আমার ছোটবেলায় পানির মধ্যে ডুবোডুবি খেলার স্মৃতি।১০% বেনিফিসারী@shy-fox.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

|২২শে বৈশাখ|১৪২৯ বঙ্গাব্দ|৫ মে| ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ|

আসসালামু আলাইকুম/ আদাব।

image.png

Source

প্রিয় কমিউনিটির সদস্য আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আপনাদের দোয়ায়। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার ছোটবেলার স্মৃতি বিজড়িত একটি ঘটনা। ছোটবেলার স্মৃতি বিজড়িত ঘটনাটি হল তীব্র গরমের মধ্যে বন্ধুরা সকলে মিলে পানির মধ্যে ডুবাডুবি খেলা। আসলে এই গরমের তীব্রতা একেবারে আমরা সহ্য করতে পারিনা। গরম আসলেই আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এর জন্যই আমরা একটু ছায়া এবং শীতল জায়গা অনুসন্ধান করি।

image.png

Source

গ্রামাঞ্চলে এই গরমের সময় দেখা যায় সকলেই গাছের নিচে বেঞ্চ পেতে তাদের গরম নিবারন করার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে গাছের শীতল বাতাস তাদের গরম নিবারন করে থাকে। একদিকে যেমন তাদের গরম নিবারন হয় অন্যদিকে তারা একে অপরের সাথে তাদের ভাবের আদান প্রদান করে থাকে।কিন্তু শৈশবে আমাদের এই গরম নিবেদন করার পদ্ধতি টা ছিল একটু ভিন্ন। শৈশবে আমার দেখা মতে যখন খুব গরম পড়তো তখন আমরা দিনে দুবার এমনকি তিনবার গোসল করে থাকতাম ‌। তবে গোসল করার জন্য আমরা কলের পানি অথবা সাপ্লাইয়ের পানি ব্যবহার করতাম না। সে ক্ষেত্রে আমরা আমাদের বাড়ির কাছে যে পুকুর গুলো থাকতো সেই পুকুরগুলোতে গোসল করতাম। ঠিক তেমনি আমার ছোটবেলার একটি গোসলের ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তীব্র গরমের মধ্যে আমরা সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা বাজলেই গোসল করার জন্য যে যার মত চলে যেতাম।

image.png
Source

যে পুকুরে গোসল করতাম সেই পুকুরটা ছিল আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে। আর পুকুরটি ও বেশ সুন্দর একটি পুকুর ছিল। পুকুরের ঘাট বাধানো ছিল। পুকুরটির নাম সাহেব পুকুর। তৎকালীন সময়ে অর্থাৎ আমার দাদার আমলে খালেক সাহেব নামে এক ব্যক্তি ছিলেন তিনি ওই আমলে বেশ ধন-সম্পদের মালিক ছিল। তিনি মানুষের উপকারের জন্য অনেক স্কুল কলেজ মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ করেছেন সেই সময়। যদিও তিনি তেমন একটা শিক্ষিত ছিল না তারপরেও তিনি শিক্ষাকে সব সময় প্রাধান্য দিতেন। তার বাড়ির পাশেই এই পুকুরটি অবস্থিত। আমরা বন্ধুরা সকলে মিলে এই পুকুরে গোসল করার জন্য যেতাম। কিন্তু গোসল করতে যাওয়ার সময় আমরা সকলেই একজন ব্যক্তির উপর খেয়াল রাখতাম কারণ তার জন্য আমরা ঠিকমতন গোসল করতে পারতাম না। সেই ব্যক্তি সব সময় আমাদের গোসলের ব্যাঘাত ঘটাতো। একদিন আমরা সকলে মিলেই পুকুরে গোসল করছি। সেদিন খুব গরম ছিল তাই বন্ধুরা মনস্থির করলাম আজকে আমরা সকলে মিলে পুকুরের পানিতে ডুবোডুবি খেলবো। পুকুরে ডুবাডুবি খেলাটা হচ্ছে এমন একটি খেলা যে খেলাটি আমরা পানির মধ্যে খেলে থাকি। এই খেলার মুল নিয়ম হলো একজন বুড়ি থাকবে যিনি, আমরা অন্য যারা আছি তাদেরকে স্পর্শ করবে। যাকে স্পর্শ করবে সেই আবার বুড়ি হয়ে যাবে এবং অন্য সকলদের স্পর্শ করার জন্য চেষ্টা করবে। তাই আমরা সকলেই পানির মধ্যে ডুব দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যেতাম। যাতে আমাদের না ধরতে পারে কিন্তু বুড়ি আমাদের ধরার জন্য সবসময় তৎপর থাকতো। এভাবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমরা ওই পুকুরে ডুবাডুবি খেলতাম। খুবই মজা লাগতো। ডুগডুগি খেলতে খেলতে আমাদের এক একজনের চোখ লাল হয়ে যেত তার পরেও আমরা পানি থেকে উঠতাম না।
এদিকে আমরা আমাদের মতনই খেলে যাচ্ছিলাম। একজন বুড়ি হচ্ছে আবার সে আরেকজনকে স্পর্শ করছে সে আবার বুড়ি হচ্ছে এভাবেই পালাক্রমে আমরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খেলছি। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের সকলের খেলা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেল ।এই খেলা বন্ধ হওয়ার পিছনে একজন ব্যক্তি ছিল তিনি হল সেই ব্যক্তি যার কথা শুরুতেই বলেছিলাম তিনি আমাদের খেলা মাঝেমধ্যে বন্ধ করে দিতেন। ওই ব্যক্তি আমাদের সকলের জামাকাপড় নিয়ে ওনার বাসায় রেখে দিয়েছে এদিকে আমরা ভিজে কাপড়ে আর বাসায় যেতে পারছি না। তার জন্য অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছি কিন্তু সে কিছুতেই আমাদের জামাকাপড় গুলা আর ফেরত দিল না। যাইহোক সম্পর্কে আবার আমাদের দাদা হতো তাই আমরা দাদাকে ধরে যেহেতু কোনো কাজ না হল তখন আমরা আমার দাদিকে বললাম দাদি আমাদের সকল পোশাক দাদা নিয়ে গেছে ।এগুলো আপনি তাকে ফেরত দিতে বলেন। দাদি দাদাকে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে আমাদের পোশাক গুলো ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করল। কিন্তু দাদা আমাদেরকে একটি শর্ত বেঁধে দিলাম সেই শর্তটি হলো আমরা আগামীকাল থেকে এই পুকুরে গোসল করতে আসতে পারবো কিন্তু খুব একটা সময় দিতে পারবো না ।খুব অল্পসময়ের মধ্যেই গোসল করে আমাদের ফিরে যেতে হবে। যাইহোক একেবারে নিরুপায় হয়েই দাদার সেই শর্তগুলো আমরা ওই সময় মেনে নিয়েছিলাম। মেনে নেয়ার পরে যখন আমরা আমাদের জামাকাপড় হাতে পেলাম ।তখন দাদাকে আবার আমরা বিভিন্ন ভাবে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে ক্ষেপাতে লাগলাম এবং বাসার দিকে চলে গেলাম।

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

@biplopali.

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81MBV8V2ZjfrL9YrpfnMNFgVsZfFcvfrQ9E3UbjVcm1qpFDt7QSsnEk78ZxZ4BLG2N4cjoQ1tTfTDFGa5wFKenDt.png

hPb2XtKwBGiwRzkrzveR1sSPznD4Wv2miQhHXdT4AQFLAHkykY3jBdZmCxJjk6ztifZuRFBV7zoGPBbLN7Lkye6VFmom81baPfeUCEyY7A...YVvDBETk3mJPgn7FZvEHUXrxkZzx8XXwvxZ1XaAXaUKMY1J4Jnwp1qFNdww2VMXKd9tbLkXzNUZiDGZRtCm2dynbYGBzJduBamEPX9ALJK2XX9TDqYeaKh8Gtd.gif

Sort:  
 2 years ago 

ছোটবেলায় পুকুরে গোসল করা স্মৃতিগুলো স্মরণ করিয়ে দিলেন ভাই। পুকুরে গোসল করতে যেয়ে অনেক প্রকার খেলা খেলেছি আমরা। অবশ্যই বন্ধুরা মিলে মারামারি হয়েছিল এর জন্য আব্বুর হাতে মার খেতে হয়েছে অনেক সময়। যাইহোক খুব সুন্দর একটি পোষ্ট আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন, এ জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

পুকুরটির নাম সাহেব পুকুর। তৎকালীন সময়ে অর্থাৎ আমার দাদার আমলে খালেক সাহেব নামে এক ব্যক্তি ছিলেন তিনি ওই আমলে বেশ ধন-সম্পদের মালিক ছিল।

পুকুরের এত সুন্দর নাম হয় আগে জানতাম না। সাহেব পুকুর হাহাহা।আপনার ছেলেবেলার দিনগুলো অনেক আনন্দে কেটেছে। আসলে সবাই ছোটবেলায় পুকুরে সাঁতার কাটা সবসময় মনে পড়ে। আমিও ছোটবেলায় এভাবে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটতাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আহ ভাই ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দিলেন। এই গোসল করার ক্ষেএে আমার ছোটবেলা কেটেছে একেবারে হুবুহু আপনার মতো। আসলে প্রত‍্যেকটা গ্রামের ছেলের গরমের দুপুর পুকুরে ঝাপাঝাপি করতে করতেই কেটে যায় হা হা। তবে আপনাদের একটা বড় বাঁধা ছিল ঐ ব‍্যক্তি। কিন্তু আমার বাঁধা ছিল আমার মা। আসলে সঠিক বাঁধা না পেলে এগুলোর আসল আনন্দ পাওয়া যায় না। দারুণ ছিল কিন্তু আপনার শৈশব টা।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74