রাজশাহী পদ্মা নদীর পাড় ভ্রমণ // পর্ব :- ০১

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ রবিবার। ০৭ ইং মে, ২০২৩ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজ নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির হয়েছি।

IMG_20230223_172635_822.jpg



সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুবই ভ্রমণ পিপাসু একজন মানুষ। আমি ভ্রমণ করতে খুবই পছন্দ করি। আমি যখনই সুযোগ পাই তখনই চেষ্টা করি বাংলাদেশের যেকোনো ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ করতে। একই সাথে চেষ্টা করি সুন্দর সুন্দর পার্কে ভ্রমণ করতে। কিন্তু ভ্রমণ করার তীব্র ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা থাকা সত্ত্বেও বছরে কয়েকবারের বেশি ভ্রমণ করার সুযোগ পায় না। যাহোক,আমি ভ্রমণ করার মধ্যে অনাবিল আনন্দ অনুভব করি। আমি মনে করি, আমাদের মনকে সতেজ ও সজীব রাখার জন্য মাঝেমধ্যে সুন্দর সুন্দর জায়গা ভ্রমণ করা খুবই প্রয়োজন। আমরা যখন কোন সুন্দর একটি জায়গা ভ্রমণ করি তখন আমাদের মনের মধ্যে কোন ধরনের দুশ্চিন্তা থাকে না। সুন্দর জায়গার মনোরম পরিবেশে মনটা এমনিতেই সতেজ হয়ে ওঠে। তাই একঘেয়েমি এবং ঘরকুনো জীবন থেকে বের হয়ে আসার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই প্রয়োজন বিভিন্ন সুন্দর ও ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমন করা।

ভ্রমণ করতে আমার ভালো লাগার অন্যতম প্রধান কারণ হলো, ভ্রমণ করার মধ্য দিয়ে আমি বাইরের জগৎ সম্পর্কে অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারি। আমি বিশ্বাস করি যে, ভ্রমন করার মধ্য দিয়ে আমাদের জ্ঞানের দরজা খুলে যায়। একই সাথে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়তে থাকে। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত সকল ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে হলেও মনকে সতেজ রাখার জন্য এবং আমাদের জ্ঞানের পরিধিকে প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান এবং সুন্দর সুন্দর স্থানে ভ্রমন করা।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমি কিছুদিন আগে আমার পরিবারের সঙ্গে রাজশাহী পদ্মা নদীর পাড় ভ্রমণ করেছিলাম। আমরা আমাদের গাংনী শহর থেকে একটি মাইক্রো গাড়ি ভাড়া করে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। রাজশাহী পৌঁছাতে আমাদের প্রায় বিকেল হয়ে গিয়েছিল। আর এই ভ্রমণটা ছিল আমাদের নিতান্ত একটি পারিবারিক ভ্রমণ। অবশ্য রাজশাহীতে আমাদের আত্মীয় আছে। আর আমার আত্মীয়টি ছিল আমার বোনের ছেলে অর্থাৎ আমার ভাগ্নে। আমরা প্রথমে সেখানেই উঠেছিলাম। তারপর আমার ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে আমি এবং আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য সকলেই পদ্মা নদীর পাড় বেড়াতে চলে গেলাম। অবশ্য রাজশাহীতে যাওয়ার আমার প্রধান আকর্ষণই ছিল পদ্মা নদীর পাড় ভ্রমণ করা।

IMG_20230223_172447_835.jpg



লোকেশন



আমি এবং আমার পরিবারের সবাই বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (রাজশাহী) এর গেট দিয়ে পদ্মা নদীর পাড়ে প্রবেশ করেছিলাম। পদ্মা নদীর পাড়ে প্রবেশ করার সাথে সাথে পদ্মা নদীর সৌন্দর্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। একই সাথে পদ্মা নদীর পাড়ে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের দেখে মনটা আরো বেশি চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। আমরা যখন পদ্মা নদীর পাড়ে পৌছালাম, তখন সূর্য প্রায় পশ্চিমের কোলে হেলে পড়ার মতো অর্থাৎ সময়টা ছিল প্রায় পড়ন্ত বিকেল। পশ্চিমের কোলে সূর্য অস্ত যাওয়ার মুহূর্তটা পদ্মা নদীর ঠিক মাঝখানে দেখা গিয়েছিল। তখনকার দৃশ্যটা খুবই মনোমুগ্ধকর ছিল। তাই সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা বন্দী করেছিলাম আমি। একই সাথে আমি লক্ষ্য করলাম যে, উপস্থিত সকল দর্শনার্থীরাই সূর্য অস্ত যাওয়ার দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দি করতে খুবই ব্যস্ত।পদ্মা নদীর পাড় থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্যটা দেখে আমরা সকলেই মুগ্ধ হয়েছিলাম।

IMG_20230223_172635_822.jpg

IMG_20230223_173105_275.jpg

IMG_20230223_172902_709.jpg

IMG_20230223_172854_994.jpg

IMG_20230223_172648_231.jpg



লোকেশন



অনেকদিন পরে বিশাল পদ্মা নদী দেখে সত্যিই আমি অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছিলাম। তখন পদ্মা নদীতে তেমন পানি ছিল না। পদ্মারপাড় থেকে আমি দেখতে পেলাম যে, পদ্মার বুকে জেগে উঠেছে বেশ কয়েকটি বড় বড় চর। আর প্রত্যেকটি চরে অসংখ্য দর্শনার্থী সৌন্দর্য উপভোগ করে বেড়াচ্ছে। আমি প্রথমেই আমার পরিবারের সকলকে নিয়ে পদ্মা পাহাড়ের আশপাশের পরিবেশটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম এবং আশপাশের পরিবেশের সৌন্দর্যগুলো খুবই আনন্দের সাথে উপভোগ করলাম।

IMG_20230223_173102_506.jpg

IMG_20230223_173042_661.jpg

IMG_20230223_173048_996.jpg

IMG_20230223_173045_942.jpg



লোকেশন



আমার পরিবারের সকলেই পদ্মা নদীর সৌন্দর্যের সাথে নিজেদের ফটোগ্রাফি করতে খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। আমিও অবশ্য মাঝেমধ্যে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করেছিলাম। কিন্তু প্রাণ ভরে উপভোগ করেছিলাম পদ্মা নদীর অপরূপ সৌন্দর্যময় দৃশ্যগুলো। আর সব থেকে মজার বিষয় হলো, পদ্মা নদীর পাড়ে আসার সময় আমরা সঙ্গে করে অনেকগুলো খাবার এবং পানি এনেছিলাম। কিন্তু পদ্মা নদীর অপরূপ সৌন্দর্য দেখে খাবার খাওয়ার কথা সত্যিই আমরা সকলেই ভুলে গিয়েছিলাম। পদ্মা নদীর পাড়ে আশপাশের জায়গাগুলোয় বেড়াতে গিয়ে আমি লক্ষ্য করলাম যে, পদ্মা নদীর কিনারায় অসংখ্য ছোট ছোট নৌকা বাধা রয়েছে। আর এই ছোট ছোট নৌকা গুলো ব্যবহার হচ্ছে দূর-দূরান্তের চরে যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়ার জন্য।

IMG_20230223_173222_741.jpg

পদ্মা নদীর ঠিক মাঝখানে জেগে ওঠা বিশাল একটি চরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। কিন্তু আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নৌকায় চড়ে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে পদ্মার চরে যেতে কেউ রাজি হলো না। তাদের সকলের একটাই কথা ছিল, নৌকা যদি উল্টিয়ে যায় তাহলে আমরা ডুবে মরে যাব। তাই আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কেউ পদ্মা নদীর চরে যেতে রাজি হল না। তাই শেষ পর্যন্ত আমি এবং আমার ভাগ্নে পদ্মা নদীর চরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। আসলে এর আগেও পদ্মা নদীর চরে যাওয়ার আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে। পাশাপাশি আমি এবং আমার ভাগ্নে সাঁতারে খুবই পারদর্শী। পদ্মা নদীর মাঝখানে থেকে সাঁতার দিয়ে কিনারায় আসার মতো সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। তাই আমরা দু'জন নির্দ্বিধায় পদ্মা নদীর বিশাল একটি চরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম।


পদ্মা নদীর বুকে নৌকায় চড়ে পদ্মা নদীর বিশাল চরে যাওয়ার মুহূর্তের কথাগুলো এবং পদ্মার চরে কাটানো মুহূর্তটুকু আগামী দিন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।


১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ



Sort:  
 2 years ago 

আমরাও কয়েক মাস আগে পদ্মার পাড় ঘুরতে গিয়েছিলাম। তবে সেটা মাওয়া ফেরিঘাটে। সন্ধ্যার দিকে পদ্মার পাড়ের সূর্য অস্ত যাওয়ার দৃশ্য দেখতে খুবই ভালো লাগে। আপনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে রাজশাহী পদ্মার নদীর পাড় ঘুরতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। মাঝে মধ্যে পরিবারকে এভাবে সময় দিলে তারা খুব খুশি হয়। পদ্মা নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চরে যাওয়ার গল্প আর অনুভূতি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

পদ্মা নদীর পাড়ে বিকেলবেলা অপরূপ সৌন্দর্যময় মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আসলে নদীর পাড়ে গেলে মন ভালো হয়ে যায়। নদীর শীতল বাতাসে মুগ্ধ হয়ে যায়। আর আপনার আজকে নদীর পাড়ে ভ্রমণের সেই দৃশ্যগুলো দেখতে খুবই ভালো লাগলো।

 2 years ago 
 2 years ago 

পদ্মা নদীর পাড় ভ্রমণ করেছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে এরকম জায়গা গুলোতে ঘুরতে অনেক ভালো লাগে। প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে সময় কাটাতে অনেক ভালো লাগে। অনেক সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন।ভ্রমণ আমাদের মন কে সতেজ ও সজীব রাখে।তাই মাঝে মাঝে ভ্রমণ করা খুবই প্রয়োজন।রাজশাহী শহর খুবই পরিচিত একটি শহর।ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত অনেক বার রাজশাহীতে যাওয়া হয়েছে।পদ্মার পাড়ে ঘুরতে তো খুবই ভালো লাগে।ভাইয়া আপনি বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য গুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনারা অনেক মজা করেছিলেন।নৌকায় চড়তে আমিও অনেক ভয় পাই কিন্তু তারপরও নৌকায় চড়ে পদ্মার চরে গেছিলাম।আপনারা ঘুরতে ঘৃরতে খাবার খেতেই ভুলে গেছেন। আসলে এরকম জায়গায় গেলে ক্ষুধা তৃষ্ণা কিছুই থাকেনা।সুন্দর মুহুর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

শুভ বিশাল নদীর পাড়ে গেলে মনটাও নদীর মতো বিশালতা হয়ে যায়।।
রাজশাহী পদ্মা নদীর পাড় ভ্রমণ করে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন আপনারা সবাই মিলে।।
আপনার ফটোগ্রাফি গুলা খুবই ভালো লাগলো বিশেষ করে পশ্চিম আকাশ রাঙানো রক্তিম সূর্যটি অসাধারণভাবে ফ্রেমবন্দী করেছেন নদীর পানি সহ।।
ধন্যবাদ ভাইয়া ভ্রমন পোস্টটি আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য।।

 2 years ago 

আসলেই কথাও ভ্রমণে গেলে অনেক ভালো লাগে , মন মাইন্ড ফ্রেশ হয়ে যায় ৷ এবং অনেক কিছু শেখা যায় ৷ আমিও আপনার মতো ঘোরাঘুরি অনেক পছন্দ করি , তবে সময়ের জন্য আমারও হয়ে ওঠে নাহ ৷ যাই হোক পরিবারের সাথে রাজশাহী পদ্ম নদী ভ্রমণে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে আপনাদের কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলে শেয়ার করার জন্য ৷

 2 years ago 

আপনি দেখি ভাইয়া আমার মতই ভ্রমন প্রিয়। আমিও সুযোগ পেলে ভ্রমনে বেরিয়ে পড়ি। তবে আপনার আজকের ভ্রমন পোস্টের প্রতিটি ছবিগুলো বেশ সুন্দর হয়েছে। আর আপনার পদ্ধা নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার গল্পওে বেশ সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 89142.81
ETH 3374.76
USDT 1.00
SBD 3.04