শরৎ ঋতুর সৌন্দর্যের কিছু কথা এবং সৌন্দর্যময় রংধনুর ফটোগ্রাফি।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। |
---|
প্রিয় বন্ধুগণ, বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে শরৎ ঋতু বিরাজমান রয়েছে। শরৎ ঋতু মানেই নীল আকাশ, নীল আকাশের বুকে সাদা তুলোর মতো ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ। শরৎ ঋতু মানেই রৌদ্রকর উজ্জ্বল আবহাওয়া, নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো খন্ড খন্ড সাদা মেঘের অপরূপ দৃশ্য। আবার নীল আকাশ মানেই রৌদ্রকর অবস্থায় হঠাৎ আকাশের কোণে কালো মেঘ জমে ওঠা, তারপর মোটা মোটা ফোটায় ছন্দে ছন্দে বৃষ্টি পড়া, তাল পাকা ভ্যাপসা গরম থেকে হঠাৎ যেন শীতল আবহাওয়া, মাঝে মাঝে উত্তরের হালকা বাতাস বয়ে যাওয়া, আর এ রকমের বিচিত্র প্রকৃতি আমরা দেখে থাকি শরৎ ঋতুতে।
শরৎ ঋতুতে নীল আকাশের নিচে ফুটে উঠা লক্ষ লক্ষ সাদা কাশফুল গুলো দেখে মনে হয় নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘগুলোকে মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করছে। কখনো দক্ষিণ দিক থেকে বয়ে যাওয়া শীতল বাতাস আবার কখনো উত্তর দিক থেকে বয়ে যাওয়া শীতল বাতাসে কাশফুলগুলো যখন হেলেদুলে বেড়ায় তখন শরৎ ঋতু তার সৌন্দর্যের ঝুড়ি সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। শরতের কাশফুল গুলো হাতছানি দিয়ে সকলকে ডাকতে শুরু করে তার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য, এমন অবস্থায় নীল আকাশের সাথে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘগুলোও কি আমাদের ডাকতে শুরু করে? সঠিক জানিনা তবে জানি শরতের নীল আকাশের সাদা মেঘ এবং কাশফুল পাল্লা দিয়েই সৌন্দর্য বিলিয়ে দেয় আমাদের মনোরঞ্জন করতে।
শরতের এমন সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতায় থেমে থাকেনি জেসমিন ফুল। জেসমিন ফুল তার সাদা পাপড়িগুলো মিলিয়ে মুগ্ধ করতে চাই আমাদের। ঠিক এমন অবস্থায় শিউলি ফুল তার সৌন্দর্য প্রদর্শন করতে থাকে এই শরৎ ঋতুকেই কেন্দ্র করে। নয়ন ভোলানো সৌন্দর্য এবং মন মাতানো সুগন্ধ ছড়িয়ে শিউলি ফুল আমাদের প্রকৃতিকে মাতাল করে তোলে, আমাদেরকে মাতাল করে তোলে। আসলে শরৎ ঋতুর সৌন্দর্য যতই গভীরভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করি মনে হয় ততই শরৎ ঋতুর সৌন্দর্যের খনিতে ডুবে যাচ্ছি।
শরৎ ঋতুর সন্ধ্যা মানেই ঝিঝিঁ পোকার ঝিঝি গানের সুরের মূর্ছনায় কিছুটা সময়ের জন্য হলেও হারিয়ে যাওয়া। শরতের সন্ধ্যায় যখন ঝিঝি পোকার গান শুনতে পায় ঠিক তখনই সেই ছেলেবেলার হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো স্মৃতির পাতা থেকে মনের জালানায় উঁকি দিতে শুরু করে। সেই সময় পড়ার টেবিলে বসতেই ঝিঁঝিঁ পোকার গান কানের ভিতর ঢুকে যেত, কতইনা বিরক্ত অনুভব করতাম কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আমিও ঝিঝি পোকার গানের অনুষ্ঠানে যোগদান করতাম। এটা অবশ্য এক ধরনের ফাঁকিবাজি কাজ ছিল আমার।
আবার শরৎ ঋতু মানেই সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণের জন্য আমাদের মাঝে চলে আসে দুর্গা। প্রকৃতিকে সৌন্দর্যময় করে তোলার পাশাপাশি আমাদের বাঙালি সমাজের মানুষগুলোকে আরো বেশি বিশুদ্ধ করে তোলার জন্যই হয়তো হাজির হন দুর্গা, লক্ষ্মী সাথে আরো আসেন সরস্বতী। শান্তি, মৈত্রী, বন্ধন, স্নেহ,ভালোবাসা, মায়া-মমতা ইত্যাদি সবকিছুর অফুরন্ত ভান্ডার বিলিয়ে দিয়ে আমাদের মানব সমাজকে আরো সভ্য করে তোলার জন্যই হয়তো আর দুর্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতী আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়।
শরৎ ঋতু মানেই হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি। তারপর পুনরায় ঝলমলে রোদ, দুপুর না গড়াতে পূর্ব আকাশে হঠাৎ ভেসে ওঠা সেই দুর্লভ রংধনু। শরতের নীল আকাশের বুক চিরে কখন রংধনুর উদয় হবে, রংধনুর জন্য এমন প্রতীক্ষা করে না এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। তবে আমি শত ব্যস্ততার মধ্য দিয়েও প্রতিদিন একবার হলেও শরতের নীল আকাশের চারিদিকে চোখ ঘুরিয়ে দেখি আমার সেই প্রিয় রংধনু এসেছে কিনা। ঠিক তেমনি হঠাৎ বৃষ্টির পর পূর্ব আকাশে তাকাতেই দেখতে পেলাম রংধনু এসে আমাদের সবাইকে ডাকতেছে। অনেক অনেক দিন পর রংধনুর ডাকে সাড়া দিয়ে রংধনুর অসাধারণ সৌন্দর্য দেখতে লাগলাম এবং উপভোগ করতে লাগলাম। পূর্ব আকাশে একসাথে দুইটি রংধনু এসেছিল। আপনারা একটু মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করলে দেখতে পারবেন সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সেই রংধনুর উপরেই আরো একটি রংধনু। অবশ্য ওই স্পষ্ট হয়ে যাওয়া রংধনু টি হয়তো আমাদের উপর অভিমান করেই আস্তে আস্তে নিজেকে লুকিয়ে নিচ্ছিল। শরৎ ঋতুর রংধনুর সৌন্দর্য অবশ্য অন্য সকল সৌন্দর্যকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সাত রংয়ের রংধনুরকে হঠাৎ দেখে সত্যি আমি মুগ্ধ হয়ে গেছিলাম। তাই রংধনুর সৌন্দর্য দেখার সাথে সাথে কিছু ফটোগ্রাফিও করে রেখেছিলাম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা যারা এখনো শরতের রংধনু দেখতে পারেন নাই তারা একটু মনোযোগ দিয়ে শরতের রংধনুর ফটোগ্রাফিটি দেখেন এবং রংধনুর সৌন্দর্য উপভোগ করেন। আজকের মতো আমি এখানেই শেষ করছি, আল্লাহ হাফেজ।
Location | w3w.com |
---|---|
Device | Infinix HOT 11S |
Camera | 50mp |
Photographer | @bidyut01 |
টুইটার লিংক
সত্যি ভাইয়া শরৎ ঋতুর নিয়ে আসে আমাদের মাঝে মনোমুগ্ধকর রুপ ।শরৎ ঋতুর রুপে অপরিসীম। বৃষ্টির পর পূর্ব আকাশে তাকাতেই যখন দেখা যায় রংধনু এসে আমাদের সবাইকে ডাকছে। তখন কতই না ভালো লাগে।
ধন্যবাদ শরৎ ঋতুর সৌন্দর্যের কিছু কথা এবং সৌন্দর্যময় রংধনুর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনিও খুবই মনোমুগ্ধকর মন্তব্য করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে এদেশ যে কতো সুন্দর কতো বিচিত্র তা বলে শেষ করার মতো নেই ৷আর জন্যই হয়তো ৷বাংলা কবিগন নানান কিছু লিখেছেন ৷এমন দেশটি কোথাও খুজে পাবে না কো তুমি ৷সত্যি যেন তাই একেক ঋতে নতুন রুপ নিয়ে হাজির হয় ৷যদিও বর্তমানে আগের মতো রুপ বৈচিত্র খুব একটা দেখা যায় না ৷
যা হোক শরৎ ঋতু আমারও অনেক প্রিয় ৠতু যে সময় টাতে নীল আকাশে সাদা রঙের ভেলা কখনো রোদ অনেক আবার কখনো ধমধমিয়ে বৃষ্টি ৷নদীর ধারে ধারে কাশ ফুলের মেলা দক্ষিণা বাতাসে দোলা খাচ্ছে ৷আর এরই মাঝে মা দুর্গার আগমন ৷
একটি গান মনে পড়ছে শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে মনের মর্ম মিলায়ে দে৷
আর আজ অনেক দিন রংধনু দেখলাম ৷
ধন্যবাদ ভাইজান খুব চমৎকার একটি পোষ্ট শেয়ার করার জন্য
অতি চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনি না ভাই শরৎ এর নীল আকাশে এইরকম রংধনু দেখে আমি নিজেও কিন্তু আশ্চর্য হয়ে গেলাম। সত্যি কী সুন্দর। এইরকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্বে আর কোথাও নেই। এবং আপনার মতো আমিও চেষ্টা করি প্রতিদিন একবার হলেও শরৎ এর নীল আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আকাশটাকে দেখতে।।
খুবই উৎসাহ মূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার পোষ্টি পড়ে ভালই লাগলো আপনি তো আজকের পোষ্টে প্রাকৃতিক কোন কিছু বাকি রাখেন নাই। মেঘ,সূর্য,গাছ,লতা পাতা, ফুল তাল এমনকি দূর্গার নামও বাদ রাখেন নাই। প্রকৃতি নিয়ে তো ভালই লিখেছেন। যায় হোক রংধনুর ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাইয়া, প্রতি চমৎকার মন্তব্য করেছেন আপনি।