অতঃপর সেই তুম।১০% বেনিফিসারী @shy-fox.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

|২ই জ্যৈষ্ঠ|১৪২৯ বঙ্গাব্দ|১৬ই মে| ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ|

আসসালামু আলাইকুম/ আদাব।

image.png

Source

প্রিয় কমিউনিটির সদস্য আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় ।আসলে ভালো থাকাটাই বড় কথা। কারণ বর্তমান সময়ে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে মানুষের জন্য ভালো থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখে কেমন যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। বাজারে গিয়ে কোন কিছুই ধরা যায় না। ধরলেই কেমন যেন আগুন বের হয় সেখান থেকে। এখানে আগুন শব্দটি ব্যবহার করেছি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হিসাবে। যাই হোক আজকে আমি আপনাদের সাথে সুন্দর একটি ছোট গল্প শেয়ার করব। গল্পটি হল অতঃপর সেই তুমি।

image.png
Source

সুমি একেবারে বলতে পারেন একজন গ্রামের মেয়ে। একটি গ্রামের মেয়ের মধ্যে যে সরলতা দেখা যায় তার কোন কিছুই কম ছিলনা সুমীর মধ্যে। সুমি অনেক ছোটবেলা থেকেই বাড়ির কাজের পাশাপাশি পড়ালেখায় ছিল বেশ ভালো তাই তাকে সকলেই খুব আদর করত। সুমীর আরেকটি বিশেষ গুণ ছিল তার মায়াবী চেহারা। কারণ সুমীর মায়াবী চেহারার দিকে যে একবার তাকিয়েছে সে আর কখনোই সহজে চোখ ফেরাতে পারেনি। তাই সুমি তার চেহারা নিয়ে একেবারেই ভাবতো না। হঠাৎ একদিন সঞ্জয় নামের এক ছেলের চোখে সুমিকে খুবই ভালো লাগে। সঞ্জয় বারবার মিটিমিটি করে সুমীর দিকে তাকাচ্ছিল। কিন্তু সুমি সেগুলোর কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না। তাই সঞ্জয় প্রথমদিন একপ্রকার হতাশ হয়েই ফিরে গেলো । এর পরবর্তী দিন আবার যখন সুমি কলসি কাঁধে নিয়ে নদীর পাড়ে গোসল করতে যাই তখন একপ্রকার সুমিকে দেখে সঞ্জয় পাগল হয়ে যায়। এর কারণ ছিল একদিকে সমীর মায়াবী চেহারা আবার অন্যদিকে কলসি কাঁধে সুমিকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল। যাই হোক এইদিন সঞ্জয় সুমির সাথে একটু একটু করে কথা বলল। কেন যেন এই দিন সুমি তার লাজুক স্বভাব পরিহার করে সঞ্জয়ের সাথে কথা বলল। যাই হোক এভাবে দুই একদিন কথা বলতে বলতে সঞ্জয় এবং সুমির মধ্যে একটি সম্পর্ক হয়ে গেল। এভাবে প্রতিদিন সুমি নদীতে গোসল করতে আসে সেই ফাঁকে সঞ্জয় এবং সুমিত দেখা হয় এবং তারা নিজেদের মধ্যে সারাদিনের কথাপকোতন সেরে নেয়। এভাবে বেশ ভালোই চলছে সুমি এবং সঞ্জয়ের সম্পর্ক। পড়ন্ত বিকেলে নদীর ধারে কাশফুল বাগানে মধ্যে সুমি এবং সঞ্জয় হাঁটাহাঁটি করছে। সুমীর চুল গুলো এলোমেলো বাতাসে চারিদিকে উরছে দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। আবার কখনো বা সুমীর আবদারে সঞ্জয় সুমিকে নৌকায় চড়ে সারা নদী পারে ঘুরিয়ে বেরিয়েছে। এভাবে চলাফেরা দেখে গ্রামের লোকজন তাদের সম্পর্ককে ভালোভাবে দেখেনি। তারা ইনিয়ে বিনিয়ে সঞ্জয়ের বাবাকে খেপিয়ে তোলে। কারণ সুমিদের পরিবার ছিল আর্থিকভাবে একটু অসচ্ছল তাই সঞ্জয়ের বাবা সুমি এবং সঞ্জয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। তাই সঞ্জয়ের বাবা সুমীর বাবাকে ডেকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করে। এবং সেইসাথে বলে তোমার মেয়ে যদি পরবর্তীতে আমার ছেলের সাথে কোনরকম যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাহলে বাপ মেয়ে দুজনকে গ্রামছাড়া করব। তাই সুমির বাবা একরকম অসহায় ভাবেই বাড়িতে ফিরে আসলো। এবং সুমিকে ডেকে বলল দেখ মা গরিবের আকাশের চাঁদ দেখা ঠিক নয়। তুমি গরীব ঘরে জন্ম নিয়েছে তাই তোমাকে গরিবের মতোই থাকা উচিত। তুমি সঞ্জয়ের সাথে আর কখনো যোগাযোগ করবেনা। যাইহোক শত কষ্টের পরেও হলেও সুমি তার বাবার অসহায়ত্ব দেখে সঞ্জয় কে ভুলে থাকার চেষ্টা করেছে ।কিন্তু সুমি সঞ্জয় কে এখনো ভালোবাসে।

image.png

Source

এদিকে সঞ্জয় কেও সঞ্জয়ের বাবা খুব শাসিয়েছে তাই সুমি এবং সঞ্জয় এর মধ্যে বেশ কিছুদিন যোগাযোগ ছিল না তাই সুমি মনে মনে ভাবছিল সঞ্জয় হয়তোবা তার বাবার ভয়ে সুমিকে ভুলেই গেছে। বেশ কিছুদিন পরে সঞ্জয় আবার সুমির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু সুমি সঞ্জয়ের কোন কথাই শুনছিল না তার বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে ।কিন্তু মনে মনে ঠিকই সুমি সঞ্জয় কে ভালবাসে। তাই সঞ্জয়ের অনেক কাকুতি-মিনতি শুনে সুমীর মন সঞ্জয়ের প্রতি গলে যায়। সঞ্জয়ের প্রতি সুমীর এই ভালবাসায় যেন আবার অভিশাপ হয়ে দাঁড়ালো সুমীর পরিবারের জন্য। এখন সঞ্জয়ের বাবা গ্রামের মাতব্বরদের নিয়ে একটি বৈঠক করে সুমীর পরিবারকে গ্রাম থেকে ভিটা মাটি ছাড়া করল। তাই বেশ কিছুদিন যাবৎ সুমীর এবং সুমির পরিবারের কোনই খবর ছিল না। এ দিক সে দিক করে সঞ্জয় সুমির পরিবারকে খোঁজার চেষ্টা করেছে কিন্তু কখনোই সুমির পরিবারের কোন হোদিস পাইনি সঞ্জয়। এভাবে বেশ কয়েক বছর পার হয়ে যায় কিন্তু সঞ্জয় এবং সুমীর মধ্যে কোন যোগাযোগ থাকে না। পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটা চাকরির জন্য আসে ,চাকরিটিও সঞ্জয়ের হয়ে যায়। বেশ মনোযোগ দিয়ে চাকরি করছিল আর মনে মনে সুমিকে খুঁজে যাচ্ছিল। পরিশেষে একদিন রেললাইন পার হতেই সঞ্জয়ের চোখের সামনে সুমির মত একটি মুখ ভেসে ওঠে। মুখটি দেখে সঞ্জয় পাগলের মত হয়ে তার কাছে ছুটে গেলো। গিয়ে দেখে সেই মেয়েটি আসলেই সুমি। প্রথমদিকে সুমি একপ্রকার সঞ্জয়কে না চেনার ভান করলো ।কারণ সুমির মনে ভয় ছিলো যদি সঞ্জয়ের বাবা আবার জানে তাহলে তার পরিবারের ক্ষতি করবে। এই ভয়েই সুমি সঞ্জয়কে না চেনার ভান করল ।কিন্তু সঞ্জয়ের অনেক কাকুতি-মিনতি তে এক পর্যায়ে সুমী স্বীকার করল আসলেই সে সুমি। এখন সঞ্জয় সুমিকে সবকিছু ভাঙ্গিয়ে বলল ।তারপরে সঞ্জয় কে নিয়ে সুমি তার পরিবারের কাছে গেল ।এবং তার পরিবার সঞ্জয়ের সব কথা শুনে তাদের চার হাত এক করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ।কিন্তু চার হাত এক করে দেওয়ার আগে সুমির বাবা সঞ্জয়ের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে বলল ।অবশেষে সঞ্জয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সুমিকে সঞ্জয়ের বাবা তার পুত্রবধু হিসাবে মেনে নিল।

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif
@biplopali.

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81MBV8V2ZjfrL9YrpfnMNFgVsZfFcvfrQ9E3UbjVcm1qpFDt7QSsnEk78ZxZ4BLG2N4cjoQ1tTfTDFGa5wFKenDt.png

hPb2XtKwBGiwRzkrzveR1sSPznD4Wv2miQhHXdT4AQFLAHkykY3jBdZmCxJjk6ztifZuRFBV7zoGPBbLN7Lkye6VFmom81baPfeUCEyY7A...YVvDBETk3mJPgn7FZvEHUXrxkZzx8XXwvxZ1XaAXaUKMY1J4Jnwp1qFNdww2VMXKd9tbLkXzNUZiDGZRtCm2dynbYGBzJduBamEPX9ALJK2XX9TDqYeaKh8Gtd.gif

Sort:  
 2 years ago 

একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প লিখেছেন। যেটার সুন্দর সমাপ্তি হয়েছে। ভালোই লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনার মিষ্টি প্রেমের গল্পটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে ভাই। আশা করি সামনে আরো ভালো কিছু উপহার দিবেন। এভাবেই এগিয়ে যান ভাই।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 61639.07
ETH 2982.91
USDT 1.00
SBD 2.46