ঈদ উপলক্ষে আমার নতুন পোশাক ক্রয়ের অভিজ্ঞতা।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার । ২১ ই এপ্রিল, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, ঈদ মানে আনন্দ, আর ঈদ মানে খুশি। আর ঈদের আনন্দ ও খুশি আরো বেশি বৃদ্ধি করে নতুন পোশাকে। তাইতো প্রচন্ড গরম ও তাপদহের মধ্যেই পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য এবং নিজের জন্য চেষ্টা করেছি নতুন কিছু পোশাক ক্রয় করতে। এবার রোজার মধ্যে প্রচন্ড গরম এবং তাপদহয়ের কারণে নতুন পোশাক ক্রয়ের বিষয়টা একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের চাপে খুবই কষ্ট করে ঈদের জন্য কিছু নতুন পোশাক ক্রয় করেছি। ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক ক্রয় করার অভিজ্ঞতার কথা গুলো আজ আমি আপনাদের নিকট উপস্থাপন করতেছি। আমি আশা করি আমার নতুন পোশাক ক্রয়ের অভিজ্ঞতার কথা গুলো আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, ঈদ উপলক্ষে আমি নতুন পোশাক কিনেছি মোট চার দিন ধরে। একদিনে যে পরিবারের সকলের জন্য এবং নিজের জন্য পোশাক ক্রয় করব সে রকম পরিবেশ এবার হয়ে ওঠেনি। বিশেষ করে প্রচন্ড গরমের কারণে এমনটা করতে বাধ্য হয়েছি। কারণ প্রচন্ড গরমের মধ্যে রোজা রাখা অবস্থায় ঈদের বাজার করাটা সত্যি অনেক কঠিন হয়ে পড়েছিল। যাহোক, ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক ক্রয় করার জন্য আমার এলাকার জনপ্রিয় বামুন্দি বাজারে গিয়েছিলাম। যদিও আমাদের এলাকায় আরো একটি জমজমাট বাজার আছে সেটা হল আমাদের গাংনী বাজার। কিন্তু বামুন্দি বাজার আমার বাড়ির কাছেই, বিধায় আমি বামুন্দি বাজার থেকেই আমার প্রয়োজনীয় নতুন পোশাক গুলো ক্রয় করতে গিয়েছিলাম।
বামুন্দি বাজারে নতুন পোশাক ক্রয়ের জন্য আমি চার দিন গিয়েছিলাম। আমি চার দিনই লক্ষ্য করেছিলাম যে, প্রত্যেকটি পোশাকের দোকানে উপচে পড়া মানুষের ভিড়। এরকম প্রচন্ড গরমের মধ্যে পোশাকের দোকানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখে আমি অবাক না হয়ে থাকতে পারেনি। তারপর আমি অনুমান করতে লাগলাম যে, এরকম প্রচণ্ড গরমের মধ্যে যারা ঈদের নতুন পোশাক ক্রয় করতে আসে, তারা কি রোজা রাখা অবস্থায় আসে? না স্বাভাবিক অবস্থায় আসে? তারপর আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম যে, রমজান মাসে আমাদের সমাজে তিনটি দলের উদ্ভব ঘটে। প্রথম দলের মানুষেরা নতুন পোশাক কেনার পর্বটা একেবারেই বাতিল করে দেয়। কারণ তারা যথা নিয়ম অনুসারে রোজা পালন করে এবং অন্যান্য ইবাদত নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। তাই প্রথম দলের মানুষেরা ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক ক্রয় বিষয়টা তেমন প্রাধান্য দেয় না। আর দ্বিতীয় দলের মানুষেরা রোজা রাখা অবস্থায় বাধ্য হয়ে নতুন পোশাক করার জন্য বাজারে আসে। পরিবারের সদস্যদের চাপের কারণে রোজা রাখা অবস্থায় অনেক মানুষ পোশাক কিনতে বাজারে আসে। বিশেষ করে বউয়ের চাপে নতুন পোশাক ক্রয় করা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়। আর আমি দ্বিতীয় দলেরই একজন সদস্যে পরিণত হয়েছি। আর আমি পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারলাম যে তৃতীয় দলের মানুষদের এই রমজান মাসে রোজা পালনের দিকে কোন খবর নেই । এমনকি অন্যান্য ইবাদত বন্দেগী করার কোন ইচ্ছা আগ্রহ তাদের নেই। এই তৃতীয় দলের মানুষদের ইবাদত একটাই ঈদ উপলক্ষে যে দামেই হোক না কেন নতুন পোশাক ক্রয় করতে হবে। আর এই তৃতীয় দলের মানুষেরাই পোশাকের দোকানে ট্রাফিক জ্যাম এর মতো অবস্থা সৃষ্টি করে।
যাহোক, গরম আবহাওয়া এবং মানুষের উপচে পড়া ভিড় উপেক্ষা করে ঈদের নতুন পোশাক ক্রয় করা শুরু করলাম। পোশাকের দোকানে ঢুকেই প্রথমে আমি আমার পছন্দের পোশাক গুলোর মূল্য জানতে চাইলাম। দোকানদার পোশাকের যে মূল্য আমাকে বলল, সেটা শুনে আমি সরাসরি বলে দিলাম যে, বাইরের তুলনায় পোশাকের দোকানে তো দেখছি আরো বেশি গরম। প্রতিটি পোশাকের স্বাভাবিক দামের তুলনায় প্রায় ডবল এরও বেশি করে দাম চাইছে দোকানদাররা। কিন্তু পোশাকের মান তেমন উন্নত না। কিন্তু নতুন পোশাকের দামটা নাগালের বাইরে। যাহোক প্রচন্ড গরম আবহাওয়া এবং নতুন পোশাকের উত্তপ্ত দামের মধ্যেই পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় পোশাকগুলো ক্রয় করতে শুরু করে দিলাম। প্রথমে আমি আমার বাবা এবং মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পোশাকগুলো ক্রয় করলাম। তার পরের দিন আমার একমাত্র ছেলের জন্য প্রয়োজনীয় পোশাকগুলো ক্রয় করে নিলাম।
তৃতীয় দিন আমার স্ত্রীর জন্য দুইটি থ্রি পিস ক্রয় করলাম। থ্রি পিস দুইটা মূল্য চেয়েছিল সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু মূল্য চাইলে তো আর সেই মূল্য দিয়ে ক্রয় করা যায় না। শেষ পর্যন্ত থ্রি পিস দুইটা আমি ৪৬০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করলাম। দুইটি থ্রি পিস ক্রয় করার পরে আমার স্ত্রী আমাকে বলল, আরো একটি থ্রি পিস কিনে দেওয়ার কথা। আমি আমার পকেটের চিন্তা করে আমার স্ত্রীকে বলে দিলাম আগামী ঈদের সময় তোমাকে আরো দুইটি কিনে দিবো। আপাতত এই দুইটি থ্রি পিস নিয়েই সন্তুষ্ট থাকো। তারপর এই প্রচন্ড গরমের মধ্যেই আমার স্ত্রীর জন্য এক জোড়া সুন্দর হিল ক্রয় করলাম। একই সাথে স্ত্রীর প্রয়োজনীয় সকল কসমেটিকের জিনিসপত্র গুলো ক্রয় করে দিলাম। আমার একমাত্র স্ত্রীর চাহিদা পূরণ করতে গিয়েই আমার পকেটের টাকাগুলো একেবারে তলানিতে ঠেকে গেল। তারপর আমি বলতে লাগলাম আমার একটি স্ত্রীর চাহিদা পূরণ করতে গিয়েই আমার পকেটে খালি হয়ে যাচ্ছে। অথচ যারা দুই-তিনটা করে বিয়ে করে, তারা কেমন করে তাদের বউয়ের চাহিদা পূরণ করে। যাহোক, এই কথাগুলো আমি কিন্তু মনে মনে বলেছিলাম। কারণ পাশে আমার স্ত্রী ছিল, শুনে ফেললেই তো সমস্যা।
চতুর্থ দিন গিয়েছিলাম আমার নিজের জন্য কিছু নতুন পোশাক ক্রয় করতে। অবশ্য চতুর্থ দিন আমার সাথে ছিল আমার ছোট ভাই সুমন ও চাচাতো ভাই মারুফ। যাহোক দুই ভাই মিলে স্বল্প বাজেটের মধ্যে স্বাভাবিক পোশাকগুলো ক্রয় করা শুরু করলাম। প্রথমে আমি কলার যুক্ত সুন্দর একটি গেঞ্জি ক্রয় করলাম। গেঞ্জিটির মূল্য ছিল মাত্র ছয় শত টাকা দামের। তারপর আমার জন্য এবং আমার ছোট ভাই সুমনের জন্য ৪ পিস জিন্সের প্যান্ট ক্রয় করলাম। চারটি প্যান্টের মূল্য হল ৩৮০০ টাকা। অল্প দামের মধ্যে একটু নিম্নমানের প্যান্ট ক্রয় করলাম। প্যান্ট ক্রয় করা শেষে দুই ভাইয়ের জন্য দুইটা পাঞ্জাবি ক্রয় করলাম। দুইটা পাঞ্জাবির মূল্য ছিল মাত্র ২১০০ টাকা। তারপর আমার প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস গুলো ক্রয় করে বাড়িতে চলে এলাম।
যাহোক এবার ঈদে অনেকগুলো টাকা দিয়ে নতুন পোশাক ক্রয় করেছি। এবার নতুন পোশাক পরিধান করে পবিত্র ঈদুল ফিতর অর্থাৎ ঈদ উদযাপন করার পালা।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://twitter.com/bidyut01/status/1649464139142828032?t=8Y1_Dt74J-rGJbPkqHV3gA&s=19
ঈদ উপলক্ষে আপনি নতুন জামা কাপড় ক্রয় করেছেন আর সেই জামা কাপড় ক্রয় করার মুহূর্তটা আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে ফটোগ্রাফি আর বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনি খুব সুন্দর জামা কাপড় কিনতে পারেন। আপনার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। জামাকাপড় গুলো দেখে যা মন ভরে গেল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার ঈদ উৎসব আনন্দময় হোক সেই দোয়া রইল।