বিউটি আন্টির পেঁয়াজি।
"হ্যালো"
আমার বাংলা ব্লগবাসী সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো আছি,সুস্থ আছি।
বিউটি আন্টির পেঁয়াজি নাম দেওয়ার কারন হলো। আমার মেয়ের স্কুলের সামনে একটি ছোট্ট দোকান আছে সেই দোকানের মালিকের না। বিউটি।গার্লস স্কুলের সব মেয়েরা টিফিন টাইমে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজি কেনে।সব মেয়েরা ওনাকে বিউটি আন্টি বলে ডাকে।ওনার পেঁয়াজির এতোই সুনাম যে আমি একদিন নিজেই খেতে চলে গেলাম।আমি দোকানে গিয়ে দেখি তখন কেবল ভাজা শুরু করবে।দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাজা দেখছিলাম আর ওনার কাছ থেকে রেসিপি টি জেনে নিচ্ছিলাম।পেঁয়াজি গুলো ডাল বাটা,চালের গুঁড়া পেঁয়াজ,পেঁপে পটল আলু ঝুড়ি করে দিয়েছে।আমি বিউটি আন্টিকে জিজ্ঞেস করলা আপু এগুলো দিয়েছেন কেনো!তখন উনি বললেন পেঁয়াজের দাম বেশি তাই কাঁচা পেঁপে আলু পটল এগুলো দেই।যাইহোক এক পর্যায়ে পেঁয়াজি ভাজা হলো এবং আমাকে জিজ্ঞেস করলো কয় টাকার নিবো!আমি বললাম ২০ টাকার নিবো।একটা কাগজে প্রায় ২৫ টার মতো পেঁয়াজি দিয়ে তার উপরে বিটলবণ ছড়িয়ে দিয়ে আমার হাতে দিলেন।আমি ওখানে দাঁড়িয়ে না খেয়ে বাসায় এসে খেতে শুরু করলাম।খেয়ে তো আমিও বিউটি আন্টির পেঁয়াজির ফ্যান হয়ে গেলাম।সাইজে অনেক ছোট ছোট এবং অনেক ক্রিসপি ছিলো পেঁয়াজি গুলো খেতে খুবই সুস্বাদু লেগেছিলো আমার কাছে। তাই আজ আমি বিউটি আন্টির পেঁয়াজি বানানোর চেষ্টা করেছি পুরোপুরি না হলেও কিছুটা হলেও খেতে অনেক ভালো হয়েছিলো।কিন্তু আমি বিউটি আন্টির মতো সাইজ আনতে পারিনি।ওনার গুলো আরও অনেক ছোট ছোট ছিলো।আমি বাসায় বানিয়েছি আর বরের রেশনের ডাল তাই কিপ্টামি করে ছোট বানাতে পারিনি।😁
চলুন তাহলে রেসিপি টি জেনে নেওয়া যাক।
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
মসুরের ডাল | ১ কাপ |
চালের গুঁড়া | হাফ কাপ |
আলু | ১টা |
পটল | ১ টা |
পেঁপে | ১ টুকরা |
পেঁয়াজ | ৫-৬ টা |
কাঁচামরিচ | ৫-৬ টা |
রসুনের কোয়া | বড় ৩ কোয়া |
জিরাগুঁড়া | ১ চা চামচ |
আদাগুঁড়া | ১ চা চামচ |
গোলমরিচের গুঁড়া | হাফ চা চামচ |
মরিচের গুঁড়া | ১ চা চামচ |
হলুদের গুঁড়া | পরিমাণমতো |
লবণ | স্বাদমতো |
তেল | পরিমাণমতো |
ধাপ-১
প্রথমে মসুরের ডাল ভালো করে ধুয়ে পরিমাণমতো জল দিয়ে ভিজিয়ে রেখেছি,এক ঘন্টার জন্য।
ধাপ-২
এবার সবজি পেঁয়াজ মরিচ গুলো ধুয়ে কুঁচি কুঁচি করে কেটে নিয়েছি।
ধাপ-৩
এবার ভেজিয়ে রাখা ডাল ও রসুনের কোয়া দিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট করে নিয়েছি।
ধাপ-৪
এবার সবজি গুলো একটা বাটিতে নিয়ে লবণ হলুদ গুঁড়া মশলা গুলো দিয়ে ভালো করে মেখে নিয়েছি।
ধাপ-৫
এবার সবজির মধ্যে ডালের পেস্ট গুলো দিয়ে মেখে নিয়েছি।তারপর পরিমাণমতো চালের গুঁড়া দিয়ে ভালো ভাবে সবগুলো উপকরণ মেখে নিয়েছি।
ধাপ-৬
এবার চুলায় কড়াই বসিয়ে দিয়েছি।তারপর পরিমাণমতো তেল দিয়ে গরম করতে দিয়েছি।কিছুক্ষণ পর তেলের মধ্যে একে একে সবগুলো পেঁয়াজি ছেড়ে দিয়েছি।
ধাপ-৭
তেলের মধ্যে পেঁয়াজি গুলো দেওয়ার পর কিছু সময় অপেক্ষা করে একপাশে উল্টিয়ে দিয়েছি।তারপর আরেকপাশে উল্টিয়ে দিয়েছি।অল্প আঁচে নেড়েচেড়ে পেঁয়াজি গুলো লাল করে ভেজে তুলে নিয়েছি।
পরিবেশন
একটা প্লেটের মধ্যে পেঁয়াজি গুলো নিয়ে ছোট বাটিতে করে গরম গরম পরিবেশ করেছি,মজাদার বিউটি আন্টির পেঁয়াজি।
এই ছিলো আমার আজকের আয়োজন আশাকরি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করে শেষ করছি।
ওখানকার পিঁয়াজি আমি খেয়েছি অনেক টেস্টি এবং আপনার মেয়েদের হাতেও বেশ কয়েকবার কিনে আনিয়েছি। যাইহোক আপনি ওনার কাছ থেকে রেসিপি শিখে নিয়ে বাসায় বানিয়েছেন এবং দেখে বেশ সুস্বাদু মনে হচ্ছে। ডাকলেই পারতেন বিউটি আন্টির মত আপনার একটা নাম দিতাম। 🤭বৌদির পিয়াজি 🤪
এ রকম ছোট ছোট পিয়াজু খেতে বেশ মজা লাগে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বিক্রি করে। আপনার বিউটি আন্টির পিয়াজুর রেসিপিটি কিন্তু দারুন। দারুন স্বাদের পিয়াজুর রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ এরকম ছোট ছোট পেঁয়াজি গুলো খেতে খুবই ভালো লাগে।আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
এরকম পেঁয়াজুগুলো খেতে অনেক ভালো লাগে। বিকেল বেলার নাস্তায় পেঁয়াজু আসলেই দারুন। আমার পরিবারের সবাই কিন্তু এই ধরনের পেয়াজু খেতে খুবই পছন্দ করে। আপনি সুন্দরভাবে রন্ধন প্রণালী শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন আপু বিকেল বেলা এরকম পেঁয়াজি গুলো খেতে সবাই খুব পছন্দ করে।ধন্যবাদ আপু।
পেঁয়াজি খেতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। গরম গরম পেঁয়াজি খাওয়ার অনুভূতি খুব দুর্দান্ত। পেঁয়াজি তৈরি প্রক্রিয়া বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। আমাদের মাঝে খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আমারও পেঁয়াজি খেতে খুবই ভালো লাগে ভাইয়া।অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন তার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
দেখেই তো লোভ সামলানো যাচ্ছেনা কারণ পেঁয়াজু আমার অনেক প্রিয় খাবার। দুই একদিন না খেলে চলেইনা আমার। তবে বিউটি আন্টির পেঁয়াজি তো খেতেই হয় আপু। আশা করি আমারও ভাল লাগবে। আপনার রেসিপি দেখেই তৈরি করে খেতেই হবে একদিন।
আপনার পেঁয়াজি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। আমি পেঁয়াজি খেয়েছি কিন্তু আলু, পটল ,পেঁয়াজ ,মুশুরি ডাল মিশ্রিত পেঁয়াজি কোনদিন খাইনি ।এই প্রথম দেখছি আসলে আগা দেওয়ার কারণে পেঁয়াজিটা আরো স্পেশাল লাখবে খেতে, ধন্যবাদ আপু।
জ্বি আপু খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিলো।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
মাঝে মাঝে রাস্তার পাশের ছোট দোকানগুলোতে এত মজাদার মজাদার রেসিপি তৈরি করে যে বড় বড় রেস্টুরেন্টের থেকেও অনেক বেশি সুস্বাদু হয় বিউটি আন্টির ক্ষেত্রে হয়তোবা এমনটাই ঘটেছে। যাইহোক অবশেষে আপনি বাসায় তৈরি করার চেষ্টা করেছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো দেখে তো মনে হচ্ছে অনেক বেশি সুস্বাদু হয়েছিল। মজাদার এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
কুড়ি টাকায় ২৫ টা পেঁয়াজি দিয়ে দিয়েছে, সর্বনাশ। এত সস্তা। 🥺
যাইহোক আপনার রেসিপিটা আমার কাছে একদমই নতুন মনে হয়েছে দিদি। আমরা সাধারণত এভাবে পিয়াজি বানিয়ে খাই না বাড়িতে। একদিন দেখি চেষ্টা করে দেখব বানিয়ে খাওয়ার জন্য। যদিও আমি তেলের খাবার খুব বেশি একটা খাই না, তারপরও বানাবো।
বেশ সুন্দর একটি পেঁয়াজু রেসিপি করেছেন তো আপু। তাও আবার নানা পদের সবজি দিয় দেখেই তো মনে চাচ্ছে খেতে। কিন্তু কি করে খাব। আপু এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করলেন লোভ তো ধরে রাখা যাচ্ছে না।
আপু দারুণ একটি নাম দিয়েছেন তো। পেঁয়াজু গুলো দেখেই তো খেতে ইচ্ছে করছে। বিকেলের নাস্তায় সালাদ দিয়ে গরম গরম পেঁয়াজু খেতে খুব সুস্বাদু লাগে। বাসায় কি আর ছোট সাইজের পেঁয়াজু বানিয়ে লাভ আছে নাকি। আপনার বিউটি আন্টি তো বিক্রি করে বিধায় ছোট সাইজের পেঁয়াজু বানায় বেশি লাভের আশায়। যাইহোক এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।