মাছের খাবার ক্রয় অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগlast year



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।





আজ শনিবার। ০৫ ই আগস্ট, ২০২৩ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের নিকট নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।


IMG_20230615_094654_310.jpg



সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনার হয়তো অনেকেই জানেন আমি বেশ কয়েকটি পুকুরে মাছের চাষাবাদ করি। আসলে পুকুরে মাছের চাষাবাদের প্রথাটা আমাদের পূর্বপুরুষ থেকে চলে আসছে। এক সময় আমাদের পুরানো পুকুরে আমার দাদা অত্যন্ত সফলতার সাথে মাছের চাষাবাদ করতো। যদিও তখন সনাতন পদ্ধতিতে মাছের চাষাবাদ হতো। এরপর আমার বাবা মাছের চাষাবাদ করতো। যদিও আমার বাবা একজন শিক্ষক ছিলেন তারপরও তিনি কৃষি কাজে বেশ দক্ষ ছিলেন। এরপর আমার বাবার সাথে সাথে আমি এবং আমার ছোট ভাই সুমন মাছ চাষে আমার বাবাকে নিয়মিত সহযোগিতা করতাম। এরপর থেকে এখন আমি এবং আমার ছোট ভাই আমাদের সকল পুকুরগুলো দেখাশোনা করছি এবং নিয়মিত মাছের চাষাবাদ করি। বর্তমানে আমাদের পরিবারের উপার্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো মাছের চাষাবাদ। আর মাছের চাষ সঠিকভাবে করার জন্য প্রয়োজন মাছের সুষম খাবার। আর মাছের খাবার অবশ্যই ভেজালমুক্ত এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ হতে হবে।

IMG_20230615_100703_742.jpg



আমি গত কিছুদিন আগে মাছের খাবার ক্রয় করার জন্য আমাদের পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া জেলার খাজানগরে গিয়েছিলাম। মূলত ওখান থেকে আমাদের এলাকার বেশিরভাগ মাছের খাবার সরবরাহ হয়। আমি ২০১১ সাল থেকে কুষ্টিয়া জেলার খাজানগর থেকে মাছের খাবার ক্রয় করি। এক সময় ওখান থেকে নিশ্চিন্তে আমরা ভেজালমুক্ত মাছের খাবার ক্রয় করতাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে সেভাবে বিশ্বাস করে আর মাছের খাবার ক্রয় করার পরিবেশ নেই। মাছের প্রধান খাবার হল ধানের গুড়া। কিন্তু বর্তমান সময়ে ধানের গুড়ার সাথে মেশানো হচ্ছে কাঠের গুড়া, পাথরের গুড়া, এমন কি লাল রংয়ের মাটি গুড়া করে মাছের খাবারের সাথে মিশিয়ে ভেজাল করা হচ্ছে। তাই বর্তমান সময়ে মাছের খাবার ক্রয়ের ক্ষেত্রে মাছের খাবার গুলো খুবই যাচাই-বাছাই করে ক্রয় করতে হচ্ছে।

IMG_20230615_094748_688.jpg

IMG_20230615_094718_111.jpg



মাছের খাবার বিক্রয়ের একটি ঘরে বিভিন্ন গ্রেডের খাবার পাওয়া যায়। তাই এখানে ভালো খাবারটা নির্ণয় করা সত্যিই খুবই কঠিন। তবে মাছের ভেজালমুক্ত খাবার নির্ণয়ের একটি দারুণ পদ্ধতি রয়েছে। সেটা হলো--খাবারের বস্তার ঠিক মাঝখান থেকে অল্প পরিমাণ গুড়া বের করে হাতে নিয়ে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে। তারপরে গুড়াগুলোর সাথে হালকা পানি মিশিয়ে ভালোভাবে ছানা করে নিতে হবে। এবার গুড়া গুলো ছানা করার পরে যদি গুড়াগুলো ময়দার মতো আঠালো হয়ে যায় এবং ছানা করা গুড়াগুলো হাতের সাথে ঘর্ষণ দিলে যদি তেল তেলে ভাব চলে আসে তাহলে বুঝতে হবে এগুলো মাছের ভেজাল মুক্ত খাবার। কারণ মাছের ভেজালমুক্ত খাবারে তেলের পরিমাণটা সঠিক পর্যায়ে থাকে। কিন্তু এই পদ্ধতিটা যারা জানে না তারা মাছের খাবার ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হয়। অর্থাৎ মাছের ভেজাল মুক্ত খাবার ক্রয় করতে সক্ষম হয় না।

IMG_20230615_095120_282.jpg

IMG_20230615_094956_543.jpg



মাছের ভেজালমুক্ত খাবার নির্ণয় করার পর আমি তিনটন খাবার ক্রয় করলাম। প্রতি কেজি খাবার ৩২ টাকা দর নির্ধারণ করা হলো। এরপর মহাজনের আদেশ পেয়ে উক্ত খাবারের ঘরের কর্মচারীরা এক বস্তায় পঞ্চাশ কেজি করে খাবার বোঝাই করতে লাগলো। আমি পাশে থেকে দেখতে লাগলাম যে খাবারের সঠিক ওজন তারা দিচ্ছে কি-না। যাহোক মাছের খাবারগুলো সঠিকভাবে ওজন দিয়ে বস্তা বোঝাই করে নিয়েছিলাম। তারপর খাবারগুলো আমার আলগামুন গাড়ির উপর ভালোভাবে সাজিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর মহাজনের প্রাপ্য টাকা বুঝিয়ে দিয়ে মাছের খাবারগুলো নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলাম।

IMG_20230615_094836_253.jpg

IMG_20230615_103209_545.jpg



সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা যারা মাছের চাষ করেন মাছের খাবার ক্রয় করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক হবেন। মাছের খাবার ক্রয়ের ক্ষেত্রে যদি অনভিজ্ঞ হন তাহলে যারা বেশি অভিজ্ঞ অবশ্যই তাদের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। আসুন আমরা সবাই মাছের খাবার সহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করার সময় সচেতন হয় এবং অন্য কেউ সচেতন করি।


১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  
 last year 

আসলে মামা বর্তমান সময়ে মাছের খাবারের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ডোবা খাবারের থেকে ভাসমান খাবারের দাম অনেক বেশি। মাছের খাবার বানানোর আগে পালিশের ছবি তুলে আপনি অনেক সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন। প্রতি কেজি খাবারের দাম ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল জানতে পারলাম। আসলে প্রতিটি বস্তায় ৫০ কেজি খাবার থাকে এটা অনেক আগে থেকে জানা ছিল। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনি এবং সুমন ভাই আপনাদের পূর্বপুরুষদের ব্যবসা ধরে রেখেছেন, সেজন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আসলে এখন শুধু মাছের খাবার নয়, প্রায় সব ধরনের খাবারেই ভেজাল করছে। তাই কোনো কিছু কেনার আগে অবশ্যই ভালোভাবে যাচাই করা উচিত। মাছের খাবার নির্ভেজাল কিনা, সেটা যাচাইয়ের জন্য দারুণ একটি পদ্ধতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ভাই। যারা মাছ চাষ করে তারা অবশ্যই আপনার পদ্ধতি দেখে উপকৃত হবে। যাইহোক আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65546.28
ETH 2666.01
USDT 1.00
SBD 2.90