রবিবারের ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টি ভেজা দিনে আমার উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ বুধবার। ২৯ ই মে, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, গত ২৭শে মে রবিবার পুরো দিন ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে আমাদের এলাকায় ঝড়ো বাতাস বয়ে গেছে। পাশাপাশি মাঝারি আকারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। আমার জীবনে এই প্রথম আমার দেখা পুরো দিন ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টি ভেজা দিন। রবিবার পুরো দিনই ঝড় বাতাস বয়েছে। কখনো ঝড়ো বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে আবার কখনো ঝড়ো বাতাসের গতি কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু কয়েক মিনিটের জন্য হলেও ঝড়ো বাতাস বন্ধ হয়নি। তবে ঝড়ো বাতাসের মতো সমানতালে কিন্তু বৃষ্টি হয়নি। মাঝেমধ্যে বৃষ্টিপাতের মাত্রাটা বৃদ্ধি পেয়েছে আবার মাঝেমধ্যে বৃষ্টিপাত থেমে গেছে। সবমিলিয়ে প্রচন্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের পর রবিবার দিনটি অত্যন্ত ঠান্ডা ছিল।
প্রচণ্ড গরমের পরে ঠান্ডা একটি দিন আমাদের মাঝে উপস্থিত হলেও ওই দিনে আমাদের মনে প্রকৃত শান্তি ছিল না। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের প্রচণ্ড গতিবেগ দেখে মনের মধ্যে এমনিতেই ভয় চলে এসেছিল। এমনিতে আমাদের ঘরবাড়ি আশপাশে বড় ও মোটা অনেকগুলো গাছ রয়েছে। প্রথমত ভয়েছিলাম যদি গাছগুলো উপড়ে ঘরের উপরে পড়ে তাহলে ঘর ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। যদিও মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ দোয়ায় এমনটি হয়নি। তারপর দ্বিতীয় ভয়ের কারণ ছিল আমাদের ফসলের জমি নিয়ে। আমাদের মাঠে প্রায় ৩৫০ টি কলাগাছ লাগানো ছিল, সবগুলো কলা গাছ আমাদের পুকুরপাড়ে সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো ছিল। আর কলা গাছগুলো নিয়ে সব থেকে বেশি দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কারণ বেশিরভাগ কলাগাছে নতুন কাঁধি এসেছে। একপর্যায়ে সকাল সাড়ে নয়টার সময় প্রচন্ড ঝড়ের মুহূর্তেই মাতাল মাথায় দিয়ে মাঠে চলে গিয়েছিলাম।
মাঠে যাওয়ার সময় মনে হচ্ছিল যেন ঘূর্ণিঝড়ে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। ঘূর্ণিঝড়ের গতি এতটাই বেশি ছিল যে, সামনের দিকে পা ফেলে যাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তারপরেও অত্যন্ত কষ্ট করে কলার জমিতে পৌঁছে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি কয়েকটা কলা গাছ মাজা থেকে ভেঙে গেছে। আর বাদ বাকি গাছগুলো গোড়া থেকে উপড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ওই সময় আমার হাতে বড় একটি কাস্তে ছিল। ধারালো কাস্তে দিয়ে শুরু করেছিলাম আমার সবগুলো কলা গাছের পাতা কেটে দিতে। কলা গাছের পাতা কাটতে কাটতে আমার পাশের একটি কলা গাছ একেবারেই গোড়া থেকে উপড়ে গেল। তারপর উপড়ে যাওয়া কলা গাছের পাতাও কয়েকটা কেটে দিয়েছিলাম। যাতে পরবর্তীতে বাঁশ দিয়ে খাড়া করে দেওয়া যায়।
ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি হওয়ার সময় কলা গাছের পাতা কেটে দেওয়াটা বেশ কঠিন ছিল। তারপরেও প্রায় সবকয়টি গাছের পাতা কেটে কলা গাছ গুলো কিছুটা পাতলা করে দিয়েছিলাম। ঝড়ের সময় কলাগাছের পাতা কাটার মুহুর্তে আমার সবথেকে বেশি ভয় লাগছিল বজ্রপাত এর বিষয়টি মনে করে। কিন্তু আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি, ঝড়ের দিন আমাদের এলাকায় বজ্রপাতের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং বিদ্যুৎ চমকায়নি। পাশাপাশি আমি মাঠ থেকে আরো একটি বিষয় খেয়াল করেছিলাম, সেটা হলো আমাদের এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে সোজাসুজি প্রবাহিত হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় ঘূর্ণিঝড় হলে বাতাসের ঘূর্ণিপাক তৈরি হয়। কিন্তু রবিবারের ঘূর্ণিঝড়ে এমনটি আমাদের এলাকায় ঘটে নি। যার কারণে খুব একটা ক্ষয়ক্ষতি আমাদের এলাকায় হয়নি।
ঘূর্ণিঝড়ের দিন মাঠে শুধুমাত্র একবারই গিয়েছিলাম। মাঠের কাজ শেষ করে তারপরে পুরো সময়টুকু আম গাছ তলায় গিয়ে মাঝেমধ্যেই আম কুড়িয়েছি। তবে আমার পরিবারের অনেকেই ঝড়ের দিন সকাল থেকেই প্রচন্ড ঘুমিয়েছে। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি ঝড়ের মুহূর্তটি উপভোগ করার এবং স্মরণীয় করে রাখার। যাহোক, ঝড়ের দিন বিকেল বেলায় গোসল করে ফ্রেশ হয়ে একবারই ঘরে উঠেছিলাম। তারপর আর ঘর থেকে নামিনি। আবার বিকেলের সময় ঘূর্ণিঝড় এবং বৃষ্টিপাতের মাত্রা তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছিল। ঝড়ের দিন আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছিল মনের মধ্যে একটু সাহস নিয়ে ঝড়ের মুহূর্তে মাঠে গিয়ে কাজ করার মুহূর্তটি এবং আম কুড়ানোর মুহূর্তটি। আর এই দুটি কাজই ছিল আমার ঝড়ের দিনের সব থেকে উল্লেখযোগ্য কাজ। যাহোক মানবজাতির অকল্যাণ হয় এরকম ঝড়-বৃষ্টি আমরা কোন সময় প্রত্যাশা করি না। মহান সৃষ্টিকর্তা যেন আমাদের সকলকে হেফাজত করেন এমনটাই আমি প্রত্যাশা করি।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
প্রচন্ড ঝড়ের মুহূর্তে নিজের কাজের শেষ থাকে না। তবে কলা গাছগুলো রক্ষা করার জন্য কথা কেটে পাতলা করে দেওয়াটা বুদ্ধিমানের পরিচয় হয়েছে। যদিও আমি বাড়ি ছিলাম না থাকলে হয়তো অনেক সহায়তা করতে পারতাম। তবে এমন মুহূর্তে সাবধানতার সাথে চলা উচিত। কারণ এই মুহূর্তে অনেক বেকাইদা সৃষ্টি হয়। জানি অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে ইনশাল্লাহ মহান সৃষ্টিকর্তা সে সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে তুলবে।
ঝড়ের কারণে কলাগাছ গুলা ভেঙে যাওয়ার ভয়ে সোজা মাঠে গিয়ে কলা গাছ গুলোর পাতা কেটে দিয়ে ভালোই করেছেন। এতে করে গাছগুলো পাতলা হয়েছিল এবং ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা কম ছিল। যাইহোক সেদিন ঝড়ের কিছু মুহূর্ত উপভোগ করেছিলেন মাঝে মাঝে আম কুড়াতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। যাইহোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।