আমার পুকুরের মাছ বিক্রয়ের অনুভূতি // পর্ব-০৩(শেষ পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ25 days ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ বুধবার। ০৫ ই জুন, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20240419_134829_755.jpg



আমার পুকুরে তেলাপিয়া মাছগুলো ধরে জেলেরাও বেশ আনন্দিত হয়েছিল। কারণ জেলেরা সবসময় চায় তাদের পছন্দের মাছগুলো ধরতে। আর বর্তমান সময়ে নাইলনটিকা তেলাপিয়া মাছগুলোর চাহিদা মানুষের মধ্যে সবথেকে বেশি। আর আমার পুকুরে নাইলনটিকা তেলাপিয়া মাছ গুলো বেশ সতেজ ও প্রাণবন্ত ছিল। কারণ আমি আমার পুকুরে নিয়মিত সরিষার খৈল ভিজিয়ে প্রয়োগ করি। আর সরিষার খৈল মাছকে খাওয়ালে মাছ এমনিতেই শারীরিকভাবে যেমন বৃদ্ধি হয় ঠিক তেমনি শক্তিশালী হয়। যার কারনে মাছগুলো সহজে মরে যায় না। যাহোক অন্যান্য মাছের তুলনায় তেলাপিয়া মাছের সংখ্যা যেহেতু বেশি ছিল, তাই মাছের ওজন দেওয়ার সময় প্রথমে তেলাপিয়া মাছগুলো বেছে বেছে একত্রিত করে একটি হাড়িতে নিয়ে ওজন দেওয়া হয়েছিল।


IMG_20240419_135303_979.jpg



ডিজিটাল স্কেলে যখন মাছের ওজন দিয়েছিলাম ঠিক তখন জেলেরা তাদের ওজন ঠিকঠাক ভাবে দেখে ও বুঝে নিয়েছিল। কারণ মাছের প্রকৃত সঠিক ওজনটা পুকুর মালিক হিসেবে আমাকে যেমন দেখে নিতে হয়, ঠিক তেমনি জেলেদেরকেও নিজ দায়িত্বে দেখে নিতে হয়। তারপর মাছের যে ওজনটা হয়েছিল সেটা আমি সঠিক ভাবে বলেছিলাম এবং জেলেদের নাম লিখে আমার আব্বা সেটা খাতায় লিখে নিয়েছিল। আমরা সকলেই জানি চল্লিশ কেজিতে এক মন হয়। কিন্তু মাছের ক্ষেত্রে ৪৪ কেজিতে পুকুর মালিক এক মণ মাছ পায়। অর্থাৎ এক মণ মাছে চার কেজি মাছ জেলেদের বেশি দেওয়া লাগে। অর্থাৎ এক মণে চার কেজি মাছ ঢলন হিসেবে দেওয়া হয়। আর ৪ কেজি মাছ এক মণে বেশি দেওয়ার কারণ হলো, জেলেরা যখন সরাসরি পুকুর থেকে মাছ ধরে তখন মাছের পেটের মধ্যে খাবার থাকে এবং পানিও থাকে।


IMG_20240419_135318_268.jpg



মাছ ধরার পরে মাছেরা আস্তে আস্তে খাবি খায় আর পেটের ভিতর থেকে খাবার ও পানি বের করতে থাকে। তখন মাছের ওজন অনেকটাই কমে যায়। আর এজন্যই পুকুর থেকে যখন জেলেরা সরাসরি মাছ ধরে তখন মাছ ওজন করার সময় এক মণে চার কেজি মাছ বেশি দেওয়া হয়। এ নিয়ম আমাদের এলাকায় বেশ অনেক আগে থেকেই প্রচলিত আছে। কিন্তু দেশের অন্যান্য এলাকায় এমন নিয়ম আছে কি-না সেটা আমার জানা নেই। যাহোক মাছ বিক্রয়ের সময় খেয়াল করেছিলাম যে, আমার পুকুরের জাপানি মাছ এবং মৃগেল মাছগুলো বেশ কাঙ্খিত মানের বড় হয়েছিল। বিশেষ করে মৃগেল মাছগুলোর ওজন আধা কেজির উপরে ছিল। এবং জাপানি মাছগুলো এক কেজি থেকে পৌনে দুই কেজি ওজনের মধ্যে ছিল।


IMG_20240419_135301_893.jpg



মাছের ওজন দেওয়ার সময় বেশ ব্যস্ত থাকার কারণে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য মাছের ফটোগ্রাফি করতে ব্যর্থ হয়েছিলাম। তবে মাছ ওজন দেওয়ার পাশাপাশি আমি অত্যন্ত সচেতন ছিলাম এবং সকল জেলেদের নজরে রেখেছিলাম। কারণ আমাদের এলাকার সকল জেলেরা সৎ নয়। কয়েকজন জেলে আছে পুকুর মালিকের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাছ চুরি করার চেষ্টা করে। মাছ বিক্রয়ের সময় এরকম চুরির ঘটনা আমাদের সাথেই একবার ঘটেছিল এবং সেই চোরকে হাতেনাতে ধরেছিলাম। তাই মাছের ওজন দেওয়ার সময় পুকুর মালিক সবাইকে বেশ সচেতন থাকতে হয়।


IMG_20240419_133743_468.jpg



মাছ বিক্রয়ের দিন পুকুরের সবথেকে সেরা মাছটি পরিবারের জন্য রেখে দেওয়া হয়। যদিও সেদিন খাওয়ার জন্য তেলাপিয়া, জাপানি ও রুই মাছ রেখেছিলাম। পাশাপাশি রেখেছিলাম এই কাতলা মাছটি। কাতলা মাছটির ওজন হয়েছিল সাড়ে তিন কেজির একটু কম। কিন্তু এই মাছটির ওজন আরো বেশি হওয়ার কথা ছিল। প্রতিকূল আবহাওয়া এবং মাছের অতিরিক্ত ঘনত্বের কারণে কাতলা মাছটি কাঙ্খিত মোটা হয়নি। তারপরও কাতলা মাছটি খাওয়ার জন্য রেখে দিয়েছিলাম। যাহোক এই ছিল আমার পুকুরের মাছ বিক্রয়ের অনুভূতির কথা গুলো। আমি আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনাদের বেশ ভালো লেগেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু অজানা বিষয় জানতে পেরেছেন।



দ্বিতীয় পর্বটি পড়ার লিঙ্ক





আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 25 days ago 

বাহ বেশ দারুন বিষয় আসলে এখন ডিজিটাল স্কেলে এভাবে মাছের ওজন দিলে যেমন বিক্রয় করে মজা পাওয়া যায় তেমনি এরা দামটাও বেশ ভালো পাওয়া যায় । যাই হোক আপনার পুকুরের তেলাপিয়া মাছগুলো দেখতে বেশ ভালই লাগছিল দোয়া করি এভাবে তেলাপিয়া মাছ চাষ করে লাভবান হন।

 25 days ago 

আপনাদের ওইদিকে প্রচুর মাছ চাষ হয়। এর আগে ঘুরতে গিয়ে দেখেছিলাম। আপনিও মাঝে মাঝে শেয়ার করে থাকেন আপনার চাষ করা মাছের বিক্রি করার দৃশ্য। আজকে মাছ বিক্রির মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করে নিলেন। এক সময় আমাদের জন্য পাঠিয়ে দিবেন আমরা আপনার মাছ সুন্দর রেসিপি করে খেয়ে দেখব। কেমন মাছ চাষ করেছেন ভালো লাগলো ভাই।

 25 days ago 

মাছ বিক্রয়ের সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন দেখে অনেক অনেক ভালো লাগলো ভাই। যেন পুরনো সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল। মাছ ধরা মাছ ধরতে দেখার মজা অন্যরকম। আরো পাশাপাশি পুকুর থেকে মাছ বিক্রয়ের মুহূর্তটা যেন সেরকম থাকে।

 25 days ago 

আপনাদের পুকুরের মাছগুলো তো দেখছি অনেক বড় বড় হয়ে গিয়েছে। বিষয়টা আমারও অনেক খারাপ লাগে যারা পুকুরে মাছ চাষ করে তারা ৪৪ কেজি মাছ দেবার পরে মাত্র ৪০ কেজির দাম পাই। সবসময়ই যেন মাছ চাষিরা অবহেলার মধ্যে পড়ে যায়।

 24 days ago 

মাছ পুকুর থেকে জেলেদের মাধ্যমে ধরা এবং বিক্রি দেখেছি ছোটবেলা থেকে এক সঙ্গে অনেক মাছ যখন পুকুর থেকে তোলে জেলেরা ভীষণ ভালো লাগে।সঠিক মাপ সবার জন্য প্রযোজ্য। আপনার পুকুরের তেলাপিয়া মাছ গুলে ভীষণ ভালো লাগলো দেখে।ধন্যবাদ আপনাকে মাছ বিক্রির অনুভূতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 61620.03
ETH 3394.18
USDT 1.00
SBD 2.50