"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৩ || আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম।
স্কুল জীবনে লেখাপড়ার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে আমি অনেকগুলো তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। স্কুল জীবনে আমি দুইটি ক্ষেত্রে থেকে তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। প্রথমটি হলো, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এক ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম এবং দ্বিতীয়টি হল, মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে অনেকগুলো তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম। স্কুল জীবনে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে আমি যতগুলো অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম তার মধ্যে একটি সর্বশ্রেষ্ঠ তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। আমার স্কুল জীবনের সেই সর্বশ্রেষ্ঠ তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি আজ আমি আপনাদের নিকট শেয়ার করছি।
দশম শ্রেণীতে অধ্যায়ন অবস্থায় জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। আমি ছাত্র হিসেবে মোটামুটি ভালোই ছিলাম। কিন্তু বয়স এবং তীব্র আবেগের কারণে নিজের লেখাপড়া করার প্রতি বেশ অমনোযোগী হয়ে পড়েছিলাম। লেখাপড়ার প্রতি অমনোযোগের তীব্র প্রভাব পড়েছিল দশম শ্রেণীর প্রি-টেস্ট পরীক্ষার সময়। ওই সময় প্রি-টেস্ট পরীক্ষাটি যেমন বাজে হয়েছিল ঠিক তেমনি আমার জীবনে আরো বাজে হয়ে উঠেছিল ঐ পরীক্ষার রেজাল্টটি। বিশেষ করে গণিতের রেজাল্ট খুবই খারাপ হয়েছিল। অন্যান্য সাবজেক্টে মোটামুটি হবে পাশ করলে গণিতে পেয়েছিলাম মাত্র ১৩ মার্ক। ওই সময় আমাদের স্কুলের বিএসসি শিক্ষক আমার আব্বাকে স্কুলে ডেকে নিয়ে আমার গণিতের খাতাটি দেখিয়েছিল। তারপর আমাকে ডেকে নিয়ে আমার আব্বার সামনে বিভিন্ন ধরনের উপদেশমূলক কথা বলেছিল। আমার শিক্ষকের উপদেশমূলক কথাগুলো এবং বাড়িতে এসে আমার পিতা-মাতার উপদেষ্টা কথাগুলো শুনে আমি লেখাপড়ার প্রতি নতুন করে উৎসাহ পায়। তারপর ওই সময় একটা নিয়ম চালু হয়েছিল, যে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করলে সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। প্রি-টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্টের ২৭ দিন পর টেস্ট পরীক্ষা শুরু হল। তারপর শিক্ষক ও পিতা-মাতার উপদেশ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে টেস্ট পরীক্ষা দেওয়া শুরু করলাম। তারপর টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্টের দেখা গেল আমি গণিতে ৬৬ মার্ক পেয়েছি।
শিক্ষক এবং পিতা-মাতার উপদেশ কাজে লাগিয়ে টেস্ট পরীক্ষায় গণিতে দারুন সাফল্য পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিল। গণিতে এরকম সাফল্য অর্জনের অভিজ্ঞতাটা আরো বেশি করে আমি কাজে লাগানো শুরু করলাম। অন্যান্য সাবজেক্টের তুলনায় আমি গণিতে বেশি করে সময় দিতে লাগলাম। আমার এসএসসি পরীক্ষার সময় ঈদুল আযহার ঈদ হয়েছিল। আমি ঈদের দিনেও গণিতের জ্যামিতি ও পরিমিতির অংক গুলো করেছিলাম। গণিতের ক্ষেত্রে আমি জ্যামিতি এবং পরিমিতিটা খুবই গুরুত্বের সাথে করেছিলাম। কারণ এই দু'টি ক্ষেত্রে আমার বিশেষ দুর্বলতা ছিল। তারপর আমার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসে। আমাদের সময় কোন সৃজনশীল প্রশ্ন হতো না, শুধুমাত্র মূল বই থেকে সমস্ত প্রশ্নগুলো করা হতো। আমি গণিত পরীক্ষার দিন গণিত প্রশ্নের সমস্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর যথাযথভাবে দিতে সক্ষম হয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমি গণিত বিষয়ে অনায়াসেই A+ পেয়েছিলাম।
আমার কাছে এখন মনে হয়, প্রি-টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্টের পর আমার শিক্ষকগণ আমাকে যদি যথাযথভাবে উপদেশ না দিতো তাহলে হয়তো আমার লেখাপড়াটা খারাপের দিকেই চলে যেত। আমার শিক্ষকদের উপদেশ থেকে আমি যে অভিজ্ঞতাটা অর্জন করেছিলাম সেই অভিজ্ঞতাটাই আমার বাস্তব জীবনের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে যথাযথভাবে প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছি। যাহোক, শেষ পর্যন্ত লেখাপড়া শেষ করে বর্তমানে আমি শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত আছি। আমার চাকরির বয়স আজ প্রায় সাড়ে চার বছর হতে চললো। স্কুল জীবনে আমি আমার অভিজ্ঞতার অনুভূতির কথাগুলো আমার ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট মাঝেমধ্যে উপস্থাপন করি এবং তাদেরকে যথাযথভাবে উপদেশ দেওয়ার চেষ্টা করি।
https://twitter.com/bidyut01/status/1575322937892052992?t=P16vUTFAbOywPFMtQWHOtg&s=19