পরিশ্রম কাউকে ঠকায় না। ১৫ পার্সেন্ট বেনিফিসারী@shy-fox, abb-school.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

|১৪ই বৈশাখ|১৪২৯ বঙ্গাব্দ|২৭শে এপ্রিল| ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ|

আসসালামু আলাইকুম/ আদাব।

image.png

Source

প্রিয় কমিউনিটির সদস্য আশা করি আপনারা সকলেই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভাল আছেন ।ভাল না থাকলেও এই পরিবর্তনশীল অবস্থার সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়ে আপনারা সবাই ভালো থাকার চেষ্টা করছে ।আমিও ঠিক এর ব্যতিক্রম নয় আমিও নিজেকে সবসময় মানিয়ে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু এই ভালো রাখার মালিক একজনই তিনি হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা অথবা স্রষ্টা। তাকে আমরা যে নামে ডাকি না কেন তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দিবেন এবং আমাদের সকল বিপদ আপদ দূর করে আমাদেরকে ভালো রাখবেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করব। গল্পটির শিরোনাম হলো পরিশ্রম কাউকে ঠকায় না। জসিম মিয়া ছোটবেলায় অন্য আর দশটা ছেলের মত তার শৈশব কাটে নি। খুব ছোটবেলা থেকেই জসিম মিয়া জীবনের কঠিন বাস্তবতা একটু একটু করে বুঝতে শুরু করেছেন।

image.png

Source

এর পিছনে কারণ ছিল। জসিমের পরিবার ছিল চার সদস্যের। তার বাবা ছিলেন একজন সবজি বিক্রেতা তাদের সংসার খুব ভালোই চলছিল। জসিম মিয়া পরিবারের একমাত্র পুত্র সন্তান ছিল সেই হিসাবে তাঁর আদর-যত্নের কমতি ছিল না। কিন্তু যখন তার বয়স ৫ বছর তখন তার বাবা আরেকটি বিয়ে করে ফেলেন। এরপর থেকেই জসিম মেয়াদের পরিবারে আস্তে আস্তে অভাব-অনটন দেখা দেয়। এই অভাব- অনটনের কূলকিনারা কিছু না পেয়ে একটি পর্যায়ে জসিম মিয়া এবং তার বোন গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় অবশেষে শহরেই তারা একটি স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করে।

image.png

Source

এরপর থেকে জসিম মিয়া এবং তার বোন কঠোর পরিশ্রম করতে লাগে। কিন্তু এই পরিশ্রমের শুরুটা খুব সহজ ছিল না ।জসিম এর বোন যেহেতু তার থেকে বয়সে একটু বড় ছিল তাই সে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেয় ।কিন্তু জসিমমিয়ার বয়স নাহয়ায় সে গার্মেন্টসে চাকরি পেল না তাকে একরকম মানুষের দোকানে বা যে যা কাজ দিত সেইটাই তার করতে হতো। এভাবেই দুই ভাই বোন মিলে তাদের সংসার চালাতে লাগল এবং তাদের মাকেও সাপোর্ট দিতে লাগলো। এভাবেই বছর কয়েক হয়ে গেল ।একটা পর্যায়ে জসিম মিয়ার বয়স বৃদ্ধি পেল। যাইহোক জসিমমিয়া বোন তাকে একটি গার্মেন্টসে হেল্পার হিসেবে চাকরি দেয়। এখান থেকে তার পরিশ্রমের ফল পাওয়া আস্তে আস্তে শুরু হল। এই হেলপার থেকে জসিমমিয়া একটা পর্যায়ে অপারেটর হয়। এই অপারেটর হিসেবে জসিমমিয়া দীর্ঘদিন কাজ করছে। দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে জসিম মিয়ার পরিচয় হয় এক গার্মেন্টসের মেকানিক এর সাথে। এভাবে আস্তে আস্তে করে তাদের মধ্যে সম্পর্কটা গারো হতে লাগলো। জসিম মিয়া সেই মেকানিকের টুকিটাকি কাজ করে দিত তার ব্যাগ এগিয়ে দিত। এভাবেই চলতে লাগল বেশ কয়েকবছর । জসিম মিয়ার পরিচিত সেই মেকানিক যেখানে যেত সেখানে জসিম মিয়াকে নিয়ে যেত এভাবে জসিমমিয়া ফ্রিতে প্রায় এক বছর তার সাথে কাজ করেছে। এর পরে সেই মেকানিক খুশি হয়ে জসিমমিয়া কে একটি ফ্যাক্টরিতে ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে চাকরি দেয়। ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে আস্তে আস্তে চাকরি করতে করতে একটি পর্যায়ে সে মেকানিক্যাল কাজ গুলা রপ্ত করে নেয়। এর পরবর্তীতে কয়েকটি ফ্যাক্টরিতে মেকানিক হিসাবে জসিমমিয়া ইন্টারভিউ দেন কিন্তু কোথাও তার চাকরি হয় না ‌এভাবে ঘুরতে ঘুরতে একটি পর্যায়ে জসিমমিয়া আরেকটি ফ্যাক্টরিতে মেকানিক হিসেবে চাকরি হলো। কিন্তু সেখানে খুব বেশিদিন চাকরি করা হলো না কারণ সে কাজটা খুব ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারেনি। কিন্তু জসিমমিয়া পরিশ্রমী ছিল এবং তার লক্ষ্য ছিল সে একজন দক্ষ মেকানিক হবে। সেই হিসাবে প্রচেষ্টা করে যাচ্ছিল তার ফলশ্রুতিতে জসিম মিয়া একটি ফ্যাক্টরিতে আবারো মেকানিক হিসেবে যোগদান করে এবং সেখানে নানা চড়াই-উৎরাই পার করে সে একজন পরিপূর্ণ মেকানিক হিসাবে নিজেকে গড়ে তোলেন। গল্পটা যদি এখানে শেষ হতো তাহলে একটু অন্যরকম হতো। এই ক্ষেত্রে তাঁর বাবা আবার জসিমের পরিবারের সাথে মিলে যেতে চায় । মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তার বাবাকে গ্রহণ করলেন। এর পরবর্তীতে জসিমমিয়া ঘাড়ে এক প্রকার গুরুদায়িত্ব চেপে বসে। কারণ তার বাবা পরবর্তীতে যেখানে বিয়ে করেছিলেন সেই ঘরে ছিল দুটি মেয়ে। এখনতো জসিমের বাবা কর্মহীন একেবারে বেকার বললেই চলে। তাই এই বোনদের বিবাহের দায়িত্ব জসিমমিয়া কাঁধে এসে পড়ে। জসিম মিয়া সকল বোনকে সুন্দরভাবে বিয়ে দেন। কিন্তু সবকিছু শেষ করে জসিমমিয়া বিয়ে করতে করতে একটু দেরি হয়ে গেল। অবশেষে জসিম মিয়া বিবাহ সম্পন্ন করলেন। তাদের সংসার খুব ভালোই চলছে। জসিম মিয়া কে এখন আর আগের মতন পরিশ্রম করতে হয় না। মানুষের দ্বারে দ্বারে কাজের জন্য ঘুরতে হয় না এখন অনেকেই জসিমমিয়া কে কাজে নেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করে এই সবকিছুই জসিমমিয়া পেয়েছে একমাত্র তার পরিশ্রমের মাধ্যমে। তাই বলা হয়ে থাকে পরিশ্রম কখনোই মানুষকে ঠকায় না। যেমন ধরুন একজন রিকশাওয়ালা সারাদিন পরিশ্রম করে বাড়িতে ফিরলে বিছানায় মাথা রাখতে না রাখতেই ঘুম ধরে যায় কিন্তু একজন অর্থবিত্ত লোক খুব আরাম-আয়েশে জীবন-যাপন করেও চোখে ঘুম ধরাতে অনেক কষ্ট হয়ে যায়। এজন্যই বলা হয়ে থাকে পরিশ্রম মানুষকে কখনো ঠকায় না।

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

@biplopali.

hPb2XtKwBGiwRzkrzveR1sSPznD4Wv2miQhHXdT4AQFLAHkykY3jBdZmCxJjk6ztifZuRFBV7zoGPBbLN7Lkye6VFmom81baPfeUCEyY7A...YVvDBETk3mJPgn7FZvEHUXrxkZzx8XXwvxZ1XaAXaUKMY1J4Jnwp1qFNdww2VMXKd9tbLkXzNUZiDGZRtCm2dynbYGBzJduBamEPX9ALJK2XX9TDqYeaKh8Gtd.gif

Sort:  
 2 years ago 

আপনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন।। আপনি ঠিকই বলেছেন পরিশ্রম কাউকে ঠকায় না। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারলাম। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

খুবই সুন্দর একটি বিষয়ে পোস্টটি সাজিয়েছেন খুবই ভালো লাগলো পড়ে একদম ঠিক কথা বলেছেন কর্ম কখনো মানুষকে ঠকায় না সেটা ছোট হোক বা বড় হোক ছোট কর্ম থেকে একদিন বড় কর্ম মিলবে এটাই আশা করি ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য

 2 years ago 

ছোট কর্ম ই একদিন আমাদের বড় কর্মের দিকে নিয়ে যাবে।

 2 years ago 

পরিশ্রম সত্যিই কখনোই মানুষকে ঠকায় না। কারণ পরিশ্রম হলো সকল সুখের চাবিকাঠি আর উন্নতির ও।ভালো লিখেছেন বেশ।

 2 years ago 

পরিশ্রম ছাড়া উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারবো।

 2 years ago 

জসিমমিয়ার গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাই। উনি সত্যি একজন কাজের মানুষ ছিলেন। তবে একটা ভুল আছে আপনার এখানে। মেকানিক আর মেকানিক্যাল দুইটা আলাদা সেক্টর। আলাদা বিষয়। তবে আপনার গল্প পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60754.23
ETH 2913.09
USDT 1.00
SBD 2.31