খুশির বিয়েতে আমার কাটানো কিছু মুহূর্ত // পর্ব-০১।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ সোমবার। ২৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, গত শনিবার (২৪-০২-২০২৪ইং) আমার ছেলের বড় মামীর মেজো বোনের শুভ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। আমার বড় ভাবির বোন হিসেবে সে খুবই ভালো মনের মানুষ এবং আমার সাথে বেশ ভালো রকমের মজা করতো। তাই সম্পর্কে আমিও মজা করে তাকে বেয়াইন বলে ডাকতাম। সব সময় সে খুবই হাসি-খুশি থাকতো। আর হাসিখুশি সে থাকবে নাই বা কেন? তার তো প্রকৃত নামই খুশি। হ্যাঁ বন্ধুগণ, আমার সেই বেয়াইন এর নাম ছিল খুশি। খুশির শুভ বিবাহ উপলক্ষে আমাকে স্পেশালভাবে দাওয়াত করেছিল। গত বৃহস্পতিবার ছিল তার গায়ে হলুদের দিন এবং গত শুক্রবার ছিল তার মুখে ক্ষীর দেওয়ার দিন। স্পেশাল ভাবে দাওয়াত পাওয়া সত্ত্বেও গায়ে হলুদের দিন এবং মুখে ক্ষীর দেওয়ার দিন আমি অনুপস্থিত ছিলাম। কারণ বাড়িতে আমার মা শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। তাই মায়ের অসুস্থ দেখে আমার মন একেবারেই ভালো ছিল না। কিন্তু বিয়ের দিন আমি উপস্থিত ছিলাম, কারণ সেদিন অনুপস্থিত থাকলে আমার শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে এবং খুশিদের বাড়ির পক্ষের লোকজন আমার সম্বন্ধে হয়তো নেগেটিভ কিছু ভাবতো। তাই সকলের সম্মান রক্ষার্থে মনে অনেক খানি অশান্তি নিয়ে হলেও খুশির বিয়েতে কিছুটা সময় কাটিয়েছিলাম।
বিয়ের গেট সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছিল। বিয়ের গেটে সুন্দর একটা ফিতা টাঙিয়ে তার সামনে একটি টেবিল ভর্তি শরবত রেখেছিলাম এবং বিভিন্ন প্রকারের মিষ্টি দেখেছিলাম। অপেক্ষা করেছিলাম কখন যে আমাদের সেই কাঙ্খিত বর অর্থাৎ আমার বেয়াই আসবে। টেবিলে রাখা শরবতের মধ্যে খুশির ছোট বোন এবং খুশির কাজিনরা কয়েকটা গ্লাস শরবতের মধ্যে শুকনো মরিচের গুড়া মিশিয়ে রেখেছিল। একই সাথে দুইটা গ্লাসের শরবত ছিল একেবারেই বেস্বাদ। তারা চেয়েছিল আমার নতুন বেয়াইকে ঝালের শরবত এবং স্বাদহীন শরবত পান করিয়ে আনন্দ উপভোগ করবে। কিন্তু তাদের এই আনন্দ করার প্লানটা ভেস্তে দেয়ার জন্য আমি সর্বক্ষণ প্রস্তুত ছিলাম।
কিছুক্ষণ পরে আমাদের নতুন বর অর্থাৎ আমার বেয়াই যখন চলে আসলো তখন প্রথমে মাইক্রো গাড়ির ড্রাইভার এবং হেল্পার তাকে গাড়ি থেকে নামতে দিল না। তাদের দাবি ছিল প্রথমে তাদের বকশিশ পূরণ করতে হবে। তারপর আমরা তাদের দাবি মেনে নিয়ে তাদের মিষ্টি খাওয়ার টাকা দিয়ে দিলাম। তারপর আমার বেয়াইকে বিয়ের গেটের সামনে সাজিয়ে রাখা শরবত এবং মিষ্টির সামনে সুন্দরভাবে বসিয়ে দিলাম। প্রথমে একজন বয়জ্যষ্ঠ্য মহিলা আমার বেয়াইকে মিষ্টি খাওয়ালো। তারপর আমার বেয়াইয়ের শ্যালিকারা তাকে বারবার ঝালের শরবত পান করানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু যখনই তারা ঝালের শরবত খাওয়াতে চাইলো আমি তখনই আমার বেয়াইকে ইশারায় নিষেধ করে দিলাম। বেয়াই তখন বিষয়টি বুঝতে পেরে ঝালের শরবতের গ্লাসটি রেখে দিল। সত্যি বলতে ওই সময় অত্যন্ত আনন্দ হয়েছিলাম আমাদের। সকলে বুঝতে পেরেছিল যে আমি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম তাদের এই আনন্দ করতে অর্থাৎ আমার বেয়াইকে ঝালের শরবত পান করাতে।
যখন আমার বেয়াইয়ের শ্যালীদের প্লান ভেস্তে গেল তখন তারা আমাকে আঁকড়িয়ে ধরলো এবং অনেকগুলো টাকা চেয়ে বসলো। শেষ পর্যন্ত আমাকে কিছু টাকা খরচ করতে হয়েছিলো। তবে ওই মুহূর্তে আমি যে পরিমাণ আনন্দ পেয়েছিলাম সেটা ভাষায় বোঝানো যাবে না। কিছুক্ষণের জন্য মন থেকে সকল প্রকারে অশান্তি এবং দুশ্চিন্তা দূর হয়ে ছিল আমার। কিন্তু বিয়ে এতো সুন্দর আনন্দের মাঝেও হঠাৎ করে মায়ের কথা বারবার মনে হচ্ছিল। আর তখনই বাড়িতে আব্বার কাছে ফোন করি জেনে নিয়েছিলাম মা কেমন আছে। সত্যি বলতে বাড়িতে যদি মা-বাবা অথবা নিজ সন্তান অসুস্থ থাকে তাহলে মনের মধ্যে একেবারেই শান্তি থাকে না। তারপর মিষ্টি, শরবত ও পানি খাওয়ানোর পরে আমার বেয়াই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে গেটের ফিতা কেটে শ্বশুরবাড়িতে পদার্পণ করলো। আর আমার বেয়াই যখন ফিতা কেটেছিল তখন আমি সহ আমার আশপাশের সকলেই করতালির মধ্য দিয়ে এবং ফুল ছিটিয়ে আমার বেয়াইকে বরণ করে নিয়েছিল।
আমার বেয়াইয়ের বসার জন্য সুন্দর একটি জায়গার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। সেখানে আমার বেয়াইয়ের সাথে আমি প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট বসে ছিলাম এবং তার সাথে আলাপ করে পরিচিত হয়েছিলাম। বেয়াই এর সাথে কথা বলে আমার মনে হলো তিনি অত্যন্ত ভদ্র এবং নরম মনের মানুষ। আসলে উনি ব্যবসায়িক মানুষ তো, আর ব্যবসায়িক মানুষদের মুখের ভাষা সবসময় মধুর হয়। বেয়াইয়ের মুখের কথা শুনে বেয়াইকে সরাসরি বলে দিয়েছিলাম, আপনার মুখের কথায় যেমন মধুর নিশ্চয়ই আপনার মনেও অনেক মধু রয়েছে। তাই মনের সবটুকু মধু দিয়ে আমার বেয়াইনকে মধুর সাগরে ডুবিয়ে রাখবেন। যাতে আমার বেয়াইন কখনোই কষ্ট না পায়। যাহোক আমার কথাগুলো শুনে উনি বেশ হেসে উঠলেন। তারপর বেয়াইকে নিয়ে আমি বেশ কয়েকটা সেলফি তুললাম। আমার বেয়াইও তার মোবাইল ফোন দিয়ে আমাকে নিয়ে অনেকগুলো সেলফি উঠালো। তারপর আমরা সকলেই নাস্তা করার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম। খুশির বিয়ে বাড়িতে কাটানো বাকি মুহূর্তটুকু আগামী দিন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভাল থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
বাহ ভাই,বেয়াইনের বিয়েতে গেলেন। নিশ্চয়ই অনেক মজা করেছেন। আপনার সাথে যেহেতু ভালো সম্পর্ক আছে সেক্ষেত্রে বিয়েতে না গেলে তো খারাপ দেখা যায়। আর আপনার নতুন বেয়াইয়ের সাথেও তো আপনার ভাব হয়েছে খুব। বিয়েতে গেলে এরকম নতুন কারো সাথে পরিচিত হতে পারলে ভালোই লাগে। বাকি পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
বেয়ানের বিয়েতে বেশ ভালোই মজা করেছেন দেখছি।আসলে ভাইয়া বিয়েতে শরবত খাওয়ানো জুতা সামলানো এগুলো অনেক মজার। বিশেষ করে ছোট শালিরা এগুলো করে থাকে সেই মুহূর্তটি অনেক ভালো লাগে। যাইহোক আপনার বিয়ান অনেক ভালো একটা স্বামী পেয়েছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর কাটানো মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বিয়ে মানে আনন্দ। খুশির বিয়েতে আপনি বেশ দারুন একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন এবং বরের ছবি তুলে ধরেছেন এবং বিশেষ করে বিয়ে বাড়িতে ফিতা কাটার মুহূর্তগুলি বেশ স্মরণীয় হয়ে থাকে। ভীষণ ভালো লাগে অনেকে মজা করা যায়।
ভাইয়া,পুরো পোস্ট খুঁজলাম,কিন্তু আপনার বেয়াইন খুশিকেই দেখলাম না। ভাবছি হয়তো তাকে দেখে একটু খুশি হয়ে যাবো, হাহাহা।মজা নিলাম ভাইয়া,যাইহোক মা অসুস্থ থাকা স্বত্তেও আপনি বিয়েতে গিয়েছেন এদিক থেকে কিছুটা মানসিক চাপ তো ছিলই। তবুও প্রিয় মানুষদের সাথে কিছুটা সময় হয়তো খুব ভালো কেটেছে।
দারুন একটি মুহূর্ত আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইজান। বেশ ভালো লাগলো খুশির বিয়ের এই সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্তটা বেশ আমাদের মাঝে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন দেখে। আশা করি সকলের সাথে বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ওই দিন। তবে খুশির বিয়ে বলে কথা জাতি খুশিতে দেখতে পেল না।
আপনার বড় ভাবির বোন খুশির বিয়েতে গেলেন। বিয়াইন বলে কথা তাহলে তো খুব আনন্দ করেছেন বিয়েতে। আপনার সেই বিয়াইন খুশির খুব সুন্দর বিয়ের অনুষ্ঠানে সময় কাটালেন। খাওয়া-দাওয়া করলেন ভালো লাগার একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। অনেক ভালো লেগেছে দেখে বিয়ের মুহূর্ত গুলো।
আপনার বড় ভাবির বোন খুশির বিয়েতে আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো ৷ বেশ ভালোই মজা করেছেন নিশ্চয়ই ৷ আসলে বিয়ে মানেই আনন্দ ৷ তবে পরিবারের কেউ অসুস্থ থাকলে আসলেই কোনো কিছু ভালো লাগে না ৷ আপনার মা এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য শুভকামনা রইল ৷ যাই হোক , ফিতা কাটার পর কি হলো জানার অপেক্ষায় রইলাম ৷ আশা করি পরের পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন ৷ ধন্যবাদ
খুশির বিয়েতে রাজ ও রাজের আম্মু উপস্থিত ছিল। রাজা ও রাজের আম্মু অনেক মজা করেছে। আপনি রাজ ও রাজের আম্মুর আনন্দের মুহূর্তটাও উল্লেখ করতে ভুলে গেছেন। যাইহোক খুশির বিয়েতে আমরা সবাই অনেক মজা করেছি। এত আনন্দদায়ক ও সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
রাজ আনন্দ করেছে না ছাই করেছে, প্রথমে প্রচুর দুষ্টামি করেছে তারপরে কান্না করতে করতে বিকেল পার করেছে।
আপনি তো দেখছি বেয়াইনের বিয়েতে বেশ ভালো সময় অতিবাহিত করেছিলেন। উনার নামই যেহেতু প্রকৃতভাবে খুশি, তাই তিনিও সব সময় হাসিখুশি ভাবে থাকতেন বুঝতেই পারতেছি। মেয়েদের পক্ষ থেকে বিয়ের দিনের মজাটাই হচ্ছে গেটে বরকে ধরা। আর এই বিষয়টা আমার কাছে অনেক বেশি সুন্দর লাগে। খুশির বিয়েতে আপনার কাটানো মুহূর্তের প্রথম পর্ব টা বেশ ভালোই উপভোগ করলাম। আশা করছি পরবর্তী পর্বটা আপনি তাড়াতাড়ি সবার মাঝে ভাগ করে নিবেন।