মহান আল্লাহর উপর আস্থা রেখে আমার মাকে শারীরিকভাবে সুস্থ করার চেষ্টা।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ রবিবার। ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমাদের সকলের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য থাকে আমরা যেন সবসময় শারীরিকভাবে সুস্থ থাকি। আবার অনেক ক্ষেত্রে আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও যদি আমাদের পরিবারের কেউ শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকে তাহলে আমরা মানসিকভাবে বেশ দুশ্চিন্তায় থাকি। আসলে অসুস্থতা একজন মানুষকে যেরকম অসহায় করে তোলে ঠিক তেমনি একজন অসুস্থ রোগী একটি পরিবারকে ঠিক সেরকমই অসহায় করে দেয়। পরিবারের একজন গুরুতর অসুস্থ থাকলে পরিবারে অন্যান্য সদস্যরা এমনিতেই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়। যাহোক আপনার হয়তো সকলেই আমার পোস্ট এবং ডিসকর্ড এর জেনারেল চ্যাটের মাধ্যমে জানেন যে, গত কয়েক মাস যাবত আমার জন্মদাতা মা শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ আছেন। মাঝেমধ্যে সুস্থতা অনুভব করেন আবার মাঝেমধ্যেই মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমার মায়ের প্রধান সমস্যা হলো পেটে পাকস্থলীতে আলসার হয়েছে। এবং আলসারের অবস্থা খুবই মারাত্মক।
আলসার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মতো আমার মাকে সর্বাত্মক চিকিৎসা করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও আমার মা মাঝেমধ্যেই আলসারের প্রভাবে একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাঝখানে আমার মা শারীরিকভাবে কিছুদিন ভালো থাকলেও গত দুই দিন যাবত খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে একেবারেই খাবার খেতে পারছে না। একটু খাবার খাওয়ার সাথে সাথে সেটা বমি হয়ে যাচ্ছিল। মায়ের এরকম খারাপ অবস্থা দেখার সাথে সাথে আজকে আমাদের কুষ্টিয়া শহরের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সুচিকিৎসা দেওয়ার জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। আমার মায়ের পাকস্থলীতে আলসার শনাক্ত হওয়ার পর থেকে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার মোঃ আরিফুল ইসলামের নিকটে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। তাই আজকেও ডাক্তার মোঃ আরিফুল ইসলামের নিকট থেকে যথার্থ পরামর্শ গ্রহণ করেছি।
উক্ত ডাক্তারের নিকট আমার মায়ের চিকিৎসা করানোর জন্য গতকাল আমি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সিরিয়াল করেছিলাম। আমাদের সিরিয়াল হয়েছিল ১৩ নাম্বার। ডাক্তার রোগী দেখা শুরু করেছিল দুপুর 2:00 টা থেকে। আর আমরা পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পৌঁছেছিলাম ২:১৫ মিনিটে। তারপর আমাদের নির্ধারিত সিরিয়াল অনুসারে ডাক্তারের কক্ষে আমাদেরকে ডাকা হলো। তখন বিকেল প্রায় সাড়ে তিনটা বাজে। এরপর ডাক্তারের কক্ষে প্রবেশ করার পর ডাক্তারের কম্পাউন্ডার আমার মায়ের রক্তের চাপ সহ কয়েকটা বিষয় পরীক্ষা করলেন। তারপর আমার মায়ের শারীরিক ওজন কি পরিমান আছে সেটা দেখলেন। এরপর ডাক্তার নিজে আমার মায়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে একটি যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করেলেন।
এরপর আমার মায়ের বর্তমানে শারীরিক যে সমস্যা গুলো রয়েছে সবগুলো সমস্যার কথা ডাক্তার সাহেব অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। তারপর ডাক্তার সাহেব পূর্বের ইসিজির রিপোর্ট, ব্লাড টেস্টের রিপোর্ট, এন্ডোসকপির রিপোর্ট দেখলেন। একই সাথে পূর্বে প্রেসক্রিপশনও দেখে নিলেন। তারপর প্রথমে ডাক্তার সাহেব কিছু পরামর্শ দিলেন, বিশেষ করে আমার মা যেন কোন প্রকারের তেল ও মসলা জাতীয় খাবার না খায় সেদিকে আমাদেরকে বিশেষভাবে খেয়াল বললেন। একই সাথে স্বাভাবিক খাবার গুলো অল্প অল্প করে বারবার ক্ষেত্রে পরামর্শ দিলেন। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি পরিমাণমতো পান করার পরামর্শ দিলেন। তারপরে প্রয়োজনীয় ঔষধ গুলো প্রেসক্রিপশনে লিখে আমাদেরকে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিলেন। এরপর ডাক্তার সাহেব বললেন আগামী ১৮ই এপ্রিল সকাল সাড়ে দশটার মধ্যেই উপস্থিত হতে। উক্ত দিন আমার মায়ের পুনরায় এন্ডোসকপি করানো হবে। ডাক্তার সাহেব আরো বললেন, এন্ডোসকপিতে যদি আলসারের অবস্থা খারাপ দেখা যায় তাহলে আপনার মায়ের অপারেশন করানো হবে।
আমার মা তো অপারেশনের কথা শুনে বেশ ভেঙ্গে পড়লেন এবং কান্না শুরু করলেন। কিন্তু ডাক্তার সাহেব বেশ সুন্দর পরামর্শ দিলেন। ডাক্তারের পরামর্শ গুলো পেয়ে আমার মা অনেকটা সাহস পেল। তারপর ওষুধের ফার্মেসি থেকে প্রয়োজনীয় সকল ঔষধ গুলো ক্রয় করে আমরা বাড়ির দিকে রওনা হলাম। সন্ধ্যার সময় বাড়িতে এসে কিছুক্ষণ পরে প্রেসক্রিপশন অনুসারে আমার মাকে ওষুধগুলো আমি নিজ হাতে খাওয়ায়ে দিয়েছিলাম। ওষুধ খাওয়ার ৫-৭ মিনিট পর আমার মায়ের একবার বমি হয়ে গেল। তারপর দ্বিতীয়বারের ওষুধ খাওয়ানোর পর আমার মা কিছুটা সুস্থ অনুভব করলো। অর্থাৎ বমি হলো না। এরপর স্বাভাবিক সবজি তরকারির সাথে কিছুটা ভাত খেতে পারলো আমার মা। আসলে মায়ের এরকম অসুস্থ অবস্থা দেখে আমার মনটা অত্যন্ত বিষণ্ণ। আমার নিজের প্রতি সেরকম কোনো খেয়াল নেই। সত্যি বলতে চোখের সামনে মায়ের এতটা কষ্ট দেখা সন্তান হিসেবে আমার জন্য খুবই অসম্ভব। কিন্তু কিছুই করার নেই।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই দোয়া করবেন যাতে মহান আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে আমার মা শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে। একই সাথে ১৮ই এপ্রিলের এন্ডোসকপির রিপোর্টটা যেন পজিটিভ আসে। কেননা অপারেশন করানোর কথা শুনে আমার মা এবং আমার পরিবারের সকলেই অত্যন্ত আতঙ্কিত এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। কারণ আমার মা শারীরিক ভাবে অত্যন্ত দুর্বল। এমনিতে আমার মা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই আপনাদের সকলের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহর দয়ায় আমার মায়ের যেন অপারেশন করানো পর্যন্ত না যেতে হয়। মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করি আমার মা যেন এমনিতে ঔষধ সেবনের মধ্য দিয়ে সুস্থতা অর্জন করতে পারে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ঠিক বলেছেন ভাইয়া বাবা মা কে চোখের সামনে অসুস্থ দেখলে যে কোনো সন্তানের জন্য খুব কষ্টের। আপনার মা অসুস্থ জেনে খারাপ লাগলো। ডাক্তারের পরামর্শ মত চলার চেষ্টা করেন। তাছাড়া ডাক্তার দের আচরণের উপরও অনেকটা স্বস্তি নির্ভর করে। এ জন্যই তো আপনার মা ডাক্তারের কথা শুনে কিছুটা সাহস পেয়েছে। দোয়া রইলো আপনার মায়ের জন্য।
ডাক্তারের পরামর্শের মত হওয়ার মাকে নিয়মিত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে আপু। তারপরও পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছে না। মনে হচ্ছে হয়তো শেষ পর্যন্ত অপারেশন করা লাগতে পারে। যাহোক, আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।