নতুন বাংলা বছরের প্রথম দিন শুরু হলো শুভ বিবাহের আনন্দ উপভোগ করার মধ্য দিয়ে:-পর্ব-০১

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ সোমবার। ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।


IMG_20240414_170255_329.jpg



পোস্টের শুরুতে সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, ঈদের আমেজ কাটতে না কাটতে আমাদের মাঝে চলে এসেছে বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখের দিনটি আমাদের বাঙ্গালি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের একটি দিন। পহেলা বৈশাখের দিনটি আমরা বিভিন্ন উপায়ে রাঙ্গিয়ে তোলার চেষ্টা করি।যাহোক, এবার মূল কথায় আসা যাক, বাংলা নতুন বছরের দিনটি আমার শুরু হলো শুভ বিবাহের দাওয়াত খাওয়ার মধ্য দিয়ে। গতকাল আমার স্ত্রীর ছোট খালার মেয়ের শুভ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ আমার শ্যালিকার শুভ বিবাহ হয়। উক্ত বিবাহ অনুষ্ঠানে আমার পরিবার নিয়ে আমরা স্পেশাল গেস্ট হিসেবে গিয়েছিলাম।

GTXGbiZmPNxFZacFKMbLkhZusaW.jpg



বিবাহের অনুষ্ঠানটি যে খুব একটা জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে ব্যবস্থা করা হয়েছিল এমনটা নয়। গত পরশুদিন অর্থাৎ শনিবারে ঘটকের মাধ্যমে ছেলের পক্ষ এবং ছেলে সরাসরি এসে আমার শ্যালিকাকে দেখে পছন্দ করে। তারপর ছেলের পক্ষ বাড়িতে আলোচনা করার পরে আমাদেরকে জানিয়েছিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের দিনেই বিবাহ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু হঠাৎ করে বিয়ের ব্যবস্থা করা বেশ কঠিন। প্রথমে আমার খালা শাশুড়ি হঠাৎ করে এরকম বিয়েতে আর রাজি হলো না। কিন্তু পরবর্তীতে ছেলের পক্ষদের অনুরোধে এবং পাত্র এর সাথে আমার মোবাইল ফোনে কথা হয়েছিল। ছেলেটি বয়সে আমার বেশ ছোট কিন্তু মনটা বেশ রোমান্টিক। ছেলেটি আমাকে একটু রিকুয়েস্ট করেই বলেছিল, পহেলা বৈশাখের দিনে বিয়ের ব্যবস্থাটা করে দেন। যাতে পহেলা বৈশাখের দিনটি সারা জীবনের জন্য আরো বেশি আনন্দের এবং স্মরণীয় একটি দিন হয়ে থাকে।

G5tlGAWwnrWTPgLTViaTZvbXKCU.jpg



ছেলেটির কথা শুনে আমার মনটা বেশ চাঙ্গা হয়ে গেল। তারপর আমার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে খুব দ্রুত আমার খালা শাশুড়ির বাড়িতে গেলাম এবং তাদের সকলকে রাজি করালাম। এদিকে আমার শ্যালি বিয়ের জন্য আট পায়ে খাড়া। যদিও তার পায়ের সংখ্যা দুইটি। যাহোক গতকাল অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের দিনে খুব সকাল সকাল খালাশাশুড়ির বাড়িতে আমার পরিবার নিয়ে চলে গেলাম। তারপর বিবাহ অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্র ক্রয় করার জন্য খুব দ্রুত বাজারে গেলাম এবং বাজার কমপ্লিট করে বাড়িতে আসলাম। এরপর বাড়ি অন্যান্য ছোট বড় ভাইবোনদের সহযোগিতায় ছোট্ট একটি গেট সাজিয়ে ফেললাম। এদিকে বাড়ির বয়স্করা রান্নার কাজে খুবই ব্যস্ত। গেট সাজানোর পর বাড়িতে অতিথিদের বসানোর জন্য এবং বরকে বসানোর জন্য সুন্দর একটি জায়গা তৈরি করে নিলাম।

GS5YUqJoDecazKqRbcEgqFUmfvM.jpg

এদিকে আমার শ্যালির চাচাতো বোনেরা তাদের নতুন দুলাভাইকে শরবত খাওয়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রকারের শরবতের আইটেম করলো। বিশেষ করে মিষ্টি শরবতের তুলনায় ঝালের ও লবণের শরবত বেশি ছিল। শুভ বিবাহের অনুষ্ঠান ভালোভাবে সম্পন্ন করার জন্য কাজগুলো যখন প্রায় শেষ তখন অন্যান্য শ্যালীরা এসে আমার পকেটে হামলা করলো। অর্থাৎ তারা সকলে বায়না ধরে বসলো, তাদেরকে কিছু খাওয়াতে হবে অথবা টাকা দিতে হবে। আমিও খালা শাশুড়িদের বাড়িতে আসার সময় একটি দোকান থেকে ৫০০ টাকা ভাঙ্গিয়ে দশটি নতুন নতুন ৫০ টাকার নোট করে এনেছিলাম আমার এক ভাইয়ের দোকান থেকে। আমি আগে থেকে জানতাম, শ্যালিকার বিয়েতে দুলাভাইয়ের পকেটের উপর দিয়ে একটি টর্নেডো ঝড় বয়ে যাবে।

GDQWIolmfXgtUNjkIiEtFyQsiEZ.jpg

GBBLXVmIiysLMhEBQkHhfsWqSEM.jpg



এমনিতে শুভ নববর্ষের দিন, তারপর আবার শুভ বিবাহ অনুষ্ঠান, তাই কাউকেই হতাশ করিনি। সকল শালা-শ্যালিকাদের ৫০ টাকা করে দিয়েছিলাম। ৫০ টাকা পেয়ে কয়েকজন সন্তুষ্ট হলো, আর কয়েকজন আরো বেশি নেওয়ার লোভ শুরু করলো। কিন্তু কোন কাজ হলো না, কারণ আমার বাজেট ছিল জন প্রতি ৫০ টাকা। যাহোক, জোহরের নামাজ পরে বরযাত্রী চলে এলো। আমরা সকলেই নতুন বরকে স্বাগতম জানালাম। তারপর বরের সামনে বেশ কয়েকটি গ্লাস ভর্তি শরবত দেয়া হলো। আমি অবশ্য আগে থেকেই ঝাল মেশানো শরবত গুলো দূরে রেখেছিলাম। দুঃখের বিষয় শরবত খাওয়ানোর এবং গেটের ফিতা কাটার আনন্দের মুহূর্তের ফটোগ্রাফি করা হয়নি আমার। কারণ উক্ত সময়ের একটু আগেই আমার একমাত্র ছেলে বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেশ কান্না শুরু করেছিল। তাকে স্বাভাবিক রাখার জন্য আমার মোবাইল ফোনটি দিয়ে ছেলেকে কার্টুন দেখানোতে ব্যস্ত ছিল তার মা। এই অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার কারণে বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রথম দিকের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফটোগ্রাফি করতে আমি ব্যর্থ হয়েছি। যাহোক শুভ বিবাহের পরবর্তী অংশগুলো আগামী দিনে আপনাদের সাথে শেয়ার করা হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত সকলেই ভালো থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।



আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 months ago 

হ্যাঁ প্রথম বছরের শুরুতেই আমাদের ছোট বোনের বিবাহ অনুষ্ঠিত হলো। আর এই বিয়েতে আমরা খুবই আনন্দ করেছি। সুন্দর মুহূর্তটা স্মৃতি করে ধরে রাখতে আমার বাংলা ব্লগে শেয়ার করেছে দেখে খুবই ভালো লাগলো। আশা করবো এটা চিরজীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে এখানে। খুবই ভালো লাগলো বিয়ের এই অনুষ্ঠানটা শেয়ার করতে দেখে।

 2 months ago 

শ্যালিকার বিয়ে নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। ভালো লেগেছে পোস্টটি। হুট করে বিয়ের আলাদা একটা মজা আছে! পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া সবকিছু করতে হয়। হঠাৎ বিয়ের আনন্দ, কোন কিছুর ঘাটতি চোখে পড়েনা। বেশ উপভোগ করেছেন বিয়ে। শ্যালক-শালিকাদের ৫০ টাকা করে দেওয়ার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি বেশ ভাল লেগেছে। ছবি গুলোও সুন্দর হয়েছে। ১লা বৈশাখে বিয়ের বর ও কণের জন্য শুভ কামনা। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 2 months ago 

আপনার শ্যালিকার বিয়ের মুহূর্তগুলো শেয়ার করেছেন। বাহ খুবই সুন্দর একটি ডেট আপনারা ঠিক করেছেন।বছরের প্রথম দিনেই বিয়ে উৎসব সত্যিই অনেক দোয়া রইল।

 2 months ago 

ঈদ উপলক্ষে চারিদিকে দেখি শুধু বিয়ের আয়োজন। বাড়ির পাশে চাচাতো বোনের বিয়ে হল দাওয়াত ছিল ঘুমের কারণে খেতে যেতে পারি নাই। এদিকে আপনার শালীর বিয়ে। শ্বশুর বাড়ি যেতে লক্ষ্য করলাম দুইটা বাড়িতে বিয়ে চলছে। এমন অবস্থা দেখে মনে চায় আবার বিয়ে করে ফেলি। সুন্দর এক বিয়ের অনুভূতি আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট পড়ে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 61940.56
ETH 3421.31
USDT 1.00
SBD 2.49