ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago
_DSC0071.JPG

বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গোৎসব।শরতের সাদা মেঘ ভোরের শিউলি ফুল বিকেলের দোদুল্যমান কাশফুল জানান দেয় মা আসছে।মহালয়া হয়ে গেছে আর বেশি দিন বাকি নেই, কিছুদিন পরেই পাড়ায় পাড়ায় ঢাকের তালে আনন্দ আর উৎসবে দুর্গোৎসব পালিত হবে।বাঙালির এই সার্বজনীন উৎসবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করে।এই উৎসবকে সর্বদা সার্বজনীন উৎসব হিসেবে বিবেচনা করা হয়।গত বছরে পুজো হয়েছে নিয়ম রক্ষার পুজো।কারণ মহামারীর ভয়াবহতার উৎসব বানানোর মতো মন-মানসিকতা কারো ছিলো না।

প্রত্যেকের ঘরে তখন দুঃখ সর্বদা বিরাজমান।এখনো করোনাভাইরাসকে আমরা পুরোপুরি জয় করতে পারিনি। এখনো করোনা ভাইরাস পুরোপুরি আমাদের থেকে বিদায় নেয় নি।তবে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে জানি এবং তারই ধারাবাহিকতায় করোনাভাইরাসকে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। বিভিন্ন রকম বিধিনিষেধের মাধ্যমে মাকে বরণ করে স্বাস্থ্যবিধি কে মান্যতা দিয়ে প্রত্যেককে আনন্দ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।পৃথিবী থেকে অত্যাচার অন্যায় দূর করার,রাবনের সঙ্গে যুদ্ধ জেতার জন্য ভগবান রামচন্দ্র কে ও নিতে হয়েছিল অন্যের সাহায্য।

_DSC0056.JPG

সেই অন্য আর কেউ নন তিনি আদি শক্তি মহাশক্তি দুর্গা। আমরা যারা বিজ্ঞানের ছাত্র তারা অনায়াসে ধর্ম কে উপেক্ষা করতে চাই বিজ্ঞানের যুক্তি যৌক্তিকতা দিয়ে। কিন্তু হিসাব করলে দেখা যায় ধর্ম ও বিজ্ঞান এর মধ্যে পার্থক্য করেছে কিছু মানুষ।যারা ধর্মকে অস্ত্র করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে নিজেরা ফায়দা লুটেছে। খুব গভীরভাবে দেখলে দেখা যায় যে প্রত্যেকটা ধর্মই বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে তার মূল নীতি তৈরি করা হয়েছে।যেমন এখানে হিন্দু ধর্মে যেমন আদিশক্তির কোনো বিনাশ নেই, সৃষ্টি নেই।শক্তি শুধু এক রূপ থেকে আরেক রূপে রূপান্তরিত হয়।

_DSC0013.JPG

নিজেদের স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে চলেছি সেটা অন্য বিষয় সেটা নিয়ে আমাদের আলোচনা করা ও উচিত নয়।এখানে কারণ ধর্ম প্রচারণা ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা কমিউনিটির নিয়ম বিরুদ্ধ।আমরা এখানে আলোচনা করবো দুর্গাপুজোর উৎসবকে গুরুত্ব দিয়ে।কারণ এই উৎসবে প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে জাতি-ধর্ম-বর্ণর এক মিলনমেলা তৈরি হয়।প্রত্যেকে আমরা মিলিত হই একে অন্যের সঙ্গে আর ভাগ করে নি ভালো-মন্দ।এই ভাবেই আমরা অত্যন্ত মানসম্মত সময় উপভোগ করি।

এই পৃথিবী থেকে অন্যায় ও অত্যাচার কে মুক্ত করার জন্য রামচন্দ্রকে সেই অসময়ে দুর্গাপুজো করতে হয়েছিল।মূলত বসন্তকালের বাসন্তী পুজো ছিল মূল দুর্গোৎস।আজকের দিনেও এই বাসন্তী পুজোর প্রচলন থাকলেও এই অকাল বোধন এই শারোদৎসব এখন সর্বজনবিদিত দুর্গোৎসব।এই দুর্গোৎসবে মায়ের কাছে একটাই প্রার্থনা থাকবে এই মহামারীর তার থেকে মুক্তি প্রাপ্ত মানুষকে নতুন শক্তি দিক। তারা যেন সকল রকম বিপর্যয় কাটিয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।প্রত্যেক মানুষের মুখে অন্ন উঠুক।

কোন দরিদ্র পরিবারের ছেলেটির দুচোখে স্বপ্ন পূরণের যে তাগিদ বাস্তবে রূপান্তরিত হোক তা একদিন। দুর্গোৎসব সত্যিকারের মহামিলন মেলায় পরিণত হোক।আর তাহলেই পাড়ায় পাড়ায় আলোর ঝলকানি দিয়ে ধূমধারাক্কা গান বাজিয়ে দুর্গাপুজোর উৎসবকে মহিমান্বিত করা যাবেনা।দুর্গাপুজোর সত্যিকারে মহত্ব রয়েছে মানুষে মানুষে যে পবিত্র প্রেম।

মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে গিয়ে সবাই একত্রিত হয়ে মায়ের কাছে প্রণাম জানিয়ে উৎসবে মেতে ওঠা, সমাজের প্রত্যেকটি স্তরের মানুষকে কাছে ডেকে উৎসবে আমরা মিলিত হই, সকল রকম সামাজিক দূরত্ব স্বাস্থ্যবিধি মেনে।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।এই প্রত্যাশা রেখে শেষ করছি।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


image.png

Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord

image.png

Sort:  
 3 years ago 

উৎসব আমার, উৎসব আমাদের। ঘৃণা নয় ,ভালোবাসা সর্বত্র ছড়িয়ে যাক । অগ্রীম শারদীয় শুভেচ্ছা রইল।

Those photos are looking epic I love it!!!!

 3 years ago 

বাঙালির এই সার্বজনীন উৎসবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করে।এই উৎসবকে সর্বদা সার্বজনীন উৎসব হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

একদম চিরন্তন সত্য কথা বলছো। ভগবান রামকৃষ্ণ এর দুর্গা পূজা দেয়া।বিজ্ঞানের সাথে যে ধর্মের বিরাট মেলবন্ধন আছে তা নিপুণতার সাথে তুলে ধরা। সকল মানুষের আনন্দের উৎসব মা দুর্গা পূজা। গত বছর শুধু নিয়ম রক্ষার জন্য দুর্গা পূজা হয়েছিলো ।এবার করোনা বিধি মেনে হচ্ছে।সকলকে সচেতন ভাবে চলতে আহ্বান ।সবকিছু মিলে তোমার কন্টেন্ট টি অনবদ্য হয়েছে। শারদীয়ার শুভেচ্ছা নিও বন্ধু।

 3 years ago 

বিশ্ব কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে শুধু পুজা নয় যেকোন ধর্মীয় উৎসব ১০০ ভাগ আনন্দ উদ্দীপনা নিয়ে পালন করা সম্ভব হয় নি।যেমনটি আপনি এই আর্টিকেলে লিখেছেন।অনেক ভালো আপনার লিখনি।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

আমি যখন গ্রামে থাকতাম ঐ সময়ে আমি আমাদের এলাকায় যতো দুর্গোৎসব হতো আমরা সব বন্ধুরা মিলে দেখতাম আর অনেক মজা করতাম। আজকে আবার আপনার পোস্ট দেখে মনে পরে গেলো সেই পুরোনো দিনের মজার মুহূর্ত গুলো। ঢাকায় ও মাঝে মধ্যেই দেখতাম। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইলো

দাদা, এটা সবচেয়ে বড় সত্য যে, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। উৎসবের মাঝে কোনো প্রকার ভেদাভেদ থাকে না। উৎসবের মাঝে আমাদের সবার পরিচয় আমরা মানুষ। সেটা ভেবেই আমরা আনন্দে মেতে উঠি । দাদা আর কয়েকদিন পরই আপনাদের দূর্গা উৎসব। আপনাদের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল। যাতে আনন্দের মধ্য দিয়ে উৎসবটা পালন করতে পারেন।

 3 years ago 

জী দাদা এটা বিজ্ঞানেরও ভাষা। " শক্তর সৃষ্টি বা বিনাস নেই, শক্তি শুধু এক রুপ হতে অন্য রুপে রুপান্তরিত হয়।

এবং দাদা আপনাকে শারদীয় দূর্গোউৎসব এর শুভেচ্ছা। খুব আনন্দের সাথে পুজো কাটান মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে বেড়ান। তবে কিন্তু নিজের সুরক্ষা বজায় রেখে।

 3 years ago (edited)

ভাইয়া আপনার এই কথাটি ( নিজেদের স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে চলেছি) ১০০% সঠিক কথা।
আমাদের প্রত্যেকটা ধর্মেই কিন্তু আছে ভালো মানুষ হতে যা আমরা নই!!
আপনাদের পুজো সম্পর্কে অনেক কিছুই অজানা ছিলো,সেহেতু অনেক কিছুই জানতে পারলাম।সুন্দর ভাবে সাজিয়ে লিখেছেন।

Hi @blacks,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Please consider to approve our witness 👇

Come and visit Italy Community

 3 years ago 

"ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার" এই কথাটি আমার অনেক ভালো লেগেছে। সত্যি কথা বলতে ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি আমার গ্রামের যারা অন্য সম্প্রদায়ের অর্থাৎ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করত তাদের যখন পূজা উৎসব শুরু হতো তখন আমাদের মধ্যে অনেক ভালো লাগা কাজ করতো। ছোটবেলায় সেই উৎসবমুখর পরিবেশ গুলোকে উপভোগ করেছি। আজও মনে পড়ে যায় সেই মেলায় কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি শারদীয় দূর্গা পূজার শুভেচ্ছা।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59226.54
ETH 2603.16
USDT 1.00
SBD 2.42