বাড়ির কাজের লোকের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে ।
![]() |
---|
সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকে আমার লেখা। সেই বহুকাল আগে থেকেই আমাদের সমাজ ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু স্তর রয়েছে। সেখানে একদল মানুষ উপরে বসে সমাজটাকে নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের চতুরতা ও অর্থনৈতিক শক্তি দিয়ে। আর এক শ্রেণীর লোক আছে তারা ইন্টারমিডিয়েট পর্যায় রয়েছে।এদের প্রধান কাজ হলো একদম নিচের শ্রেণীর সঙ্গে উপরের শ্রেণীর সংযোগ সাধন করা।
পরিশ্রমী শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত এই শ্রেণী সমাজের সত্যিকারে পরিবর্তন আনতে পারে।শুধুমাত্র উপরের দুই শ্রেণীর লোকের জন্য সমাজে তারা বাঁচার তাগিদে সবকিছু মেনে নিতে শিখে গেছে। এরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। চারিপাশের শান্তি এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখাই এদের প্রধান উদ্দেশ্য। আর তাই এরা সকল রকম অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা কে মেনে নিয়ে এই সমাজটাকে কোনভাবে জোড়াতালি দিয়ে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আজকে আমি আমাদের এই উচু মহলের শিক্ষিত ভদ্র এবং প্রভাবশালী মানুষের মন মানসিকতা নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই ।আমার এই বক্তব্য কারো বিরুদ্ধে নয়। সত্যকে তুলে ধরাই আমার এই লেখার একমাত্র উদ্দেশ্য। এবং আমার এই লেখার উদ্দেশ্য সব শিক্ষিত মানুষকে ছোট করে দেখা নয় আমাকে মানতেই হবে যে সবখানেই ভাল-মন্দ দুটোই আছে ।তাই উঁচুতলার মানুষের ভিতরে যথেষ্ট ভাল মানুষও রয়েছে। তাদেরকে সম্মান জানিয়ে ,তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বাকি মানুষ গুলো যারা সমাজকে কলুষিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমার এই লেখা।
আমাদের স্কুলের ক্লাস টুয়েলভের ইংরেজি পাঠ্যবইতে একটি গল্প ছিল। গল্পটি শিরোনামঃ leela's friend। এই গল্পের কাহিনী সংক্ষেপে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। একটি শিক্ষিত উচ্চবিত্ত পরিবার স্বামী স্ত্রী কাজের লোক আর একটি ছোট সম্প্রতি রাখা হয়েছে কাজের লোক, একটি শিশু একটি বাচ্চা মেয়ে ।তার নাম লেখক এখানে উল্লেখ করেননি ।এখানে সে লীলার ফ্রেন্ড হিসেবে পরিচিত।ধনী দম্পতির একমাত্র মেয়ে তার নেই কোনো কিছুরই অভাব ।চারিদিকে তার অতিরিক্ত প্রাপ্তি।অতিরিক্ত সুখ তার একপ্রকার অসুখ এ পরিণত হয়েছে। তাই তাকে মাঝে মাঝে অস্থির হতে দেখা যায় ।
আর এই সময়ে একটি ছোট মেয়ে বাড়িতে কাজের লোক হিসেবে প্রবেশ করলো। আস্তে আস্তে সে লীলার ভালো বন্ধু হয়ে উঠলো।লীলা সেই ছোট মেয়েটির সাথে খেলাধুলা করত ।ছোট মানুষ তাই উচ্চবিত্ত দম্পতি তেমন একটা আপত্তি করেনি এই মেলামেশা নিয়ে।একদিন লীলার গলার নেকলেস হারিয়ে গেলো। কোথায় গেল তাকে বারবার জিজ্ঞেস করা হল কিছুই বলতে পারলো না সে।তখন হঠাৎ সেই মালকিনের মনে হলো এই ছোটো কাজের মেয়েটা চুরি করে অন্য কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে বাইরে পাচার করে দিয়েছে।এটা ভাবা ভাবা মাত্র সে তার স্বামীকে জানালো বিষয়টা।স্বামী ওসব শুনে রেগে গেলেন এবং পুলিশকে কল করতে বললেন।
পুলিশ আসলো এবং কাজের মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গেল ।এরপর একদিন হঠাৎ লীলা হারানো নেকলেস খুঁজে পেলো এবং সে সেটি তার মায়ের হাতে তুলে দিলো।সে খেলতে খেলতে ভুল করে এই লেকলেস টি তেঁতুলের বোয়ামে রেখেছিলো। কিন্তু এখানেই মজা ।তারা এত কিছু জানার পরেও পুলিশকে এটুকু বলার প্রয়োজন মনে করল না যে মেয়েটাকে ছেড়ে দিন ,সে অপরাধী নয়।তারা সেটা করলো না ।সময় বয়ে গেল।
এ রকমই আমাদের সমাজে অহরহ দেখা যায় ।উঁচু তলার মানুষ এরা কখনোই নিচু তলার মানুষদের ভালোভাবে দেখতে পারে না ।আমাদের সবারই একটা দৃষ্টিভঙ্গি হয়ে গেছে কাজের মহিলা বা কাছের মানুষদের প্রতি যে তারা সবাই চোর কিন্তু আসলে বাস্তবতা তেমন নয়।আমি মেনে নিচ্ছি যে কিছু মানুষ খারাপ আছে। কিছু কাজের লোক চুরি করে কিন্তু তাই বলে সবাই নয়। কিন্তু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমন হয়েছে যে কোনো দামি জিনিস চুরি হলেই আমরা মনে করি যে এটা আমাদের কাজের লোক চুরি করেছে ।কিন্তু এটা ঠিক নয়। শুধুমাত্র আমাদের বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি আর মূল্যবোধের অবক্ষয় আমাদের এই রকম ভাবতে সাহায্য করে ।তাই সমাজকে বদলাতে হলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আরও উঁচু সুন্দর করতে হবে।

Support @amarbanglablog by Delegation your Steem Power
100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |
Beauty of Creativity. Beauty in your mind.Take it out and let it go.Creativity and Hard working.Discord- https://discord.gg/RX86Cc4FnA
অসাধারণ অসাধারণ ভাই এরকম একটি বাস্তব সম্মত পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আসলে আমাদের প্রত্যেককে প্রত্যেকের স্থান থেকে নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করে যদি আমরা কোন কাজ করি তাহলে আমি মনে করি কেউ এরকম হীন বা খারাপ মন মানসিকতা মুলক কাজ করতে পারবে না।
যত দোষ সব গরীব দুখিনী দের হয়।এটাই তার প্রমাণ!
আমরা সহজেই আমাদের হাতে হাতে কাজ করে দেয় তাদের ভুল বুঝে ফেলি আর বকাঝকাও করে ফেলি।এমনকি অনেকে মারেও! খারাপ লাগে এসব দেখলে।
চমৎকার একটি বিষয় উপস্থাপন করেছেন দাদা। আসলে যে লোকগুলি আমাদের জীবন যাপনকে সহজ করে দিয়েছে, আমাদের জন্য যারা হাড়ভাঙা খাটুনি করে। তাদেরকে আমরা মোটেও মূল্যায়ন করি না। পদে পদে তাদের কে অপমান করি। অপবাদ দিই। একজন খারাপ লোকের জন্য আমরা সবাইকে সমান চোখে দেখি। সবাইকে খারাপ মনে করি। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। আমার বাসায় যে মহিলা কাজ করেন। তিনি খুবই বিশ্বস্ত। কখনো কিছু চুরি করে না। বাসায় আমার মানিব্যাগ প্রায়ই এখানে ওখানে পড়ে থাকে। কিন্তু কখনও তিনি সেখান থেকে টাকা নেননি। এজন্য আমাদের সবারই প্রয়োজন এই শ্রেণীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো। ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।
এটা আমাদের অনেকের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ আমরা মনে করি যাদের টাকা-পয়সা প্রয়োজন আছে তারা সব সময় মনে হয় চুরির চিন্তা করে। কিছু লোক এরকম আছে তবে কোন সমাজের অবক্ষয় নয় এটা। আমাদের সবার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আমাদের সমাজকে অনেকটাই পরিবর্তন করে দিতে পারে। মানুষের মানুষের কোন ভেদাভেদ থাকা উচিত নয় প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে নিজের কাজটা করে যাচ্ছে আর এটাই হচ্ছে সমাজের সবার অবদান। আপনার একাডেমিক বই থেকে শেয়ার করা গল্পটি অনেক ভালো লাগলো। এবং এর থেকে অনেকগুলো শিক্ষনীয় বিষয় আলোচনা করেছেন এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
কি বলবো দাদা,এটা তো এখনকার নিত্যসময়ের চিত্র।
আমাদের সাথে ক্রিকেট খেলতো এক ছেলে যে একটা বাসায় কাজ করতো।বয়স বড়জোর ১০/১১।কি বলবো দাদা,কি অমানবিক ব্যবহারই না করতো সেই ছেলের সাথে।কোনো কাজে উনিশ বিশ হইলেই মারধর করতো।
আমরা যারা বাসায় কাজের লোক রাখি তারা ভুলে যাই যে,এক কাজের লোকেরাও মানুষ।দিনশেষে এদেরও শান্তির প্রয়োজন,বিশ্রামের প্রয়োজন।
মানুষগুলোকে যদি একটু ভালোবাসা
দেয়া যেয় তাহিলে ওরা কাজেও মন দেবে আর বিপদে আমাদের পাশেও দাঁড়াবে।
খুবই শিক্ষনীয় পোষ্ট এটি এবং বাস্তবতাসম্পূর্ণ।আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্যই পাল্টানো প্রয়োজন।আমাদের মতো এই সমস্ত মানুষদের ও বাঁচার সমান অধিকার রয়েছে।ধন্যবাদ দাদা।
এটি হইত আমাদের একটি জন্মগত একটি স্বভাব বলা যায়। অধিকাংশ বৃওশালী সমাজের মধ্যে ধনী গরীব বিভেদ করে। এবং একশ্রেণির লোক এটার রাজনৈতিক সুবিধা নেই। এটা কিন্তু আবার ঠিক না। খুব সুন্দর লিখেছেন দাদা।।।
ভাই অনেক বাস্তব সম্মত কন্টেন্ট। অনেক শিক্ষানীয় একটা পোস্ট। ধন্যবাদ তোমাকে
আমাদের নিজেদের কে বদলাতে হবে তাহলেই বদলে যাবে আমাদের সমাজ।
ধন্যবাদ
সত্যিই একটি বাস্তব চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। সত্যিই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একেবারেই নিম্নস্তরে, এ থেকে সকলকেই বেরিয়ে আসতে হবে। তবে আমি বেঁচে গিয়েছি আমার কোন কাজের লোক নেই, আমার কাজের লোক আমি নিজেই।