একদিন প্রিয়া ফেসবুকে আশিকের প্রোফাইল দেখতে পায় এবং সে দেখেই বুঝতে পারে এটা তার দোতলার ভাড়াটিয়া আশিক।তাই সে আর দেরি না করে সাথে সাথে আশিককে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়।প্রিয়ার মতো হয়তোবা আশিকেরও প্রথম দেখাতেই প্রিয়ার প্রতি নজর কেড়েছিলো।তাই সে আর দেরি না করে তার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করে।তারপর মেসেঞ্জারে হাই,হ্যালো হয়।আস্তে আস্তে কথা বাড়তে থাকে। আশিকের পরিবার দূরে থাকে,সে কারণেই সে নিঃসঙ্গতা অনুভব করে। আর এই নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্য প্রিয়ার সাথে কথা বলে এবং তার সময়টা বেশ ভালোই কেটে যায়।প্রিয়া সদ্য পড়াশোনা শেষ করেছে। তার সহপাঠী একজনের সাথে কাবিন হয়ে আছে।ওর হাজবেন্ড ঢাকায় পড়াশোনা নিয়ে খুবই ব্যস্ত তাকে যে করেই হোক একটা ভালো চাকরি পেতে হবে তবেই সে প্রিয়াকে তার ঘরে উঠাতে পারবে।আর এজন্য প্রিয়া কে সে খুব একটা সময় দিতে পারে না।আর এখান থেকেই প্রিয়ার নিঃসঙ্গ জীবন শুরু।প্রিয়াও হয়তোবা ওর নিঃসঙ্গতা কাটাতেই আশিকের সাথে কথা বলা শুরু করে।আর কথা বলার এক পর্যায়ে যে ওদের সম্পর্ক হয়ে যাবে সেটা হয়তোবা সে বুঝতে পারেনি।
যতোই দিন যাচ্ছে তাদের সম্পর্কের গভীরতা আরো বেড়ে যাচ্ছে।আশিক ছেলে হিসেবে বেশ ভালো আর তাই বাড়িওয়ালা থাকে খুবই ভালোবাসে এবং নিজের ছেলের মতোই মনে করে। এদিক থেকে প্রিয়া এবং আশিকের জন্য বিষয়টা আরো সহজ হয়ে যায়।দুজনেই অগাধে মেলামেশা করতে সুযোগ পায়।আর এভাবেই একদিন তাদের সম্পর্ক গভীর থেকে আরো গভীরতা পায়।তারা একে অপরের প্রতি এতোটাই আসক্ত হয়ে পড়ে যে তারা এক নিমেষেই সবকিছু ভুলে যায় যে,তাদের পরিবার আছে সন্তান আছে এবং প্রিয়া সদ্য বিবাহিতা।সবকিছু ভুলে তারা যেনো সুখের সাগরে ভাসছে আর এভাবেই তাদের দিন খুবই সুন্দর কেটে যাচ্ছিলো।আশিক আস্তে আস্তে তার পরিবার ভুলে যেতে লাগলো সে যতোটুকু সময় পায় প্রিয়ার সাথে কাটায়।আশিক খুব একটা বাড়িতে যায় না,ঠিক প্রিয়াও তাই দিনের বেশিরভাগ সময় ও আশিকের সাথে কাটায় এবং ফোনে কথা বলেই দিন পার করে।আর এভাবেই ওর হাজবেন্ডের সাথে আস্তে আস্তে ওর দূরত্ব তৈরি হয়।ওর হাজবেন্ড বিষয়টা খুব একটা আমলে আনতে পারে নাই এজন্য যে সে পড়াশোনা নিয়ে খুবই ব্যস্ত। হয়তোবা কাছাকাছি থাকলে এরকম হতো না অনেক আগেই বুঝে ফেলতো।
একদিন হঠাৎ করেই প্রিয়া আশিক কে একটি সুখবর জানায় যে সে মা হতে চলেছে,আর এতে সে খুবই খুশি। কিন্তু এই খবর শোনার সাথে সাথে আশিকের মাথায় যেনো বজ্রপাত ঘটলো!কারণ আশিক এই খবর শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।এতক্ষণে হয়তোবা আশিকের হুশ ফিরে এসেছে যে সে বিবাহিত এবং দুই বাচ্চার বাবা!প্রিয়া তো খুশিতে আত্মহারা সে কি করবে না করবে বুঝে উঠতে পারছে না।এই খুশির সংবাদ কে কেন্দ্র করেই শুরু হয়ে যায় আশিক প্রিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব।আশিক কোনোভাবেই চাচ্ছিলো না বাচ্চাটা পৃথিবীতে আসুক!কিন্তু প্রিয়া এ কথা মানতে নারাজ। সে এক পর্যায়ে আশিক কে চাপ দিতে লাগলো তাকে বিয়ে করার জন্য। আশিক তো এই কথা শুনে আরো হতভম্ব হয়ে গেলো সে কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না।সে যে চাকরি করে তাতে এটা যদি জানাজানি হয়ে যায় তাহলে প্রথমে তার চাকরি থাকবে না।তারপর তার পরিবারকে হারাবে তারপর তার সন্তানদের সামনে ছোট হয়ে যাবে। এগুলো ভাবতে ভাবতে যেনো আশিকের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছিলো।সে প্রিয়াকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু প্রিয়া আশিকের প্রেমে এতোটাই হাবুডুবু খাচ্ছিল যে সে কোনোভাবেই কিছু বুঝতে চাইছিলো না।চলবে...
পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন
অসমাপ্ত প্রেম পর্ব শিরোনামে গল্পের ১ম পর্ব অনেক সুন্দর লিখেছেন আপু। আশিক-প্রিয়া আমাদের সমাজেরই মানুষ। এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। দুজন বিবাহিত নারী-পুরুষের অনৈতিক সম্পর্ক শুধু দুজনের ক্ষতি করেনা, দুটি পরিবারের সুখ-শান্তি-মর্যাদা নষ্ট করে দেয়। এধরণের সম্পর্কে ভালোবাসা থাকেনা, থাকে লোভ আর মোহ। সমাজের বাস্তবতার নিরিখে লেখা আপনার গল্পটি ভালো লেগেছে। ২য় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভাবছি কি করবে এখন আশিক? তবে কি হবেই বা প্রিয়ার।বেশ সাসপেন্স এর একটি সিরিজ লেখতে শুরু করেছেন। এটা অবশ্য আশিক আর প্রিয়ার ব্যাপার নয়। এটা বর্তমানে হাজারও প্রেমিক প্রেমিকার কাহিনী। অপেক্ষায় রইল ডিয়ার গল্পের পরবর্তী সাসপেনসন্স জানার জন্য।
আশিক আর তার স্ত্রীর সময়টা তো প্রথম থেকে ভালই ছিল। দুইজন দুই জায়গায় থাকলেও খুব ভালো চাকরি করছিল। তবে একটু কাছাকাছি বদলি হয়ে দেখছি সর্বনাশটা হলো। আসলে মানুষ অন্যায় করার আগে প্রথমে চিন্তা করেনা যে, সে অন্যায় করছে। কিন্তু যখন এর একটা ফসল ফলে গেল তখন আর মানতে পারছে না। আশিকের আগেই চিন্তা করা উচিত ছিল যে তার স্ত্রী এবং সন্তান আছে। শুধু শুধু প্রিয়ার সাথে জড়ানো উচিত হয়নি। এখন আর ওকে এড়িয়ে কি করবে। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। গল্পটা বেশ সুন্দর ছিল আপু।
প্রেম ভালোবাসা কখনো শান্তিবয়ে আনে না অশান্তি ব্যতিরেকে। এটা শুধু আজকের কথা না এটা বহু কাল থেকেই সুস্পষ্ট। বিয়ের পর কখনোই এরকম খারাপ সম্পর্কের মধ্যে কোন ছেলে বা মেয়ের জড়ানো উচিত বলে মনে করছি না আমি। কেননা এটা সত্যিকার অর্থেই মানুষকে অনেক বেশি ক্ষতির সম্মুখীন করে দেয়। যেমন আপনার গল্পের আশিকের জীবনে হয়েছে। প্রিয়া সে তো তার স্বামীকে ঠকিয়েছে। সো দু দিক থেকেই দুজনে অনেক বেশি কষ্টের সম্মুখীন হবে এটাই স্বাভাবিক।। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি অপেক্ষা করছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।