নিরাশা
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শনিবার। ২০ ই মে, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই হাজারো আশা-প্রত্যাশা জেগে ওঠে। জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালিত করতে সকল মানুষের মধ্যে যে আশাগুলো জেগে ওঠে তার সবগুলোই আনন্দের আশা-প্রত্যাশা হয়ে থাকে। পৃথিবীর বুকে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে নিজেকে কষ্টের সাগরে ডুবিয়ে দেওয়ার আশা করে। সকল মানুষের জীবনে আশা একটাই থাকে সেটা হলো, জীবনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা। আর এই একটা আশা থেকেই মানুষের মনে হাজারো আশা-প্রত্যাশার জন্ম হয়। যেমন, নিজের ভবিষ্যৎকে উন্নত করে তোলা, কাজের কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন করা, নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের আশা করা, পরিবারের সার্বিক কল্যাণ করার আশা, নিজেকে শ্রেষ্ঠ করে তোলার আশা সহ আরো অনেক কিছু আশা-প্রত্যাশা আমাদের ভিতরে জন্ম নেয়।
আমাদের মনের মাঝে জেগে ওঠা হাজারো আশা-প্রত্যাশাকে কেন্দ্র করে, আমরা কি কখনো চিন্তা করি? যে আমাদের আশা-প্রত্যাশা গুলো নিরাশায় রূপ নিবে। হয়তো আমরা নিরাশার কথা কখনোই চিন্তা করি না। আর হাজারো আশা-প্রত্যাশার মাঝে নিরাশার কথা চিন্তা করতেও ভালো লাগেনা। কিন্তু আশা-প্রত্যাশার পাশাপাশি নিরাশার কথা যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে আমাদের মনের মধ্যে হাজারো আশা-প্রত্যাশার জন্ম হবে না। একটি নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে যে আশা-প্রত্যাশা গুলো আমাদের মনের মধ্যে জন্ম হবে, ঠিক সেগুলোই বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা সঠিক পথ খুঁজে বের করতে পারবো এবং আমাদের কাজকে আরো বেশি বেগবান করতে পারবো। আর আমাদের মনের মধ্যে যদি অধিক হারে আশা-প্রত্যাশা জেগে ওঠে, তাহলে আমাদের আশা-প্রত্যাশা গুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়ে উঠবে না। যার ফলে আমাদের মনের আশা-প্রত্যাশাগুলো নিরাশায় ডুবে যাবে।
যাহোক, পৃথিবীর বুকে আসা-প্রত্যাশা শব্দগুলো আছে বলেই নিরাশার জন্ম হয়েছে। আর আমাদের মনের মাঝে হাজারো আশা-প্রত্যাশা সৃষ্টি হয় বলেই, আমরা নিরাশার সম্মুখীন হয়, নিরাশার সাক্ষাৎ পায়। আমাদের মানবজাতি নিরাশাকে দুইটি উপায়ে গ্রহণ করে। প্রথমটি হলো কঠিন ভাবে এবং দ্বিতীয়টি হলো সহজভাবে নিরাশাকে গ্রহণ করে। আমি মনে করি, নিরাশাকে সহজভাবে গ্রহণ করায় উত্তম। কেননা, নিরাশার ভয়াবহ রূপ আছে। যেটাকে সামাল দেওয়া খুবই কষ্টকর, খুবই কঠিন। নিরাশা আমাদের জীবনকে কালো আঁধারে ঢেকে দেয়, নিরাশা আমাদের জীবনকে ব্যর্থ জীবনে পরিণত করে, নিরাশা আমাদের সাজানো স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়, নিরাশা আমাদের আশা-প্রত্যাশার প্রতি ঘৃণার জন্ম দেয়, নিরাশা আমাদের ইহকালের মায়া ত্যাগ করিয়ে পরকালের পথে যেতে বাধ্য করে। কিন্তু এখানে কি নিরাশার দোষ? মোটেও না। নিরাশা কারো জীবনে এমনি এমনি আসে না। নিরাশা কখনো কারোর মনের মধ্যে জেগে ওঠে না। বরং আমরা আমাদের কর্ম দোষে নিরাশাকে ডেকে নিয়ে আসি। নিরাশা হলো আমাদের কর্মফল। কিন্তু অনেক সময় ভালো কাজ করেও আমাদেরকে নিরাশ হতে হয়। সেক্ষেত্রে নিরাশা হলো আমাদের পারিপার্শ্বিক মানুষদের প্রভাবের ফল।
আমাদের মানব জীবনের অন্যতম একটি অংশ হলো নিরাশা। আমাদের জীবনে যখনই নিরাশা আসুক না কেন। সেই নিরাশাকে আমাদেরকে কখনোই কঠিনভাবে গ্রহণ করা উচিত না। নিরাশাকে সব সময় সহজভাবে গ্রহণ করতে হবে। তাহলে নিরাশা আমাদেরকে জীবন সম্পর্কে বাস্তব শিক্ষা দিবে, নিরাশা সময়ের মূল্য দেওয়া সম্পর্কে আমাদেরকে বাস্তব শিক্ষা দিবে, নিরাশা আমাদের জীবনকে পরিবর্তন করতে নতুন শিক্ষা দিবে, নিরাশা আমাদের কর্মকে পরিবর্তন করতে সঠিক দিকনির্দেশনা দিবে, নিরাশা আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার সঠিক পথ দেখাবে। তাই আমাদের সকলের উচিত হবে, নিরাশার সম্মুখীন হয়ে ভেঙ্গে পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কি কারনে আমরা নিরাশার সম্মুখীন হয়েছি, সেই কারণগুলো নিখুঁতভাবে নির্ণয় করার চেষ্টা করতে হবে। নিরাশার কারণগুলি যদি আমরা নির্ণয় করতে পারি, তাহলে খুব সহজে আমরা আশার আলো দেখতে পারবো।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমি মনে করি, নিরাশা আমাদের জন্য একটা অর্জন। তাই নিরাশাকে আমাদেরকে সহজভাবে গ্রহণ করতে হবে। যাতে বাস্তব জীবনে আমাদের মনে নতুনভাবে আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশার জন্ম হয়। আর নিরাশা থেকে উপযুক্ত শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন আশাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যাহোক, আমরা যেন সকলেই নিরাশা মুক্ত থাকতে পারি, এমনটা আমি প্রত্যাশা করি।
Twitter link