আমার শৈশবের স্মৃতিচারণ // প্রথম সাইকেল চালানো শেখা-০১।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শনিবার। ১৬ ই মার্চ, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমাদের জীবনের সবচাইতে মধুর সময় হলো আমাদের শৈশবের জীবন। আমাদের শৈশবের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো আমরা কখনোই ভুলতে পারি না। ঠিক তেমনি আমার শৈশব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আজ আমি আপনাদের নিকট শেয়ার করছি। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, ছোটবেলা থেকে আমি সাইকেল চালানোর প্রতি অত্যন্ত আসক্ত ছিলাম। কিন্তু খুব সহজে সাইকেল চালানো শিখেছি এমনটা কিন্তু নয়। ৯০ দশকের গ্রামে বসবাসকারী সকল ছেলের মতোই আমিও আমার শৈশবে সাইকেল চালানো শিখেছিলাম অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে। কারণ আমাদের সময় সাইকেল চালানো শেখার জন্য ছোট সাইকেল ব্যবহারের প্রচলন একেবারেই ছিল না। বাবা ও চাচাদের ব্যবহার করা একেবারে বড় সাইকেল দিয়েই সাইকেল চালানো শুরু করেছিলাম আমি।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, ২০০০ সালে আমার বয়স তখন ০৯ বছর ছিল। ওই সময় আমাদের বাড়িতে সাইকেল ছিল মোট দুইটা। একটা সাইকেল ছিল একেবারেই পুরনো এবং দ্বিতীয় সাইকেলটি ছিল ওই সময়কার জন্য সেরা বড় সাইকেল। সাইকেলটি ছিল বেশ সাজানো-গোজানো এবং নতুন। পুরনো সাইকেলটি আমার বাবা ও চাচারা সাধারণ কাজে ব্যবহার করতো। সাধারণ কাজ বলতে ফসলের জমিতে দেওয়া সারের বস্তা আনা এবং গ্রামের আশপাশের হাটবাজারে যাওয়ার কাজে পুরনো সাইকেলটি ব্যবহার হতো। আর নতুন সাইকেলটি ব্যবহার করা হতো স্পেশাল ভাবে। অর্থাৎ কোন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য এবং কোন বিশেষ মানুষের বাড়িতে যাওয়ার জন্য নতুন সাইকেলটি ব্যবহার করা হতো। আর আমার জীবনে প্রথম দিন সাইকেল চালানো শুরু করেছিলাম আমাদের বাড়ির সেই নতুন সাইকেলটি দিয়ে।
সাইকেল চালানো ভালোভাবে শিখিয়ে দেওয়ার জন্য আমার বাবা আমাকে নিয়ে প্রথমে গিয়েছিল আমাদের স্কুল মাঠে। আমাদের স্কুল মাঠটি অত্যন্ত বড় এবং সমতল ছিল। আমি দুই রকম ভাবে সাইকেল চালানো শিখেছিলাম। প্রথমে সাইকেলের রড ধরে নিচের অংশে পা রেখে সাইকেল চালানো শিখেছিলাম এবং পরবর্তীতে সাইকেলের ছিটে বসে সাইকেল চালানো শিখেছিলাম। এবার প্রথম দিন সাইকেল চালানো শেখানোর জন্য আমার বাবা প্রথমে আমাকে সাবধান করেছিল যেন সাইকেল চেইনের মধ্যে আমার পা আটকিয়ে না যায়। তারপরে বাবার পরামর্শ মতো আমার ডান পা সাইকেলের ডানদিকের প্যাডেলে দিয়েছিলাম, ডান হাত দিয়ে সাইকেলের মাঝখানের রডটি চেপে ধরেছিল এবং বাম হাত দিয়ে সাইকেলের হ্যান্ডেল ধরেছিলাম। অর্থাৎ সাইকেলের নিচের অংশ ব্যবহার করে সাইকেল চালানো শেখা শুরু করেছিলাম।
প্রথমে আমি ডান পা দিয়ে প্যাডেল ব্যবহার করে এবং বাম পা মাটিতে রেখে সাইকেলটি সামনের দিকে ঠেলা দেওয়া শুরু করলাম এবং সাইকেলের ভারসাম্য বজায় রাখার কৌশল আয়ত্ত করেছিলাম। তারপর ডান পা দিয়ে একবার প্যাডেলে চাপ দেওয়ার পর বাম পা বাম প্যাডেলে যখনই নিতে যাচ্ছিলাম তখনই ভারসাম্যহীন ভাবে সাইকেলসহ আমি মাটিতে পড়ে গেছিলাম। মাটিতে পড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে আমার বাবা হাসতে লাগলো এবং কাছে এসে সাইকেলের পেছনের অংশ চেপে ধরলো। তারপর আমি পুনরায় সাইকেল চালানো শুরু করেছিলাম। সাইকেলের পিছনের অংশ বাবা ধরে রাখার জন্য মনে বেশ সাহস হয়েছিল আমার। তখন সাহসে সাহসে ডান পা দিয়ে প্যাডেলে চাপ দিয়েই বাম পা বাম প্যাডেলে তুলে সাইকেল চালানো শুরু করে দিয়েছিলাম। বাবার সহযোগিতায় এভাবে বেশ কয়েকবার সাইকেল চালানোর পর আমার মনে অনেকটা সাহস সঞ্চার হয়ে গেল।
তারপর আমি সাইকেলের নিচে দুই পা দিয়ে প্যাডেল যত চাপ দিতে লাগলাম সাইকেল ততই দ্রুত সামনের দিকে এগোতে লাগলো। সাইকেল চালানোর সময় আমি জানছি যে সাইকেলের পেছনের অংশ আমার বাবা ধরে আছে। কিন্তু পিছনে একবার তাকিয়ে দেখি সাইকেলের পিছনে আমার বাবা নেই, তিনি আমার সাইকেল চালানো দেখে পিছন থেকে সাইকেল সম্পূর্ণরূপে ছেড়ে দিয়েছিলেন। যখন দেখলাম বাবা নেই তখন হঠাৎ করেই বুকটা কেঁপে উঠলো এবং থড়বর থড়বর করে সাইকেল থামিয়ে সাইকেল থেকে নেমেছিলাম। সাইকেল থেকে এভাবে নেমে যাওয়া দেখে আমার বাবা বেশ জোরে জোরে হেসেছিলেন। তখন আমার বাবা হাসতে হাসতে বললেন, সাইকেল চালানো শেখার প্রধান শক্তি হলো মনের সাহস।
আমার পরিচয়।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সাইকেল চালোনো শেখা নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট দিয়েছেন ভাইয়া। এধরণের পোস্ট পড়লে, ছোট বেলার কত কথা মনে পড়ে! সবচেয়ে ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে, আপনি আপনার বারার সহায়তায় সাইকেল চালানো শিখেছেন। বেশ আনন্দের এবং গর্বের। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
চমৎকার মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়লে বেশ ভালো লাগলো। আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। আমিও আপনার মত দুই ভাবে সাইকেল চালানো শিখেছি। প্রথমে নিচে চালানো শিখেছি তারপর সিটে উঠে। সাধারণত সবাই ছোটবেলায় এভাবে সাইকেল চালানোর শেখে। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আসলে ছোটবেলার সেই সাইকেল চালানোর মজার স্মৃতিগুলো এখনও আমাকে আনন্দ দেয়।
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনার শৈশবে সাইকেল চালানো শেখার অভিজ্ঞতা। আপনি একদম ঠিক বলেছেন মামা আসলে ২০০০ সালের দিকে যখন সাইকেল ছিল তখন বেশ উচ্চ সাইকেল গুলো বেশি দেখা যেত। আমাদের বাড়িতেও একটি সাইকেল রয়েছে সেই সাইকেলটির নাম ২৬ সাইকেল। সে সাইকেলটি দেখলে তো আমার ভয় লাগে অনেক উঁচু মনে হয় আমি চড়তে পারবো না। তবে আপনিও গ্রামের সকল ছেলেদের মত সাইকেল চালানোতে বেশ আগ্রহী ছিলেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আসলে সে উঁচু সাইকেল দিয়েই আমাদের সাইকেল চালানো শুরু হয়েছিল।
ভাই প্রথমে সাইকেল চালানো শেখার ক্ষেত্রে সবাই কিন্তু রডের মধ্যে পা দিয়ে সাইকেল চালানো শিখে আর পরবর্তীতে সিটের উপরে বসে সাইকেল চালানো শিখে। আপনি আপনার বাবার হাত ধরে আপনাদের স্থানের স্কুল মাঠ থেকে সাইকেল চালানো শিখেছিলেন সেই গল্পটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাইকেল চালানোর পুরা গল্পটি বেশ ভালো লাগলো।আসলে আগে বড়ো সাইকেলেই সবাই সাইকেল চালানো শিখতো।আপনি ঠিক বলেছেন শৈশব কে কখনো ভোলা যায় না।আপনি সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে পড়ে গেছিলেন এবং আঙ্কেল সেই দৃশ্য দেখে হাসছিলেন এবং আপনার সাইকেল টি ধরে আপনাকে সাইকেল চালাতে সাহস দিচ্ছিলেন।সব মিলিয়ে অসাধারণ সুন্দর পোস্ট ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার শৈশবের স্মৃতিচারণ পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনার শৈশবের স্মৃতিচারণ পড়ে আমিও শৈশবে হারিয়ে গেলাম। আসলে এ ধরনের স্মৃতি গুলো কখনো ভুলা যায় না। এত দুর্দান্ত শৈশবের স্মৃতিচারণ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা রইলাম ভাই।
চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাইকেল চালানোর খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করেছেন আপনি। আসলে এরকম ছোটবেলার মুহূর্ত আমাদের সকলেরই মনে থেকে যায়৷ যখন আমরা এগুলো শেয়ার করি তখন আমাদের অনেকটাই ভালো লাগে৷ আপনিও সেরকম একটি এই মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ছোটবেলায় যখন আপনি সাইকেল চালানো শিখছিলেন যখন আপনি সাইকেল থেকে পড়ে গেলেন। তখন আপনার বাবা হাসছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আপনার সাইকেল ধরে আপনাকে সাহস দিচ্ছিলেন শুনে খুবই ভালো লাগলো৷ আমাদের বাবা সবসময় আমাদেরকে সাহস দিয়ে থাকেন। তাদের সাহসের কারণে আমরা প্রতিনিয়ত সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি। অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনার মন্তব্যটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।।