একটি ছোট্ট অনুভূতির মৃত্যু।
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি,সুস্থ আছি।
মৃত্যু হচ্ছে মানুষের জীবনের চিরন্তন সত্য। মৃত্যু থেকে কোন ব্যক্তি বেঁচে থাকতে পারবে না।মৃত্যু এমন একটি নির্মম সত্য ,যেটা আমাদের সবার জীবনে ঘটবেই ।
পরিবার প্রিয়জন সবাইকে ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে ।ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আমাদের মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।কিন্তু সেটা যদি হয় সময়োপযোগী তাহলে হয়তো কিছু টচ হলেও কষ্ট কম হয়।এমন কিছু মৃত্যু আছে যা মেনে নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার ঠিক সেরকমই একটু মর্মান্তিক মৃত্যুর কষ্ট কয়েকদিন ধরে বুকের ভিতর টা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে বিশেষ করে ছোট্ট বাচ্চাটার বুকফাটা অনুভুতি গুলো বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
গত সোমবার সকাল থেকে স্বাভাবিক নিয়মেই কাজ করছিলাম প্রতিদিনের ন্যয়।দুপুর বেলা কাজকর্ম সেরে ভাবলাম একটু রেস্ট করেই খাবার খেতে বসবো।মাত্র খাটে গিয়ে হেলান দিয়ে ফোন টা হাতে নিয়ে বসেছি আর ঠিক এরই মধ্যে ফোন কল বেজে উঠলো।ফোনের ওপাশ থেকে আমার নাম ধরে একজন সম্বোধন করে বললো আমি লালমনিরহাট থেকে অমুক বলছিলাম তখন আমি চিনতে পারলাম যে উনি আমার ছোটবোন @tithyrani এর কাকা শ্বশুর। নমস্কার দিলাম তারপর ভালো মন্দ কথা বলতেই কাকু বললেন তার ভায়রাভাই রাম নন্দী ভোরবেলা হার্ট অ্যাটাক করে পরলোকগমন করেছেন।এই কথা শুনেই খুব খারাপ লাগলো।
কাকু যার কথা বললেন তিনি আমার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয় সম্পর্কে আমাদের ভাশুর হয়।আর সবচেয়ে বেশি আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো আগেরদিন বিকেলবেলা যখন মেয়েকে কোচিং ক্লাস এ নিয়ে যাচ্ছিলাম তখন দাদার সাথে রাস্তায় দেখা হলো কথা হলো সেই মানুষের মৃত্যু বিষয় টা শুনেই তো আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম,কি বলবো বুঝতে পারছি না।কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর হুঁশ আসলে যে ওপাশে তো কাকু আছে তার সাথে কথা বলতে হবে।তারপর কাকুর সাথে কথা বললাম এবং বাসায় আসতে বললাম কিন্তু কাকু বললেন যে আমরা আজ যেতে পারছি না তার কারণ তোমার কাকিমার মনমানসিকতা খুবই খারাপ সে ছোট বোনের কাছে থেকে কোথাও যেতে চাইছে না।
আমি ফোন টা রেখে খুব তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে চলে গেলাম শোকতপ্ত বাড়িতে।ভোরবেলা মারা যাওয়ার কারনে সকাল সকালেই মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে গেছে শেষকৃত্য করার জন্য।আমি খবরটা অনেক পরে পেয়েছি তাই দেখার সুযোগ হয়নি আমার।ওনাদের বাড়িতে গিয়ে প্রথম যে বিষয় টা আমার খারাপ লাগলো তা হলো যার স্বামী মারা গেছে তার কাছে একজন ব্যক্তিও নেই বাড়ির অন্য সব মহিলারা যার যার মতো রুমে বসে আছে এই বিষয় টা খুবই দুঃখজনক।কাকু কাকিমারা অন্য বাড়িতে দুপুরের খাবার খেতে গিয়েছিলো তারা অনেক ভোরবেলা এসেছেন অনেক দূর থেকে তাই একজনের বাসায় আত্মীয়স্বজনের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।
সবাই যখন আসলেন তখন দিদি খুবই কান্নাকাটি শুরু করলেন সেই দেখে তার পাঁচ বছরের মেয়েটাও মেঝেতে বসে কান্নাকাটি করছিলো আর বারবার বলেছিলো যে আমার বাবা আমাকে রেখে কোথায় চলে গেলো বাবা কেনো আসে না,বাবা থাকলে আমাকে কতকিছু কিনে এনে দিতো!এখন আমাকে কে আদর করবে কে জিনিসপত্র কিনে দিবে এসব অনুভূতি গুলো কান্নার সাথে প্রকাশ করছিলো আর এই দৃশ্য চোখে দেখে সহ্য করার মতো নয়।ওখানে যারা ছিলেন সবাই কান্না করে অস্থির হয়ে যাচ্ছিলো মামনিটার কান্না দেখে।আসলে এরকম একটা বয়সে তার বাবার আদর ভালোবাসা থেকে সে বঞ্চিত হবে এটা ভাবতেই খুবই খারাপ লাগছে। ওর হয়তো-বা পুরোপুরি অনুভূতি হয়নি কিন্তু ও বুঝতে পারছে যে ওর বাবা আর কখনো ফিরবে না এবং আর কখনো সে বাবার ভালোবাসা গুলো পাবে।এই বয়সে ওর সকল অনুভূতির মৃত্যু ঘটবে তা কি ও জানতো বলেন!
আমার আর বলার মতো কোনো ভাষা নেই।যতবার বাচ্চাটার কথা মনে হচ্ছে ততবারই ওর অনুভূতির আত্ম চিৎকার গুলো কানে এসে বাজছে।ভগবান যেনো ওর সহায় হন এবং ওকে এই শোক কাটিয়ে উঠার শক্তি প্রদান করেন এই প্রার্থনা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ।
আমাদের উইটনেস কে সাপোর্ট করুন।
বেশ খারাপ লাগলো আপু বাচ্চা মেয়েটার জন্য।এই ছোট বয়সেই বাচ্চাটি বাবা হারা হল। ও বুঝতেই পারছে কি থেকে কি হয়ে গেল। পিতৃহারা মেয়েটি যেন ভালোভাবে বেড়ে উঠে এই দোয়া করি। সেই সাথে পরিবারটি যে শোক কাটিয়ে উঠার শক্তি পায়।
জ্বি আপু দোয়া করবেন যাতে বাচ্চা ভালো ভাবে বেড়ে উঠতে পারে।ধন্যবাদ আপু।
আসলে আপু আপনার পোস্ট পড়ে কি মন্তব্য করব, বুঝতে পারছি না। সত্যি মৃত্যু আমাদের সবার জন্য অনিবার্য। তবে মৃত্যুটা যদি একটু সময় মতো হয় তাহলে তো কথায় নেই। আসলে এই বয়সে এমন বাচ্চারা এতিম হলে তাদের আর দুঃখের শেষ থাকে না। দোয়া করি আল্লাহ তার পরিবারকে ধৈর্য ধরার ক্ষমতা দান করুন। আমিন।
এত্তো ছোট বয়সে বাবা হারা মেয়েটিকে দেখে খুবই খারাপ লাগে আপু।দোয়া করবেন আপু। ধন্যবাদ।
উনি দিব্য লোকে গমন করুন এবং ঈশ্বর উনার শোক সন্তপ্ত পরিবার কে ধৈর্য ধরার শক্তি দিক। এমন হঠাৎ কারো অকাল মৃত্যুর সংবাদ পেলে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। ছোট বাচ্চাটার জন্য বেশিই খারাপ লাগতেছে।প্রার্থনা করি ওর জন্য।
হ্যাঁ এরকম মৃত্যুর খবর গুলো শুনলে খুবই খারাপ লাগে।ধন্যবাদ।
আসলে মানুষের যে কখন মৃত্যু হয়ে যায় সেটা কেউই বলতে পারেনা। কদিন আগেই আপনি যার সাথে কথা বললেন দেখা করলেন সেই মানুষটাই আজকে না ফেরার দেশে চলে গেল। সব থেকে বেশি কষ্ট লাগছে ছোট মেয়েটির জন্য এত অল্প বয়সেই সে বাবাকে হারিয়ে ফেলল।
মৃত্যুর আগের দিন বিকেলেই ওনারা সাথে দেখা হয়েছিলো।বাচ্চাটার জন্য দোয়া করবেন ভাইয়া। ধন্যবাদ।
বাচ্চা মেয়েটার বাবার প্রতি ভালোবাসার ও বিলাপ গুলো পড়ে চোখের জল আটকানো মুসকিল। আসলে এমন মৃত্যু কাম্য নয়।আমরা জানি জন্মনিলে মৃত্যু বরন করতে হবে কিন্তুু তার তো একটা নিদিষ্ট বয়স হওয়া উচিত।এই ছোট বাচ্চা রেখে পরপারে চলে গেছেন।এই বাচ্চাটা তার বাবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে গেলো।খুুব কষ্টদায়ক ঘটনা তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে।
বাচ্চা টা কি যে কষ্ট নিয়ে কথা গুলো বলছিলো তা চোখে দেখে খুবই খারাপ লেগেছে।আশীর্বাদ করিও।ধন্যবাদ।
হ্যাঁ দিদি ঠিকই বলেছেন মৃত্যুর স্বাদ সবাইকে গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু অকাল মৃত্যু যেটা মানুষকে অনেক কষ্ট দেয় যেমনটা আমাদের এলাকায় আমাদের থেকে দুই এক বছরের বড় বিদেশ গিয়েছিল সেখানে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায় ।তেমনি একটি গল্প আপনি শেয়ার করলেন ঠিক তারও একটি দুই বছরের ছোট্ট ছেলে ছিল । আপনার পরিচিত আত্মীয় তার অকাল মৃত্যুতে তার পরিবারের সবাই শোকাহত বিশেষ করে ছোট্ট মেয়েটার ছবিটি দেখে সত্যিই অনেক মায়া হচ্ছে খুবই খারাপ লাগে এই ধরনের মৃত্যু।
ভাইয়া আপনার গল্প টি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো ভাইয়া।হ্যাঁ ভাইয়া এই ধরনের মৃত্যু গুলো খুবই কষ্টদায়ক মৃত্যু।ধন্যবাদ ভাইয়া।
যখন খুব কাছের একজন কেউ মারা যায় তখন নিজের কাছে অনেক বেশি খারাপ লাগে এবং ভেতরটা একদম দুমড়ে মুছে যায়। কিন্তু মৃত্যু যে চিরন্তন সত্য এটা আমাদেরকে মেনে নিতেই হবে মৃত্যু থেকে কেউ কখনো আজ পর্যন্ত পালিয়ে থাকতে পারেনি মৃত্যু তাকে একটা সময় গিয়ে ধরা দিয়েছে। এটা আমাদের স্বাভাবিক নিয়মেই মেনে নিতে হবে কিন্তু আসলেই এই মেয়েটার কান্না জড়িত কথাগুলো শুনে খুবই খারাপ লাগছে নিজের কাছে। পৃথিবীতে যার বাবা নেই একমাত্র সেই মানুষটাই জানে বাবা না থাকা কতটা কষ্টের। যাইহোক ছোট্ট এই অনুভূতির গল্পটা পড়ে অনেকটাই খারাপ লাগলো আপনি দারুন ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাইয়া বাচ্চাটার বিলাপ গুলো খুবই হৃদয়বিদারক ছিলো।ছোট্ট মেয়েটার জন্য দোয়া করবেন ভাইয়া।ধন্যবাদ ভাইয়া।