অফিস ছুটির সময় পুরস্কার বিতরণের আনন্দময় কিছু মুহূর্ত। 10%বেনিফিসারী @ shy-fox.
আসসালামু আলাইকুম/ আদাব। |
---|
প্রিয় কমিউনিটি সদস্য আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়। ভালো না থাকলেও ভালো থাকার জন্য চেষ্টা করি। কারণ আমাদের সমাজে ধোকাবাজ রয়েছে সমাজের প্রতিটি স্তরে। বলতে পারেন সমাজের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি থেকে একেবারে নির্মপদস্থ ব্যক্তির মধ্যেও ধোকাবাজ রয়েছে। যারা প্রতিনিয়ত এই মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করছে। আসলে এই কথাগুলো বলার পেছনে কিছু কারণ আছে। কারণটি হলো আজকে যখন বাসায় আসি তখন বাজারে লিচু দেখলাম । তখন ভাবলাম বছরের প্রথম ফল তাই বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু লোকটি আমাকে বলল ১০০ লিচু আছে আমি তাকে বললাম ভাই কম হতে পারে সে বলল না ঠিক ১০০ লিচু আছে ।তার কথামতো লিচু নিয়ে বাসায় এসে দেখলাম ১০০ লিচু নেই। তাই ভাবলাম যে মানুষকে বিশ্বাস করলে ঠকতে হয়। সমাজের যে যেই স্তর থেকে পারছে সে সেই স্থান থেকেই মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। যাই হোক আসল কথার দিকে ফেরা যাক। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমাদের অফিস ছুটির দিনের কিছু আনন্দময় মুহূর্ত এবং পুরস্কার বিতরণের মুহূর্ত শেয়ার করব। এই পুরস্কার বিতরণ করার মাধ্যমে আমাদের সকলের মধ্যে একটি আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়। আসলে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা একে অপরের মধ্যে নিজেদের যে ভুল ত্রুটি গুলো ছিল সেগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।
গত 30 এপ্রিল আমাদের অফিস ছুটি হয়। অফিস ছুটি হওয়ার এই দিনটি ছিল অন্য সব দিন থেকে একটু ভিন্ন। সকালবেলা সকলেই যে যার মত নতুন কাপড় পরে অফিসে হাজির হয়েছে। বছরের অন্য আর দশটা দিনের মতো এই দিনে অফিসে কর্মব্যস্ততা ছিলনা। এই দিনের কর্মব্যস্ততা একটু কম ছিল ।কারণ সকলেই ভাবছিল আজকে আমাদের ছুটি হবে এবং আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হব। আবার অনেক ক্ষেত্রেই লাইনের অপারেটররা সকলে মিলে চাঁদা তুলে তাদের বসদের কে গিফট করেছে।
এই উদ্দেশ্যে অফিস ছুটি হওয়ার কয়েক দিন আগে থেকেই তারা চাঁদা তোলা শুরু করছে । এবং একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তারা সংগ্রহ করেছে। এর পরবর্তীতে তারা তাদের বসদের জন্য সাধ্য মতন উপহার সামগ্রী কিনেছেন। আমাদের সেকশন এর ব্যতিক্রম ছিল না। তারা আমাদের জন্য এক কালারের কিছু পাঞ্জাবি কিনে আনে। সেগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে তোমাদের হাতে তুলে দিয়ে বলে বস কালকে এগুলা অফিসে পড়ে আসতে হবে। যাই হোক তাদের আবদার রাখার চেষ্টা করলাম আমরা।
এর কারণ ছিল তারা প্রতিদিন আমাদের আবদার পূরণ করে বছরে একদিন হলেও তাদের আবদার আমাদের পূরণ করা উচিৎ। সেই মোতাবেক পরের দিন সকালে সকলেই লাল পাঞ্জাবী পড়ে অফিসে আসলাম। এবং আমরা নিজেদের মধ্যে কিছু সেলফি তুলে নিলাম। আমাদের দেখেও দাদা বেশ খুশি হলো। তাই ভাবলাম আমাদের কিছু করা উচিত আমরা যেহেতু সংখ্যায় কম ছিলাম তাই তাদের জন্যে ছোট্ট পরিসরে কিছু আয়োজন করেছি। এই আয়োজনের জন্য সহযোগিতা করেছে আমাদের সেকশন এর সকল স্টাফবৃন্দ। আমাদের এই স্টাফ দের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় খুব অল্পসময়ের মধ্যেই আমরা তাদের জন্য কিছু আয়োজন করলাম। তাদের জন্য যে উপহার সামগ্রী গুলো কিনেছিলাম সেগুলো হলো সবার জন্য একটি করে মগ এবং একটি মেহেদি। এই উপহার গুলো তারা হাতে পেয়ে বেশ খুশী হয়েছিল ।কারণ প্রতিবছরই তারা বসদের কে উপহার দেয় কিন্তু বসেরা কোন বছরে তাদেরকে কোন উপহার দেয় না ।তাই এই বছর তাদের কাছে একটু ভিন্ন ভিন্ন রকম ছিল । যাই হোক সকাল সাড়ে দশটা বাজতে তাদেরকে আমরা উপহার দেওয়া শুরু করলাম।
উপহার দেওয়ার পূর্বে আমরা সকল স্টাফরা সামনে গেলাম এর পরে তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বললাম ।সেই কথাগুলো ছিল সকলেই যেন বাড়ি যাওয়ার পূর্বে তাদের মালামাল এবং জিনিসপত্র সাবধানে রাখে এবং বাড়ি যাওয়ার সময় সকলের যেন তাড়াহুড়া না করে ধীরে সুস্থে বাড়িতে যায়। এর পরবর্তীতে সোহাগ ভাইকে আমি সাহায্য করলাম এবং সোহাগ ভাই সকলের হাতে একে একে করে উপহার সামগ্রী গুলো বুঝিয়ে দিল। প্রথমে আমাদের সেকশনের যে মেয়েরা ছিল তাদের হাতে উপহার সামগ্রী গুলো তুলে দিলাম। যখন একে একে করে সেকশন থেকে বের হয়ে গেল এর পরবর্তীতে ছেলেদের পালা তাদের হাতে ও আস্তে আস্তে করে উপহার সামগ্রী গুলো তুলে দিলাম। এর পরবর্তীতে আমরা সকলেই একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় করলাম। অনেকেই একে অপরের সাথে ছবি তুলে স্মৃতির পাতায় রেখে দিয়েছে। এরপর সকলে আস্তে আস্তে করে বিদায় নিতে শুরু করলো।
কিন্তু আমরা যারা মেনটেনেন্স ডিপার্টমেন্ট এর লোক ছিলাম তাদের একটু দেরীতেই অফিস ত্যাগ করতে হলো। কারণ দীর্ঘদিন যেহেতু অফিস বন্ধ থাকবে তাই অফিসের সকল মালামাল মেশিন ভালোভাবে রেখে আসতে হয়েছে। আমাদের অফিস থেকে বের হতে হতে একটু দেরি হল। যাইহোক দিনটি আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে কারণ আমরা একটি বছরের সকল দুঃখ কষ্ট এই একদিনে মোছার চেষ্টা করেছি। এবং সকলে হাসিমুখে বাড়ি ফিরে গেছে।