আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি - @bloggershanto

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)
নমস্কার বন্ধুরা। আমি শান্ত চন্দ্র দাস। আমার ইউজার আইডি @bloggershanto । আশা করি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্য খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি স্কুল জীবনে আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি। যে ঘটনাটি আমি আজও ভুলতে পারিনি এবং ঘটনাটি মনে হলেই আমাকে ভীষণ যন্ত্রণা দেয়। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।



blackboard-g75d128d57_640.png
Image Source

আমার প্রাইমারি স্কুল ছিল আমার বাড়ি থেকে দুই মাইল দূরে। দূরে হওয়ার কারণে আমি প্রতিদিন স্কুলে সাইকেল দিয়ে যাতায়াত করতাম। সেই স্কুলে আমার একজন মেয়ে ক্লাস মেটের নাম ছিল হাফসা। আমি প্রতিদিন তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করতাম। মেয়েটি ছিল মুসলিম। সে খুবই শান্তশিষ্ট এবং ভদ্র স্বভাবের ছিল। আমি কখনোই তার সাথে কথা বলিনি এবং সেও আমার সাথে কখনো কথা বলেনি।

আমি যখন চতুর্থ শ্রেণীতে উঠি তখন হঠাৎ একদিন ক্লাস চলাকালে হাফসা তার বড় আপুকে নিয়ে স্কুলে আসে। তখন আমার প্রিয় একজন ম্যাম ক্লাস নিচ্ছিলেন। ম্যামকে আমরা সবাই দীপ্তি ম্যাম বলে ডাকতাম। দীপ্তি ম্যাম আমাকে অনেক আদর করত। তো হাফসা এবং হাফসার আপু আসার পর ম্যামের সাথে কথা বলার জন্য করিডোরে আসার অনুরোধ করে। হাফসা এবং হাফসার আপুর সাথে কথা বলার পর ম্যাম ক্লাসে প্রবেশ করে এবং আমাকে উঠে দাঁড়াতে বলে।

আমি উঠে দাঁড়ানোর পর ম্যাম আমাকে বলে হাফসা তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে তুমি নাকি তাকে ডিস্টার্ব কর এবং তাকে অশ্লীল প্রস্তাব দিয়েছ। এই কথা শুনে‌ আমি আকাশ থেকে পড়লাম কারণ যেই মেয়ের সাথে আমি কোনদিন কথা বলিনি তাকে ডিস্টার্ব করা বা অশ্লীল প্রস্তাব দেয়ার তো প্রশ্নই আসে না। এই কথা ম্যামকে বলার সাথে সাথে মেয়েটির আপু বলে উঠে তিনি নাকি নিজের কানে শুনেছেন আমি হাফসাকে অশ্লীল প্রস্তাব দিয়েছি।

discipline-g260fa9d86_640.png

Image Source

ম্যাম একথা শোনার আমাকে ব্ল্যাক বোর্ডের সামনে আসতে বলে। ব্ল্যাক বোর্ডের সামনে যাওয়ার পর ম্যাম তার হাতের দুটি লাঠি না ভাঙ্গা পর্যন্ত আমাকে প্রহার করেছিলেন। আমার ছোট শরীরে এত প্রহার আমার জীবনে কখনো অনুভব করিনি। সেদিন আমি অনেক কান্না করেছিলাম। বিনা অপরাধে এত প্রহার অনুভব করার পরও ম্যামের প্রতি আমার কোন রাগ নেই কারণ একজন অভিভাবক যদি নিজে সাক্ষ্য দেয় তাহলে ম্যাম তো ওনার কথা বিশ্বাস করবেই। এরপর থেকে ওদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়া আসা করলে আমাকে এলাকার ছেলেরা অনেক বকাঝকা করত। এই ঘটনার পর মেয়েটি আর কোনদিন স্কুলে আসেনি এই বিষয়টি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি খারাপ লেগেছে।

তো বন্ধুরা এই ছিল আমার স্কুল জীবনের তিক্ত একটি অভিজ্ঞতা। সত্যি বলতে এসব অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না শুধু হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করা যায়। তারপরও আমি চেষ্টা করেছি নিজের অনুভূতিগুলোকে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য জানিনা কতটুকু পেরেছি। আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি গুরুত্ব সহকারে পড়ার জন্য।

Sort:  
 3 years ago 

কি বলেন দোষ না করেও এত বড় শাস্তি। কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম না হাফসা এবং হাফসার বোন কেন এত বড় মিথ্যা কথা বলল। কিন্তু এটা ঠিক বলেছেন ম্যাডামের সত্যি কোন দোষ ছিল না। কারণ অভিভাবক এসে যদি এত বড় একটা অভিযোগ করে তাহলে স্যার ম্যাডামের অবশ্যই তাকে শাস্তি দেওয়া উচিত। সত্যিই বেশ তিক্ত অভিজ্ঞতা ছিল।

 3 years ago 

পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে

 3 years ago 

আসলে আপনার স্কুল জীবনে তিক্ত অভিজ্ঞতা পড়ে আমার খুব কষ্ট লাগলো। আসলে এ ধরনের পরিস্থিতি কাম্য নয়। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।

 3 years ago 

এমন যেন আর কারো সাথে না ঘটে।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.31
JST 0.031
BTC 107171.26
ETH 3889.31
USDT 1.00
SBD 0.57