মহানবমী পূজার কিছু সুন্দর মুহুর্ত। shy-fox 10%
হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগ বাসী সবাইকে আমার নমস্কার, আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন? ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
মহানবমীর গুরুত্ব
সমস্ত তিথি নক্ষত্র হিসেব করে চন্দ্রের অবস্থান দেখে।সেই অনুযায়ী মাসের তিরিশ দিনকে শুক্ল ও কৃষ্ণ এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মহানবমী শুক্লানবমী যাকে শাস্ত্রে বলে উগ্রপদা। নবমী তিথিতে নাকি মানুষের উত্তেজনা বাড়ে অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অপরাধের প্রবনতা বাড়ে অশুভত্বের দিকে মানুষ নবমীতে বেশি ঝুঁকে যায়। এই অশুভত্বকে বিনাশ করে শুভশক্তির জয়ের জন্য আমার সেই দেবী দূর্গারই শরন নেই। তাই এই মহানবমী তিথিকেই অন্য নবমী তিথির মধ্যে শুভ ধরা হয়।জপ,তপ উপাসনা এইসব তাই এই তিথিতে বেশি করতে বলা হয়।
এবারের পূজা আমাদের একটু অন্যরকমের হয়েছে, তার কারন হলো আমাদের বাড়ির সবাই কালাশৌচ এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবে না। গতবছর আমার মা মারা যায় তার এখনো এক বছর পূর্ণ হয়নি তাই আমার দাদা বৌদিরা কালাশৌচ এ আছেন, আর আমার ঠাকুমা ছয় মাস আগে মারা যান তাই আমার কাকা কাকিমারাও কালাশৌচ এ আছেন তাই বাড়ির কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবে না। আমাদের বাড়ির পূজা সম্পর্কে আমি আগে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি, যতকিছুই হোক না৷ কেন আমাদের বাড়ির পূজা কখনো বন্ধ থাকবে না,তাই বাইরের মানুষ দিয়ে পূজার কাজ করাতে হয়েছে এবার সাথে আমিও কিছু কাজ করেছি তাই সব পূজার মুহূর্ত গুলো ধারন করতে পারিনি ঠিকমতো সেজন্য নবমী পূজা দিয়েই শুরু করলাম।
সকালে স্নান সেরে সোজা মন্দিরে আসি তারপর মায়ের মুখ দর্শন করে চলে যাই সোজা ভোগ রান্নার স্থানে। পুরোহিত মশাই এর দিদি সেখানে সমস্ত ভোগ রান্না করেন আর আমি এবং এক বৌদি মিলে তাকে হাতে হাতে সব কাজে সাহায্য করি। আমরা সব আয়োজন করে দেই আর দিদা ভোগ রান্না করে।
মন্দিরে দুজন পুরোহিত মশাই এর সাথে কাজে সাহায্য করেন তারা পূজার সকল আয়োজন করে দেন। পুরোহিত মশাই খুব ভোরে ভোরেই আসেন তার কারন এবারের পূজা খুব সকাল সকাল শুরু হয়েছে। মন্দির ধোয়া মোছা খুব ভোরেই করে রাখেন যারা মন্দিরের কাজে নিয়োজিত ছিল তারপর পুরোহিত মশাই এসে সবকিছু ঠিকঠাক মতো সাজিয়ে নিয়ে পূজা আরম্ভ করেন। প্রথমে মহাস্নান দিয়ে পূজা শুরু হয় তারপর বাকি সব আচার অনুযায়ী পূজা হয়।
এবার ভোগ নিবেদন করে, আরতি দিয়ে মায়ের পূজা শেষ হয়। তারপর সবাই মিলে অঞ্জলি দেওয়া ও ভক্তিভরে মাকে প্রণাম জানানো হয়। তারপর শুরু হয় হোম-যজ্ঞ।
হোম-যজ্ঞ
নবমীর বিশেষত্ব হলো হোম-যজ্ঞ। আঠাশটা নিখুঁত বেলপাতা বা একশো আটটা বেলপাতা লাগে। বালি দিয়ে যজ্ঞের মঞ্চ বানিয়ে বেলকাঠ দিয়ে নিয়ম মেনে সাজিয়ে পাটকাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে, ঘিতে বেলপাতা চুবিয়ে মন্ত্র পাঠ করে নিবেদন করা হয় এভাবে সবগুলো বেলপাতা নিবেদন করা হয়। এরপর কলা বেধে পান ঘিতে চুবিয়ে পূর্ণাহুতি দেওয়া হয় তারপর তার মধ্যে দই, খই দেওয়া হয় ও দুধ দিয়ে আগুন নিভানো হয়।তারপর সবার কপালে যজ্ঞের ফোটা লাগনো হয়। হোম-যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মহানবমী পূজা।
এরপর প্রসাদ বিতরণ করা হয়। ভোগের পাশাপাশি বাইরে আলাদা ভাবে খিচুড়ি সবজি রান্না করা হয় তারপর পুরো গ্রামবাসীকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
এই ছিল আমাদের মহানবমী পূজার কিছু সুন্দর মুহুর্ত।
আজ এই পর্যন্তই আবার দেখা হবে অন্য কোন সময়ে অন্য কোন বিষয় নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
আকাশী রঙের শাড়িতে বেশ ভালোই লাগছে আপনাকে দেখতে , বৌদি । যাইহোক আপনার পুজোর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য, ধন্যবাদ।
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া। আকাশীরং এর শাড়িটি আপনার দাদা পছন্দ করে কিনে এনেছিল আমারও খুব পছন্দ হয়েছে,তাই ভাবলাম শাড়িটি পড়ে একটা সেলফি তুলে ফেললাম আর সবার সাথে শেয়ার করলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া। 🙏