কবিরাজি ফিশ চপ।
"হ্যালো বন্ধুরা"
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি,সুস্থ আছি।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ।বাংলাদেশে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে নদী নেই। আর নদী মানেই অফুরন্ত মাছের ভান্ডার।এই অফুরন্ত মাছের ভান্ডার এর কারনে বাঙালীর রসনায় মাছের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। বিশেষ বললে ভুল হবে, মাছের প্রতি বাঙালির আকর্ষণ এতটাই তীব্র যে একটি প্রবাদই প্রচলিত হয়েছে যে "মাছে ভাতে বাঙালি"।অর্থাৎ মাছ ছাড়া বাঙালি পরিপূর্ণ নয়। বাংলার নদীতে যেমন অসংখ্য প্রকারে মাছ পাওয়া যায়,তেমনি বাঙালি হেসেলে সেই মাছ দিয়ে তৈরি হয় অসংখ্য প্রকারের পদ।আর প্রত্যেকটি পদ একটি আরেকটি কে টেক্কা দেয়।
দেখতে দেখতে আমরা ৩৭তম প্রতিযোগীতায় চলে এসেছি। ৩৭তম প্রতিযোগীতার বিষয় বস্তু দেখে ভাবনায় পড়ে গেলাম,কারন মাছের প্রকার যেমন অসংখ্য তেমনি, পদ ও তো অসংখ্য কোনটি ছেড়ে কোনটি বানাই। অবশেষে বানিয়ে ফেললাম কবিরাজি ফিস চপ।এর নাম কবিরাজি হওয়ার কারন এতে ব্যবহার করা নানা পদের মশলা ও হার্ব যেমন:ধনে পাতা,পুদিনা পাতা,গোলমরিচ ইত্যাদি। এই মশলা ও হার্ব গুলো আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারি। এটি বানানোর আরো একটি কারন সামনের বর্ষাকাল।বর্ষাকালের মিইয়ে যাওয়া আবহাওয়ায় নানা মশলা ও হার্বের মিশ্রণে তৈরি এই মুচমুচে চপটি শরীর ও মন কে চাঙা করে তোলে। সাথে যদি চা আর প্রিয়জন বা প্রিয় বই পাশে থাকে তাইলে তো কথাই নেই। তো চলুন দেখে নেওয়া যাক দারুন সুস্বাদু ও মুখরোচক চপটির রেসিপি।
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
কাঁটা ছাড়া রুইমাছ | ৫ টুকরা |
পেঁয়াজ কুঁচি | ১ কাপ |
কাঁচামরিচ কুঁচি | ৫-৬ টা |
আদাবাটা | ১ চা চামচ |
রসুনবাটা | ১ চা চামচ |
ধনেপাতা | ১ টেবিল চামচ |
পুদিনাপাতা | ১ টেবিল চামচ |
জিরা | ১ চা চামচ |
মৌরি | ১ চা চামচ |
ধনিয়া | ১ চা চামচ |
গোলমরিচ | ৬-৮ টা |
সাদা এলাচ | ৪ টা |
দারুচিনি | ২-৩ টুকরা |
স্টার এনাইছ | ১ টা |
জায়ফল | অর্ধেক টা |
জয়ত্রী | ২-৩ টুকরা |
শুকনা মরিচ | ২ টা |
মরিচের গুঁড়া | ১ চা চামচ |
হলুদগুঁড়া | পরিমাণমতো |
বিটলবণ | হাফ চা চামচ |
লবণ | স্বাদমতো |
ডিম | ১ টা |
বেরেস্তা | ১ কাপ |
নুডলস | ১ প্যাকেট |
সয়াবিন তেল | পরিমাণমতো |
ধাপ-১
প্রথমে চুলায় একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি।তারপর জায়ফল,জয়ত্রী বাদে বাকি সব মশলা গুলো কড়াইয়ে দিয়ে অল্প আঁচে নেড়েচেড়ে ভেজে নিয়েছি।তারপর শুকনা শিল পাটায় ভাজা মশলা ও জায়ফল জয়ত্রী দিয়ে সব উপকরণ গুলো ভালো করে বেটে গুঁড়া করে নিয়েছি।
ধাপ-২
এবার রুই মাছের টুকরো গুলো ভালো করে ধুয়ে পরিস্কার করে নিয়েছি।তারপর ছোট ছোট পিস করে কেটে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে কিমা তৈরি করে নিয়েছি।
ধাপ-৩
চুলায় কড়াই বসিয়ে দিয়ে পরিমাণমতো তেল দিয়ে হাফ কাপ পেঁয়াজ কুঁচি দিয়ে বেরেস্তা করে নিয়েছি।
ধাপ-৪
এবার মাছের কিমার মধ্যে পেঁয়াজ কুঁচি কাঁচামরিচ কুঁচি,ধনেপাতা কুঁচি,পুদিনাপাতা কুঁচি,আদাবাটা রসুনবাটা দিয়ে ভালো করে মেখে নিয়েছি।
ধাপ-৫
এবার ভাজা মশলার গুঁড়া,লবণ হলুদগুঁড়া বিটলবণ,মরিচের গুঁড়া,বেরেস্তা ও সামান্য পরিমাণে তেল দিয়ে সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মেখে নিয়েছি।
ধাপ-৬
সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মেখে এক ঘন্টার জন্য নরমাল ফ্রিজে রেখে দিয়েছি।তারপর একঘন্টা পর মাছের কিমা গুলো বের করে নিয়ে হাতে সামান্য তেল মেখে গোল গোল করে চপের আকারে শেইপ দিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৭
এবার এক প্যাকেট নুডলস শিল পাটায় বেটে গুঁড়া করে নিয়েছি।তারপর নুডলস এর মশলা গুলো দিয়ে ভালো করে নুডলস এর গুঁড়ার সাথে মিশিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৮
এবার একট ডিম বাটিতে নিয়ে তার মধ্যে অল্প পরিমাণে ভাজা মশলার গুঁড়া,ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৯
এবার মাছের চপ একটি হাতে নিয়ে ডিমের মধ্যে চুবিয়ে নিয়েছি,তারপর নুডলস এর গুঁড়ার মধ্যে ভালো করে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে নুডলস এর গুঁড়া চপের মধ্যে লাগিয়ে নিয়েছি।একইভাবে সবগুলো চপ রেডি করে নিয়েছি।
ধাপ-১০
এবার চুলায় কড়াই বসিয়ে দিয়ে তার মধ্যে পরিমাণমতো তেল দিয়ে গরম করতে দিয়েছি।তেল গরম হয়ে আসলে একটা একটা করে সবগুলো চপ তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছি।
ধাপ-১১
তেলের মধ্যে চপ দেওয়ার কিছুক্ষণ পর চপ গুলো উল্টিয়ে দিয়েছি।তারপর আবার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আরেক পাশে উল্টিয়ে দিয়েছি।এভাবে অল্প আঁচে অনেক সময় ধরে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে চপ গুলো ভালোভাবে ভেজে নিয়েছি।
ধাপ-১২
মাছের চপ গুলো বাদামী কালার হয়ে আসলে তেল ঝড়িয়ে একটা পাত্রে তুলে নিয়েছি।আর এভাবেই তৈরি হয়ে গেলো সুস্বাদু কবিরাজি ফিশ চপ রেসিপি টি।
পরিবেশন
একটা প্লেট নিয়ে তার মধ্যে টমেটো সস দিয়ে একটি ফুল এঁকে নিয়েছি।তারপর ফুলের দুপাশে দু'টো পাতা দিয়ে মাছের চপ গুলো সাজিয়ে নিয়েছি।
ফাইনাল লুক
আজ এখানেই শেষ করছি।আবার দেখা হবে অন্য কোনো সময়ে অন্য কোনো নতুন রেসিপি নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।
টুইটার লিংক
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপু।আপনি খুব মজার একটি মাছের চপ নিয়ে হাজির হলেন।আপনি রেসিপিতে অনেক ধরনের ঔষধি গুন সম্পন্ন মসলা অ্যাড করেছেন।খুব ভালো হয়েছে দেখতে।খেতেও দারুন হয়েছে আশাকরি। রেসিপিটি বেশ কবিরাজি ই বটে।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
জ্বি আপু অনেক গুলো মশলা ব্যবহার করেছি আর এই মশলার গুণাবলী সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি।তাই এই রেসিপি টির নাম কবিরাজি ফিশ চপ নাম দিয়েছি আপু।ধন্যবাদ আপু।
প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো । বেশ চমৎকার মাছের রেসিপি তৈরি করেছেন। সত্যি খুব দুর্দান্ত হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে খুবই মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছে। আপনার উপস্থাপন বেশ অসাধারণ।
প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। রুইমাছ এবং বেশ কয়েক ধরনের মসলা দিয়ে চমৎকার চপ রেসিপি তৈরি করেছেন আপু। চপগুলো দেখেই তো খেতে ইচ্ছে করছে। নিশ্চয়ই সবাই মিলে বেশ মজা করে খেয়েছেন। রেসিপির পরিবেশনা তো এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। রেসিপিটা দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অনেক গুলো মশলার সমন্বয়ে তৈরি করা চপ গুলো খেতে সত্যিই অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে।জ্বি ভাইয়া সবাই মিলে অনেক মজা করে খেয়েছি।ধন্যবাদ ভাইয়া।
প্রথমেই প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি। আসলে আপনার রেসিপিটা ইউনিক লাগার প্রধান কারণ হলো ব্যবহার করা মসলাগুলো। তাছাড়াও ডেকোরেশন এত সুন্দর করে করেছেন যে দেখতেই অনেক বেশি ভালো লাগছে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনার অনেক ভালো লেগেছে জেনে আমারও খুব ভালো লাগলো দাদা।সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।
প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমে আপনাকে জানাই ধন্যবাদ।ইউনিক একটি রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এই কনটেস্ট এর মাধ্যমে অনেক নতুন নতুন রেসিপি দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে। রেসিপিটি দেখে লোভনীয় লাগছে। এই রেসিপিটিতে আপনি অনেক ধরনের ঔষধি গুণ সম্পন্ন মসলা ব্যবহার করায় রেসিপিটি খেতে খুবই সুস্বাদু ছিল নিশ্চয়ই। লোভনীয় একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ্।
জ্বি আপু অনেক ধরনের মশলা ব্যবহার করে আজকের চপ রেসিপি টি করেছি যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী হবে।এর স্বাদের কথা কি আর বলি।খেতে এতটাই সুস্বাদু হয়েছে যা বলে বোঝাতে পারবো না আপু।ধন্যবাদ।
রেসিপি নামটি পড়ে ৫ মিনিট হাসলাম। কবিরাজি মাছের চপ। এটা কোন দেশের নাম বলবেন একটু? সে যাই হোক রেসিপিটি কিন্তু অত্যন্ত দুর্দান্ত ছিল। আমার তো রীতিমতো লোভ লেগে যাচ্ছে। উপস্থাপনা ও বর্ণনা ছিল অত্যন্ত সুন্দর। নাইবা খাইলাম। তবুও শুভকামনা রইল।
আপু এটা আমার নিজের তৈরি করা মাছের চপ।তাই নিজের মতো করেই নাম দিয়েছি।কবিরাজি চপ নাম দেওয়ার কারন উল্লেখ করেছি।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনার রেসিপিটি দেখতে অনেক লোভনীয় হয়েছে। রেসিপিটি দেখেই লোভ লেগে গেল আপু। ইচ্ছা করছে ছবির ভিতর গিয়ে খেয়ে ফেলতে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
ছবির ভিতর থেকে যদি খাওয়া যেতো তাহলে কতই না ভালো হতো তাই-না আপু😁মজার একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু।
আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা ৩৭ ইউনিক মাছের চপ রেসিপি তৈরি। বেশ সুন্দর একটি মাছের চপ তৈরি রেসিপি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।আশাকরছি খেতে অনেক টেস্টটি হয়েছে। সুন্দর একটি ইউনিক চপ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু আপনি খুব সুন্দর ভাবে অসাধারণ মাছের চপ রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই এত সুন্দর রেসিপি তৈরি করা দেখে আমি সত্যি অনেক মুগ্ধ হয়েছি। তৈরি করা প্রত্যেকটি পর্যায়ে আমাদের মাঝে খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন দেখে খুশি হলাম।