টেংরামাছের পাঁচমিশালি চচ্চড়ি রেসিপি। shy-fox 10%|abb-school 5%

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো

আমার বাংলা ব্লগ বাসী সবাইকে আমার নমস্কার, আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমি ও পরিবারের সবাই ভালো আছি।

ইদানীং রান্নাবান্না করতে আমার ভালোই লাগে, কিন্তু একটা সময় ছিল রান্নার র-অ জানতাম না। তার কারন ছিল যৌথ পরিবারে আমার জন্ম আমাদের বাড়িতে সদস্য সংখ্যা ছিল অনেক বেশি আমার মা কাকিমারাই রান্না করতে হিমশিম খেয়ে যেত,সেই রান্না ঘরে ঢুকে রান্না করা আমার পক্ষে অসম্ভব ব্যাপার ছিল তাই আর রান্না ঘরে ঢোকা হতো না, আর এখনকার মতো তখন গ্যাসের চুলা,রাইসকুকার সচারাচর ছিল না আর আমাদের বাড়ি একদম গ্রামে তাই এই ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত ছিলাম। আমার মা কাকিমারা মাটির চুলায় সারাদিন রান্না করতো এক বেলায় আমাদের ৪৫ জন মানুষের রান্না হতো। এখন অবশ্য সবসময় এত মানুষ একসাথে বাড়িতে থাকা হয় না কাজের সুত্রে বেশিরভাগ সদস্য বাইরে থাকে। যেকোন পূজাপার্বণ অনুষ্ঠানে সবাই একত্রিত হই। তখন আবার সেই আগের মতো আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয় বাড়িতে। বিয়ের পর রান্না না পারার জন্য বেশ কথাও শুনতে হয়েছিল। কপাল ভালো ছিল বলে বেশিদিন এই কথা শুনতে হয়নি, কিছুদিন পরেই হাসবেন্ড তার কাছে নিয়ে গেছে। আমার মনে আছে যখন আমি হাসবেন্ড এর সাথে ঢাকায় প্রথম বাসায় উঠি সেই সময় আমি রান্না একদম পারিনা, প্রথম দিন আমাকে বলেছিল তাড়াতাড়ি করে খিচুড়ি রান্না করতে। আমি পেঁয়াজ কাঁচামরিচ, রসুন না দিয়ে, শুধু ডাল আর চাল দিয়ে লবন হলুদ দিয়ে জল দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিয়েছিলাম সিদ্ধ ঠিকমতো হয়নি তাতেই নামিয়ে নিয়েছি।হাসবেন্ড কে খেতে দিয়েছি যখন প্লেটে খিচুড়ি দেওয়ার পর জল একদিকে চাল একদিকে দেখে আমার হাসবেন্ড হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারছে না তার মুখ চোখ দেখে বুঝতে পারছি কোন একটা গন্ডগোল হয়েছে কিন্তু সে মুখে কিছু বলছে না। আমার খুব খারাপ লাগছিল ওর অবস্থা দেখে। তারপর আমার হাসবেন্ড রান্নার কাজে আমাকে অনেক হেল্প করতো সেভাবেই আস্তে আস্তে আমি রান্না করা শিখেছি। আমার হাসবেন্ড খুব ভালো রান্না করতে পারে তার রান্না পারার গল্পটা অন্য একদিন শেয়ার করবো।

আজকে খুব সহজ পদ্ধতিতে টেংরামাছের পাঁচমিশালি চচ্চড়ি রান্না করেছি সেই রেসিপি টি শেয়ার করবো আপনাদের সাথে
IMG_20220725_172739.jpg

উপকরণ
টেংরামাছ
আলু,বেগুন,পটল,কচু,ঝিঙা
পেঁয়াজ
কাঁচামরিচ
পাঁচফোড়ন
জিরার গুঁড়া
হলুদ গুঁড়া
লবন
সয়াবিন তেল

photoCollageMaker_20220729_181922453.jpg

প্রথম ধাপ

প্রথমে সব সবজি গুলো কেটে নিয়েছি পেঁয়াজ কুঁচি করে নিয়েছি, মাছ গুলো ভালো করে ধুয়ে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220729_194949664.jpg

দ্বিতীয় ধাপ

মাছ ধোয়া হলে লবন হলুদ গুঁড়া দিয়ে মাখিয়ে নিয়েছি। তারপর চুলায় একটা কড়াই বসিয়ে দিয়ে পরিমান মতো তেল দিয়ে গরম করতে দিয়েছি। তেল গরম হলে মাছ গুলো ছেড়ে দিয়ে একপাশে ভাজা হলে উল্টিয়ে দিয়েছি, দুপাশে ভাজা হলে মাছ গুলো কড়াই থেকে উঠিয়ে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220729_201555493.jpg

তৃতীয় ধাপ

মাছ ভাজা হলে তেলের মধ্যে পাঁচফোড়ন ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুঁচি আর কাঁচামরিচ গুলো দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে হালকা বাদামী কালার করে ভেজে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220729_182147385.jpg

চতুর্থ ধাপ

পেঁয়াজ ভাজা হলে কেটে রাখা সবজি গুলো দিয়ে লবন হলুদ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিয়েছি। তারপর সবজি গুলো একটু ভেজে নিয়েছি তারপর জিরা গুঁড়া দিয়ে সামান্য জল দিয়ে একটু কষিয়ে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220729_182224746.jpg

পঞ্চম ধাপ

কষানো হলে সামান্য পরিমানে জল দিয়ে কিছুক্ষণ চুলার আঁচ বাড়িয়ে জ্বাল দিয়ে ঝোল ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছ গুলো ছেড়ে দিয়েছি। তারপর মিডিয়া আঁচে আরও কিছুক্ষণ জ্বাল দিয়ে ঝোল টেনে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে নিয়েছি।
photoCollageMaker_20220729_182323982.jpg

শেষ ধাপ

চুলা থেকে নামানোর পর একটা বাটিতে ঢেলে নিয়েছি
এবার খাওয়ার জন্য প্রস্তুত টেংরামাছের পাঁচমিশালি চচ্চড়ি।
IMG_20220725_172739.jpg

ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

টেংরা মাছ নদীর মাছ যেটা খুবই সুস্বাদু। টেংরা মাছ দিয়ে পাঁচমিশালি চচ্চড়ি রেসিপি খুবই সুন্দর হয়েছে। এই ধরনের খাবার খেতে আমি খুবই পছন্দ করি ।আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আমি মাছ খেলে নিশ্চিত ট্রাই করতাম রেসিপি টা।দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু,, আমাদের আগে যৌথ্য পরিবার ছিল। একসাথে প্রায় ৩০ জনের খাবার রান্না হত তাও আবার মাটির চুলায়। এখন অবশ্য এরকম যৌথ পরিবার খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। তবে আপনার মাছের রেসিপি সত্যি অনেক চমৎকার হয়েছে, ছবি দেখেই বলতে পারি অনেক সুস্বাদু হয়েছে। তবে আপু আপনার এক্টিভিটিস কম রয়েছে। আশা করি আপনি অন্যের পোস্ট পড়বেন এবং নিজের এক্টিভিটিস আরো বাড়াবেন, ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য। সত্যি অনেক ভালো লাগলো আপনাদেরও যৌথ পরিবারের কথা শুনে, আমাদের বাড়িতে এখনো সবাই একসাথেই আছে যেকোন অনুষ্ঠানে আমরা সবাই একত্রে হই। ভাইয়া আমি এতদিন ভাবছিলাম যে আমি মনে হয় বেশি কমেন্ট করতে পারবো না তাই ভয়ে করি নাই আপনি বলছেন এখন থেকে আমি আমার এক্টিভিটিস বাড়াবো। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া নির্দেশনা দেওয়ার জন্য। 🙏🙏🙏

 2 years ago 

টেংরা মাছের চচ্চড়ি রেসিপিটি খুবই চমৎকার হয়েছে টেংরা মাছ অনেক প্রিয়। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে রেসিপিটি তৈরি করেছেন। রান্নার কালার দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক মজা হয়েছে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য। টেংরামাছ আমারও খুব পছন্দের মাছ সবজি দিয়ে চচ্চড়ি খেতে আমার খুব ভালো লাগে।

 2 years ago 

আপু আমার কাছেও মাটির চুলায় রান্না করা খাবার খেতে অনেক অনেক সুস্বাদু মনে হয়। আমার মা আগে মাটির চুলায় রান্না করে খাবার খাওয়াতো তবে এখন আর সেই সুস্বাদু খাবারের স্বাদ কোথাও পাই না। কেননা গ্যাসের চুলা ও রাইস কুকার ব্যবহার করার কারণে সেই স্বাদ হারিয়ে গেছে। তাই মাটির চুলায় রান্না করা খাবার খুবই মিস করি। আপু আপনার তৈরি টেংরা মাছের পাঁচমিশালী চচ্চড়ি রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই মজার হয়েছে। প্রতিটি ধাপ সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনি ঠিকই বলেছেন মাটির চুলায় রান্না করা খাবার খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। আমাদের বাড়িতে এখনো মাটির চুলায় রান্না করে বাড়িতে গেলে খাবার খেয়ে অনেক শান্তি পাই। রাইস কুকারের ভাত আমি একদম খেতে পারিনা। শহরে থাকার কারনে গ্যাসের চুলায় রান্না করতে হয়, ভালো না লাগলেও খেতে হয় কিছু করার নেই।

 2 years ago 

টেংরামাছের পাঁচমিশালি চচ্চড়ি রেসিপি। টেংরা মাছ খেতে ভীষণ মজা লাগে। আপনি তো আজকে চমৎকার ভাবে রেসিপি শেয়ার করেছেন। দেখে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে

যৌথ পরিবারের মেয়েরা বেশিরভাগই রান্না করা জানেনা। তারা রান্না শিখে স্বামীর সংসারে যাওয়ার পর। আপনার মত আমার স্ত্রীও আমার বাড়িতে আসার পর রান্না করতে শিখেছে। যাই হোক, আপনার টেংরামাছের পাঁচমিশালি চচ্চড়ি রেসিপিটি খুবই সুন্দর হয়েছে। কালার ও দেখতে খুবই সুন্দর হয়েছে। আশাকরি এটি খেতেও খুবই মজাদার হবে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন দাদা, বেশি লোকের বাড়িতে একটা মেয়ের রান্না ঘরে যাওয়াটা খুবই টাফ আর না যেতে যেতে রান্না শেখাটা আর হয়ে উঠে না, আর বিয়ের পর তো রান্না না পারলেও করতে হয় এখনকার মতো তো আর না যে ইউটিউব দেখে দেখে সব শিখে নেওয়া যায়। যা শিখেছি বিয়ের পরেই শিখেছি আর ঈশ্বরের কৃপায় এখন মোটামুটি সব ধরনের রান্না করতে পারি।ধন্যবাদ দাদা

 2 years ago 

খুবই মজাদার একটি টেংরা মাছের পাঁচমিশালী রান্নার রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। টেংরা মাছ আমার কাছে অনেক বেশি সুস্বাদু এবং লোভনীয় মনে হয় সব সময়। আপনার এই রেসিপিটি দেখে জিভে জল এসে গেল। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

টেংরা মাঝে আমারও খুবই ফেভারিট মাঝেমধ্যেই খাওয়া হয় আপনি অনেক রকমের সবজি দিয়ে লোভনীয়ভাবে রেসিপিটি প্রস্তুত করে উপস্থাপন করেছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে খুব সুস্বাদু হয়েছিল

 2 years ago 

যৌথ পরিবারে আমার জন্ম আমাদের বাড়িতে সদস্য সংখ্যা ছিল অনেক বেশি আমার মা কাকিমারাই রান্না করতে হিমশিম খেয়ে যেত

বর্তমান সময়ে এই ধরনের যৌথ পরিবার আর দেখতে পাওয়া যায় না বললেই চলে।

টেংরা মাছের পাঁচমিশালী চচ্চড়ি করার খুবই চমৎকার একটা পদ্ধতি আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। প্রতিটি ধাপে ধাপে আপনি আমাদেরকে দেখিয়েছেন কিভাবে এমন লোভনীয় একটা রেসিপি তৈরি করতে হয়।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া এখন বর্তমান সমাজে যৌথ পরিবার খুব কম চোখে পড়ে, তবে আমরা এখনো যৌথভাবেই আছি আশাকরি আগামীতেও থাকবো। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66524.25
ETH 3616.53
USDT 1.00
SBD 2.81