গল্প :- প্রিয়জন // পর্ব - ০১

in আমার বাংলা ব্লগlast year



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ শুক্রবার। ১৯ ই মে, ২০২৩ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আজকে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির হয়েছি।

siblings-gc11837ab2_1280.jpg

Source



সাগর ছোটবেলা থেকেই আর্থিক অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে। কারণ, সাগরের বয়স যখন তিন বছর ছিল তখন তার বাবা ভালো কাজের উদ্দেশ্যে প্রবাসে যায়। প্রবাসে গিয়ে তার বাবা সেখানে বিয়ে করে। প্রবাসে গিয়ে সাগরের বাবা নতুন করে ঘর-সংসার শুরু করে। দেশের বউ-ছেলে, বাবা-মা এবং আত্মীয়দের সাথে সকল ধরনের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেয়। গ্রাম থেকে সাগরের বাবার কেউ কখনো সঠিক খোঁজ নিতে পারিনি। তাই সাগরের পিতা ও মাতা পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকা সত্ত্বেও সাগর পুরো এতিমের মতোই বড় হয়েছে।



এদিকে সাগরের মা রিমা খাতুন একজন খুবই ধৈর্যশীল মহিলা। সে আজও তার প্রাণের স্বামীর অপেক্ষায় দিন গুনছে। সাগরে মা বিশ্বাস করে হয়তো একদিন সাগরের বাবা তার কাছে ফিরে আসবে। সাগরের মা রিমা খাতুন এর বয়স যখন ২৩ বছর ছিল, ঠিক তখন সাগরের বাবা প্রবাসী গিয়েছিল। স্বামীর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন থাকা সত্ত্বেও রিমা খাতুন তার একমাত্র সন্তান সাগরকে অবলম্বন করে কঠোর পরিশ্রম ও সংগ্রাম এর মধ্য দিয়ে টিকে রয়েছে। সাগরের বাবার তেমন কোন জমি জায়গা ছিল না। প্রবাসে যাওয়ার সময় সাগরের বাবা বেশ কয়েকটা ঋণ করেছিল। স্বামীর রেখে যাওয়া ঋণ গুলো রিমা খাতুন অত্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে এবং কঠোর পরিশ্রম করে তার স্বামীর ঋণ গুলো পরিশোধ করেছে।



রিমা খাতুন অন্যের কাঁথা সেলাই করে, নিজের বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন করে, কিছু ছাগল পালন এবং কয়েকটা গরু পালন করার স্বামীর ঋণগুলো পরিশোধ করতো, সাগরের লেখাপড়ার খরচ বহন করতে এবং পরিবারের খরচ বহন করত। রিমা খাতুন কখনো কারোর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেনি। বরং নিজের মেধা এবং পরিশ্রম কাজে লাগিয়ে জীবনের অত্যন্ত প্রতিকূল অবস্থার সাথে নিয়মিত সংগ্রাম করেছে। রিমা খাতুন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছে, সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আজ রিমার জীবন থেকে তার প্রিয়জন স্বামী ছাড়া ১৮ টি বসন্ত চলে গেছে। রিমা'র বয়স ৪০ এর কোটা ছাড়িয়েছে। রিমা'র মাথার প্রায় অর্ধেক চুল পেকে সাদা হয়ে গেছে। তারপরও রিমা খাতুন তার পরিবারের জন্য এখনো অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। অনেকগুলো কাজ করার পরও রিমা খাতুন যখন সময় পায়, তার বাড়ির কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে দাঁড়িয়ে পথের দিকে তাকিয়ে থাকে, তার প্রিয়জন স্বামীর অপেক্ষায়।



সাগরের ছোটবেলার খেলার সাথী ছিল ঝর্ণা। শুধু খেলার সাথী নয়, ঝর্না এবং সাগর একই সাথে লেখাপড়া করতো। সেই ক্লাস ওয়ান থেকে তারা একই সাথে লেখাপড়া করে যাচ্ছে।একসাথে স্কুল যাওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে সাগর ঝর্নার জন্য অপেক্ষা করতো, আবার কখনো ঝর্ণা সাগরের জন্য অপেক্ষা করতো। ছোট থেকেই সাগর লেখাপড়ায় খুবই মনোযোগী এবং মেধাবী ছিল। ঝর্না ছোট থেকে লেখাপড়ায় বেশ মেধাবী থাকলেও কিছুটা অমনোযোগী ছিল। লেখাপড়া করার ক্ষেত্রে সাগরের গভীর মনোযোগ দেখে ঝর্নার বাবা-মা সাগরকে খুবই ভালোবাসতো। ছোটবেলায় মাঝেমধ্যেই ঝর্ণার বাবা-মা ঝর্নাকে নিয়ে এসে সাগরের পাশে বসিয়ে দু'জনকেই পড়াতো। যাতে ঝর্ণা সাগরকে অনুসরণ করে লেখাপড়ায় মনোযোগী হয়।



গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব আগামী সপ্তাহের আজকের দিনে অর্থাৎ শুক্রবারে শেয়ার করা হবে।


১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 
 last year 

আসলে আমাদের সমাজে এখন এ ধরনের ঘটনা অহরোহ ঘটে থাকে। অনেক পুরুষই দেশে বউ ছেলেমেয়ে থাকা সত্বেও প্রবাসে যেয়ে আবার বিয়ে করে। তারপর দেশের বউ সন্তান কে ভুলে যেয়ে বাহিরে সুখের স্বর্গ রচনা করে। সত্যি অনেক কষ্ট হচ্ছে সাগর আর তার দুখিনী মায়ের জন্যে। সাগর ভালো ছাত্র হওয়ায় ঝর্ণার বাবা মা তাকে অনেক পছন্দ করে যেনে বেশ ভালোই লাগছে। পরবর্তী পর্ব পরার অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64186.90
ETH 2759.80
USDT 1.00
SBD 2.66