গ্রীন ক্যাফেতে কাটানো কিছু মুহুর্ত। shy-fox 10%
হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগ বাসী সবাইকে আমার নমস্কার, আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন? ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি, সুস্থ আছি।
কিছুদিন আগে রংপুর এ ঘুরতে গেছিলাম আমার কাকার বাসায়। রংপুর আমার বাড়ি থেকে মোটামুটি কাছেই কিন্তু কখনো সেভাবে রংপুর শহরে যাওয়া হয়নি।খুব ছোটবেলায় একবার রংপুর এ গেছিলাম আমার এক দিদির বিয়ের সময়। এরপর আর একবার গিয়েছিলাম মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্য, তাই পুরো শহর সেভাবে দেখা হয়ে ওঠেনি। তাই এবার হাতে সময় নিয়েই রংপুর এ ঘুরতে গেছিলাম।
রংপুরে যাওয়ার পর আমি আমার ছোট ভাই রাহুল কে ঢাকা থেকে ফোন করে নিয়ে আসি রংপুর এ। রংপুর শহরের আমি কিছুই চিনি না তাই ওকে নিয়ে আসা।
রাহুল আসার পর প্রায়ই প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাওয়া হতো।
একদিন সকালের খাবার খেয়ে আমরা বেড়িয়ে পড়লাম তাজহাট জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে। জমিদার বাড়ি চারদিক ভালো করে ঘুরে দেখে বের হওয়ার সময় দেখলাম রাস্তার ওপর পাশে ছোট্ট একটি ক্যাফে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে একবারেই নতুন হয়েছে। টিনের চালা,ও বাঁশের বেড়া দেওয়া। ক্যাফের মালিক রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে সবাই আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন যাতে ওনার দোকানে এসে বসেন। ঠিক তেমনি আমাদেরকেও বসতে বললেন, আমরা কিছু না ভেবেই ওনার ক্যাফেতে ঢুকলাম ভাবলাম এত করে যখন বলছে আমাদের যাওয়া উচিত।
ক্যাফের মালিক যিনি উনি দীর্ঘ সময় প্রবাসে ছিলেন।অনেক বছর থাকার পরে উনি সিদ্ধান্ত নেন যে দেশে এসে কিছু করবেন।তাই ওখানকার পাট চুকিয়ে দেশে এসে বাসার পাশেই জমিদার বাড়ির সামনে এই গ্রীন ক্যাফে টি দুইভাই মিলে শুরু করেন আর আমরা যেদিন গেছি ঐদিনই প্রথম যাত্রা শুরু তার ক্যাফের।
টিনের চালা,বাঁশের বেড়া দেওয়া ক্যাফেটির ভিতরে উনি পুরোটাই সবুজ গাছ দিয়ে সাজানোর চেষ্টা করেছেন যাতে করে মানুষ এসে কিছু সময় ওনার ক্যাফেতে খাওয়ার পাশাপাশি একটু শান্তির নিঃশ্বাস নিতে পারেন এটাই ছিল তার চাওয়া তাই নামও দিয়েছেন গ্রীন ক্যাফে।
আমারা গ্রিন ক্যাফের ভিতরে প্রবেশ করলাম তার মেন্যু দেখে ঠিক করলাম কি খাবো। সবকিছু আইটেম দেখার পর মনে হলো চিকেন বার্গার আর কোল্ড কফি খাওয়া যায়। আমি সেরকম বাইরের খাবার খেতে পছন্দ করিনা তাই ভাবলাম শুধু কোল্ড কফি খাবো। তিনটা বার্গার ও তিনটা কোল্ড কফি, আর একটা ব্যানানা মিল্ক শেক ওর্ডার দিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে খাবার এসে হাজির। বার্গারের সাইজ টা একটু ছোট ছিল তার কারন দামটাও কিন্তু কম ছিল মাত্র পঞ্চাশ টাকা করে প্রতি পিস।
আমার দুই মেয়ে আর ভাই এর জন্য তিনটা বার্গার ছিল। ওরা খাওয়া শুরু করলো কিন্তু রাহুল আমাকে রেখে কিছুতেই খাবে না আমি বারবার বলছি যে বাইরের খাবার আমার ভালো লাগেনা কিন্তু ও একেবারেই নাছোড়বান্দা। কি আর করা পরে আমরা দুজন মিলে একটা খেলাম অর্ধেক করে। বার্গার টা এত মজার ছির তা বলার মতো না, এযাবৎ কাল আমি যত বার্গার খেয়েছি তার মধ্যে এটার স্বাদ আমার কাছে বেস্ট লেগেছে।
মামা ভাগ্নী খুব মজা করে কোল্ড কফি খাচ্ছে।
খাবার খাওয়ার সম ক্যাফের মালিক ভাইয়ার সাথে বেশ কিছু গল্প করলাম ওনার ব্যবহার আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। উনি আমাদের কে রিকোয়েস্ট করলেন যে আমার যেনো আমাদের পরিচিত সবাইকে বলি ওনার কথা। তারপর কয়েকদিনের মধ্যে ফুডপান্ডায় ওনার খাবার পাওয়া যাবে এই ধরনের অনেক গল্প করা হলো।তারপর খাবার খেয়ে বিল পরিশোধ করে আমরা যখন বেড়িয়ে আসছি তখন উনি একটু দাঁড়াতে বললেন, তারপর দেখি দুটো ক্যাটবেড়ি হাতে নিয়ে এসে আমার মেয়েদের দিচ্ছেন, আমি বললাম ভাইয়া এই দুটোর দাম কত? উনি বললেন আপু দাম দিতে হবে না আমি মামনিদের গিফট করলাম। মেয়েরা তো সেই খুশি।
ওনার দোকানের খাবার ওনাদের আচার ব্যবহার আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এইজন্যই কখনো কোন কিছু উপরের সৌন্দর্য দেখে বিচার করতে হয়না।
ওনার ক্যাফের বাহ্যিক সৌন্দর্য তেমন পছন্দ হয়নি কিন্তু ওনার অভ্যন্তরিন সৌন্দর্য বেশ ভালো লাগার মতোই ছিল।
এই ছিল গ্রীন ক্যাফেতে কাটানো কিছু সুন্দর মুহুর্ত। আজ এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ
ফটোগ্রাফার | @bristychaki |
---|---|
ডিভাইস | Vivo Y30 |
লোকেশন | তাজহাট জমিদার বাড়ি,রংপুর। |
রংপুর শহরটি সত্যি অনেক সুন্দর। রংপুরের তাজহাট জমিদার বাড়ি যেমন ভালো লাগে তেমনি অন্যান্য জায়গাগুলোও ভীষণ সুন্দর। বিভিন্ন ক্যাপের বাহ্যিক সৌন্দর্য সবাইকে আকৃষ্ট করে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিতরের পরিবেশন কিংবা খাবারের মান ভালো থাকে না। এমনকি কাস্টমারের সাথে খুব একটা ভালো ব্যবহার করে না। সেই দিক থেকে রেস্টুরেন্টের অভ্যন্তরের সৌন্দর্য আপনাদের ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। আর আপনার মামাতো ভাই রাহুল যেহেতু সবকিছুই খুব ভালোভাবে চেনে তাই অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন বুঝতেই পারছি। আসলে অচেনা কেউ কোন শহরে গেলে সত্যি এলোমেলো লাগে। যেহেতু রাহুল সাথে ছিল তাতে কোন সমস্যা হয়েছে বলে মনে হয় না।
হ্যাঁ রংপুর শহর সত্যিই অনেক সুন্দর, বিশেষ করে বসবাসের জন্য খুবই ভালো একটি শহর। আমার তো খুবই ভালো লেগেছে ক্যাফের খাবার মালিকের ব্যবহার সত্যি অসাধারণ ছিল ভাইয়া টার ব্যবহার। জমিদার বাড়িতে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছি আমরা। রাহুল ছিল বলেই সবকিছু দেখতে পেরেছি তা না হলে সম্ভব ছিল না। আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাইয়া পরিবার নিয়ে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছি। বিদেশে থাকাটা খুবই কষ্টের তাই থাকতে চায়না।আর আমারও মনে হয় টাকার জন্য বিদেশে না থেকে দেশে অল্প আয় করে থাকাটাই অনেক ভালো।আমার কাছেও খুব ভালো লেগেছে ওনার ক্যাফে টি। রংপুর এ ঘুরতে আসবেন আমার বাবার বাড়ির কাছেই, ভালো লাগবে। কোল্ড কফি দেখতে যেমন সুন্দর ছিল খেতেও অনেক সুস্বাদু ছিল আমার তো খুবই ভালো লেগেছিল। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমি বছর তিনেক আগে একবার রংপুর শহরে গিয়েছিলাম। অল্প করে ঘুরেছিলাম। শহরটা বেশ ভালো লেগেছিল। সময় সুযোগ পেলে আরেকবার যাব ঘুরতে। বড়দি আপনার গ্রীন ক্যাফে নিয়ে রিভিউ টা খুব সুন্দর লাগলো। সবচেয়ে ভালো লাগলো একদম উদ্বোধনের দিনই আপনারা সেখানে গিয়েছেন। আর ভদ্রলোক যেহেতু বাইরে থেকে এসেছেন তাই খাবারদাবারের মান সম্পর্কে খুব ভালো একটা ধারণা আছে তার নিশ্চয়ই। ভেতরে গাছপালা দিয়ে ডেকোরেশন টাও অনেক সুন্দর ছিল। অভিনব আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আশা করি ভালো কিছুই হবে। আর হ্যাঁ আমার কোল্ড কফি ভীষণ পছন্দের। বার্গারের থেকে কফি টা দেখেই বেশি লোভ হল তাই।
হ্যাঁ ছোড়দা রংপুর শহর সত্যি অনেক সুন্দর। আমার তো খুবই ভালো লাগে। এটা ঠিক বলেছেন যে উনি বাইরে ছির দীর্ঘ সময় তাই ওনার খাবারের মান আশাকরি ভালোই হবে। ওনাদের পথ চলার ধরনটাও আমার বেশ ভালো লেগেছে। ছোড়দার সাথে আমারও অনেক মিল আছে আমিও কোল্ড কফি খুব পছন্দ করি। সময় করে আবার রংপুর এ আসবেন, এখন আরও সুন্দর হয়েছে। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ছোড়দা।
অচেনা জায়গায় পরিচিত কেউ থাকলে এতটা সুবিধে হয় যে বলার মত না। আমার ভাইয়ের নামও রাহুল।আর সত্যি বলতে কোন রেস্টুরেন্টে যদি ভালো ব্যাবহার না পাওয়া যায় তবে সেখানে খাবার হাজার সুস্বাদু হলেও খেতে ভালো লাগে না। আর দেশে যতটা প্রাণ আছে ভিদেশে কোথায়? তাই উনি একদম ঠিক ডিসিশন নইয়েছেন। এখন হয়তো টিন দিয়ে ঘিরে ক্যাফে বানিয়েছেন। পরে আরো বড় করবেন।আর ওনার আন্তরিকতা সত্যিই অতুলনীয়। নয়তো সচরাচর কোথাও এ ভাবে বাচ্চাদের চকলেট দেয় না।
হ্যাঁ একদম ঠিক বলেছো, পরিচিত কেউ থাকলে অনেক সুবিধা হয় ঘুরতে। যাক শুনে ভালো লাগলো যে তোমার ভাই এর নামও রাহুল। মানুষের ব্যবহারের উপর নির্ভর করে তার কাছে মানুষ কেমন যাবে।ওনার ব্যবহার সত্যি অনেক ভালো ছিল। ওনার পথ চলা সল্প পরিসরে আশাকরা যায় একদিন উনি ঠিকই অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পারবে।ধন্যবাদ বনু।
আমি কখনো রংপুর শহরে যাইনি।গ্রিন ক্যাফে টি আমারও খুবই ভালো লেগেছে। উনাদের বার্গর দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে। এই ধরনের ক্যাফেতে আমার ঘুরতে অনেক ভালো লাগে। অচেনা কোথাও গেলে পরিচিত কেউ থাকলে অনেক ভালো হয় ।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
রংপুর শহর খুব সুন্দর একটি শহর অনেক ভালো বসবাসের জন্য। হ্যাঁ ওনাদের বার্গার সত্যি লোভনীয় ছিল। আমার ভাই ছিল বলেই ঘুরতে সুবিধা হয়ছিল। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপু আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমি একটি কথা আপনাকে বলতে চাই। আসলে পরিবারের লোকের সাথে সময় কাটানোর মতো মজা অন্য আর কোন কিছুতে নেই। যাক আপনার ভাই এবং দুই মেয়েকে দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো।
আপু আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন, পরিবারের সাথে সময় কাটালে অনেক মজা হয়। আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।