ছোট মেয়ের বৃত্তি পরীক্ষার কিছু মুহুর্ত। shy-fox 10%
হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগ বাসী সবাইকে আমার নমস্কার আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
২০০৮ সালে সর্বশেষ প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ২০০৯ সাল থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চালু হওয়ার পর থেকে আলাদা বৃত্তি পরীক্ষা আর হয়নি। করোনার কারনে গত দুই বছর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ২০২৩
সাল থেকে বাস্তবায় শুরু হতে যাওয়া নতুন শিক্ষাক্রমের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাদ দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার।
হুট করেই বৃত্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত জানানো হয় তাই বাচ্চারার বৃত্তি পরীক্ষার জন্য বাড়তি কোন প্রস্তুতি নিতে পারেনি।বোর্ড বই থেকে সকল প্রশ্ন করার হবে জেনে একটু ভালো লেগেছিলো তার কারন হলো আমি আমার বাচ্চাকে আগে বোর্ড বই পড়তে বলি তারপর অন্য পড়া। আমার মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী তাই স্কুলে ওদেরকে সবসময়ই বোর্ড বই পড়ার উপরে জোর দেয় টিচাররা।
দেখতে দেখতেই সময় চলে গেলো এবং পরীক্ষার দিন চলে আসলো। বাচ্চাদের পরীক্ষা মানেই মায়েদের চিন্তার পাহাড় মাথায় চলে আসা। আর আমি এমনিতেই চিন্তা করার দিক দিয়ে সবসময়ই এগিয়ে থাকি সেজন্য আমার হাসবেন্ড আমাকে বলে তোমার মাথা হলো চিন্তার কারখানা।😀 কি করবো বলেন চিন্তা তো করতে চাই না কিন্তু হয়ে যায়।বাচ্চাদের ছোট থেকেই একা লালনপালন করছি তাই ওদের ভালো মন্দ সবকিছু দেখার দায়িত্ব আমার।
সকাল দশটায় পরীক্ষা শুরু হবে।আমরা নয়টা বাজার সাথে সাথেই বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়লাম। পরীক্ষার কেন্দ্র আমাদের বাসার কাছেই তারপরও তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে পড়লাম যাতে কোনভাবে কোন সমস্যার মধ্যে না পড়তে হয়। স্কুল গেইটের সামনে সবার সিট প্লান লাগানো হয়েছে, আমি মেয়ের রোল নম্বর দেখে নিলাম ওর সিট পড়ছে ১২৮ নম্বর রুমে। স্কুলের ভিতরে ঢুকলাম চারদিকে খুঁজতে থাকলাম কোথায় ১২৮ নম্বর রুম কিন্তু কোথাও দেখতে পাচ্ছিলাম না আর কেউ বলতেও পারছিলো তার কারন এখানে সবাই নতুন আগে কেউ এই স্কুলে আসেনি আমিও তাই।
বাসার কাছে স্কুল হলেও আগে কখনো হাইস্কুলে ঢোকা হয়নি তাই ঠিকঠাক কিছু চিনিও না। খুব টেনশন হচ্ছিলো তারপরও নিজের মন কে শান্তনা দিচ্ছি যে অনেক সময় হাতে আছে এর মধ্যেই খুজে পাবো। দোতলায় তিনতলায় দুইবার করে খুঁজে আসলাম কিন্তু কোথাও নেই। মনে মনে চিন্তা আরও বেড়ে যাচ্ছিলো চারদিকে শুধু ঘুরছি কিন্তু কোথাও ১২৮ রুম খুঁজে পাচ্ছি না এর মধ্যেই হঠাৎ করে মেয়ের স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জাকিয়া ম্যামের সাথে দেখা হলো আমাকে জিজ্ঞেস করলো অর্থী কত নম্বর রুমে আমি বললাম ১২৮ নম্বর তখন ম্যাম আমাকে হাত দিয়ে দেখিয়ে দিলেন যে ঐ লাল বিল্ডিং এ যান ওখানে আছে আমি তো ঐ বিল্ডিং এর সামনেই কতবার গেছি কিন্তু ভাবতে পারিনি ওখানে সিট আছে কারন বিল্ডিং টা একদম পুরাতন ভাবছিলাম এখানে হয়তো হবে না তাই ভিতরে ঢুকিনি।
যাক অবশেষে মেয়ের সিট খুঁজে পেলাম আস্তে আস্তে অন্য শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করলো। আমার মেয়ের সিট একদম প্রথমেই এবং জানালার ধারে তাই লিখতে ওর বেশ ভালোই সুবিধা হবে। শিক্ষার্থীর চেয়ে অভিভাবক অনেক বেশি এসে পুরো রুম টা মনে হয় মাছের বাজারের মতো পরিবেশ হয়ে গেলো সব বাবা মা রা এত বেশি কথাবার্তা শুর করেছে তা বলার মতো না মনে হয় সব পড়া এখানে এসেই পড়াচ্ছেন আর যত উপদেশ আছে সব দিচ্ছেন। আমি মেয়েকে নিয়ে বেশ চুপচাপ বসে আছি। মেয়েকে ভয় না দেখিয়ে সাধারণ কথাবার্তা বলতেছি যাতে করে ওর ভিতরে ভয় কাজ না করে। তারপর মেয়েকে বললাম আসো দুজনে একটা সেলফি তুলি আমার মেয়ে এগুলো খুব পছন্দ করে তাই ওকে খুশি রাখার জন্য মা মেয়ে মিলে সেলফি তুললাম।
৯.৪৫ এ পুলিশ এসে সব অভিভাবকদের রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে বললেন তারপর সবাই রুম থেকে বেড়িয়ে মাঠের মধ্যে চলে গেলাম। মাঠে তখন প্রচুর কুয়াশা পড়ছে সূর্য উঠেনি প্রচুর ঠান্ডা কিন্তু তারপরও সব অভিভাবকরা কষ্ট করে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। সবাই অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকলাম কখন পরীক্ষা শেষ হবে কখন আসবে সেই আশায়।
দেখতে দেখতে দুই ঘন্টা সময় পেরিয়ে গেলো পরীক্ষা শেষের ঘন্টা পড়লো তখন আস্তে আস্তে সবাই গেইটের দিকে এগিয়ে গেলাম কয়েকটা বাচ্চা খুব কান্না করতে করতে বেড়িয়ে আসলো তা দেখেই আমার খুব খারাপ লাগছিলো পরে ওদের কে জিজ্ঞেস করলাম তোমরা কান্না করছো কেনো তখন ওরা বললো আমরা ভালো লিখতে পারিনি তাই তখন আমার খুব টেনশন হচ্ছিলো তাহলে কি আমার মেয়েও কান্না করতে করতে বেড়িয়ে আসবে ও কি লিখতে পারেনি এসব ভেবে খুবই টেনশন হচ্ছিলো। কিছুক্ষণ পর মেয়ে বেড়িয়ে আসলো ওকে জিজ্ঞেস করলাম মা তুমি সব লিখতে পেরেছো? ও হাসি মুখে বললো হ্যাঁ আমি সব পেরেছি তখন খুবই ভালো লাগলো পরে কি রেজাল্ট হবে জানিনা তবে ও সবকিছু ঠিকঠাক লিখতে পেরেছে এটাই অনেক।
রিতু আমিন ভাবির মেয়ে জাহিরা আমাদের সাথে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েছিলো ও আমাদের সাথে থাকতে বেশি পছন্দ করে তাই মাঝে মাঝে ওকে সাথে নিতে হয় তা না হলে কান্না করে। দুজনে মিলে ছবি তুলে তারপর আমরা বাসায় চলে আসলাম।
আমার মেয়ের জন্য আশীর্বাদ, দোয়া করবেন যাতে আগামীতে ভালো ফলাফলের খবর আপনাদের জানাতে পারি। আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
আপু বিষয়টা জেনে বেশ ভালই লাগলো ভাগ্নি এবার বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছে। আশা করি এমন মায়ের মেয়ে খুব ভালো একটি রেজাল্ট করবে। কি আর করার বলেন একা হাতে সব আপনাকে সামলাতে হবে আপু। বৃত্তি পরীক্ষা বলে কথা তার জন্য আপনার কত আয়োজন। হ্যাঁ এতদিন বৃত্তি পরীক্ষা ছিল না গভমেন্ট আবার নতুন করে বৃত্তি পরীক্ষা শুরু করেছে। এজন্য বর্তমান সরকারকে অশেষ ধন্যবাদ।
জ্বি আপু অনেক বছর পর আবারও বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হলো। মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আমার খুব ভালো লেগেছে আপু আবার বৃত্তি পরীক্ষাদেওয়ার জন্য সরকার অনুমতি দিয়েছেন তাই। সমাপনী পরীক্ষা বাচ্চাদের জন্য অনেক ভালো একটি উদ্যোগ।হঠাৎ করে ঘোষণা করায় বাচ্চাদের জন্য একটু বিভ্রান্তিকর হওয়া স্বাভাবিক।বাচ্চাদের পড়ালেখা মানে তো মাদের ঘুম হারাম হয়ে যাওয়া।আশা করি আপনার মেয়ের পরীক্ষা অনেক ভালো হয়েছে এবং শুভকামনা রইল।
বাচ্চাদের পড়াশোনার চিন্তায় প্রতিটি মায়ের একই অবস্থা হয়ে যায়। ঠিক বলেছেন আপু বাচ্চাদের জন্য অনেক ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করেছেন তার জন্য।
আপু আপনার মেয়ের জন্য শুভ কমনা রইলো।আসলেই করোনার জন্য অনেক পরীক্ষাই হয়নি কিংবা পিছিয়ে দিয়েছি।যাই হোক বৃত্তি পরীক্ষা বোর্ড বই থেকে প্রশ্ন আসলে আশা করি সমস্যা হবে না।আসলে মায়েদের মনে হয় চিন্তার কারখানা থাকে। আপু আপনার মেয়ের জন্য দোয়া রইলো। ধন্যবাদ
একদম ঠিক বলেছেন আপু সন্তানের চিন্তায় প্রতিটি মায়ের মাথা চিন্তার কারখানা হয়ে যায়। হ্যাঁ সব প্রশ্ন বোর্ড বই থেকে হয়েছে জন্য ভালো হয়েছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপু আপনার মেয়ের জন্য শুভকামনা রইলো। আমার সেই ছোট বেলার কথা মনে পরে গেলো। যদিও আমি বৃত্তি পরীক্ষা পাইনি। তবে আমি ছিলাম সমাপনীর ২য় ব্যাচ। মানে ২০১০ এ আমি সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছিলাম। দোয়া রইলো আপু। আপনার মেয়ে অনেক ভালো ফলাফল করবে।
২০০৮ সালের পর থেকে বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে তাই আপনি পাননি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমার মেয়েকে দোয়া জানানোর জন্য।
ইনশাআল্লাহ আপনার মেয়ে বৃত্তি পাবে দেখবেন 🤗
পরিক্ষা শেষ করে সে কনফিডেন্স নিয়ে বলেছে সে সব পেরেছে এটাই বড় বিষয়।
মায়েদের সত্যিই অনেক দুশ্চিন্তা হয়, আমার স্ত্রী ঠিক এরকম ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় ।
ধন্যবাদ আপু চমৎকার অনুভূতি মেশানো পোস্টটি উপহার দেয়ার জন্য।
দোয়া রইল আপনার মেয়ের জন্য।
ভাইয়া আপনার কথা যেনো সত্যি হয়,তাহলে আমার মতো খুশি আর কেউ হবেনা।ঠিক বলেছেন ভাইয়া কনফিডেন্সের সহিত বলেছে যে সব লিখতে পারছে এটাই অনেক ভালো লাগকর বিষয়।পৃথিবীর সব মায়েরাই একরকম হয় সবসময়ই বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তা। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
হুট করে একদিনের বৃত্তি পরিক্ষা,বিষয়টা শুনে আমার কাছে বেশ মজাই লেগেছিল।
শুভ ভাইয়ার আম্মুও তো বোধয় গিয়েছিল তার স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে।
ইনশাল্লাহ অর্থি অনেক ভালো রেজাল্ট করবে☺️।জাহিরাকে সাথে দেখে ভালো লাগলো।
হ্যাঁ একদিনের পরীক্ষা আর খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়েছে সবমিলিয়ে বেশ ভালোই একটা সময় পার করতে হয়েছে। ময়না আন্টির সাথে আমার দেখা হয়নি উনি হয়তোবা ব্যস্ত ছিলেন পরীক্ষা নিয়ে। দোয়া করিও ভাই তাই যেনো হয়।ধন্যবাদ ভাই। ❤️
আপনার মেয়ে এবার বৃত্তি পরীক্ষা দিয়েছে জেনে অনেক খুশি হলাম। ওর পরীক্ষা ও ভালো হয়েছে এটা জানি ও ভীষণ ভালো লেগেছে। টেনশন হওয়ারই কথা কারণ বাচ্চাদের পরীক্ষা আসলে সব বাবা-মা টেনশন করে বেশি। ঠিকঠাক মতো এবার রেজাল্ট বেরিয়ে পড়লেই ভালো হয়। আপনার মেয়ের জন্য অবশ্যই অনেক অনেক দোয়া এবং ভালবাসা রইল। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
জ্বি ভাইয়া মোটামুটি ভালোই পরীক্ষা দিয়েছে এখন ভালো একটা রেজাল্টের আশায় আছি।আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসা আমার জন্য অনেক অনেক বড় পাওয়া। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
সব প্রশ্ন লিখতে পারছে শুনে ভালো লাগলো ৷ আসলে শিক্ষা বোর্ড এখন তো সবকিছু পরিবর্তন করছে ৷ তবে বৃত্তি পরীক্ষা দিয়েছে ভালো হয়েছে ৷
আপনাদের সিট খুজতে অনেকটা প্রবলেম হয়েছে ৷ অবশেষে পেয়েছেন ভালো লাগলো ৷ যা হোক এখন অপেক্ষা রেজাল্ট ৷ দিদি মেয়ের যত্ন নিবেন ৷
হ্যাঁ ভাই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছে,বাকিটা ভগবান ভরসা। ঠিক তাই এখন রেজাল্টের অপেক্ষা। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
জী আপু বেশ কয়েকদিন আগে শিক্ষা মন্ত্রী ঘোষনা করে যে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরা এবছর বৃত্তি পাবে। ঘোষনা শুনার সাথে সাথে গার্জিয়ান সহ ছাত্র-ছাত্রীরা বৃত্তি পরিক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকে। আশা করি আপনার মেয়েও সফল ভাবে পরিক্ষা দিয়ে বৃত্তি পাবে। ধন্যবাদ আপু।