'আমাদের নন্দি' // গল্পঃ ১ম পর্ব //🐈 [10% ʙᴇɴᴇғɪᴄɪᴀʀɪᴇs ғᴏʀ @sʜʏ-ғᴏx🦊]
দরজার ওপাশ থেকে ক্ষীন গলায় একটা ডাক শুনতে পেল দীপা। দীপা হোসেন সাহেবের দ্বিতীয় কন্যা, স্কুল ছাত্রী, সভাবে নরম শরম গোছের। আবারও ডাকটা শুনতে পেল দীপা। ওর মনে হলো ওকেই যেন কেউ ডাকছে। কৌতুহলে প্রায় নিঃশব্দে দরজাটা খুললো। একদম ছোট নুটি সুটি হয়ে বসে সরাসরি তাকিয়ে আছে দীপার দিকে। বৃষ্টিতে ভেজা ভেজা সারা শরীর, চোখে ভয়, কাঁপছে থরথর করে। আবার ডাকলো, “ম্যাউ !
রান্না ঘর থেকে জিজ্ঞাস করলো দীপার মাঃ-
কে দীপা ?
দীপা বললোঃ-
"দেখো আম্মা কি ছোট একটা বিড়ালের বাচ্চা।”
একটু যেন উচ্ছসিত দীপার কন্ঠ। বড় জোর পনেরো বিশ দিন হবে বয়স বিড়ালের বাচ্চাটার। কিন্তু এখানে কিভাবে এলো, ওর মা কোথায় ! দেখে বোঝা যাচ্ছে সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয়নি বাচ্চাটার। মনে প্রশ্ন, কিন্তু কেন? এর উত্তর পাওয়া গেল একটু পরেই।
বাচ্চাটার মাকে দেখা গেল আমাদের ঘরের সামনে। বাচ্চাটা ছুটে যেতে চাইলো মায়ের কাছে, কিন্তু মা বেড়ালটি হালকা গড় গড় শব্দ তুলে চলে গেল বাচ্চাটার পাশ কাটিয়ে। ঘটনাটা দীপা দেখলো, দূঃখে মুখটা নীল হয়ে গেল মেয়েটার। আমার খারাপ লাগলো ব্যাপারটা, নিজের পেটের সন্তানকে এভাবে ফেলে রেখে চলে যায় কেউ! এও কি সম্ভব? দীপার মুখটা দেখে মায়া লাগলো, কষ্ট পাচ্ছে মেয়েটা স্তব্ধ হয়ে আছে সে। দীপার বাবা বল্লোঃ-
"বাচ্চাটাকে একটু দুধ দাও, ভাত মাছ শক্ত কিছু খেতে পারবেনা ও।”
ছোট একটা বাটিতে দুধ দেওয়া হলো।পরে দরজার বাইরে একটি কোনে এটা সেটা দিয়ে বিড়ালের বাচ্চাটার থাকার জাগা করা হলো। গা গরম রাখার জন্য ছেঁড়া ফাটা কাপড় দিয়ে গোল মত করে দেওয়া হলো,আশ্রয় পেলো বাচ্চাটা। এই কাজে পূর্ন উদ্দোমে সহযোগিতা করলো দীপার সমবয়সি ভাই দীপ। ওরা দুজন জমজ ভাই বোন। পরে দীপার বাবা যখনি দরজা খুলে বাচ্চাটাকে দেখতে গেলো, দেখলো বাচ্চাটা বসে আছে তার ঘরের সামনে দুধের বাটিটা নিয়ে , পাহাড়া দিচ্ছে সে বাটিটা কে, একটু নড়ে চড়ে বসলো। মুখ তুলে তাকালো এবং ডাকলো, ম্যাউ! দীপার বাবা জিজ্ঞেস করলোঃ-
কিরে কি অবস্থা তোর?
যেন জবাব দিল বাচ্চাটা," ম্যাউ!"
খুব হাসি পেল তার।
লিংকএখানে
বাচ্চাটা যখন একটু বড় হলো তখন সে আর বাইরে থাকতে চাইলোনা। বাইরে সে এখন নিজেকে নিরাপদ মনে করেনা। দরজা খুললে পায়ের ফাঁক গলে ঘরের ভেতরে ঢুকতে চায়। কিন্তু ঘরে ঢোকা তার জন্য নিষিদ্ধ। অনুমতি নেই। কারণ দীপার বাবা চায়না ঘরে কোন উটকো ঝামেলা থাকুক। ঘরে তার প্রচন্ড বদনাম আছে , শুধু ঘরে নয় পুরো বাড়ীতে। উনি নাকি খুব বদমেজাজী, অল্পতেই খেপে যাই। সারাদিন একটা কথা নিয়ে বক বক করতে থাকে। সম্ভবত বিড়ালের বচ্চাটি এখনো তা জানতে পারেনি। আর তাই শতবার বাধা দেওয়া সত্তেও একদিন পায়ের ফাঁক দিয়ে ঘরে ঢুকে গেল সে, তাও হোসেন সাহেবের পায়ের ফাঁক দিয়ে। উনি চেঁচাতে লাগলেনঃ-
"বাচ্চাটা ঘরে ঢুকে গেল ওকে বের কর !”
তার গিন্নীও চেঁচাতে লাগলোঃ-
"কি হয়েছে?"
দীপা বলল বিড়ালের বাচ্চাটা মনে হয় ঘরে ঢুকে গেছে। সবাই ছুটে এলো কিন্তু, আমার ধাওয়া খেয়ে বাচ্চাটা এঘর ওঘর খাটের নীচে বিছানার উপরে চেয়ারের তলে ছুটে বেড়াতে লাগলো। শেষে আমার মেজাজের থোড়াই তোয়াক্কা করে কোথায় যে লুকলো, আর বের করা গেল না তাকে।
দূরে চাকরী হোসেন সাহেবের। বেশ কয়দিন পর ঘরে ফিরলেন। বিড়ালের বাচ্চাটার কথা তার মনে আছে। ঘরে ঢুকে মনে মনে খুঁজলেন ওকে। দেখে যে সোফাতে দিব্যি নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে সে, হোসেন সাহেবের সোফাতে যেখানে বসে টি.ভি. দেখেন।
মনে মনে বল্লেন, আমার অনুপস্থিতিতে খুব সাহস হয়েছে তোমার, দেখছি তোমাকে। ফ্রেস হয়ে এরপর বিড়ালের বাচ্চাটার সামনে এসে দাড়ালেন। অনেক খানি বড় হয়েছে সে, রংটা সুন্দর। ধবধবে সাদা আর মাঝে মাঝে কালো রঙের আঁচড়।
পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন
"ধন্যবাদ সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ার জন্য। সবাই ভালো থাকবেন এবং একে অপরকে ভালো থাকতে সাহায্য করবেন"।
কোটেশনঃ- "যদি ১০০ জন ক্ষুধার্তকে না খাওয়াতে পারো তবে অন্তত ১জন ক্ষুধার্তকে খাওয়ানোর চেস্টা করো"।
"আমি জান্নাতুল ফেরদৌস বৃস্টি, ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের ৫ম সেমিস্টারের একজন ইউনিভার্সিটির ছাত্রী। আমি মোটিভেশনাল আর্টিকেল, গল্প, ড্রইং এবং গভীর চিন্তার বিষয় গুলো লিখতে ভালবাসি। পাশাপাশি আমি একজন শিক্ষিকা এবং প্রাইভেট টিউটর।"
আপু এক নিমিষেই পড়ে ফেললাম গল্পটি। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। খুব জানার ইচ্ছে এখন বিড়ালটিকে হোসেন সাহেব কি করে। আমার মনে হয় আদর ই করবে। কারণ বিড়ালের বাচ্চাটির বর্ণনা শুনে মনে হলো খুব কিউট হবে বিড়ালের বাচ্চাটি। নেক্সট পর্ব পড়ার জন্য অপেক্ষা করছি কিন্তু।
প্রথমে আপনাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আপনাকে অত্যন্ত ধন্যবাদ। এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য। তবে অত্যন্ত আগ্রহের বসে থাকলাম নেক্সট পার্ট এর জন্য
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর কমেন্ট করার জন্য।
খুব সুইট একটি গল্প লিখেছেন আপু, পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আমারও এমন একটি ছোট্ট বিড়াল ছিল, ওর কথা মনে পড়ে গেল হঠাৎ করে। বিড়ালের বাচ্চাগুলা আসলে ছোট থাকতে দেখতে খুবই সুন্দর লাগে, একেবারে খেলনা পুতুলের মতন। আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
জি ভাইয়া অসম্ভব ভালো লাগে আমার বিড়াল ছানা গুলো। অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
সত্যি কথা বলতে বাস্তব একটি কাহিনী আমি তুলে ধরছি আপু। আমাদের এখানে গতকাল স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া করছে। ছোট একটি সন্তান আছে। এর স্ত্রী তার সন্তানকে রেখে চলে এসেছে তাহলে বুঝুন যে দুনিয়ায় কেউ কারো না সকলের জীবন নিয়ে ব্যস্ত।
হ্যাঁ আপু পড়লাম ভালোই লাগলো। আপনার পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম আপু
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।