নাটক রিভিউ // "মিস্টার নার্স"।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার। ০১ লা মার্চ, ২০২৪ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের নিকট "মিস্টার নার্স" নাটকটির রিভিউ উপস্থাপন করছি। আশা করি নাটকটির রিভিউ আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।
youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
নাটকটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী নিম্নে উপস্থাপন করা হলো:-
নাটকটির নাম | মিস্টার নার্স। |
---|---|
পরিচালক | হাসিব হোসাইন রাখি। |
অভিনয়ে | নিলয় আলমগীর, জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি, জান্নাত, হানিফ পালোয়ান, শাহীন মৃধা, ফরহাদ লিমন, নূর এ কাঞ্চন, মুহিত তমাল ও অন্যান্য জন। |
ভাষা | বাংলা। |
দৈর্ঘ্য | ৩৫.২৮ মিনিট। |
দেশ | বাংলাদেশ। |
নাটকটির সারসংক্ষেপ।
youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
নাটকটির শুরুতেই দেখা যায় যে, অ্যাম্বুলেন্স চড়ে একটি রোগী হাসপাতালে আসে। রোগীটির সমস্যা ছিল সে বাড়িতে থাকলেই সেন্সলেস হয়ে যায়। তাই তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলো। কিন্তু হাসপাতালে আসার সাথে সাথে তার জ্ঞান ফিরে আসলো এবং সে বার বার বলতে লাগলো, সে কোথায়, সে কোথায়? তারপর ডাক্তার ভাবলো হয়তো তার মাথায় কোন আঘাত লেগেছে, তাই ডাক্তার রোগীটিকে ইনজেকশন দেয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু রোগীটি ডাক্তারের হাতে কামড় বসিয়ে দিল। ঠিক এমন মুহূর্তে ডাক্তার বললো, এর ইঞ্জেকশন একমাত্র মিস্টার নার্স দিতে পারবে। আর মিস্টার নার্স এর কথা শুনে রোগীটি অত্যন্ত আনন্দিত হলো।
youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তারপর মিস্টার নার্সের আগমন ঘটলো। মিস্টার নার্স এর প্রকৃত নাম ছিল রাহাত। মিস্টার নার্সকে প্রথম দেখে আঁখি তার প্রেমে পড়তে শুরু করলো। এদিকে হাসপাতালের স্পেশাল দায়িত্বে থাকা অনিক উক্ত হাসপাতালের ফারজানা নামক নার্সের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল। যখন অনগক ফারজানার সাথে রসের কথা বলছিল ঠিক সেই সময় মিস্টার নার্সের আগমন দেখে অনিক খুবই বিরক্ত বোধ করলো। তারপরে মিস্টার নার্স ওখান থেকে চলে গেল।
youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে উক্ত হাসপাতালের জান্নাত নামের নার্স রাহাতের প্রেমে ইতিমধ্যে পড়ে গেছে। সে রাহাতের সাথে রাতে ডিউটি করার জন্য প্রস্তুত। এদিকে আখি যখন জানতে পারলো রাহাতের সাথে জান্নাত নাইট ডিউটি করবে তখন সে কৌশল করে অনিকের নিকট থেকে জান্নাতের নামটি কেটে নিজের নামটি প্রতিস্থাপন করলো নাইট ডিউটির জন্য। তারপর অনিক যখন জান্নাতকে তার ছুটির কথা বলতে আসলো তখন দেখলো যে, রাহাতের সাথে জান্নাত কথা বলছে। আর এই দৃশ্য দেখে আখি বেশ ক্ষেপে গেল। তারপর জান্নাত তার ছুটি নিতে অস্বীকৃতি জানালে জান্নাত ও আখির মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি শুরু হয়ে গেল। এই দৃশ্য দেখে হাসপাতালের স্পেশাল কর্তৃপক্ষ অনিক জান্নাত ও আখিকে দায়িত্বে রেখে রাহাতকে ছুটি দিয়ে দিল এবং রাহাত সেখান থেকে চলে গেল।
youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তারপর হাসপাতালে থাকা মেয়ে রোগীকে কোনোভাবেই ডাক্তার ও আখি নার্স ইঞ্জেকশন দিতে পারলো না। তখন দায়িত্ব এসে পড়লো রাহাতের উপর এবং সে সফলতার সাথে তাকে ইনজেকশন দিল। কিন্তু মেয়ে রোগীকে সেবা করার দৃশ্যটি দেখে আখি নার্স ও জান্নাত নার্স বেশ অসন্তুষ্ট হয়েছিল। এরপর রাহাতকে ভালোবাসার বিষয় নিয়ে প্রথমে জান্নাত বাড়াবাড়ি করতে লাগলো, তারপরে আখিও বাড়াবাড়ি করতে লাগলো। একপর্যায়ে তাদের বাড়াবাড়ির মাঝখানে পড়ে রাহাতের হাত কেটে গেল। রাহাতের হাত কেটে যাওয়ার কারণে সে আর বাইক চালাতে পারলো না। তখন রাহাতের বাইক চালানো শুরু করলো আখি। আর বাইক চালাতে চালাতে সে রাহাতের প্রেমে হাবুডুবু খেতে খেতে কল্পনার জগতে বৃষ্টিতে ভিজতে শুরু করলো। তারপর যখন হঠাৎ বাইক থেমে গেল তখন আখি বলে উঠলো বৃষ্টি কি থেমে গেল? উত্তরে রাহাত বললো, বৃষ্টি এলো কোথা থেকে।
youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রাহাতকে পাওয়ার জন্য ফারজানা ও আঁখি সব সময় নিজেকে সাজিয়ে রাখার কাজে ব্যস্ত রাখতো। এমনকি তারা তাদের কাজের প্রতি সব সময় আনমনা থাকতো। একদিন রাহাতের দিকে তাকিয়ে আঁখি তো সোজাসুজি ডাক্তারের শরীরে ইনজেকশন দিতে গিয়েছিল রোগীকে বাদ দিয়ে। এরপর হঠাৎ করেই তথ্য এলো যে, হাসপাতালের বড় স্যার হাসপাতালে আসছেন। নির্ধারিত দিনে হাসপাতালের বড় স্যারকে স্বাগতম জানানোর জন্য সকলেই প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমন মুহূর্তেও হাসপাতালের স্পেশাল দায়িত্বপ্রাপ্ত অনিক উক্ত হাসপাতালের ফারজানা নার্সকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল।
youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তারপর যখন হাসপাতালে বড় স্যার আসলো তখন সকলের চোখ কপালে উঠে গেল। সবাই দেখলো রাহাত হলো হাসপাতালে বড় স্যার। তারপর রাহাত সকলের উদ্দেশ্যে বললঝ যে, হাসপাতালের নিয়ম শৃঙ্খলার যে ব্যাঘাত হয়েছে সে বিষয়টি নিজের চোখে দেখার জন্য তিনি এতদিন মিস্টার নার্স সেজে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করার জন্য সকলের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দিলেন। তারপর রাহাতের কথা শুনে সকলে অনুতপ্ত হলো। এদিকে আখি তো আগেই চাকরি থেকে রিজাইন দিয়ে বাড়ির পথ ধরেছিল। তখন রাহাতের সাথে আখির দেখা হল এবং আঁখি রাহাতকে বলল আপনি কিন্তু আমাকে বকা দিতে পারবেন না কারণ আমি ইতিমধ্যে চাকরি থেকে ছেড়ে দিয়েছি। তারপর আঁখির স্বীকার করলো যে, তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তারপর রাহাত আখিকে বলেছিল আপনার দরকার। রাহাতের কথা শুনে আখি বলেছিল আপনার? উত্তরে রাহাত বলেছিল, না হাসপাতালে। তারপরে নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
নাটকটি সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত মতামত।
youtube থেকে স্ক্রিনশট দিয়ে নেওয়া হয়েছে।
"মিস্টার নার্স" নাটকটি একটি হাস্যরস বিশিষ্ট নাটক। নাটকটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটি অংশ চমৎকার হাসির ঘটনায় পরিপূর্ণ। একই সাথে নাটকের অভিনয় অত্যন্ত নিখুঁত হয়েছে। আসলে এই নাটকের অভিনয় গুলো অত্যন্ত আনন্দদায়ক ছিল। মনের বিষন্নতা ও দুশ্চিন্তা দূর করে ক্ষণিকের আনন্দ পাওয়ার জন্য এ নাটকটি বেশ উপযোগী একটি নাটক। একই সাথে নাটকটি থেকে আমরা চমৎকার একটি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। সেটা হলো-আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য গুলোর যথার্থভাবে পালন করতে হবে। আমাদের নির্ধারিত দায়িত্ব পালন বাদ দিয়ে অন্যমনস্ক হাওয়া নিঃসন্দেহে এক ধরনের অপরাধ। আর এই বিষয়টি নাটকের শেষের দিকে পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। তাই আমি মনে করি, মনকে আনন্দে রাখতে হলে এবং বাস্তব জীবনের সুন্দর একটি শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য এই নাটকটি একবার হলেও সকলের দেখা উচিত।
এই নাটকটি বেশ অনেক আগেই আমি দেখেছিলাম। এবং কমিউনিটি তে এই নাটকটির রিভিউ ও শেয়ার করেছিলাম। আজ বহুদিন পর আপনার রিভিউ পোস্ট পড়ে আবারো যেন নাটকটি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। বেশ মজাই পেয়েছিলাম নাটকটি দেখে।আপনি বেশ দারুণ ভাবেই রিভিউ শেয়ার করেছেন।
খুবই সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। এদের অভিনেতা নাটক গুলো দেখতে অনেক সুন্দর হয়। যদিও নাটকটা আমি এখনো দেখিনি কিন্তু আপনার রিভিউ করে দেখার আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়ে গেল।
নিলয় আলমগীর এবং জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি দুজন মিলে ধারাবাহিকভাবে অনেকগুলো নাটক করেছেন। প্রতিটা নাটকই আমার কাছে অনেক ভালো লাগে । যেখানে হাস্যরসাত্মক কোনটা রোমান্টিক সবমিলিয়ে তাদের জুটি অনেক সুন্দর মানায়। এই নাটকটি এখনো দেখা হয়নি আপনার রিভিউ দেখে দেখার ইচ্ছে হলো। খুব সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন একসময় দেখার চেষ্টা করব।
মিস্টার নার্স নাটকটা কিন্তু সত্যি অনেক বেশি সুন্দর ছিল। আর এই নাটকের রিভিউ পোস্ট পড়তে তো আমার কাছে আরো বেশি ভালো লেগেছে। নিলয় এবং হিমির জুটিটা আমার কাছে সবসময়ই ভালো লাগে। তারা দুজন সব সময় সুন্দর সুন্দর অভিনয় করে। তাদের দুজনের অভিনয় হয় একেবারে দুর্দান্ত। আমি যখন সময় পাবো তখন অবশ্যই চেষ্টা করব মিস্টার নার্স এই নাটকটা দেখে নেওয়ার জন্য। আশা করছি নাটকটা দেখার পর অনেক বেশি ভালো লাগবে। ধন্যবাদ সুন্দর করে পুরো কাহিনীটা সবার মাঝে তুলে ধরার জন্য।
সুন্দর সুন্দর নাটকগুলোর রিভিউ পোস্ট পড়তে আমি অনেক বেশি ভালোবাসি। নাটক দেখতে যেমন ভালোলাগে তেমনি নাটকের রিভিউ পোস্ট গুলো পড়তে ও অসম্ভব ভালো লাগে। আর সুন্দরভাবে নাটকের রিভিউ লিখলে সেই রিভিউ যদি মনোযোগ দিয়ে পড়া হয়, তাহলে নাটক আর দেখাই লাগেনা। কারণ নাটকের পুরো কাহিনী তো রিভিউর মাধ্যমে ভালোভাবেই জেনে নেওয়া যায়। এই নাটকটার রিভিউ তেমনি আমার কাছে ভালো লেগেছে। দায়িত্ব কর্তব্যের প্রতি আমাদেরকে প্রতিনিয়তই সচেতন থাকতে হবে এবং সচেতন থাকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।