ছাত্র জীবনের শেষ পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতা এবং ছাত্র জীবনের শেষ অনুভূতি।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি।
প্রশ্ন-০১: মেহেরপুর জেলা এর আগে কোন জেলার অধীনে ছিল?
উত্তর:-আমি এক সেকেন্ডের মধ্যে উত্তরটি দিয়ে দিয়েছিলাম, মেহেরপুর কুষ্টিয়া জেলার অধীনে ছিল।
প্রশ্ন-০২: বাংলাদেশের আইনসভার নাম কি?
উত্তর:-এই প্রশ্নটি শেষ করার আগেই আমি উত্তর বলে দিয়েছিলাম, জাতীয় সংসদ।
প্রশ্ন-০৩: তিনজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর নাম বলেন।
উত্তর:-এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে আমি এক সেকেন্ডও দেরি করি নাই সাথে সাথে নাম বলে দিয়েছি সক্রেটিস প্লেটো ও এরিস্টটল।
প্রশ্ন-০৪: মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র বাংলাদেশকে কয়টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল?
উত্তর:-এই প্রশ্নটি শেষ করার আগেই আমি উত্তর দিয়ে দিয়েছিলাম, ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল সমগ্র বাংলাদেশকে।
তারপর একজন স্যার হাসতে হাসতে বললেন খুবই ভালো হয়েছে এবার আপনি আসুন। তারপর আমি মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে বাইরে আসলাম। ছাত্র জীবনের শেষ পরীক্ষায় সবগুলো প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দ অনুভব করছিলাম। মনে মনে বলতে লাগলাম 'শেষ ভালো যার সব ভালো তার'। এখানে সবচাইতে বেশি আনন্দের বিষয় হলো, আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের যে সমস্ত বিষয়ের উপর মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম সেখান থেকে আমাকে একটিও প্রশ্ন করা হয়নি। কিন্তু আমাকে যেগুলো প্রশ্ন করা হয়েছিল তার সবগুলোই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের আওতাভুক্ত। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের কঠিন কঠিন অধ্যায় যেমন আমলাতন্ত্র, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ম্যাকিয়াভেলির মতবাদ, দি পাবলিক গ্রন্থ, ইমানুয়েল কান্ট এর মতবাদ, কার্ল মার্কস এর মতবাদ ও অন্যান্য অধ্যায় গুলোর উপর প্রস্তুতি নিয়েছিলাম কিন্তু আমাকে প্রশ্ন করা হলো সবচাইতে সহজ বিষয়গুলোর উপর থেকে।
যাহোক,কিছুক্ষণ পর আমি এবং আমার বন্ধু দ্বিতীয় তলা থেকে নিচ তলায় নেমে আসলাম। এবং নিচ তলার অন্য একটি রুমে বসে দুজন গল্প করছিলাম। ঠিক ওই সময় আমরা তীব্র হাসাহাসির শব্দ শুনতে পেলাম রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের নিচ তলায়। আমি এবং আমার বন্ধু সুমন খুব দ্রুত সেখানে গেলাম জানতে, যে কি বিষয়ে এত হাসাহাসি হচ্ছে এখানে। পরে জানতে পারলাম খুবই হাসির একটি ঘটনা ঘটিয়েছে একজন পরীক্ষার্থী। আমাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের নিচতলায় মৌখিক পরীক্ষার কক্ষে একজন মহিলা শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাম কি? উত্তরে সেই মহিলা শিক্ষার্থী বলেছিল বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নাম বেগম শেখ হাসিনা। আসলে সত্যি কথা বলতে উত্তরটি খুবই হাস্যকর ছিল। দিনশেষে একটি হাসির ঘটনা শুনে একটু প্রাণ খুলে হাসতে পেরে বেশ ভালই লাগলো আমার।
কলেজ থেকে বের হয়ে আসার সময় আমার মনটা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এই কলেজে এমন কোন জায়গা নেই যে সেখানে আমার পদচিহ্ন ছিল না। বন্ধুদের সাথে কত আড্ডা দিয়েছি, ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার করেছি এই কলেজে পুকুর পাড়ে বসে, এসব স্মৃতিগুলো মনে বারবার ভেসে উঠতে লাগলো। এই কলেজের প্রতিটি জায়গার গাছপালা, পুকুর, মাঠের দূর্বা ঘাস, আলো-বাতাসের সাথে ছিল আমার নিবিড় বন্ধুত্ব। মনে পড়ছিল সেই ক্লাসরুম গুলোর কথা যেখানে বসে প্রতিদিন ক্লাস করতাম এবং ক্লাস শেষে কতই না আড্ডা দিতাম। হয়তো সেঈ দিনগুলো আর ফিরে আসবে না, ফিরে আসবে না সেই বন্ধু-বান্ধবী গুলো, আর হয়তো কোনদিন কলেজে সেই রকম ভাবে আসাও হবে না। কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় একবার পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম যে কলেজের ভবনগুলো, গাছপালা গুলো সবাই অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
তারপর কলেজ থেকে বের হয়ে একটি হোটেলে গেলাম এবং সেখানে আমরা দুই বন্ধু দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ করলাম। তারপর আমরা দুই বন্ধু নিজ নিজ বাড়ির দিকে রওনা হলো। আমার ছাত্র জীবনের শেষ পরীক্ষার অভিজ্ঞতাটুকু আমার সারা জীবন হৃদয় গাঁথা থাকবে। পাশাপাশি আমার ছাত্র জীবনের সকল মধুর স্মৃতিগুলো আমার মনে অমলিন হয়ে থাকবে। ছাত্র জীবনের সমস্ত মধুর স্মৃতিগুলো সম্বল করেই আমার আগামী দিনের পথচলাকে সাফল্যমন্ডিত করবেন ইনশাল্লাহ। সব সময় ভালো থাকুক আমার প্রিয় কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার পরিবেশ।
টুইটার লিংক
ভাইয়া সেই সকালে আপনার সাথে কথা হয়েছিল ৷তখন বলেছিলেন যে আপনি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন ৷আর এখন পোষ্টি দেখে সত্যি অনেক ভাল লাগলো ৷আশা করছি আপনার পরীক্ষা অনেক ভালো হয়েছে ৷আর আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই৷ কারন সারাদিন এতো ব্যবস্থা থাকার পরেও আপনি আমাদের মাঝে ছিলেন ৷আমি মনে করেছি আপনি আজ পোষ্ট করবেন না ৷
ধন্যবাদ ভাই সাথে থাকার জন্য শুভকামনা রইল অবিরাম
সাথেই থাকার জন্য ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার শিক্ষা জীবনের শেষ পরিক্ষার দেওয়ার মধ্যে আনন্দ ও কষ্ট দুটি লুকিয়ে আছে। শেষ পরিক্ষা মানে মধুর জীবন শেষ। এখন আর একটা জীবন শুরু হবে।এমন জীবন আমি ও পেরিয়ে এসেছি। আপনার পরিক্ষা ভালো হয়েছে যেনে অনেক ভালো লাগল।আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা রইল।
জ্বী আপু ছাত্র জীবন মানেই তো মধুর জীবন। ধন্যবাদ সুন্দর মতামত দেয়ার জন্য।
আপনার ছাত্র জীবনে শেষ পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাই। হয়তো আপনার মত আমাদেরও এরকম একদিন দিন আসবে। কিন্তু আপনার কাছ থেকে সেই দিনটির অভিজ্ঞতা আগে থেকেই নিতে পারলাম।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া
আমার পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে জানতে পেরে আমারও খুব ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পেরেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। আসলেই আপনাকে অনেক সহজ কিছু প্রশ্ন করেছে। আমারও সবগুলো উত্তর জানা ছিলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
জি ভাইয়া পড়ে গেলাম অনেক কঠিন কঠিন বিষয় কিন্তু প্রশ্ন করল খুবই সহজ বিষয় থেকে যাক শেষ পরীক্ষাটা খুবই ভালো হয়েছে।।
আপনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের স্টুডেন্ট বাহ দেখে খুবই ভালো লাগলো আমারও প্রিয় একটি ক্যাম্পাস। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ আপনার প্রিয় একটি ক্যাম্পাস জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কূষ্টিয়া সরকারি কলেজ এর লিনা ম্যাম এর অনেক গল্প শুনেছি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ,আপনার ছাত্র জীবনে শেষ পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাই ,আশা করি আপনার পরীক্ষা অনেক ভালো হয়েছে ,আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইলো
সাইফুল রাজু ভাই অনেকদিন পরে আপনার দর্শন কে সত্যি আমি খুবই আনন্দিত।
ভাইয়া প্রশ্ন তো অনেক সহজই করেছে। আপনার ভাগ্য অনেক ভাল। অবষেশে আপনার আপনার স্টুঢেন্ট লাইফ এর সমাপ্ত ঘটল। শুভ কামনা পরের লাইফের জন্য।
ভাইয়া, শেষ ভালো যার সব ভালো তার। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।