অনেকদিন পর জমজমাট একটি পিকনিকের আয়োজন। তাং:১০/০৮/২০২২ইং।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি।



প্রিয় বন্ধুগণ, আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকমন্ডলী ও কর্মচারী মিলে আমরা কয়েক মাস পর পর নিয়মিতভাবে পিকনিক করতাম। অর্থাৎ আমাদের স্কুল বাউন্ডারির মধ্যেই একটু খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করতাম। কিন্তু করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে আমাদের এই পিকনিকের ব্যবস্থা অনেকদিন বন্ধ ছিল। করোনা ভাইরাস এর প্রভাব কাটিয়ে আজকে আমাদের শিক্ষকমন্ডলী ও কর্মচারীদের নিয়ে সুন্দর একটি পিকনিক এর আয়োজন করেছিলাম। দীর্ঘ বিরতির পর সবাই একসাথে, একই স্থানে বসে মনের মত গল্প গুজব, মাঝে মধ্যে রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুল সংগীত গান শোনা, আর সব শেষে একসাথে বসে মজদার কিছু খাবার খেতে পেরে সত্যিই আমরা খুবই আনন্দিত ছিলাম।

IMG_20220725_114152_706.jpg
Jugirgofa High School



আমাদের পিকনিকের রান্নার কাজগুলো আমরা স্কুলের বাউন্ডারির মধ্যেই করেছিলাম। আমাদের পিকনিকের সকল কাজ আমরা নিজ নিজ দায়িত্বে করেছি। আমাদের স্টাফ মোট ১৯ জন। আমাদের স্টাফের কিছু জন ছিল রান্নার কাজে ব্যস্ত। আবার কিছু জন ছিল রান্নার কাজে সার্বিক সহযোগিতায় ব্যস্ত। আর আমাদের স্কুলের ম্যাডাম ও অন্যান্য জন পিকনিকের খাবার পরিবেশন এর জন্য প্লেট, গ্লাস, জগ পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত ছিল। আমাদের পিকনিকের সার্বিক কাজ করার ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি আনন্দ হয়ে থাকে। আমাদের প্রধান শিক্ষক পর্যন্তও পিকনিকের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেছিলেন।

IMG_20220810_133903_576.jpg

IMG_20220810_133726_900.jpg



আমাদের সকল রান্নার কাজ শেষ করে আমরা সকলেই ভালোভাবে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। খুবই ভালো ভালো খাবার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমাদের পিকনিকের অনেকগুলো আইটেম ছিল। বিশেষ করে ভাত, ছোলার ডাউল দিয়ে ডিমের ভুনা, সালাদ, বাতাবি লেবু, খাসির মাংস, মুসুরের ডাল, দই, মিষ্টি এবং ক্লেমন কোমল পানীয়। আর স্পেশাল ভাবে ছিল আমাদের যে সমস্ত শিক্ষকেরা পান খেতে পছন্দ করেন তাদের পছন্দমতো জর্দা, পান, সুপারি। দুপুর বেলায় আমাদের পিকনিকের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হলো। একটি গোলাকার টেবিলের চারিদিকে চেয়ার সাজিয়ে দিলাম। বেশ কয়েকজন আগেভাগেই বসে পড়েছেন। আর আমি ফাঁকে ফাঁকে ফটোগ্রাফি করতে ব্যস্ত। কারণ এই দারুণ মুহূর্তটুকু যে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে হবে। তাই ফটোগ্রাফি করতে আমি অনেক ব্যস্ত ছিলাম।

IMG_20220810_134001_329.jpg

IMG_20220810_133931_277.jpg



কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী বাদে আমরা সবাই পিকনিকের খাবার খাওয়ার জন্য টেবিলের চারপাশে বসে গেলাম। এদিকে আমাদের সকলের জন্য খাসির মাংসগুলো বাটিতে আলাদা আলাদা করে রাখা হচ্ছিল। যাতে সকলেই সমানভাবে খেতে পারে। শসার সালাদ এবং বাতাবি লেবু গুলো দেখেই জিভে জল চলে এসেছিল।

IMG_20220810_135822_119.jpg

IMG_20220810_135754_430.jpg



সকলের সামনে যখন প্লেট ভর্তি ভাত এবং প্রয়োজনীয় তরকারি দেওয়া শেষ হয়ে গেল তখন আমরা সবাই একসাথে খেতে শুরু করলাম। আমি প্রথমেই ভাতের সাথে ছোলার ডাউল দিয়ে ডিমের ভুনা খেতে শুরু করলাম। অন্যান্যজন তাদের মতো করে খেতে শুরু করল।

IMG_20220810_135806_774.jpg

IMG_20220810_135824_675.jpg

IMG_20220810_140119_376.jpg



খাবার খাওয়ার সময় শুরু হল এক একজনের এক এক রকম মন্তব্য। কারো কাছে খাসির মাংস রান্না খুবই সুস্বাদু হয়েছে আবার কারো কাছে খাসির মাংস রান্না তেমন একটা মজাদার হয়নি। আবার কেউ বলতে লাগলো আজকের মসুরের ডাল রান্না সবচাইতে বেশি সুস্বাদু হয়েছে। আমি সবার কথা শুনে বললাম, আমার কাছে সবগুলোই অনেক সুস্বাদ এবং মজদা হয়েছে।

IMG_20220810_135812_438.jpg

IMG_20220810_140127_625.jpg



পিকনিকের খাবার বলে কথা যে যেমন খেতে পারে। আর খাওয়ার মাঝে বিভিন্ন ধরনের মজার মজার গল্প পিকনিকের আনন্দ আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। খাবার খাওয়ার শেষ পর্যায়ে শুরু হলো দই এবং মিষ্টি পরিবেশন। যার যেমন ভালো লাগলো সে সেইভাবে দই এবং মিষ্টি খেতে লাগলো। আমি অবশ্য দই এবং মিষ্টি একসাথে খেতে বেশি পছন্দ করি। তাই আমি আমার পছন্দমতো খেতে লাগলাম।

IMG_20220810_141310_697.jpg

IMG_20220810_141306_053.jpg



খাওয়া-দাওয়া শেষ হয়ে গেলে সকলের হাতে একটি করে ক্লেমন এর ছোট বোতল তুলে দিলাম এবং সকলের জন্য একটি করে পান বরাদ্দ ছিল। কিন্তু আমি পান খাই না তবে ক্লেমন মাঝেমধ্যেই পান করি। তাই আমি একটি ক্লেমনের বোতল তুলে নিলাম।

IMG_20220810_141822_816.jpg



দীর্ঘদিন পর এত সুন্দর একটি পিকনিক উপভোগ করতে পেরে আমরা সবাই অত্যন্ত আনন্দিত ছিলাম। পিকনিকের আনন্দঘন মুহূর্তটুকু আমি দারুণভাবে উপভোগ করেছি। আর আমাদের পিকনিকের আনন্দঘন মুহূর্তটুকু আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে মনে হচ্ছে আমাদের পিকনিক সার্থক হয়েছে।

IMG_20220810_092310_547.jpg
Jugirgofa High School



আমাদের বিদ্যালয়ের নাম :- জুগীরগোফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা :- গাংনী, জেলা :- মেহেরপুর, বাংলাদেশ।
Device : Infinix hot 11S,
Camera : 50mp.

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।

Sort:  
 2 years ago 

পিকনিকের আয়োজন তো আসলেই জমজমাট ছিল। পুরো এলাহি কারপার আর প্রচুর খাওয়া দাওয়া।খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

জি আপু পিকনিকে প্রচুর খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 2 years ago 

অনেকদিন পর জমজমাট একটি পিকনিকের আয়োজন করেছেন। সব কাজের ভিতরেই কিছু কিছু সময় বিনোদন নেওয়াটা মানসিকতার জন্য ভালো। এবং আপনারা সব টিস্যাররা মিলে এক সঙ্গে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আমার পোস্টটি পড়ে অনেক সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

পিকনিক মানেই জমজমাট খাওয়া দাওয়া আনন্দ উল্লাস হইহুল্লোড়। সেটা যেখানেই হোক না কেন স্কুল বাউন্ডারির ভিতরে হলেও পিকনিকের আমেজ কখনো কমে যায় না। পিকনিকের ব্যাপারটা সামনে আসলেই ছোটবেলার দিনগুলো মনে পড়ে যায়। তখন কেন জানি পিকনিক মানেই অনেক বেশি আনন্দ ছিল। আপনার আনন্দঘন মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া পিকনিক মানেই আনন্দ উল্লাস। দারুন উৎসাহ মূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

সবাই মিলে পিকনিক খাওয়ার মজাই আলাদা ভাই ৷আর পিকনিক মানে তো ভরপুর খাওয়ার দাওয়া ৷যাই বলেন না কেন সবাই মিলে খেলে এক টুকরো খেয়েও অনেক ভালো লাগে ৷
ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি আয়োজন আমাদের তুলে ধরার জন্য

 2 years ago 

জি ভাইয়া সবাই মিলে পিকনিক খাওয়ার মজাই ছিল আলাদা। গঠনমূলক মতামত প্রকাশের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 69076.52
ETH 2742.00
USDT 1.00
SBD 2.72