বৈশাখের সাথে আমার ছেলেবেলার একটি ঘটনা। ১৫% বেনিফিসারী@shy-fox, abb-school.
আসসালামু আলাইকুম/ আদাব। |
---|
প্রিয় কমিটির সদস্য, আশা করি আপনারা সকলেই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়। যেহেতু বৈশাখ মাস শুরু হয়ে গেছে তাই এলোমেলো দমকা হাওয়া আমরা সকলেই অনুভব করতে পারছি । গতকাল রাতে আমি বাড়িতে গিয়েছিলাম সেখান থেকে আসার সময় বাস থেকে অনুভব করলাম গায়ে দু-এক ফোঁটা বৃষ্টি পরছে। যাই হোক গন্তব্যে তো আসতেই হবে ।সেই মোতাবেক সামনের দিকে এগোতে থাকলাম। কিন্তু একটা পর্যায়ে যখন বাস থেকে নামলাম তখন কিছুটা দমকা হওয়া বয়ে গেল যা আমাকে মুহূর্তেই মনে করিয়ে দিলো যে বৈশাখ মাস শুরু হয়ে গেছে। বৈশাখ হলে হঠাৎ করে আকাশ গম্ভীর হয়ে যায় কখন যে আকাশ থেকে ঝর-ঝর করে বৃষ্টি পড়ে তা বুঝাই যায়না। পরে আবার কখনোবা বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া বয়ে যায়। আমরা যারা শহরে বাস করি তারা হয়তো বা একটু কম অনুভব করতে পারি কিন্তু যারা গ্রামের দিকে বসবাস করে তারা বৈশাখের প্রতিটি দিনই ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারে এবং কিছুটা ভয় ভয় থাকে।যাই হোক মূল কথার দিকে আসা যাক। শেয়ার করব আমার ছোটবেলার স্মৃতি বিজড়িত বৈশাখের একটি দিন।
Source
যদিও আমাদের ফ্যামিলি কৃষি উপর নির্ভরশীল নয় এবং কৃষিকাজ আমাদের পরিবারে কেউ করে না বললেই চলে। বাবা কে ছোটবেলা থেকেই চাকরি করতে দেখেছি। আমার মামা বাড়ি ছিল খুবই কাছে তাদের ফ্যামিলি টা ছিল কৃষিপ্রধান। দিগন্ত মাঠ জোড়া ধানের ব্লক করতো আমার মামারা। ধান খেতে পানি দেওয়ার জন্য তারা সেচ পাম্প ব্যবহার করত। কিন্তু এই পাম্পটি মাঝেমধ্যেই চুরি হয়ে যেত। এজন্য সেচ পাম্প পাহারা দিতে হতো। হঠাৎ এক রাতে আমাকে আর আমার মামাতো ভাইকে সেচ পাম্প পাহারা দিতে বলল। বলাতে আমরা দুজনে খুব খুশি হলাম ।কারন ভাবলাম আজকে সারারাত গল্প করে কাটাতে পারব। আমরা দুই ভাই সেই সাথে আরও একজন বন্ধু জুটালাম ।তিনজনে মিলে সেচ পাম পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। পথিমধ্যেই তিনজনে মিলে একটু মানুষদেরকে ভয় দেখালাম। তারা ভয় পেয়ে ওই স্থান থেকে চলে গেল। পরবর্তীতে আমরা সেচ পাম্পের ঘরে ঢুকলাম। ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই চারদিক দিয়ে প্রবল বাতাস শুরু হলো। ঘরটি বানানো ছিল পাটকাঠি দিয়ে। বাতাসের চাপে পাটকাঠির বেড়া প্রায় ভেঙে আসতেছিল এদিক দিয়ে আমি চাপ দিয়ে ধরি, ওদিক দিয়ে আমার মামাতো ভাই চাপ দিয়ে ধরে পরিশেষে দেখা গেল আমরা সকলেই বাতাসের চাপে পড়ে গেলাম। এবং ঘরের বেড়া গুলো উড়ে চলে গেল।
এদিকে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে সেই সাথে রয়েছে দমকা হাওয়া । ফসলের যে ক্ষেতগুলো চাষ দেয়া ছিল সেই মাটি গুলা অনেকটা নরম হয়ে গিয়েছিল। আমরা যখন দৌড়ানো শুরু করলাম তখন আমাদের পা মাটির মধ্যে গেড়ে যাচ্ছিল ।অনেক কষ্ট করে ফসলের মাঠ পার হয়ে রাস্তায় উঠি। এর পরবর্তীতে বাড়িতে গিয়ে পৌঁছায় সেখানে যাওয়ার পরে আমরা ঠান্ডায় থরথর করে কাঁপছিল তখন আমার মামী কম্বল বের করে দিয়েছিল সেটি গায়ে দিয়ে আমরা তিনজন ঘুমিয়ে ছিলাম। বৈশাখের ওই রাত্রিতে যে ভয় পেয়েছিলাম তা আমাকে এখনও তান্ডবের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমার দেখা মতে বৈশাখের সবচেয়ে ভয়াবহ রাতটি ছিল ওই রাত্রি। এখনো ওই রাতের কথা মনে পড়লে গা শিউরে ওঠে।
ভালো লাগলো আপনার ছোট বেলার কাহিনি জানতে পেরে।আমাদের জীবনে এমন অনেক ঘটোনাই থাকে।মাঝে মাঝে মনে পরলে অনেক হাসি পায়।ছোটবেলার দিন গুলো বেশ ভালো ছিলো। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ছেলেবেলা মানেই অনেক স্মৃতি বিচরণ। আপনার ছেলেবেলার কাহিনী শুনে খুব ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে মনে করে আবার যদি ছেলে বেলা চলে যেতে পারতাম কি ভাল হত!
আপনাকে ধন্যবাদ।
আমাদের দেশের কৃষি সমাজ এখন আগের থেকে অনেক উন্নত। আগে রাতজেগে এমন পাম্প পাহারা দিতে হতো কিন্তু বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ দিয়ে গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি শেষ করা হয় এজন্য আগের মতো এমন রিস্ক নিতে হয় না। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ
ভালো লাগলো আপনার ছোট বেলার ঘটনা পড়ে।আসলে ছোট বেলার কত শত ঘটনা সবার জীবনে থাকে।মাঝে মাঝে মনে পরে।ছোটবেলার দিন গুলো বেশ ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ আমার ছোটবেলা অনেকটাই মজায় কেটেছে।
আসলেই ব্যাপারটা ভয়ংকর।তবে,লেখার মধ্যে ভয় প্রকাশ না পেলেও,চিন্তা করলে টের পাওয়া যাচ্ছে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনার মত এমন ফ্যামিলি হাজারো আছে, যারা কৃষি কাজ করে না। এবং আপনার মামার সেচ পাম্প প্রাইস চুরি হয়ে যেত। সব মিলিয়ে গল্পটি অসাধারণ ছিল। আর আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য, আপনার প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।