শীত উপলক্ষে মাছের বিশেষ যত্ন।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার। ২৯ ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনার হয়তো অনেকেই জানেন যে, আমি গ্রামে বসবাস করি এবং মাছ চাষের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। কারণ আমার মাছ চাষের উপযোগী আটটি পুকুর রয়েছে বর্তমানে। আর সবগুলো পুকুরেই পুরোদমে মাছের চাষাবাদ করি। বর্তমানে আমার প্রত্যেকটি পুকুরেই পরিমাণ মতো ছোট-বড় সাইজের মাছ রয়েছে। প্রত্যেকটি পুকুরের প্রধান মাছ হলো পাঙ্গাস মাছ, আর পাঙ্গাস মাছের সাথী মাছ হিসেবে রয়েছে অন্যান্য দেশীয় প্রজাতির মাছ। এক কথায় আপনারা বলতে পারেন যে, আমি আমার সবগুলো পুকুরে মিশ্র ভাবে মাছের চাষ করি। আর বর্তমান সময়ে মিশ্রভাবে মাছ চাষ সবথেকে বেশি লাভজনক।
যাহোক, শীতের আগমনের সাথে সাথে পুকুরের চারপাশে এবং পুকুরের তলদেশে বিভিন্ন প্রকার রোগ জীবাণুর সৃষ্টি হয়। যার ফলে শীতের মৌসুমে প্রায় সব রকম সাইজের এবং সকল প্রজাতির মাছের দেহে বিভিন্ন প্রকার রোগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এমনকি কিছু কিছু মাছ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এই শীতের মৌসুমে মরে যায়। আর মাছ মরে যাওয়া মানে মাছ চাষীদের জন্য বিশাল একটি ক্ষতি। তাই শীতের মৌসুমে পুকুরের মাছগুলোকে সুস্থ রাখার জন্য সব সময় মাছ চাষীকে সতর্ক থাকতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে আমার সবগুলো পুকুরে পরিমাণ মতো চুন প্রয়োগ করে ফেলেছি।
আজকে আমার একটি পুকুরে পরিমাণ মতো লবণ প্রয়োগ করেছি। পুকুর থেকে মাছের রোগ জীবাণু ধ্বংস করতে লবণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তবে লবণ পুকুরে প্রয়োগ করতে হলে সেটা পরিমাণ মতো প্রয়োগ করতে হবে এবং যথার্থভাবে প্রয়োগ করতে হবে। আগেই বলে রাখি পুকুরের গভীরতা যদি সাড়ে তিন ফুট থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে তাহলে প্রতি শতকে লবণ প্রয়োগ করতে হবে ৪০০ গ্রাম। তবে লবণগুলো সরাসরি পুকুরে ছিটিয়ে দেওয়া যাবে না। ৪০০ গ্রাম লবণ আধা লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে সেই পানি পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। আপনারা উপরের ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন।
আমি প্রথমেই হাঁড়ির মধ্যে পরিমাণ মতো পানি নিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর পানির মধ্যে লবণগুলো ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর হাড়ির ভিতর পানি গুলোর সাথে লবণগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নেওয়ার জন্য একটি থালা দিয়ে পানির সাথে লবণগুলো বারবার নাড়িয়ে দিয়েছিলাম। যাতে খুব দ্রুত লবণগুলো গলে পানির সাথে মিশে যায়। তারপর লবণ পানিগুলো পুকুরের চারপাশের অংশে সমানভাবে ছিটিয়ে দিয়েছিলাম। আর এটাই হলো পুকুরে লবণ প্রয়োগ করার যথার্থ পদ্ধতি। পুকুরে কখনোই কাঁচা লবণ সরাসরি প্রয়োগ করা যাবে না।
পুকুরে লবণ প্রয়োগের অনেক উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো:- শীতের সময় পুকুরের ছোট-বড় সবরকম মাছের দেহে লালচে ঘা হয়, এমনকি মাছের লেজে কিংবা মাছের চোখের পাশে কিংবা মাছের দেহের বিভিন্ন অংশে লালচে ঘা হয়ে থাকে। শীতের মৌসুমে মাছের দেহে লালচে ঘা হওয়ার আগে যদি পরিমাণ মতো লবণ প্রয়োগ করা যায় তাহলে পুকুরের মাছগুলো ঘা হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। তবে কারো পুকুরে মাছের শরীরে যদি ঘা হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে পুকুরে কি পরিমান লবণ প্রয়োগ করতে হবে সেটা উপজেলা মৎস্য অফিসারের নিকটে পরামর্শ নিয়েই করতে হবে। তাই আমার পুকুরের মাছগুলো সুস্থ থাকা অবস্থায় পরিমাণ মতো লবণ প্রয়োগ করে দিলাম আজ। যেহেতু শীত পুরোদমে চলে এসেছে। তাই পুকুরের মাছগুলো সুস্থ রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি পুরো শীতের মৌসুমে আমার পুকুরের সব মাছগুলো সুস্থ রাখতে পারবো, ইনশাল্লাহ।
Twitter link
আজকের কাজ সম্পন্ন।
হ্যাঁ শীতের সময় মাছকে এভাবে যত্ন নিতে হবে। কোথায় আছে যত্নে রত্ন মেলে। যেহেতু এই সময় মাছের বাচ্চার বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয় তাই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য সব সময় সজাগ থাকতে হবে।
কমেন্টের মধ্যে বানানের ভুল রয়েছে। সংশোধন করে দাও।