ভালো মানুষ।
"হ্যালো"
আমার বাংলা ব্লগবাসী সবাইকে আমার নমস্কার আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি,সুস্থ আছি।
বর্তমান সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যা খুবই কম। তবে কিছু সংখ্যক মানুষ রয়েছে যারা বিভিন্ন ভাবে নিজের ভালো মানুষের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।তবে
ভালো মানুষকে চেনা খুবই কঠিন। অনেকেই রয়েছেন যারা ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে চলাফেরা করেন সমাজে। এই সকল মানুষ থেকে দূরে থাকবেন। তবে প্রকৃত অর্থে কিছু সংখ্যক মানুষ রয়েছে যারা সত্যিকার অর্থে অনেক ভালো।সুন্দর মানুষ সবসময় ভালো হয় না, কিন্তু ভালো মানুষ সবসময় সুন্দর হয়।
নিজের এলাকায় আসার পর থেকেই আমি একা হাতে সবকিছু সামলিয়ে চলছি। তাই আমার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হোক বা এমনিতেই শখের জিনিসপত্র কেনা হোক তার জন্য আমি নির্দিষ্ট কিছু দোকান নির্বাচন করেছি,যে দোকান গুলো থেকে আমি নিরদ্বিধায় নিজের প্রয়োজনীয় সবকিছু কেনাকাটা করতে পারি এবং দাম ও মানেও ভালো পাই।যেমন একটা মুদিখানার দোকান আছে সেই দাদার কাছ থেকে আমি সারা মাসের জিনিসপত্র কিনি।তারপর একটা সবজির দোকান আছে সেখান থেকে আমি সকল প্রকার সবজি কিনি।একটা নির্দিষ্ট ডিমের দোকান আছে সেখান থেকে আমি সারা মাসের ডিম কিনি।এরকম প্রতিটি জিনিস আলাদা আলাদা নির্দিষ্ট দোকান থেকেই কেনাকাটা করি।
ঠিক সেরকমই একটা নির্দিষ্ট কুকারিজ এর দোকান আছে সেই দোকান থেকে আমার প্রয়োজনীয় জিনিস ও শখের বশে কেনা জিনিস গুলো কিনে থাকি।আশা গিফট কর্নার নাম দোকানের।ভাইয়ার নাম টা আমার সঠিক জানা নেই তবে ওনার সাথে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক হয়েছে।আমি আসার পর থেকে সকল প্রকার কুকারিজ জিনিস গুলো ওনার কাছ থেকেই নিয়েছি।ভাইয়ার ব্যবহার আমার৷ প্রথম দিন থেকেই অনেক ভালো লেগেছে তাই বার বার আমি ওনার দোকানেই যাই
মাস কয়েক আগে আমি ইনফারেড চুলা কিনেছি যাতে করে গ্যাস সাশ্রয় হয়।ইনফারেড চুলায় নির্দিষ্ট কিছু হাঁড়িপাতিল ব্যবহার করতে হয় যাতে করে খুব তাড়াতাড়ি রান্না করা যায়।আমি চুলার সাথেই এট্ ননস্টিক কড়াই ভাইয়ার দোকান থেকেই কিনেছিলাম।রুটি ভাজার জন্য একটা তাওয়া নিতে চাইলাম কিন্তু ভাইয়ার দোকানে সেদিন রুটি ভাজার তাওয়া ছিলো না। ভাইয়া বললো দিদি আপনি কয়েদিন পর আসেন আমি তাওয়া এনে দিবো।কিন্তু সে কথা আমার হাসবেন্ড মানলে তো,তার মনে হয়েছে সে আজকেই কিনবে।কি আর করা পাশের দোকানে গেলাম তাওয়া কেনার জন্য।দোকানদার কে বললাম একটা ননস্টিক এর তাওয়া দিন যেটা ইনফারেড চুলায় সাপোর্ট করে।দোকানদার কিয়াম এর একটা তাওয়া বের করলেন আমরা বার বার জিজ্ঞেস করেছিলাম যে এটা কি ইনফারেড চুলায় সাপোর্ট করবে,উনি গ্যারান্টি দিয়ে বললো অবশ্যই সাপোর্ট করবে।
দোকানদারের কথামতো ১১শ দিয়ে তাওয়া কিনে আনলাম।পরেদিন রুটি ভাজতে গেছি অনেক সময় ধরে চুলায় বসিয়ে রাখছি কিন্তু তাওয়া কোনভাবেই গরম হচ্ছে না!কি একটা অবস্থা।কি আর করা পরেরদিন দোকানে গেলাম ফেরত দিতে কিন্তু দোকানদার কোনভাবেই তাওয়া ফেরত নিবেন না।তার কথা ব্যবহার করা জিনিস আমি ফেরত নেই না।অনেক কথাবার্তা বলেও কোনো লাভ হলো না,অবশেষে বাসায় ফিরে আসলাম।তখন থেকে গ্যাসের চুলায় রুটি ভাজি।আসলে যে তাওয়া আমাকে দিয়েছে ওটা গ্যাসের চুলার জন্যই প্রযোজ্য।
কিছুদিন পর আশা গিফট কর্নারে একটা চায়ের পাতিল কিনতে গেছি, তখন এই বিষয় টা ভাইয়ার সাথে শেয়ার করলাম।ভাইয়া শোনার সাথে সাথেই বললো দিদি আপনাকে তো আমি বলেছিলাম দু'দিন অপেক্ষা করেন আমি আপনাকে এনে দিবো।যাইহোক আমি একটু লজ্জায় পড়ে গেলাম আসলেই আমাদের অপেক্ষা করা উচিত ছিলো।শেষে ভাইয়া বললো আপনি তাওয়া টা আমাকে দিয়ে অন্য একটা তাওয়া নিয়ে যান।কথাটা শুনেই আমি অবাক হলাম যে উনি কেনো অন্যের দোকানের জিনিস ফেরেত নিবেন!তাও আবার পুরাতন জিনিস।আমি বললাম দরকার নেই ভাইয়া আমি পরে একটা নতুন কিনে নিবো।উনি বললো আপনাকে কিনতে হবে না ওটা নিয়ে আসেন আমি আপনাকে একটা দিয়ে দিবো।যাইহোক কয়েকদিন পর আমি তাওয়া নিয়ে গেলাম ভাইয়া আমাকে কয়েকটা নতুন তাওয়া বের করে দিলেন আর বললেস কোনটা ভালো লাগে সেটাই বেঁছে নিন।আমি নিজের পছন্দসই একটা বেঁছে নিলাম।
ভাইয়াকে বললাম আপনাকে কত টাকা দিতে হবে?ভাইয়া বললো কোনো টাকা দিতে হবে না।আমি তো শুনে আরও অবাক।পরে আমি জোরপূর্বক ১৫০ টাকা ভাইয়ার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছি এটা আপনি চা নাশতা খাবেন,উনি তো কিছুতেই নেবেন না পরে অনেক বলেকয়ে রাজি হয়েছেন।এই বিষয় টা থেকেই বোঝা যায় উনি কতটা ভালো মানুষ।ভাইয়া শুধু একটা কথায় বললেন যে এতোদিনের সম্পর্ক এতটুকু সুযোগ যদি আপনাকে না দেই তাহলে কেমন হয়।ওনার কথাটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। ওনার ব্যবহারের কারনে আমি আমার পরিচিত যতো মানুষ আছে সবাইকে ওনার দোকানে যেতে বলি যাতে করে সবাই ভালো জিনিস এবং ভালো ব্যবহার পায়।
আসলেই পৃথিবীতে এখনো অনেক ভালো মানুষ আছে আর তাই পৃথিবী এখনো অনেক সুন্দর।
এরকম ভালো মানুষগুলো তো একেবারে চোখেই পড়ে না। এখন ভালো মানুষের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। ভালো মানুষের মুখোশ ধরে এখন বেশিরভাগ মানুষ চলাফেরা করে, যেগুলোর থেকে আমাদের দূরে থাকা অনেক বেশি ভালো। কিছু কিছু মানুষ মানবতা ছাড়েনি। তাদের মধ্যে মানবতাটা রয়ে গিয়েছে এখনো পর্যন্ত। অন্য একটা দোকানের জিনিস আরেকটা দোকানে কিভাবে ফেরত নেওয়া যায়। তাও আপনার কাছ থেকে টাকা নিতে চাচ্ছিল না। সত্যি দোকানদারটার এরকম ভালো মানসিকতার কথা শুনে খুব ভালো লেগেছে। তিনি যেন অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে এটা কামনা করি। আর এরকম মানুষ গুলো যেন হারিয়ে না যায়।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এরকম মানুষ খুব কমই চোখে পড়ে না।গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
দুনিয়াতে এখনো ওনার মানুষ অনেক মানুষ রয়েছে যাদের জন্য আজকের দুনিয়াটা এখনো সচল রয়েছে। অনেক ব্যক্তি আছে যার তরফ থেকে কোন দ্রব্য বা জিনিস ক্রয় করলে কোন সমস্যা দেখা দিলে সে ব্যাক নেয় না কিন্তু এমন মানুষও রয়েছে একজনার থেকে কিনে আরেক জনের কাছে সেটা ব্যাক দেওয়া যায়। ঠিক তেমন একটা বিষয়ে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন আপনি। যে বিষয়টা জানতে পেরে আমার ভালো লেগেছে
কিছু কিছু মানুষের মধ্যে মানবতা এখনো রয়েছে। তা না হলে শুধু পরিচয় এর খাতিরে অন্যের দোকানের জিনিস আপনাকে সুন্দর চেঞ্জ করে দিল। এরকম কোন দোকানদারই করবে না । যে দোকান থেকে কিনেছিলেন সেই দোকানদার তো চেঞ্জ করে দিলেই না। সেই দোকানদারের উচিত ছিল চেঞ্জ করে দেয়ার। কারণ সে ভুল জিনিস দিয়েছে। যাইহোক আপু এরকম ভালো মানুষগুলো এখনও রয়েছে জন্যই পৃথিবীটা এত সুন্দর।
জ্বি আপু আগের কেনা দোকানদারের উচিত ছিলো ফেরত নেওয়া কিন্তু উনি তা করেননি।কিন্তু এই ভাইয়া অনেক বড় মনের মানুষ তাই নিরদ্বিধায় পুরাতন জিনিস ফেরত নিয়ে নতুন একটা তাওয়া সাথে সাথে দিয়ে দিলেন।এটাই হলো ভালো মানুষের পরিচয়। ধন্যবাদ আপু।
পুরো গল্পটি পড়ে বুঝতে পারলাম আসলে দুনিয়াতে কিছু কিছু ভালো মানুষ এখনো আছে যার কারণেই এই পৃথিবীতে এত সুন্দর ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আবার কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের কাছেই এত আকুতি মিনতি করা মানে নিজের সম্মানটুকু নষ্ট করা কোনই কাজ হয় না ওদের কাছে। তবে অবশেষে আপনার অন্যজন থেকে কেনা তাওয়াটা ফেরত নিয়ে আপনাকে নতুন একটি তাওয়া দিলেন বেশ ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন আপু খারাপ মানুষের কাছে গিয়ে কোনকিছু বলে কোনো লাভ হয় না শুধু শুধু নিজের সন্মান নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই না।ধন্যবাদ আপু।
আসলে কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যাদের ব্যবহার অনেক বেশি সুন্দর। আর যদিও ভালো মানুষের সংখ্যা সমাজে অনেক কম রয়েছে, আর খুঁজে পাওয়া ও মুশকিল। কারণ ভালো মানুষের মুখোশ ধরে বেশিরভাগ মানুষ চলাফেরা করে। আর তারা অনেক বেশি ভয়ংকর হয় যা আমরাও পরে বুঝতে পারি না। আপনি নির্দিষ্ট একটা কুকারিজ দোকান সিলেক্ট করে রেখেছে এটা বেশ ভালোই করেছেন। অন্যান্য দোকানগুলো ও সিলেক্ট করে রেখেছেন তাহলে। দোকানদার ভাইয়াটার ব্যবহারের কথা শুনেই তো আমার কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনি তো সরাসরি দেখলেন। ভালো লাগলো
আসলেই আপু কিছু কিছু মানুষের ব্যবহার এতটাই ভালো যে তাদের দেখলে মন থেকেই সন্মান শ্রদ্ধা চলে আসে।এরকম মানুষ গুলোকে কাছ থেকে দেখলেও অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপু।