শান্তির ঘরে অশান্তির ছায়া ( পর্ব - ১)

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সামনে ফিরে আসলাম একদিন বাস্তব ঘটনা নিয়ে। আশা করি ঘটনাটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করব। সম্পর্কে মেয়েটি আমার খালাতো বোন হয়। মেয়েটির বাবা এলাকার একজন সাবেক মেম্বার। মেয়েরা তিন ভাই এবং সে একটিমাত্র মেয়ে। দুই ভাইয়ের ছোট মেয়েটি সবাই তাকে খুব আদর করে। মেয়েটির নাম হল জেসমিন। সে অনেক সুন্দরী এবং গুণবতী। মেয়েটি যখন এসএসসি পরীক্ষা দিল তার জন্য খুব ভালো সম্বন্ধ আসলো বিয়ের জন্য। তাদের বাড়ি থেকে চার পাঁচ কিলোমিটার দূরে ছেলেটের বাড়ি। মেয়েটির বাবা খবর নিয়ে দেখল ছেলেটির ফ্যামিলি অত্যন্ত ভালো এবং ছেলেটিও ভালো বলেই এলাকাবাসী বলল।

এরপর দুই ফ্যামিলি মিলে বিয়ের জন্য কথাবার্তা বলতে লাগলো একপর্যায়ে মেয়েটির বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো। তারপর দিন তারিখ ঠিক করে মেয়েটির বিয়ে দিন ঠিক করলেন। মেয়েটির বাবা একমাত্র মেয়ে বিদায় অনেক বড় করে সব আত্মীয়কে দাওয়াত দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করলো। রাস্তার পাশে অনেক বড় একটি জমি বিক্রি করে মেয়েটির বিয়েতে খুব আনন্দ করে অনুষ্ঠান করে বিয়ে দিল তার বাবা। বিয়ের পর ছেলেটি দুই থেকে তিন মাস থেকে সে আবার সৌদি আরব চলে গেলেন। তার এক বছর পর ছেলেটি আবার আসলে কিছু মাস থেকে আবার চলে গেলেন।

মেয়েটির সংসার অত্যন্ত সুখ এবং শান্তিতে দিন যাপন করতে লাগলো। এভাবে সাত আট বছর হয়ে গেল কিন্তু তার ঘরে কোন ছেলে সন্তান হয় নাই। এক পর্যায়ে জেসমিনের স্বামী তাকে বলল একটি বাচ্চা কোথাও থেকে নিয়ে আসার কথা। এবং জেসমিন এর স্বামী অনেক ডাক্তার দেখালে কোন লাভ হয়নি। এই বলে জেসমিন ও কথাটি সাড়া দিলো এবং স্বামী একমত হয়ে একটি কন্যা সন্তান নিয়ে আসলো। কন্যা সন্তানটি যখন গর্ভে ছিল তার মায়ের সাথে ঝগড়া করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলেন মেয়েটির নিজ বাবা।

পালক মেয়ের মা আর কি করবে তার বাচ্চাটি এদেরকে দিয়ে দিলেন কারণ তার আর কোন সন্তান নেই। পালক মায়ের মা-বাবারা চিন্তা করল মেয়ের বয়স অল্প তার অন্য কোন জায়গায় বিয়ে দিয়ে দিবে। এভাবে বাচ্চাটি নিয়ে আসলো আরো দুই বছর হয়ে গেল তাদের সংসার খুব সুন্দর ভাবে যেতে লাগলো। একসময় জেসমিনের স্বামী দুই তিন মাস পর পর দেশে আসতে লাগলো। এক বছরে সে তিনবার দেশে আসলেন।

জেসমিন ও চিন্তা করলেন বিদেশে তার ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো সেই এই কারণে বাড়িতে আসে দুই এক মাস থেকে চলে যায়। এখন জেসমিনের স্বামী বাড়িতে আসলে নানার অজু হাত দিয়ে বাইরে বাইরে থাকে। বাড়িতে তেমন আসে না। পরে জেসমিনের কাছে ব্যাপারটি খুব সন্দেহজনক লাগলো সে খোঁজখবর নিতে লাগলো। তার স্বামী কোথায় যায় এবং কি করে। এক পর্যায়ে এসে জানতে পারলো তার স্বামী অন্য একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়ে গেলো।

ওই মহিলাটি আর কেউ নয়। জেই বাচ্চা মেয়েটি তারা পালক হিসেবে আনে তাদের নিজের বাচ্চা করে পালন করতে লাগল তার মা। জেসমিনের স্বামী এই মেয়েটির মায়ের সাথে গভীর সম্পর্ক হয়ে গেলো। জেসমিন যখন ব্যাপারটি জানতে পারলেন তার স্বামীকে সে জিজ্ঞেস করলেন। সে সেই কোনমতে ব্যাপারটি স্বীকার করতে লাগলেন না। জেসমিনের স্বামী অনেক অজুহাত দেখিয়ে বলতে লাগলেন তার সাথে কোন সম্পর্ক নেই। এরপর জেসমিন আরো কিছুদিন তেমন কিছু বললেন না। একদিন জেসমিনের স্বামী ঘরে মোবাইলটি রেখে বাইরে গেলেন। জেসমিন দেখলো ওই মহিলাটি ফোন দিলেন। জেসমিন কথা বলার সাথে সাথে সে আওয়াজ শুনে ফোনটি কেটে দিলেন। জেসমিন এবার অন্য একটি মোবাইল নাম্বার থেকে ওই নাম্বারটিতে ফোন দিলেন। এবং অন্য পরিচয় দিয়ে কথা বলেন এবং তার বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করলেন। মহিলাটি তার নাম এবং বাড়ির নাম বললেন। এই শুনে জেসমিন তো আরো হতবাক হয়ে গেলেন এবার তাদের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়ে গেল।

কি হবে জেসমিনের সংসারের ? এটা জানতে পারবেন পরবর্তী পর্বে। এ পর্যন্ত সবাই ভালো এবং সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে