গল্প: মামা ও ভাগ্নে। পর্ব: ০৫ || তাং: ১৯/১০/২০২২ ইং।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের নিকট আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি। আমার গল্পের নাম- 'মামা ও ভাগ্নে', পর্ব-০৫। আমি আশা করি আমার লেখা গল্পের পর্ব-০৫ আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।


গল্পের চতুর্থ পর্বটি পড়ার লিঙ্ক



field-g1a943515b_1920.png

Source

দূর থেকে আলো এসে সুজন এবং হৃদয়ের শরীরে লাগতেই তারা আরো নিস্তব্ধ হয়ে গেল। তারা দুজনেই ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে শুয়ে পড়লো এবং চারিদিকের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাকাতদের খোঁজাখুঁজি বন্ধ হয়ে গেল এবং ডাকাতরা তাদের কাজ শুরু করল। নিঝুম শীতের রাত সামান্য শব্দ হলেও হৃদয় এবং সুজনের কানে এসে ধপ ধপ করে লাগছে। একটু পরেই তারা বুঝতে পারল যে ডাকাত দল ভুট্টা ক্ষেতের মাঝখানে মাটি খনন করতেছে। মাটি খননের শব্দ পেয়ে সুজন এবং তার ভাগ্নে হৃদয় আরো বেশি ভয় পেয়ে গেল। হৃদয় ফিসফিস করে জড়কণ্ঠে তার মামা সুজনকে বলল, 'মামা এখানে বুঝি কোন মানুষকে হয়তো আজ রাতেই দাফন করবে ডাকাতের দল'। সুজন তার ভাগ্নিকে বলল চুপ করে থাকো এবং পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করো।


carrot-g218ef80f1_1920.jpg

Source

একটু পরে হৃদয় আবার তার মামা সুজনকে বলল,'মামা আমাদের গাজর চুরি করা কি হবে? ভাগ্নের এমন কথা শুনে সুজন রেগে গেল এবং রাগকে চাপা দিয়ে একটু চাপা কন্ঠেই বলল,'রাখ তোর গাজর চুরি। ডাকাত দলের হাতে ধরা পড়লে নিশ্চিত মৃত্যু। এদিকে তালেব আলী তার দলবল নিয়ে গাজর ক্ষেতের চারিদিকে পাহারা দিতেছে। তালেব আলীর সাথে থাকা কয়েকজন প্রচন্ড শীতের কারণে থরথর করে কাঁপতেছে এবং তালেব আলি'র প্রতি বিরক্ত দেখাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও তালেব আলী গাজর চোর ধরার জন্য তার গাজর ক্ষেতের পাশে অনড় অবস্থায় অবস্থান করতে লাগলো। তালেব আলির একটা উদ্দেশ্য যে, তার মেয়ের প্রেমিক যে একজন চোর সেটাই প্রমাণ করা। কিন্তু এ কথা সত্যি যে, তালেব আলীর মেয়ের প্রেমিক হৃদয় একজন পেশাদার চোর নয়। কিন্তু হৃদয়ের মামা সুজন একজন ছিঁচকে চোর। প্রচন্ড শীতের রাত, চারিদিকে ঘন কুয়াশায় ছেয়ে গেছে। মৃদু মৃদু ঠান্ডা বাতাস বইতেছে, মাঝেমধ্যে উত্তরের দিক থেকে একটু জোরেই বাতাস আসতেছে। এমন অবস্থায় গাজর ক্ষেতের পাশে বসে তালেব আলী সহ সকলেই এক ধরনের বিপদের সম্মুখীন।

forest-g4407b7988_1920.jpg
Source



grass-gbdd299389_1280.png

Source

এদিকে হৃদয় এবং সুজন ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে শুয়ে থাকা অবস্থায় সুজন মনে মনে সাহস সঞ্চয় করতে লাগলো। সুজন তার ভাগ্নে হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে আস্তে আস্তে ভুট্টা খেতে মাঝখানে যেতে লাগলো। সুজন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল যে, ভুট্টা ক্ষেতের মাঝখান থেকে যে শব্দ আসতেছে সে শব্দটা কিসের শব্দ সেটা সে নিজের চোখে দেখবে। তাই সে বুকে অগাধ সাহস সঞ্চয় করে তার ভাগ্নেকে সাথে নিয়ে সামনের দিকে খুবই ধীরে এবং আস্তে আস্তে অগ্রসর হল। সামনের দিকে খানিকটা গিয়ে তাদের চোখে হালকা আলোর ছটা পড়ল। সেই আলোর সূত্র ধরে মামা ও ভাগ্নে কৌশলের সাথে আরো একটু এগিয়ে গেল। তারপর তারা দু'জন ভুট্টা ক্ষেতের মাঝখানে ডাকাতদের অবস্থান দেখে এবং তাদের কার্যকলাপ দেখে দু'জনেই সম্পূর্ণরূপে স্তব্ধ হয়ে গেল। তারা দু'জন দু'জনের মুখ চেপে ধরে ভুট্টা ক্ষেতের এক পাশে শুয়ে পড়লো।

robber-g4f6759862_1280.png

Source



[গল্পটি চলমান থাকবে]



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ ।

Sort:  
 2 years ago 
যদিও "মামা ও ভাগ্নে" গল্পের আগের পর্বটি পড়া হয়নি। তবে এই পর্বটি পড়ে বুঝতে পারলাম সুজন ও তার ভাগ্নে হৃদয় ভুট্টা খেতে খুবই বিপদে আছে। আর তালেব আলী ও প্রচন্ড শীতের রাতে তার মেয়ের প্রেমিক যে চোর তা ধরার জন্য কষ্ট করে লোক নিয়ে বসে আছে।সবদিক থেকে টানটান উত্তেজনা। দেখাযাক পরের পর্বে সুজন ও তার ভাগ্নে হৃদয়ের কি অবস্থা হয়।আর তালেব আলী ও তার মেয়ের প্রেমিকে চোর হিসেবে সাব্যস্ত করত পারে কিনা। সেই অপেক্ষায় রহিলাম।আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65