একটি ভূতের গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

সে অনেকদিন আগের কথা ।তখন আমার জন্ম হয়নি ।বাবার মুখেই এই গল্পটা শুনেছিলাম ।এটা গল্প হলেও সত্যি ।আমার বাবা রা ৫ ভাই ।বাংলার একটা ছোট গ্রামে সুখে শান্তিতে ও সম্মান নিয়ে আমাদের বাবা কাকারা বসবাস করতো ।বাবা ও কাকারা তখন স্কুলে পড়তো ।বাবার বড় ভাই তেমন একটা পড়াশোনা করতো না ।পরিবারের আনুষঙ্গিক কাজ করতো আর আমার দাদুর সাথে জমিতে চাষাবাদ করতো ।এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো দিন ।সেদিন শীতকালের এক বিকেল বেলা বাড়ির সবচেয়ে ছোট বাছুরটি এখনো গোয়ালে ফেরেনি|


image.png

Source



মা গাভীটি বাচ্চার জন্য অস্থির হয়ে পড়েছে ।দাদু জমি থেকে সবে বাড়িতে ফিরেছে ।এসে জানতে পারলো বাছুরটি এখনো ঘরে ফেরেনি ।তাই দাদু বাছুরটি খুঁজতে যাচ্চিলো কিন্তু আমার বাবার বড় ভাই মুকুন্দ দাদুকে বললো ,তুমি বিশ্রাম নাও ।আমি দেখছি কোথায় গেলো বাছুরটা ।এরপর মুকুন্দ বেরিয়ে পড়লো ।বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে এলো কিন্তু মুকুন্দ বাছুর নিয়ে এখনো ফিরছে না ।কি হলো ,আমার দাদু ও ঠাম্মার উৎকণ্ঠা বাড়তে লাগলো ।এদিকে একটি আলাদা ঘরে আমার বাবা ও দুই কাকা বই পড়ছে ।আগের দিনে সন্ধ্যা হলেই গ্রামের প্রত্যেক ঘরে ঘরে বই পড়ার দুম লেগে যেত ।সুর করে জোরে জোরে সবাই বই পড়তো ।এখনকার ছেলে মেয়েরা জোরে জোরে পড়তে চায়না ।ফলে তাদের উচ্চারণে কোনো ভুল থাকলে সেটা সহজেই ধরা পরে না ।একজন বিজ্ঞ লোক সেটা শোনা মাত্রই সেই পড়ুয়াকে সংশোধন করে দিতে পারে না ।আমার বাবা রা যে ঘরটায় ভাইয়েরা মিলে পড়াশোনা করতো সেটি ছিল একটি ছোট্ট চার চালা খড়ের ঘর ।

সেই সময় গ্রামে একটি ঘর মজবুত করে টিন ও কাঠ দিয়ে তৈরী করা হতো ।আর বাকি গুলো খড় বাশ ইত্যাদি দিয়ে তৈরী করা হতো ।আমার বাবার এমনি একটি ঘরে সবাই সুর করে জোরে জোরে পড়ছিলো ।হঠাৎ এমন সময় ঘরটা কেঁপে উঠলো ।মনে হলো কেউ যেন ঘরের খুঁটি ধরে বাড়িটিকে নাড়াচ্ছে ।ভয়ে বাবা রা সবাই চিৎকার শুরু করলো ।তাদের চিৎকার শুনে ঠাম্মা আর দাদু বেরিয়ে এল ।কি হলো রে কি হলো ,দাদু বলে উঠলো ।বাবা রা ও বাইরে বেরিয়ে এলো ।এসে দেখলো মুকুন্দ আমার বাবার বড় ভাই উন্মাদের মতো খুঁটি ধরে জোরে জোরে নাড়াচ্ছে ।কাছে যেতেই মুকুন্দ আস্তে আস্তে অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো ।এই ঘটনা দেখে বাড়ির সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়লো ।কেউ মাথায় জল দিতে লাগলো কেউ হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে লাগলো ।এই ভাবে বেশ কয়েক ঘন্টা কেটে গেলো ।আস্তে আস্তে মুকুন্দ এর জ্ঞান ফিরলো ।তখন তার কাছে জিজ্ঞেস করে জানা গেল কি হয়েছিল ।

মুকুন্দ যেটা বলেছিলো সেটা এমন ছিল ।মুকুন্দ এদিকে ওদিকে বাছুরটি খুঁজতে লাগলো ।খুঁজতে খুঁজতে অন্ধকার নেমে এলো ।হঠাৎ দেখলো ওই দূরের মাঠে লাল বাছুরটি তিড়িং বিড়িং করে নাচছে ।কাছে গিয়ে মুকুন্দ বাছুরটি ধরতে অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু বাছুরটি নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছিলো ।কিছুক্ষণ এই রকম করতে করতে মুকুন্দ দেখলো তার সামনে বাছুরটি হাঠৎ আগের থেকে বড়ো হয়ে গেলো ।আর মুকুন্দের দিকে তেড়ে এলো ।এরপর দুজনে চলতে লাগলো জবরদস্ত কুস্তি ।এক সময়ে বাছুরটি অদৃশ্য হয়ে গেলো ।মুকুন্দ ছোটবেলা থেকেই অনেক শক্তিশালী।


Support @amarbanglablog by Delegation your Steem Power

100 SP250 SP500 SP1000 SP2000 SP


Beauty of Creativity. Beauty in your mind.Take it out and let it go.Creativity and Hard working.Discord- https://discord.gg/RX86Cc4FnA

Sort:  
 3 years ago 

বাছুরটির শেষ ঠিকানা কি হলো দাদা?

 3 years ago 

সেটা আমার ও অজানা।

 3 years ago 

কৌতূহল যে কৌতূহলই থেকে গেল🙂

 3 years ago 

আপনার ভুতের গল্প শুনে আমার ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল।আমরা সবাই আমার আব্বুকে ঘিরে বসে থাকতাম আর আব্বু আমাদের সবাইকে তার ছোট বেলার ভুতের গল্প শোনাতেন।খুবই আনন্দের সময় পার করতাম।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পুরোনো স্মৃতি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।গল্পটা খুবই সুন্দর ছিল।

 3 years ago 

আজকে এই স্মার্ট ফোনের যুগে এই সব সুন্দর পারিবারিক আয়োজন গুলো হারিয়ে গেছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

ভূতের গল্প ভেবে গল্পটা পড়তে লাগলাম।ভাবলাম বুকের ভেতর এক প্রকার থ্রিলিং ভাব আসবে।কিন্তু পুরো গল্প জুড়ে শুধু শেষ অংশে ভূতের কাহিনি।যাইহোক দাদা গল্পের উপস্থাপনা বেশ ভালোই ছিল।

 3 years ago 

সঠিক বলেছেন গল্পটি ঠিকঠাক হয়নি।ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ভূতের গল্প ভেবে যেমনটা ভেবেছিলাম তেমনটা না। আপনার বাবার ছোটবেলার কথা বর্নণা করেছেন। বিষয়টি বেশ লোমহর্ষক ছিল। কিন্তু আমি উপভোগ করেছি। খুব সুন্দর উপস্থাপন করেছেন।

 3 years ago 

ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

মুকুন্দ বাবু পড়ে বাছুরটি পেয়ে ছিল কিনা এই জানার অপেক্ষায় থাকলাম ।নাকি শেষ মেষ বাছুরটি হারিয়েই গিয়েছিল?

 3 years ago 

সেটা আমিও জানি না।

 3 years ago 

দীর্ঘদিন পর একটি ভূতের গল্প পড়লাম। যদিও ঘটনাটি সত্যি। পড়ে অনেক মজা পেয়েছি। ভূতের গল্প পড়তে ছোটবেলা থেকেই অনেক মজা লাগতো। আরো মজা লাগতো যদি রাতের বেলা কারো কাছ থেকে ভূতের গল্প শুনতাম। গল্প শুনতে খুব মজা লাগতো। কিন্তু গল্প শোনার পরে রাতে আর ঘরের বাইরে যেতে চাইতাম না। বাছুর কি ওনারা ফিরে পেয়েছিলো?

 3 years ago 

ঠিক বলেছেন।রাতের বেলা ঘুমানোর আগে ভুতের গল্প শোনার মধ্যে একটা আলাদা শিহরিত ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

গল্পটির মাঝে শিক্ষনীয় একটি বিষয় আমি খুঁজে পেয়েছি, আগে সবাই উচ্চস্বরে পড়াশুনা করতো, এটার সবচেয়ে ভালো দিক ছিলো সহজেই বড়রা ভুল ধরে সংশোধন করতে পারতো। আমাদেরও উচিত তাই করা, না হলে ভুলটি থেকেই যাবে।

 3 years ago 

একদমই ।এটা করলে অনেক ভালো হয়।

 3 years ago (edited)

ভূতের গল্প শোনা মাত্রই সমস্ত শরীর শিরশির করে উঠেছে। আসলেই এই ধরনের অনেক ঘটনা আগে ঘটতো, আমার বাবাও এই ধরনের অসংখ্য গল্প আমাদেরকে ছোটবেলায় শুনিয়েছেন। অতীতে মনে হয় সত্যি সত্যিই এ ধরনের ভুতের আনাগোনা ছিল।

আগের দিনে সন্ধ্যা হলেই গ্রামের প্রত্যেক ঘরে ঘরে বই পড়ার দুম লেগে যেত ।সুর করে জোরে জোরে সবাই বই পড়তো ।

একদম সত্যি কথা বলেছেন, এখন কাউকে আর জোরে জোরে বই পড়তে শোনা যায় না, আমরাও ছোটবেলায় অনেক জোরে জোরে বই পড়তাম। আর পরীক্ষার সময় অন্য সদস্যদের ঘরে টিকা মুশকিল হয়ে যেত, কারন আমরা চারবোন একসাথে পড়া শুরু করতাম। আপনার এই গল্পটি আমাকে ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিলো, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

জোরে পড়ার মধ্যে ও একটা আনন্দ আছে।সেটা আজকের generation রা বুঝবে না।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

গল্পটি দারুণ ছিল ,কিন্তু গল্পের শেষে ট্র্যাজেডি রয়েছে।আমার জানতে ইচ্ছে করছে খুব যে লাল বাছুরটি পরবর্তীতে কি পাওয়া গিয়েছিল এবং মুকুন্দ লোকটির পরের অবস্থা কেমন হয়েছিল?এটা না শুনলে আমার ভালো লাগছে না।এটি বললে আমি খুবই খুশি হবো দাদা।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

লোকটি সুস্থ হয়ে গেছিলো।কিন্তু বাছুরটি পাওয়া গেছিলো কিনা সেটা আমি ও জানি না।

 3 years ago 

অদভূত ভূতের গল্পটি।অনেকটা কোতহলের হলের মধ‍্য দিয়ে দিয়েই গল্পটা পড়লাম।

 3 years ago 

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 61672.72
ETH 2996.85
USDT 1.00
SBD 3.78