গল্প // রহিম আমার বন্ধু//পর্ব-০১।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার। ২৪ ই মে, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
অবিভক্ত বাংলার সুন্দর একটি গ্রামের নাম হলো কালিদাসপুর। গ্রামটির নাম রাখা হয়েছিল কালিদাস নামক একজন মানুষের নাম অনুসারে। কালিদাস নামের মানুষটি নাকি অত্যন্ত রসিক ও ভালো মনের মানুষ ছিলেন। তাই কালিদাসের মৃত্যুর পর তার গ্রামের মানুষেরা তাকে চির স্মরণীয় করে রাখার জন্য তার গ্রামের নাম দিয়ে দেয় কালিদাসপুর। কালিদাসপুর গ্রামটি অত্যন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। গ্রামটির এক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুন্দর একটি নদী। এবং নদীর ওপারে রয়েছে সবুজ ফসলের মাঠ। এছাড়াও গ্রামের চারিপাশে রয়েছে সবুজ অরণ্য। গ্রামটিতে মুসলমান ও হিন্দু ধর্মের মানুষেরা বসবাস করতো। সংখ্যায় মুসলমান ধর্মের মানুষ কিছুটা বেশি ছিল এবং হিন্দু ধর্মের মানুষ তুলনামূলক কম ছিল।
তখনকার সময়ে কালিদাসপুর গ্রামের কয়েকজন হিন্দু জমিদার ছিল। কিন্তু তারা ১৯৪৭ সালের আগেই কলকাতায় চলে গেছে। গ্রামটিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কটা বেশ মজবুত ছিল। কিন্তু উক্ত গ্রামে কিছু মুসলিম ধর্ম অনুসারীরা ধর্মীয় গোড়ামী ও কুসংস্কারে বিশ্বাসী ছিল। যাহোক ১৯৪৭ সালের প্রথম দিক, কালিদাসপুর গ্রামের সকল মানুষের একই অবস্থা, সকলেই খাবারে আশায় এদিকে সেদিকে ছুটে বেড়ায়। ব্রিটিশদের উপনিবেশ শাসনের ফলে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত ধন্য দশায় পড়ে গেছে। গ্রামের প্রায় সকল মানুষ এক বেলা খেয়ে জীবন ধারণ করে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের নেই পরিধানের পোশাক, নেই শিক্ষা লাভের কোন ব্যবস্থা, নেই কোন চিকিৎসা লাভের সুযোগ। মানুষের রোগ বালাই এর সুযোগটা নিয়ে গ্রামে বেশ কয়েকটা হাতুড়ি ডাক্তার এবং কবিরাজের আবির্ভাব হয়েছে।
এদিকে পানির অভাবে কৃষকরা মাঠের পর্যাপ্ত পরিমাণে ফসল ফলাতে পারছে না। সারা বছর শরীরের ঘাম ঝরিয়ে যতটুকু ফসল উৎপাদন করে বছরের সুদ দিতে গিয়ে কৃষকের বাড়িতে আর কিছুই থাকে না। এক কথায় কৃষকের শরীরের ঘামের নেই কোন দাম। পুরো গ্রামের মানুষের শরীর রোগাটে এবং জীর্ণশীর্ণ হয়ে গেছে। খাবারের অভাবে গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চাদের দেহের তুলনায় মাথাটা অনেকটাই মোটা হয়ে গেছে। একেবারেই করুন অবস্থা গ্রামের প্রায় সকল মানুষের। ঠিক এমন অবস্থায় গ্রামের মানুষেরা শুনতে পেল যে, তাদের দেশ ভাগ হয়ে যাবে। দেশটি ভাগ হয়ে যাবে ধর্মের ভিত্তিতে। দেশ ভাগ হয়ে যাওয়ার খবরটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সকল মানুষের মনেই আতঙ্ক বিরাজ করতে লাগলো।
এদিকে কালিদাসপুর গ্রামের আলো-বাতাস শরীরে লাগিয়ে, গ্রামের ধুলো-কাদায় খেলা করার মধ্য দিয়ে দিন কেটে যায় রাম ও তার বন্ধু রহিমের। রাম ও রহিম ধর্মের দিকতে আলাদা হলেও তারা যেন একে অপরের পরম বন্ধু। তাদের বাড়ি একই পাড়ায় পাশাপাশি অবস্থিত। তারা একজন অন্যজনকে ছাড়া একেবারেই থাকতে পারে না। ১৯৪৭ সালের ১৫ এপ্রিল দু'জনের বয়স ৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। সব থেকে মজার বিষয় হলো রাম ও রহিম একই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিল। রামের দাদি যখন সন্ধ্যা পূজায় ব্যস্ত ছিল ঠিক তখনই রাম তার মায়ের গর্ভ থেকে বের হয়ে পৃথিবীর আলো বাতাস দেখে। এদিকে রহিমের দাদা ও দাদি যখন মাগরিবের নামাজ পড়ায় ব্যস্ত ছিল ঠিক সেই সময় রহিম পৃথিবীতে আসে। রাম ও রহিম একই দিনে একই সময়ে পৃথিবীতে আসার কারণে হয়তো তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কটা ছোটবেলা থেকেই গড়ে উঠতে শুরু করেছে।(গল্পটি চলমান থাকবে)
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.