রেসিপি:-আখের গুড় দিয়ে নারিকেলের নাড়ু তৈরি।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার। ০৫ ই মে , ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
নারিকেলের নাড়ু আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খাবার। বিশেষ করে অতীতে আমাদের দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে খুবই প্রিয় একটি খাবার ছিল নারিকেলের নাড়ু। আমি ছোটবেলায় দেখেছি, প্রতিদিন সকালে আমার পরিবারের বড়রা নারিকেলের নাড়ু এবং মুড়ি দিয়ে সকালের নাস্তা করতো। আবার বাড়িতে হঠাৎ আত্মীয়রা আসলে প্রথমেই তাদেরকে নারিকেলের নাড়ুর সাথে মুড়ি খেতে দেওয়া হতো। শুধু তাই নয়, ছোটবেলা আমি দেখেছি যে, আমার ফুপুরা যখন শ্বশুর বাড়িতে যেত, তখন আমার দাদি অনেকগুলো নারিকেলের নাড়ু সাথে বেঁধে দিতো। তখনকার সময় এটা ছিল এক ধরনের কালচার। কিন্তু সময়ের বিবর্তনের ফলে অতীতের সেসব কালচার কালের গর্ভেই হারিয়ে গেছে। যাহোক, আজ আমি আপনাদের নিকট ঐতিহ্যবাহী নারিকেলের নাড়ু তৈরির রেসিপি শেয়ার করছি। আমি আশা করি, আমার আজকের রেসিপিটি আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, চলুন এক নজরে দেখে আসি আখের গুড় দিয়ে নারিকেলের নাড়ু রেসিপি তৈরির জন্য আমার ব্যবহারিত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো :-
উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
পাকা (ঝুনো) নারিকেল | ০২ টা |
আখের গুড় | ৭৫০ গ্রাম |
আতপ চালের গুড়া | পরিমাণ মতো |
লবণ | পরিমাণমতো |
আখের গুড় দিয়ে নারিকেলের নাড়ু রেসিপি'র প্রক্রিয়াগুলো নিম্নে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করা হলো:
⬇️ ধাপ-০১:⬇️
প্রথমেই পাকা নারিকেল গুলো সুন্দরভাবে কেটে নিয়েছিলাম।
⬇️ ধাপ-০২:⬇️
পাকা নারিকেল গুলো কুর্নি দিয়ে নারিকেলের ঝুরি বানিয়ে নিলাম।
⬇️ ধাপ-০৩:⬇️
পরিমাণ মতো আখের দানাদার গুড় সংগ্রহ করে নিলাম।
⬇️ ধাপ-০৪:⬇️
পরিমাণ মতো আখের গুড় গুলো কড়াই এর ভিতরে ঢেলে দিলাম।
⬇️ ধাপ-০৫:⬇️
তারপর চুলার আগুন হালকা পর্যায়ে রেখে আখের গুড় গুলো কষিয়ে নিলাম।
⬇️ ধাপ-০৬:⬇️
কষিয়ে নেওয়া আখের গুড় গুলোর ভিতরে নারিকেলের ঝুরিগুলো ঢেলে দিলাম। তারপর পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে দিলাম। তারপর একটি খুন্তি দিয়ে গুড়ের সাথে নারিকেলের ঝুরিগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে দিলাম।
⬇️ ধাপ-০৭:⬇️
আখের গুড়ের সাথে নারিকেলের ঝুরিগুলো মিশানোর পর চুলার আগুন মাঝামাঝি পর্যায়ে রেখে জ্বাল দেওয়া শুরু করলাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই তৈরি হয়ে গেল নারিকেলের সুস্বাদু ক্ষীর। তারপর নারিকেলের ক্ষীরের মধ্যে পরিমাণ মতো আতপ চালের গুড়া দিয়ে দিলাম। নারিকেলের ক্ষীরের সাথে আতপ চালের গুড়াগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে দিলাম।
⬇️ ধাপ-০৮:⬇️
আতপ চালের গুড়া মিশানোর পর পুনরায় আগুনের জ্বাল দেয়া শুরু করলাম। একটু পরেই তৈরি হয়ে গেল নারিকেলের পুর।
⬇️ ধাপ-০৯:⬇️
নারিকেলের পুর গুলোর উপরে সামান্য পরিমাণ দারচিনির গুড়া ছিটিয়ে দিলাম। নারিকেলের পুর গুলো হালকা গরম থাকা অবস্থায় নাড়ু বানানো শুরু করেছিলাম। নারিকেলের পুর পরিমাপ মতো নিয়ে দুই হাতের তালুর মাঝখানের সাহায্যে গোলাকার নাড়ু বানানো শুরু করেছিলাম।
⬇️ শেষ ধাপ⬇️
গোলাকার নারিকেলের নাড়ুগুলো বানানোর শেষে খোলা বাতাসের জায়গায় কিছুক্ষণ রেখে দিয়েছিলাম। আর এভাবেই আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার নারিকেলের নাড়ু তৈরি করেছিলাম।
অনেকদিন পরে নারিকেলের নাড়ু খেতে খুবই সুস্বাদ এবং মজাদার লেগেছিল। তাই আপনারা চেষ্টা করলে এ ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করতে পারেন। পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আমি আপনাদের নিকট কৃতজ্ঞ। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ঠিকই বলেছেন সময়ের সাথে সাথে যেন অতীতের সব কালচার গুলোই শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের নাড়ুগুলো খেতে আমার কাছেও অনেক ভালো লাগে। তবে তৈরি করা অনেক ঝামেলা ।আপনি আখের গুড় দিয়ে নাড়ুগুলো তৈরি করে রেখেছেন আমারতো দেখেই মনে হচ্ছে একটা একটা করে নিয়ে খেয়ে ফেলি। খুব ভালো লাগলো নাড়ুগুলো বানানো দেখে।
খুবই চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
সাধারণত পুজোর সময় প্রতিবছর মা নারকেল দিয়ে এ নাড়ুটা তৈরি করে থাকেন। আমার তো ভীষণ প্রিয় একটা খাবার এটা। তবে আমি গুড়ের থেকে চিনি দিয়ে তৈরি নাড়ু টাই বেশি পছন্দ করি। আপনার উপস্থাপনাটা অনেক ভালো লাগলো ভাই। খুব ইচ্ছে করছিল প্লেট থেকে তুলে নিয়ে দুটো খেতে 😊😊
Twitter link
ভাই আজকে আপনি দারুন একটি রেসেপি শেয়ার করলেন ৷ আসলে কি সময়ের সাথে সবকিছু পরিবর্তন যা প্রতিনিয়ত দেখছি ৷ সেই মনে পড়ে মুড়ির মোয়া,নারকেল নাড়ু এছাড়া মুড়কি ৷ তবে গ্রামে এখন আছে ৷ তবে শহরে এসব আর দেখে মেলে না ৷ তবে আজকে দারুন একটি ইউনিক রেসেপি শেয়ার করলেন ৷ দেখে তো জিভে জল এসে গিয়েছে ৷ আখের গুড় দিয়ে নারিকেলের নাড়ু তৈরি। দারুন হয়েছে ৷
অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
একা একা নারিকেলের নাড়ু খাওয়া একেবারে অন্যায়। পেটের সমস্যা হয়ে যেতে পারে ভাইয়া। নাড়ু তৈরি করে আমাদেরকে দাওয়াত দিলেই হত। আমরাও নিজ দায়িত্বে চলে যেতাম। যাইহোক সুন্দরভাবে নারিকেলের নাড়ু তৈরির পদ্ধতি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আপু আপনি কাছে থাকলে আপনাকেও কিছুটা খেতে দিতাম। তবে এরকম সুস্বাদু খাবার একা একাই খেতে ভালো লাগে।
ভাইয়া আপনার এই কথাটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে বিদেশী খাবারের প্রভাবে আমাদের দেশীয় খাবারগুলো বিলুপ্তির পথে আপনি ঠিকই বলেছেন । নাড়ুর সাথে ছোটবেলার অনেক স্মৃতি সবারই জড়িত আছে আমার মনে হয় । তবে এখন সে পরিমাণে নাড়ু দেখা যায় না । আপনার নারিকেলের নাড়ুর রেসিপিটি আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো ।তবে আখের গুড় দিয়ে কখনো নাড়ু খাওয়া হয়নি । আপনার রেসিপিটি দেখে আমার ভীষণ লোভ লাগছে । কারণ নাড়ু আমার ভীষণ পছন্দের । ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য ।
আপু, আমার পোস্টটি পড়ে খুবই গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সত্যি বলেছেন ভাইয়া বিদেশি খাবারের প্রভাব আমাদের খাবার গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। সত্যি এই নারকেলের নাড়ু এক সময় অনেক জনপ্রিয় ছিল সবারই ঘরে ঘরে তৈরি করা হত। কিন্তু এখন জনপ্রিয় আছে তবে ঘরে ঘরে তৈরি হয় না।নাড়ুগুলো দেখে অনেক ভালো লাগল। খেতে পারলে আরো ভালো লাগত হা হা হা। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের খাবারের মধ্যে অনেক গুলো খাবার আছে যেগুলোর মধ্যে নারকেল নাড়ু কিন্তু অন্যতম। আপনি বেশ মজার করে নারকেল নাড়ু তৈরি করেছেন দেখে তো খেতে ইচ্ছে করছে। নারকেল নাড়ু আমার অনেক প্রিয় একটি খাবার। অনেক ধন্যবাদ প্রিয় খাবারের রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।