সুন্দর ফুলের মেলায় কাটানো একটি বিকেল বেলা ।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

DSC_0671.JPG
ক্যানবেরা


হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছো?আশা করি সবাই ভালো আছো অসুস্থ আছো এই পরিস্থিতিতে সবাই সুস্থ থাকা এবং একে অপরের প্রতি যত্নশীল হওয়া অত্যন্ত জরুরী ৷সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের লেখা শুরু করছি ।বন্ধুরা আজকে আমি কিছু ছবি তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চলেছি। এই ছবিগুলো বিশেষত কয়েকটি ফুলের ।এর মধ্যে রয়েছে একটি ক্যানবেরা অন্যটি হলো একটি রেয়ার অর্কিড। আজ থেকে বেশ কিছুদিন আগে বেরিয়ে পড়েছিলাম হাতে ক্যামেরাটা নিয়ে।অনেকদিন হয়ে গেছে সক্যামেরাটি ব্যবহার করা হয়নি, এই লকডাউন পরিস্থিতিতে সবকিছু অচল হয়ে গেছে।

নতুন এই পরিস্থিতি যাকে নাম দেয়া হয়েছে নিউ নরমাল।এই নিউ নরমালে বেরিয়ে পড়লাম হাতে ক্যামেরা নিয়ে কিছু ফটোগ্রাফি করার জন্য। কোথায় যাওয়া যায় অনেক চিন্তা করলাম ,খুব কাছে ও নয় আবার বেশি দূরে ও নয়।তাই ঠিক করলাম কাছাকাছি কোথাও যাব তো একটা পার্কের কথা মনে পড়ল।পার্ক টি খুব একটা বেশি দিন তৈরি হয়নি ৫ বছর হয়েছে চালু হয়েছে। গঙ্গার ঘাটে গড়ে উঠেছে এই পার্কটি।জায়গাটির নাম ব্যারাকপুর। আমার বাড়ি থেকে ব্যারাকপুর মোটামুটি কুড়ি থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে। ব্যারাকপুর সম্পর্কে সবারই কমবেশি জানা আছে ,এটি একটি ঐতিহাসিক শহর ১৮৫৭ সালের এক স্মৃতির গৌরবময় ঐতিহ্য নিয়ে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে ব্যারাকপুর। মঙ্গল পান্ডে নামক এক ভারতীয় বৃটিশ সৈনিক প্রথম ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল ।এই বিদ্রোহের আগুন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।


DSC_0673.JPG


যদিও শেষমেশ ইংরেজদের কাছে এই বিদ্রোহ তেমন একটা কাজ করতে পারেনি ।ইংরেজরা এই বিদ্রোহ অত্যন্ত কঠোর হাতে দমন করে ।কিন্তু এই বিদ্রোহ ভারতীয়দের মনে একটা আশা সঞ্চার করেছিল যে এই বিশাল সাম্রাজ্যবাদী সরকারের সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়, এরকম আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল। যাই হোক সকাল সকাল খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম ব্যারাকপুর এর উদ্দেশ্যে ।তখন ঘড়ির কাটায় সবে ৩.১৫ । গ্যারেজ থেকে বাইকটি বের করলাম, তারপর কিছুটা ধোয়া মোছা বাইক স্টার্ট দিলাম।


DSC_0672.JPG


যদিও বাইকের প্রতি আমি খুব একটা যত্নশীল নই তবে মোটামুটি পরিষ্কার করি না হলে সে তো আমার কথা শুনবে না সেতো আমাকে ভালো সার্ভিস দেবে না। তো বাইকে উঠে রওনা দিলাম ব্যারাকপুরের উদ্দেশ্যে সঙ্গে ক্যামেরা। মোটামুটি পনেরো থেকে কুড়ি মিনিট লাগলো ব্যারাকপুরে পৌঁছতে।ব্যারাকপুরের রোড খুব সংকীর্ণ ফলত অত্যন্ত সাবধানে গাড়ি চালানো উচিত এবং আমি সর্বদা সাবধানে গাড়ি চালিয়ে থাকি।২৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে দেখলাম বেশ কিছু লোক লাইনে দাঁড়িয়ে আছে টিকিট কাটার জন্য।আমিও লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম, মোটামুটি পনেরো মিনিটের মধ্যে আমি টিকিট পেয়ে গেলাম হাতে।

টিকিট নিয়ে ঢুকে পড়লাম পার্কে। চারিদিকে সুন্দর সুন্দর গাছের সারি ।পরিকল্পনা করে যে গাছগুলো লাগানো হয়েছে দেখে সহজেই বোঝা যাচ্ছে।সবচেয়ে ভালো লাগলো যে প্রত্যেক গাছের গায়ে সেই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ও তার সংক্ষিপ্ত বিবরন লেখা প্ল্যাকার্ড রয়েছে। নতুন নতুন অনেক গাছ সম্পর্কে জানতে পারলাম তাই এটাকে একটা ছোটখাটো শিক্ষা সফর ও বলা যায়। যাই হোক এরপর আমি পার্কের চারিদিকটা দেখতে লাগলাম। প্রচুর ছেলেমেয়ে বালক-বালিকা যুবক-যুবতী এসেছে, বলতে গেলে সব বয়সের মানুষই পার্কে এসেছে ।তারা তাদের সময় কাটাচ্ছে আড্ডা দিচ্ছে ।

আমি ব্যাগ থেকে ক্যামেরা বের করলাম। এরপর এগিয়ে গেলাম গঙ্গার কাছে।গঙ্গার অপরূপ সৌন্দর্যের কিছু ফটো আমি ক্যামেরাবন্দি করলাম।হঠাৎ খেয়াল করলাম চারিদিকে ফুটে রয়েছে অসম্ভব সুন্দর সুন্দর ফুল ।সুন্দর ফুলের ছবি গুলোর মধ্যে থেকে কয়েকটি ছবি আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। ছবিগুলো কোনরকম এডিট এর ইফেক্ট ব্যবহার করা হয়নি। এর অরিজিনালিটি সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করা হয়েছে ।এরপর দেখলাম পার্কের এক কোণে সারিবদ্ধ কয়েকটি ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে ।এগিয়ে গেলাম, সেখানে দেখলাম যে কোলড্রিংস স্যান্ডউইচ এবং ছোটখাটো আরো অনেক ভাজা পোড়া রয়েছে। তো আমি একটি কোল্ড ড্রিংকস আর একটি জলের বোতল কিনলাম।কোমল পানীয় খেয়ে নিজেকে একটু ফ্রেশ করে নিলাম।


DSC_0667.JPG
রেয়ার অর্কিড


তারপর আবার ক্যামেরায় ছবি তুলতে লাগলাম ।এভাবে অনেকটা সময় কেটে গেল ।কিছুক্ষণ বসে নিজেকে আরো ফ্রেশ করে নিলাম ।আস্তে আস্তে অনেকটা সময় কেটে গেল।হাতের ঘড়িতে তাঁকিয়ে দেখি ৫.৩০ বেজে গেছে। কিছুক্ষণ পরেই দেখলাম পার্কের গার্ড বাঁশি বাজিয়ে বাজিয়ে সবাইকে সতর্ক করছে যে আর বেশি দেরি নেই আপনারা সবাই আস্তে আস্তে থেকে বেরিয়ে যান,এর ১০ মিনিট পর পার্ক বন্ধ হয়ে যাবে।আমিও আস্তে আস্তে উঠলাম উঠে পড়লাম।বেরিয়ে বেরিয়ে এলাম পার্ক থেকে।এবার বাড়ি ফেরার পালা। এবার আমাকে বাড়ি যেতে হবে ।বাড়ি যাওয়ার পথে রাস্তাটা বেশ ফাঁকা ছিল তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেলাম।একটা সুন্দর ভালো লাগা কাজ করছিলো কারণ আজকের দিনটা খুব সুন্দর এবং নতুন কিছু গাছ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।

খুব ভালো লাগে মাঝে মধ্যে একটা-দুটো ভ্রমন করতে পারলে ।তবে অধিকাংশ সময় দু চারজন বন্ধু নিয়ে আমি ভ্রমণ করে যাই।পরে সবাই মিলে ভ্রমণ করা কোনো একটি দিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নেব আপনাদের সাথে।ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন ।শুভরাত্রি


Support @amarbanglablog by Delegation your Steem Power

100 SP250 SP500 SP1000 SP2000 SP


Beauty of Creativity. Beauty in your mind.Take it out and let it go.Creativity and Hard working.Discord- https://discord.gg/RX86Cc4FnA
Sort:  
 3 years ago 

ফুলগুলি শট গুলি দারুন ছিল। খুব গোছালো উপস্থাপনার সাথে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

 3 years ago 

ভ্রমণ সব মানুষের জন্য অত্যন্ত মজার।প্রথম ফুলটি দেখতে অনেক সুন্দর।লেখা পড়ে মনে হচ্ছে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

ভ্রমণ যেমন আনন্দের তেমনি শেখার ও আছে অনেক কিছু।সুন্দর মন্তব্য এর জন্য ধন্যবাদ।।

 3 years ago 

বিকেলে মুহূর্তে ঘুরতে মানুষ বেশি ভালোবাসে।কারন বিকেলের পরিবেশ অনেক সুন্দর হয়।আর পরিবেশটা যদি চারিদিকে ফুলের সমাহার দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে তাহলে আর কথায় নেই।নতুন ধরনের ফুল দেখার অভিজ্ঞতা হলো।

 3 years ago 

একদম ,বিকেল মানেই একটা বেরোনোর mood আসে।ফুলের সান্নিধ্য তো অনেক কাঙ্ক্ষিত জিনিস।ধন্যবাদ।

 3 years ago 

অনেক বিস্তারিত ও সাবলীলভাবে আপনার একটি পার্ক ভ্রমণের বর্ণনা দিলেন। পাশাপাশি ইংরেজ শাসনামলে সাথে জড়িত স্মৃতিকথা ও এখানে শেয়ার করলেন। আমরা আসলে মাঝে মাঝে প্রায়ই এরকম আমাদের আশেপাশের পার্ক গুলোতে ক্যামেরা হাতে নিয়ে চলে যায় এবং উপভোগ করে। যে দুটি ফুলের কথা বললেন এর একটি দেখেছি আরেকটি প্রথমবার দেখলাম ।ক্যানবেরা অন্যটি রেয়ার অর্কিড।
৫ বছর আগে নির্মিত পার্ক হলেও ফুলগুলো ব্যারাকপুর এর পার্কের সৌন্দ্ররযকে প্রতিফলিত করছে যা মাত্র আপনার থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের পথ। ভাল লাগল বর্ননাগুলো বিশেষ করে ১৮৫৭ সালের এক স্মৃতির গৌরবময় ঐতিহ্য

 3 years ago 

নদীর পাশে গড়ে উঠা পার্ক গুলোর একটা আলাদা ব্যাপার আছে।সত্যি পার্কি অনেক সুন্দর ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

ফুলের ছবি গুলো ভালো তুলেছেন ভাই । সঙ্গে ব্যারাকপুরের ঘটনা ভালোই ব্যাখা দিয়েছেন। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

আপনাকে জানাই গোলাপের অফুরন্ত শুভেচ্ছা।

 3 years ago 

দাদা সবসময়ই প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকতে পছন্দ করেন। প্রায়ই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন। আমার খুবই ভালো লাগে। আপনার দিনটি সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। মঙ্গল পান্ডে উপর নির্মিত সিনেমাটা দেখেছিলাম। কিন্তু সেটা যে কলকাতার ব্যারাকপুর সেটা জানতাম না। ধন্যবাদ আপনাকে এই বিষয়টা আমাদের জানানোর জন্য। আর ছবি গুলো বরাবরের মতোই খুব সুন্দর হয়েছে।

 3 years ago 

আসলেই প্রকৃতির কাছে গেলে একটা আলাদা ভালো লাগা কাজ করে।তাই সর্বদা বেরিয়ে পড়ি।

 3 years ago 

এইনিউ নরমাল সময়ও যে আপনি আপনার হাতে ক্যামেরা নিয়ে যে ছবিগুলো তুলেছেন। অসাধারণ হয়েছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

 3 years ago 

অনেক অনেক শুভেচ্ছা নেবেন।

 3 years ago 

নিলাম।শুভ কামনা♥

 3 years ago 

পোস্টটি পড়ে আমি যতোটুকু বুঝতে পারলাম ভাইয়া আপনি খুবই ভ্রমন প্রিয় ব্যক্তি। ভ্রমণ করলে মন ভালো থাকে ক্লান্তি দূর হয় এবং অবসাদগ্রস্ত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। আপনার ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর এবং মনমুগ্ধকর। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

আমাদের প্রত্যেকেরই টুকিটাকি ভ্রমণ করা ভালো।এতে মনের বিস্তৃতি বাড়ে।

 3 years ago 

আপনি তো দেখছি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, ভ্রমণ করতে আমিও খুব ভালোবাসি ।মাঝে মাঝে আমি ও আমার পরিবারের সদস্য নিয়ে ভ্রমণ করতে যাই, আসলে নিজের পরিবার পরিজনের সাথে অথবা বন্ধুবান্ধবের সাথে ভ্রমণ করার মজাই আলাদা।

ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে এবং আপনার লেখাগুলো হয়েছে বেশ, পড়ে ভালো লাগল ,ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর এই বিকেলটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

আমিও ভ্রমণ করতে চাই।করোনার কারণে স্থগিত আছে।পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বেরিয়ে পড়বো।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 64420.25
ETH 3150.23
USDT 1.00
SBD 3.99