নিজের গতি নিয়ন্ত্রণ করুন ,জীবন রক্ষা করুন।১০% বেনিফিসারী@shy-fox.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

|২৪শে বৈশাখ|১৪২৯ বঙ্গাব্দ|৭ মে| ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ|

আসসালামু আলাইকুম/ আদাব।

image.png
Source

প্রিয় কমিটির সদস্য, আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়। ঈদের ছুটিতে মানুষ সকলেই আনন্দ উদযাপন করছে। কিন্তু এই আনন্দ উদযাপন করতে করতে মানুষ একেবারে বলতে পারেন আনন্দের মধ্যে হারিয়ে পড়েছে। তবে এই আনন্দ উদযাপন তা নির্ভর করে মানুষের রুচি বয়সের উপর। এক এক বয়সের মানুষের আনন্দ উদযাপনের ধরণ এক এক রকম। যেমন একজন শিশু সকাল ঘুম থেকে উঠে সাবান দিয়ে গোসল করে নতুন জামা কাপড় পড়ে বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন যারা আছে তাদের কাছ থেকে সালাম নিতে পছন্দ করে। এটা শিশু বললে ভুল হবে আমরা যারা বড় আছি তারাও সালামি নিতে পছন্দ করি। তবে একজন শিশু এই সালামি মধ্যেই তার আনন্দকে সীমাবদ্ধ রাখতে চেষ্টা করে। কিন্ত আবার একজন কিশোরের ঈদের আনন্দ উপভোগের ধরনটাও একটু ভিন্ন রকম।

image.png

Source

সে ভিন্নভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে চেষ্টা করে। বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে অথবা আশে পাশে যেখানে ঈদকে কেন্দ্র করে কনসার্ট সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় সেসব অনুষ্ঠান উপভোগের মাধ্যমে তার ঈদ কাটে। তবে এবার আসা যাক উঠতি বয়সের ছেলেদের কথা। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে এরা এতটাই আধুনিক হয়েছে যে আধুনিক ভাবেই তাদের আনন্দটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু এর কারণে যে প্রাণনাশক হতে পারে এ বিষয়ে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। আশিক বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা-মা ছোট বেলা থেকে আশিকের কোনও চাওয়া-পাওয়া অপূর্ণ রাখেনি। যখন যেটাই আবদার করেছেন সেটাই তার বাবা-মা পূরণ করার চেষ্টা করেছে। সেই হিসাবে ক্লাস সিক্সে যখন আশিক ওঠে তখন তার পরিবার তাকে বাই সাইকেল কিনে দেয়। এভাবেই আশিক দুরন্ত গতিতে বাইসাইকেল চালানো শুরু করল ।এভাবে বাইসাইকেল চালাতে চালাতে যখন ক্লাস এইটে উঠলো তখন থেকেই আশিক বাইসাইকেলের গতি ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলো। যাই হোক এক বছরের মাথায় আশিক এবং আশিকের মায়ের অনুরোধে আশিকের বাবা আশিককে বাইক কিনে দেয়। বাইক পেয়ে আশিক দুরন্তপনা যেন আরো বেড়ে গেল। সে খুব বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতো। রাস্তায় বের হলে মনে হতো রাস্তাটাই আশিক এর একার। একবার ক্লাস- টেনে থাকবে আশিক হালকা ধরনের চোট পেয়েছিল পায়ে। এই কারণে আশিককে বেশ কিছুদিন যাবৎ বিছানায় থাকতে হয়েছিল। আশিকের পরীক্ষায়ও কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে ছিল এই চোটের জন্য। এক পর্যায়ে আশিক সুস্থ হয়ে ওঠে এর পরবর্তীতে আশিক যখন কলেজে যায় তখন আশিকের চাহিদার ও কিছুটা পরিবর্তন আসে। সে বাসায় অনেক কাকুতি-মিনতি করে আবার নতুন একটি বাইক কিনে নেয়। এই বাইকের কারণে আশিক অনেকবার কলেজের বড় ভাইদের হাতে রেগ খেয়েছেন। আবার অনেক সময় হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। তারপরেও কখনো আশিকের বাইকের গতি কে কেউ কমাতে পারেনি।

image.png

Source

সে দুরন্ত গতিতে বাইক নিয়ে ছুটে চলতে কাউকে পাত্তাই দিতো না। সামনে ঈদ তাই আশিক আশিকের সমসাময়িক কয়েকজন বন্ধু জুটালো। যারা বাইক চালাতে বেশ ভালই পারদর্শী ছিল। সবাই মিলে পরিকল্পনা করল ঈদের দিন তারা লং ড্রাইভে যাবে বাইক নিয়ে। সেই মোতাবেক ঈদের দিন ঈদের নামাজ পড়ে বাসা থেকে সকলেই হালকা কিছু খাওয়া দাওয়া করে বাড়ির ধারে পাম্পের কাছে সকলেই মিলিত হল। সকলেই পাম্প থেকে তাদের বাইকে তেল পূর্ণ করে নিল। এর পরবর্তীতে লং ড্রাইভ এর উদ্দেশ্যে সকলে মিলে বাইক নিয়ে রওনা হল। বেস উস্কোখুস্কো মেজাজেই সকলে বাইক চালাচ্ছিল দেখতেও বেশ ভালই লাগছিল। কেন যেন আশিক এরা স্বাভাবিক গতির থেকেও আরো বেশি গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিল। এভাবে গাড়ি চালাতে চালাতে একটা পর্যায়ে আশিকরা কেন যেন নিজেদের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলছিলো। এভাবে বাইক চালাতে চালাতে একটি পর্যায়ে রাস্তা পার হবে এমন সময় উল্টা দিক থেকে খুব দ্রুতগতিতে ঢাকাগামী বাস আসছিল। সেই বাসের ধাক্কায় আশিক ছিটকে পড়ে যায় ব্রিজের নিচে। সাথে সাথে আশিকের মাথা দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে গেছিল। তাই হাসপাতালে যাওয়ার পূর্বেই আশিক এর মৃত্যু হয়। অন্য যারা ছিল তাদের অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিল না। এদিকে সকলকে নিয়ে সদর হাসপাতালে যাওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার আশিক কে মৃত ঘোষণা করল। বাকি যারা ছিলেন তাদের সকলকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করতে হলো। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করার পরে তারা ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করল কিন্তু এই সুস্থ হয়ে যেন পৃথিবীর সকল আনন্দ-উল্লাস তাদের কাছে মিলান হয়ে গেল। কারণ তাদের মধ্যে যারা সুস্থ হয়েছে কারো হাত নাই কারো পা নেই কেউ বা হুইল চেয়ারে করে চলাফেরা করে। সকলেই যেন স্বাভাবিক জীবনের গতিকে হারিয়ে ফেলছে। কেউবা অকালেই তাদের মধ্য থেকে ঝরে গেছে ।যদি তারা নিজেদের গতিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারত তাহলে হয়তোবা তাদের জীবন রক্ষা করতে পারত। অন্যদিকে যারা জীবিত আছে তাদের জীবনটাও সুন্দর হতে পারতো।

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

@biplopali.

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81MBV8V2ZjfrL9YrpfnMNFgVsZfFcvfrQ9E3UbjVcm1qpFDt7QSsnEk78ZxZ4BLG2N4cjoQ1tTfTDFGa5wFKenDt.png

hPb2XtKwBGiwRzkrzveR1sSPznD4Wv2miQhHXdT4AQFLAHkykY3jBdZmCxJjk6ztifZuRFBV7zoGPBbLN7Lkye6VFmom81baPfeUCEyY7A...YVvDBETk3mJPgn7FZvEHUXrxkZzx8XXwvxZ1XaAXaUKMY1J4Jnwp1qFNdww2VMXKd9tbLkXzNUZiDGZRtCm2dynbYGBzJduBamEPX9ALJK2XX9TDqYeaKh8Gtd.gif

Sort:  
 2 years ago 

উঠতি বয়সী আমাদের অনেক কিছুই করতে ইচ্ছে করে, এটি পরবর্তীতে আমাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে আসতে পারে। আপনি চমৎকার একটি সচেতন মূলক পোস্ট করেছেন, আপনার গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমাদের সময় থাকতে হুশিয়ার হওয়া উত্তম, না হলে পরিণতি খারাপ হতে পারে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

খুবিই সচেতন মূলক একটি পোস্ট দিছেন,আসলে রাস্তাঘাটে প্রতিদিন এভাবে অনেক আশিক ঝড়ে পরে। বাইক এমনি একটা জিনিস জতো গতি ততোই ঝুকি। আমি নিজেও ড্রাইভ করি সে অভিজ্ঞতা থেকে বলতে চাই আসলে যখন কোন তাড়াহুড়ো করি তখনি দেখা যায় এক্সিডেন হয়। তাই নিয়ন্ত্রণ রেখে ড্রাইভ করা সব থেকে উত্তম। ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। আসলে রাস্তাঘাটে যে কত ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে এর বেশিরভাগ কারণ হলো অতিরিক্ত গতি। আমরা যদি আমাদের গতিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারি তাহলে অনেকাংশেই দুর্ঘটনা কমে যাবে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

সচেতন মূলক একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। গতকালকে ফেসবুকে একটা পোস্ট দেখলাম একজন লিখেছে বাইকের গতি নিয়ন্ত্রণ করুন অথবা হাইওয়ে রাস্তায় বাইক চালানো বাদ দিয়ে দিন কেননা আপনার জীবনের মূল্য অনেক বেশি। আমাদের সবার উচিত যারা বাইকার আছি তাদের নির্দিষ্ট গতি সীমার মধ্যে বাইক চালানো।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

তাদের মধ্যে যারা সুস্থ হয়েছে কারো হাত নাই কারো পা নেই কেউ বা হুইল চেয়ারে করে চলাফেরা করে।

আপনার পোস্ট থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমরা যারা বাইক ড্রাইভ করি আসলেই অনেক সময় পাগল হয়ে ড্রাইভ করি যার ফলে নানা রকম দূর্ঘটনা ঘটে। ঈদের দিনও আমাদের এলাকার দুই জন মারা গেছে বাইক এক্সিডেন্টে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের উপহার দেওয়া জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আশিক ভাইয়ের উদাহরণটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আমাদের নিজেদের গতি আমাদের নিজেদেরকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তবে কিছু কিছু মানুষ দেখি নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই অনেক জোরে সাইকেল অথবা বাইক চালাই এটি কখনোই আমাদের কাম্য নয়। আমাদের সবসময় ধীরেসুস্থে যাতায়াত করা উচিত‌ এটি আমাদের একটি দায়িত্ব।

 2 years ago 

সুন্দর এবং গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

উঠতি বয়সে ছেলেদের এই একটি সমস্যা তারা যখন ইহাতে বাইক পায় তাদের মাথায় আর কাজ করে না। তাই আমাদের সবারই উচিত উঠতি বয়সে ছেলেদের কে একটু বোঝানো একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। কারণে তারা এত দ্রুত গতিতে বাইক চালাই দেখেই নিজের কাছে ভয় করে। কিন্তু তারা এই জিনিসটা বুঝতে পারে না একটু এদিক ওদিক হয়ে গেলে তাকে সারাজীবনের জন্য বিছানায় শুয়ে থাকতে হতে পারে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 69020.66
ETH 3731.25
USDT 1.00
SBD 3.65