মুভি রিভিউ : দেয়া নেয়া[১৯৬৩]
বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি ভালো আছেন সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার পোস্ট লেখা শুরু করছি।বাংলা মুভির জগতে উত্তম কুমার এক অবিস্মরণীয় নাম।তাঁকে বাংলা সিনেমার রাজপুত্র বলা হয়।অসামান্য অভিনয় দক্ষতা ভুবন ভুলানো হাসি আর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব তাঁকে দিয়েছি মহানায়কের সম্মান।তাই সব যুগের সিনেমাপ্রেমী মানুষ তাঁকে মহানায়ক হিসেবেই বিবেচনা করে।বন্ধুরা আজ আপনাদের সাথে একটি পুরোনো বাংলা মুভি নিয়ে আলোচনা করবো।
কথায় আছে 'Old is gold'।তেমনি পুরোনো দিনের এক একটি বাংলা সিনেমা সোনার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।১৯৬৩ সালের একটি সিনেমা কতটা আধুনিক হলে এই একবিংশ শতাব্দীতে ও তুমুল জনপ্রিয় থাকতে পারে তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ "দেয়া নেয়া" সিনেমাটি।এই মুভিটি আগেই বেশ কয়েক বার দেখেছি।কিন্তু যতবারই এই ছবিটি দেখি মনে হয় প্রথম বার দেখছি।এতটাই জাদু আছে এই সিনেমায় ।আমি ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে ও দারুণ ভাবে উত্তম কুমারের ফ্যান।'বাঙালিকে উত্তম কুমারের মত দেখতে নাকি উত্তম কুমার কে বাঙালির মত দেখতে' এ বিতর্ক চলতে থাকবেই।
তাই আসুন বন্ধুরা আজকে আমি এই মুভিটা নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিই।কারণ এই মুভির সমালোচনা করা আমার মত সাধারণ দর্শকের পক্ষে সম্ভব না।
মুভির নাম : দেয়া নেয়া [১৯৬৩]
কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
পরিচালনা: সুনীল ব্যানার্জি
রচনা : বিধায়ক ভট্টাচার্য
প্রযোজক ও সংগীত : শ্যামল মিত্র
সিনেমাটোগ্রাফার -কানাই দে
ভাষা:বাংলা
অভিনয়
মহানায়ক উত্তম কুমার- প্রশান্ত রায়/অভিজিৎ চৌধুরী
তনুজা- সুচরিতা
তরুণ কুমার
লিলি চক্রবর্তী
কমল মিত্র
পাহাড়ি সান্যাল
ছায়া দেবী
কাহিনী সংক্ষেপ ও আমার অনুভূতি
লখনৌ এর সনাম ধন্য শিল্পপতি বিকে রায় এর একমাত্র ছেলে প্রশান্ত রায় সংগীত প্রিয় মানুষ।সংগীতের প্রতি তার এতো প্রবল আকর্ষণ যে তিনি ব্যবসার কাজ ও ঠিক ভাবে করেন না।এই নিয়েই কমল মিত্র যিনি বি কে রায় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিজ পুত্র প্রশান্ত রায়ে দ্বন্দ্ব করেন।প্রশান্ত রায় চরিত্রে উত্তম কুমার নিজেকে একজন গান পাগল মানুষ হিসাবে দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।রাশভারী শিল্পপতির চরিত্রে কমল মিত্রদের অভিনয় অনবদ্য।এই দুই কিংবদন্তি যখন একই সাথে স্ক্রিন শেয়ার করেন তখন অভিনয়ের জাদু অবশ্যম্ভাবী।এই সিনেমায় তার কোনো ব্যতিক্রম ঘটেনি।
পিতার সাথে ঝগড়া করে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে প্রশান্ত রায়।মা অনেক বারণ করেন।কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করতে প্রশান্ত পাড়ি দেয় কলকাতার উদ্দেশ্যে।মায়ের জন্য প্রশান্ত এর মন পড়ে।প্রশান্ত রায়ের মায়ের চরিত্রে একদম ন্যাচারাল অভিনয় করেছেন ছায়া দেবী।
অভিনয় এর সত্যিকারের সাফল্য হলো যখন অভিনয় আর বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য সামান্য হয়ে যায়।কলকাতায় এক পুরোনো বন্ধু অসীম এর বাড়ি আশ্রয় নেয় উত্তম কুমার।এই অসীম চরিত্রে দারুন ও রসিকতা পূর্ণ অভিনয় করেছেন উত্তম কুমারের ছোট ভাই তরুণ কুমার।অসীমের স্ত্রীর চরিত্রে মজবুত অভিনয় করে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে লিলি চক্রবর্তী।
কলকাতায় এসে অভিজিৎ চৌধুরী ছদ্মনামে রেডিও তে গান করে প্রশান্ত খুব নাম করে।কিন্তু প্রশান্ত কখনো প্রকাশ্যে আত্ম উন্মোচন করেন না।একদিন ঘটনা ক্রমে প্রশান্ত অমৃতলাল মজুমদারের বাড়িতে ড্রাইভার ও মেকানিক হিসাবে চাকরি পান।সেখানেই দেখা হয় সুচরিতা এর সঙ্গে।সূচি খুবই আধুনিক মেয়ে।পরে প্রশান্ত ও সুচির প্রণয় হয়।এই সূচি চরিত্রে নিখুঁত ও রোমান্টিক অভিনয় করেছেন তনুজা।
এক টিবি রোগী বন্ধু সুকান্ত যিনি প্রশান্তের সব গানের গীতিকার তাকে বাঁচতে প্রশান্ত জনসম্মুখে গান গাইতে রাজি হয়।কারণ প্রচুর টাকার দরকার বন্ধুর চিকিৎসার জন্য।এদিকে বিকে রায় কলকাতা আসেন সস্ত্রীক আর বন্ধু অমৃতলাল এর বাড়িতে উঠেন।পুলিশের সহায়তায় বিকে রায় নিজ পুত্রের গানের অনুষ্ঠানে যান ও প্রশান্ত এর গান ও দর্শকের উৎসাহ দেখে উচ্চসিত হন।
এরপর পিতা পুত্রের সব দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে।সুচির সাথে প্রশান্তের প্রণয় হয় ও বিয়ে পাকা হয়।এই সিনেমায় উত্তম কুমার যেমন রোমান্টিসম তেমনি কমেডি ফুটিয়ে তুলেছেন।পাহাড়ি সান্যাল ও অনবদ্য।
নিজস্ব মতামত
আমি এই সিনেমা সম্বন্ধে বলবো যে আমি অভিভূত আনন্দিত।
রেটিং
এটি আমার একটি ভীষণ ভালোলাগা ও ভালোবাসার সিনেমা।
Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @blacks,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Please consider to approve our witness 👇
Come and visit Italy Community
ছবিটি আমি অনেক আগে দেখেছিলাম সত্যি ওল্ড ইজ গোল্ড কথাটা 100% খাঁটি সেটা যেকোন ক্ষেত্রেই হোক। বাংলাদেশ-ভারত সহ বিভিন্ন দেশের যে পুরাতন মুভি গুলো আছে সেগুলো দেখলে আমাদের মাঝে এক ধরনের চেতনা বোধ জাগ্রত হয় এক ধরনের ভালোলাগা ভালোবাসা জাগ্রত হয় তখন বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছিল কিন্তু বর্তমান ছবিগুলো অথবা উন্নত বাজেটের হয়েছে কিন্তু গল্পগুলো আগের মত কখনোই হয়নি। দাদা আপনি সুন্দরভাবে এই মুভিটির পুরো কাহিনী সংক্ষিপ্ত ভাবে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। ব্যস্ততার মাঝেও আপনি যে একটি মুভি রিভিউ লিখেছেন তাতে আমি সত্যি মুগ্ধ। মুভি রিভিউ সত্যি অনেক ধৈর্যের একটি কাজ। উত্তম কুমারের মুভি গুলো কালজয়ী, উনার বাচনভঙ্গি উনার অভিনয় কোটি-কোটি দর্শকের মনে স্থান করে নিয়েছে। আবারো ধন্যবাদ জানাই দাদা এত সুন্দর একটি মুভি রিভিউ আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
বাংলার মহানায়ক উওম কুমার আমার অনেক পছন্দের একজন নায়ক। দেয়া নেয়া ছবিটি আমি দেখেছি এটা বাদেও উওম কুমারের অমানুষ, আনন্দ আশ্রম, মৌচাক, দুইভাই এই ছবিগুলো আমার খুবই পছন্দ।
যদিও আমার বয়সি ছেলেমেয়েরা এগুলো দেখে না। এটা অনেক ভালো একটা মুভি। এবং রিভিউ টা দারুণ দিয়েছেন দাদা।
আসলে উত্তম কুমারের অভিনয় মানেই একেবারে দারুণ কিছু।অসম্ভব ভালো লাগে উত্তর কুমারের অভিনিত সিনেমা গুলো।একেবারে সংক্ষেপে সবকিছুর লিখার ধরণটি খুব ভালো লাগে ভাইয়া আপনার।
মহানায়ক উত্তম কুমারের অনেক ছবি আমি দেখেছি ।আমার কাছে তার ছবি অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে তার অভিনয় গুলো দেখলে চোখে পানি চলে আসে। খুবই সুন্দর অভিনয় তার ।দেয়া নেয়া ছবিটি আমি দেখেছি আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি মুভি আমাদের মাঝে শেয়ার করে দেখাবার জন্য।
পুরোনো দিনের মুভি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।মনে হয় না সেটি কোনো অভিনয় বা নাটকীয়তা।মনে হয় অভিনয় তাদের আত্মার সঙ্গে মিশে গেছে এবং বাস্তব।ছবিটা সাদা -কালো কিন্তু চোখের জন্য ভীষণ ভালো।আমি অবশ্যই দেখবো মুভিটা।সুন্দর ভাবে রিভিউ করেছেন।ধন্যবাদ দাদা।
ঠিক বলেছেন দাদা, ওল্ড ইজ গোল্ড। সর্বকালের সেরা মহানায়ক উত্তম কুমার অভিনীত "দেয়া নেয়া" এই মুভিটি আমি ছোটবেলায় বেশ কয়েকবার দেখেছি। এই মুভিটি আমার কাছে এখনোও অনেক প্রিয়। অনেক সুন্দর একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে দাদা। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
বাহ্ দাদা এতো আগের মুভি , এই মুভি আমি দেখেছি বলে মনে হচ্ছেনা। তবে আপনার মুভি রিভিউ পড়ে বুঝা যাচ্ছে অনেক সুন্দর একটি মুভি এটা। তবে দাদা এই পুরোনো মুভি দেখেতে কিভাবে মন চাইলো , নিউ নিউ মুভি তো দেখতে টাইম পাওয়া যায়না আবার এই মুভি।
তবে দাদা যায়নি অনেক সুন্দর ভাবে মুভি রিভিউ লিখেছেন। যা পড়তে ও অনেক ভালো লেগেছে।
দাদা আপনার মুভি রিভিউ পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রতিটি সিনেমা খুবই সুন্দর হয়েছিল। এই মুভিটি পুরনো মুভি কিন্তু আপনার পোষ্টটি পড়ে মনে হল দেখতে খুবই চমৎকার হবে। দাদা সময় পেলে অবশ্যই মুভিটি দেখে নেব। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল দাদা।