DIY Event Speial Christmas Week||বিলুপ্তপ্রায় মৃৎশিল্প//পর্ব-১৩[কাদামাটি দিয়ে ঘটি তৈরি]তাং:৩০/১২/২০২১ইং
আসসালামু আলাইকুম।
💖আমার নতুন একটি পোস্টে আপনাদের সবাইকে সুস্বাগতম জানাচ্ছি💖
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন এবং নিরাপদে আছেন। সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে এবং আপনাদের দোয়ায় আমিও ভালো আছি। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, বিশেষ ক্রিসমাস (এসো নিজে করি) সপ্তাহের প্রতিযোগিতায় আমি অংশগ্রহণ করতে পেরে খুবই আনন্দ অনুভব করছি। প্রিয় বন্ধুগণ, আমাদের দেশে যতগুলো পুরাতন ঐতিহ্যবাহী শিল্প রয়েছে তার মধ্যে মৃৎশিল্প অন্যতম প্রধান। বাঙ্গালীদের অতীত ঐতিহ্যের একটি বিরাট অংশজুড়ে রয়েছে মৃৎশিল্প। মৃৎশিল্প বা মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস পত্রের সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। প্রাচীনকাল থেকে আমাদের দেশের কুমোর সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের দক্ষ হাতে মৃৎশিল্প বা কাদামাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করত। তারা কাদামাটি দিয়ে বিভিন্ন পাখি তৈরি করত, বিভিন্ন জীব-জন্তু তৈরি করত। এছাড়াও তারা কাদামাটি দিয়ে হাড়ি, থালা, গ্লাস, চেরাগ, ব্যাংক, ঠিলা, ভাড়, নান্দা সহ আরো অনেক কিছু তৈরি করত। তাদের তৈরিকৃত এ সমস্ত জিনিসপত্র অতীতে গ্রামবাংলার মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস হিসেবে ব্যবহার হতো। অতীতে আমাদের গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা পানি পান করার জন্য এবং পানি রাখার জন্য ঘটি ব্যবহার করত। কাদা মাটির তৈরি এ ধরনের ঘটি অনেক সাইজের হতো। ছোট রকমের ঘটি গুলো ব্যবহার হতো পানি পান করার জন্য এবং বড় সাইজের ঘটি গুলো ব্যবহার করত পানি রাখার জন্য। মাটির তৈরি এ ধরনের ঘটিতে গরমের সময় পানি অনেকক্ষণ ঠান্ডা থাকতো। অতীতে আমাদের গ্রাম অঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচটি করে বড় ঘটি ব্যবহার করত শুধুমাত্র পানি রাখার জন্য এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি করে ছোট সাইজের ঘটি ব্যবহার করত পানি পান করার জন্য। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে কাদামাটির তৈরি ঘটি আজ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন আর গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা পানি রাখার জন্য এবং পানি পান করার জন্য মাটির তৈরি ঘটি ব্যবহার করে না। শুধু তাই নয় বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ঘটি কি জিনিস তারা সঠিকভাবে জানেই না। কিন্তু আমাদের সকলের উচিত মৃৎশিল্প বা মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস-পত্র সম্বন্ধে আমাদের নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করানো। মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র তাদের সামনে তুলে ধরা। কারণ এটা আমাদের ঐতিহ্য। আর এই ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব আমাদের প্রত্যেকের। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন যে বিলুপ্তপ্রায় মৃৎশিল্পের বিভিন্ন জিনিসপত্র আপনাদের নিকট নতুনভাবে উপস্থাপন করার জন্য আমি একটি সিরিজ চালু করেছি। আর এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমি আপনাদের নিকট আমার চলমান সিরিজের পর্ব-১৩ পাবলিশ করছি । আজকে আমি আপনাদের সাথে কাদামাটি দিয়ে ঘটি তৈরির একটি মডেল শেয়ার করছি। আমি আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তবে চলুন দেখে আসি কাদামাটি দিয়ে ঘটি তৈরির প্রসেস গুলো।
উপাদান পরিমাণ কাদামাটি পরিমাণ মতো পানি পরিমাণমতো
💖 কাদামাটি দিয়ে ঘটি তৈরির প্রসেস গুলো নিম্নে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করা হলো💖
⬇️ ধাপ-০১:⬇️
প্রথমে পরিমাণমতো কাদামাটি নিয়ে নিলাম। তারপরে দুই হাত দিয়ে কাদামাটি গুলো ভালোভাবে সেনে নিলাম।
⬇️ ধাপ-০২:↙️
সেনে নেওয়া কাদামাটি গুলো দুই হাতের তালু দিয়ে একটু লম্বা গোলাকার করে নিলাম।
⬇️ ধাপ-৩:⬇️
ডান হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে ঘটির ভিতরের অংশটি তৈরী করে নিলাম।
♣️ ধাপ-০৪:♣️
ঘটির গলা বানিয়ে দিলাম। গলার অংশটি একটু চিকন এবং সরু করে দিলাম।
♣️ ধাপ-০৫:♣️
ঘটির নিচের অংশগুলো হাত দিয়ে আলতোভাবে নেপে সমান করে দিলাম।
👇 ধাপ-০৬:👇
হাতের আংগুল দিয়ে ঘটির মাঝখানের অংশে শির তৈরি করে দিলাম।
⬇️ ছবি-৭:⬇️
এবার ঘটির কান্দা সুন্দরভাবে তৈরি করে দিলাম। কান্দা গুলো চারিদিকে সমান করে নেপে দিলাম।
⬇️ ছবি-৮:↙️
হালকা পানি দিয়ে ঘটির সমস্ত অংশগুলো আলতো করে নেপে মসৃণ করে দেওয়ার চেষ্টা করলাম।
⬇️ ছবি-৯:⬇️
আর এভাবেই আমি কাদামাটি দিয়ে ঘটি তৈরি সুসম্পন্ন করলাম।
♣️ ছবি-১০:♣️
প্রিয় বন্ধুগণ, কাদামাটি দিয়ে ঘটি আরো বেশি সুন্দর করে তৈরি করতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কাদামাটি আয়ত্তে আনা সত্যিই খুবই কঠিন। মন যেভাবে চায় কাদামাটি দিয়ে যেকোনো জিনিস তৈরি করতে কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেভাবে আর হয়ে ওঠে না। তারপরও আমি সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি কাদামাটি দিয়ে সুন্দর করে ঘটি তৈরি করতে। আমার এই মৃৎশিল্পের কাজটি আপনাদের যদি একটুও ভালো লাগে তাহলে আমার পরিশ্রম সার্থক হবে। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।
আমার পরিচিতি | কিছু তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @bidyut01 |
ফটোগ্রাফার | @bidyut01 |
ডিভাইস | infinix hot 11 S |
আমার বাসা** | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৮ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি তে ব্লগিং করা |
আমার এই পোস্টটি টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে। আমার পোষ্টের টুইটার লিংক:-https://twitter.com/bidyut01/status/1476600118279229462?t=bXEx7K_S8Kg2ew_I_TbjvQ&s=19
মৃৎশিল্প এর ব্যবহার নাই বললেই চলে।ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উচিত এগুলো রক্ষা করা।আর আপনি খুব সুন্দর করে একটি ঘটি বানিয়েছেন। দেখে ভাল লাগলো। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পোস্টটি পড়ে আপনি খুবই সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন। হ্যাপি নিউ ইয়ার ভাইয়া।
ভাইয়া আপনার পোস্ট গুলো খুবই ভালো লাগে কারণ আপনি প্রাচীন কালের মাটির তৈরি আমাদের মাঝে তুলে ধরেন। এবং অনেক সুন্দর করে আপনি তৈরি করেন। আসলে বর্তমান যুগে আমরা এগুলো ভুলে গেছিলাম। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া প্রতিদিন আমাদের এরকম প্রাচীনকালে স্মৃতিগুলো সামনে তুলে ধরার জন্য। আপনার জন্য সবসময় শুভকামনা।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। খুবই সুন্দর মন্তব্য করেছেন আমার পোস্টটি পড়ে। হ্যাপি নিউ ইয়ার।
আপনার তৈরি করা কাদামাটির ঘটি টিদেখতে অসাধারণ লাগছে। আপনি মৃৎশিল্পকে আমাদের মাঝে আবার নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন। আগেকার দিনে এমন ঘটিবাটি অনেক তৈরি করা হতো কিন্তু বর্তমানে এগুলো তেমন একটা আর দেখা যায় না। ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আমার পোস্টটি পড়ে অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।