পুরোনো দিনের কথা।।২১ জুলাই ২০২২।।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন?আশা করি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকে আমি আমার পোস্ট লেখা শুরু করছি।আপনারা সবাই কম বেশি জানেন যে আমি একটু জীবন সম্পর্কে লিখতে ভালোবাসি।আজকে ও জীবনের কোনো এক বৈচিত্র্যময় দিকে থেকে কিছু আলোচনা করবো বা আপনাদের শোনাবো।

image.png

Image[source]


একটি ছেলের গল্প শোনাবো আপনাদের।ছেলেটি অনেক সাধারণ,গ্রামের নির্মল হাওয়ায় ভিজে মাটিতে দৌড়ে বেড়ায়।অফুরন্ত প্রাণ শক্তিতে ভরপুর ছেলেটির জীবন।গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের তুখোড় ছাত্র সে।কিন্তু পড়াশোনা একদমই বেশি করতে ভালো লাগে না।অল্প পড়েই প্রতি বছর ভালো ফলাফল করে ক্লাসে প্রথম হয়।ছেলেটি মা দিদি মা আর ছোট দিদিমার কাছে থাকে।বাবা শহরে চাকরি করে দাদারা শহরে পড়াশোনা করছে।অর্থাৎ ছেলেটির স্বাধীনতা প্রচুর।সপ্তাহে মাত্র ২ দিন সে পরাধীন কারণ ওই দুদিন তার বাবা গ্রামে তাদের কাছে আসে।এই দুই দিন ছেলেটিকে বেশ মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে হয়।পড়াশোনার ফাঁকে ছেলেটি দুপুরে খেয়ে বাবার সাথে বেড়িয়ে পড়ে মাছ ধরতে নদীতে।

এই নদীকে সাধারণত গাঙ বলে।সেই গাঙে বাবা ছেলে মিলে রাত অবধি মাছ ধরে আর মাছের পাত্র ভরে ওঠে প্রচুর তাজা তাজা মাছে।প্রচুর ভালোবাসা আর অল্প শাসন নিয়েই ছেলেটির দিন কেটে যাচ্ছিলো।বাড়িতে জেঠামশাইরা কাকারা আর প্রচুর ভাই বোন রেখে ছেলেটি মায় দিদি মার সাথে বড় হতে থাকে।তার অন্য কারণ আছে সেটা পরে কোনোদিন শোনাবো আপনাদের।ছেলেটি মায়ের সাথে শুধু পুজোর সময় আর কোনো অনুষ্ঠান হলে নিজের বাবার বাড়িতে যেত।তখন সব ভাই বোন মিলে বিশাল আনন্দ করতো।

এই ভাবেই সুন্দর দিন কেটে যেতে লাগলো।ছেলেটি আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলো।প্রাইমারি স্কুল প্রায় শেষের দিকে তাই ভালো মানের পড়াশোনার জন্য তাকে পাড়ি দিতে হলো শহরে।প্রথম প্রথম শহরকে ছেলেটির সুন্দর লাগছিলো।কিন্তু কিছুদিন পর তার শহর খারাপ লাগতে শুরু করে দিলো।সারাদিন মনটা পড়ে থাকতো গ্রামের সেই মাটির লম্বা পথ ঘুড়ি উড়ানো ক্রিকেট খেলায়।কিন্তু একসময় সব কিছুই মেনে নিতে হয়।ছেলেটি ও প্রবেশ করলো এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতার ময়দানে,যেখানে পরীক্ষায় প্রথম হওয়াটাই শেষ কথা।প্রথম পরীক্ষায় তৃতীয়,গ্রামের ছেলে শহরের বড় স্কুলে এতগুলো ছেলেদের মধ্যে তৃতীয় হয়ে সে বেশ খুশি।পড়াশোনা ও আরো মন দিয়ে শুরু করলো।দ্বিতীয় পরীক্ষা দ্বিতীয় স্থান ও ফাইনাল পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়ে নিজের আগের দুই দাদার রেকর্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলো।

প্রতি বছর ফাইনাল পরীক্ষা হলে ছেলেটি গ্রামে চলে আসতো আর সারাদিন ক্রিকেট খেলায় মেতে থাকতো।ছেলেটির দিদিমা ছিলো এক অনন্যা মহিলা।তিনি একা নিজের হাতে পুরো সংসার সামলাতেন।তাঁর হাতের রান্না ছিলো অসাধারণ।অসম্ভব ভালোবাসা পেতো ছেলেটি দিদি মার কাছ থেকে।বলতে গেলে মা নয় দিদিমা ই ছেলেটিকে ছোটো থেকে মানুষ করেছে।ছেলেটি তার দিদিমাকে প্রচন্ড ভালোবাসতো।তার দিদিমা তার জন্য সব কিছু করতো।এক পুজোয় ছেলেটি বাবার বাড়িতে গেল হঠাৎ সকালে মায়ের ফোন তার দিদিমা শরীর একটু খারাপ হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছে ,চিন্তার বিশেষ কারণ নেই ঠিক হয়ে যাবে।ছেলেটি কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।কিন্তু বিধিবাম দুপুরে খবর এলো দিদিমা আর নেই।তিনি না ফেরার দেশে যাত্রা করেছেন।

ছেলেটির সারা দুনিয়া অন্ধকার হয়ে গেল।হাহাকার করে উঠলো হৃদয়।কিন্তু চোখের জল শুকিয়ে গেল ভীষণ আঘাতে।যে মানুষ টা এতো ভালোবাসা দিয়ে তাকে রাখতো সে আর নেই।সেই থেকেই ছেলেটি চিনে গেল প্রিয়জন হারানোর যন্ত্রণা।একটা স্থায়ী অন্ধকার চির সঙ্গী হলো তার।এরপর অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে।আজ ছেলেটি ভুলতে পারে নি তার দিদিমাকে।তাকে এখনো কিছু দেয়া বাকি ছেলেটির।

বি:দ্রঃ গল্প হলেও সত্যি।।


অনন্তের পথে যাত্রাকালে শুধু একটু অপেক্ষা
যদি শেষ বারের মতো একবার হয় দেখা,
এই অপেক্ষা নিয়েই দীর্ঘ তিরিশ বছর
আমি কাটিয়ে দিয়েছি ক্ষুধা নিয়ে, শরীরে নিয়ে যন্ত্রণা
তোমায় দেখার আমার এতটাই প্রবল বাসনা।
জানি না সত্যি তুমি বিশ্বাস করেছিলে কিনা?
ভালোবেসে ছিলাম তোমায় যতটা ক্ষমতায় কুলায়,
তোমার জন্য একটা অস্থিরতা নিয়ে
বহুদিন তোমার পাড়ায় ঘুরেছি নিঃসঙ্গ হয়ে।
আসলে আমি শুধু পেতে চেয়েছি তোমায়
কিন্তু চাইতে পারিনি,শুধু ভেঙেছি সাজানো রাজপ্রাসাদ।
আমার জন্য আসুক ভয়ংকর অন্ধকার
ওই দূরে তুমি আলোয় আলোয় উৎসব সাজাবে।
সত্যি বলতে তুমি অপরূপা,এক অসাধারণ নারী
আমি তো শুধু ভুল করে চেয়ে দুঃখ পেয়েছি।


|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||

standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


image.png

png_20211106_204814_0000.png

Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord

Sort:  
 2 years ago 

প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানে এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আসলে মানুষের জীবন কখন কোন পর্যায়ে যেয়ে থাকে তা বলা সম্ভব নয়। আপনার এই গল্প পড়ে আমি শৈশবের কিছু স্মৃতি স্মরণ করে বসেছিলাম মনের অজান্তে। তবে আপনার গল্প পড়ে বাস্তবতার কিছু রূপ খুঁজে পেলাম।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 2 years ago 

আপনার আজকের লেখাটি পড়ে বেশ ভাল লাগলো। গল্পের ছোট্ট ছেলেটি যে ছোট দাদা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
অনেক সফলতার মাঝে প্রিয়জনকে হারানোর বেদনা যেন সব কিছুকে মলিন করে দেয়। তারপরেও আমাদেরকে মেনে নিতে হয় তাদের বিদায় যাত্রাকে
ছোট বেলার অনেক আনন্দময় মুহুর্ত গল্পে গল্পে পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
পরবর্তী দিনের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

দাদা গ্রামে কাটানো মুহূর্তগুলো সত্যিই অসাধারণ। আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। গ্রামের এই ছেলেটি খুবই ভালো ছাত্র। সে অল্প পড়লে হয়ে যায়। কারণ তার বেশি পড়তে হয় না। সে ভালো রেজাল্ট করে। ক্লাসের মধ্যে ফার্স্ট হয়। সে স্বাধীন, কিন্তু সপ্তাহে দুদিন পরাধীন থাকে, কারণ ঐ দুদিন তার বাবা গ্রামে আসে এবং বাবাকে দেখে তার পড়তে হয় বেশি।আগের চায়তে পড়াশোনা বেশি করতে হয়। তারপরে আর একটা জিনিস খুবই ভালো লাগলো বাবার সাথে সে মাছ ধরতে নদীতে যায়। আসলে বাবার সাথে মাছ ধরার মূহুর্তটা সত্যিই অসাধারণ।

 2 years ago 

খুব কাছের মানুষগুলো যখন ছেড়ে চলে যায় আমরা নিজেরা হয়তো কোন কুল কিনারা খুঁজে পাই না আর। সারাদিনের প্রতিটা কাজের মাঝে কোথাও না কোথাও তাকে খুঁজে ফিরি। আর আমার কাছে যেটা মনে হয় দিদিমার ভালোবাসাগুলো দুষ্টু মিষ্টি ভরা থাকে। সবকিছুর বাইরেও যেন অন্যরকম একটা আদর পাওয়া যায়। সবশেষ এটাই বলব দিদিমা যেখানেই থাকুন না কেন আপনার সাথেই আছেন। তার আশীর্বাদ সবসময় আপনার সাথে আছে ।

 2 years ago 

অনেক ভাল লাগলো গল্পটি পড়ে । ধন্যবাদ ভাইয়া ।

 2 years ago 

প্রিয়জনকে হারানো সত্যি অনেক কষ্টের। যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছে শুধুমাত্র তারাই সেই কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে। দাদা আপনার লেখা গুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো। কখন যে নিজের শৈশবের মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। দাদা আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

খুবই দারুণ মজা পাচ্ছিলাম শুরুতে, মনে হচ্ছিল আমিও যেন গ্রামের জীবন্ত কিছু উপভোগ করছি। আসলেই বাস্তবতা বড়ই কঠিন, মুহুর্তের মাঝে জীবনের সব পাল্টে দেয়। শেষের অংশে এসে আটকে গেলাম, চোখগুলো জলে ভরে গেলো, খুবই প্রত্যাশিতভাবে গল্পের সমাপ্তি হলো। কিন্তু না জীবনের গল্পের কখনো সমাপ্তি হয় না, ভালোবাসার মানুষগুলো চিরদিন হৃদয়ের মাঝে থাকে। ধন্যবাদ দাদা

Hi @blacks,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 2 years ago 

গল্পের শুরুতে দারুন ভাবে মজা পাচ্ছিলাম কিন্তু শেষের দিকে সত্যি দাদা আমি খুবই ইমোশনাল হয়ে গেলাম। আসলে বাস্তবতা বড়ই কঠিন। যে কোন মুহূর্তে মানুষের জীবন পাল্টে যেতে পারে।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 67241.02
ETH 3727.25
USDT 1.00
SBD 3.77