পরীক্ষার কক্ষে ডিউটি পালন করার অনুভূতি।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ সোমবার। ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আজ সকাল থেকেই মেঘলা আবহাওয়া। সকাল পৌনে সাতটার সময় একবার সূর্যের মুখ দেখেছিলাম। তারপরেই মেঘ এসে যেন সূর্যকে ঢেকে দিল। যাহোক পরবর্তীতে আবহাওয়া বার্তা থেকে জানতে পারলাম আজকে পুরো দিন মেঘলা থাকবে এবং হালকা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই মেঘলা দিনেই পরীক্ষার রুমে আজকে আমার ডিউটি ছিল। আপনারা সকলেই ইতিমধ্যে জানেন যে, বর্তমান সময়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা চলমান রয়েছে। আগামী ১২ ই ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হবে। তারপরে মাঝখানের উনিশটি দিন শীতকালীন ছুটি।
যাহোক প্রচন্ড এই শীতের সকালে খুব দ্রুত নিজেকে প্রস্তুত করে স্কুলে গিয়েছিলাম। স্কুলে গিয়ে প্রথমেই ডিজিটাল হাজিরা মেশিনে ফিঙ্গার দিয়ে দিলাম। এরপর ডিউটি শীটে দেখলাম যে, আজকে আমার ডিউটি হবে এক নাম্বার পরীক্ষার কক্ষে। এবার আমাদের বিদ্যালয়ে মোট ছয়টি রুমে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে আমার এক নাম্বার কক্ষে মোট ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪৭ জন। এখানে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর অর্থাৎ চার ক্লাসের ছাত্রী ছিল। আর ছাত্রীদের বেঞ্চে বসার জায়গাটি সিট প্লান অনুসারে করা হয়েছে। যাহোক পরীক্ষা শুরুতে এক হাতে চার ক্লাসের ছাত্রীদের মাঝে প্রশ্ন বিতরণের সময় কিছুটা বিরক্তি হয়েছিল আমার। কারণ এক ক্লাসের ছাত্রীদের হাতে প্রশ্নপত্র দেওয়ার সময় অন্যান্য ক্লাসের ছাত্রীরা একটু গোলমাল করেছিল।
যাহোক, নিজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা দিয়ে সেই পরিবেশটা অনুকূলে নিয়েছিলাম এবং সকল ছাত্রীর হাতে দ্রুত প্রশ্নপত্র পৌঁছে দিয়েছিলাম। তারপর খুব দ্রুত সকল ছাত্রীর পরীক্ষার খাতায় আমার সাইন করে দিয়েছিলাম। এরপর সকল ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কিছু উপদেশ মূলক কথা বলেছিলাম সেটা ছিল মাত্র ৩০ সেকেন্ডের। মূলত বলেছিলাম, একে অন্যের লেখা যেন কেউ দেখা-দেখি না করে এবং প্রতারণামূলক বা নকল যেন কেউ না করে। আমার এই সামান্য উপদেশ হয়তো তাদের ভবিষ্যতের জন্য অনেক বেশি কাজে দিবে। যাহোক, এরপর খুব দ্রুত ছাত্রীদের হাজিরা খাতায় তাদের নাম তুলে দিয়েছিলাম। তারপর আমার কক্ষের ছাত্রীরা কেমন লিখছিল সেটার দিকে শতভাগ দৃষ্টি রেখেছিলাম।
আমি খেয়াল করে দেখলাম যে আমার কক্ষের সকল ছাত্রীরা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে তাদের পরীক্ষার খাতায় লেখায় ব্যস্ত ছিল। আপনারা একটু ছবিগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখলে আপনারাও সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন যে, তারা তাদের পরীক্ষার খাতায় লেখার প্রতি কি পরিমান মনোযোগী ছিল। কোন ছাত্রীরা কোন প্রকারের কথা বলা কিংবা অন্যের খাতায় দেখা-দেখি কিংবা কোন প্রকারের বাজে কাজ করেনি। তারা সকলেই একনিষ্ঠ ভাবে লেখায় ব্যস্ত ছিল। আমার চাকরি জীবনে এই প্রথমবার একা একা ৪৭ জন পরীক্ষার্থীকে নিয়ন্ত্রণ করলাম আজ। পরীক্ষার সময় ছিল তিন ঘণ্টা অর্থাৎ সকাল ১০ টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত। আর পুরো সময়টাই আমি একাই আমার কক্ষটি নিয়ন্ত্রণ করেছিলাম। এবং দিনশেষে সফলভাবে পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ করেছিলাম। আজকের সব থেকে ভালো লেগেছে আমার ছাত্রীদের সুন্দর আচরণটি। আর এরকম সুন্দর আচরণ দেখলে এমনিতেই মন থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দোয়া চলে আসে। যাহোক আমার সকল ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আপনারাও দোয়া করবেন। যাতে তারা জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারে। 💝💝
অনেক সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন আপনি। পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের গার্ড দেওয়ার অনুভূতিটা আমার কাছে বেশ দারুন লাগে। এর মধ্য দিয়ে বেশ অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন হয় এবং সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অনেকটা কন্ট্রোলে রাখতে হয়। বেশি ভালো লাগলো সুন্দর একটা অনুভূতি ব্যক্ত করতে দেখে।
৪৭ জন পরীক্ষার্থীকে নিয়ন্ত্রণ করা সত্যিই অনেক কঠিন ছিল। একা একা এই দায়িত্বটা পালন করতে গিয়ে আপনার তো দেখছি একদম ভালোই সতর্ক থাকতে হয়েছে ভাইয়া। এখন সব স্কুলে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট দেখে।
টুইটার লিংক
আজকের কাজ সম্পন্ন।